প্রতিদিন বিবেকের সাথে আপোষনামা লেখতে শহীদের রক্তের প্রয়োজন হয় ।
বিশ্বাসীদের রক্ত কখনও বৃথা যায় না। শহীদরা কখনও পরাজিত হয় না।
একজনের জন্য যদি এত কাঁদার প্রয়োজন হয়। তাহলে আমি বিবেকবানদের কাছে প্রশ্ন রাখলাম ৫ মে শাপলা চত্বরে অসংখ্য নিরাপরাধ নিষ্পাপ হাফেজে কুরআন ছেলেদের হত্যার কী কিছু করার প্রয়োজন নেই?! রাজন ও তনু এবং হযরত আলীর জন্যে আরও এমনই অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর জন্য বাংলাদেশ কাঁদছে এটা আশার কথা। মানুষ মানুষের জন্য।
যুগ যুগ ধরে আমরা প্রত্যেক শহীদকে মনে রাখি। কারণ প্রতিদিনের আমাদের বিবেকের সাথে আপোষনামা লেখতে শহীদের রক্তের প্রয়োজন হয়??!! কিন্তু এমনটি হওয়ার কথা ছিল না। আমরা ভুলি নাই বাংলার দুঃখী মায়ের সন্তানদের রক্ত। ভুলি নাই রক্তে ভেজা শাপলা চত্বর, ভুলি নাই রক্তভেজা মুমিনের দাঁড়ি টুপি।
ইতিহাস সাক্ষীদেয় সকল অন্যায়ের প্রতিরোধ আল্লাহর বিশ্বাসী বান্দারা করেছে। আজ আমি সেই সব বীর পূর্ব পুরুষদের আজ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি শরীয়তুল্লাহ, তিতুমীর, ফকির মজনু শাহ, শাহ ওয়ালিউল্লাহ, সৈয়দ সিরহিন্দী, মুজাদ্দিদ আলফে সানী, মুহম্মদ বিন কাসেম, জালাল উদ্দিন আফগানী, মওলানা ভাসানী, মোস্তফা মাদানী, হাসানুল বান্না, সাইয়েদ কুতুব, মুহম্মদ আব্দুহু, বদিউজ্জামান নুরসী, ইয়াসির আরাফাত আর শেখ আহমদ ইয়াসিনের মতো মহান বীর শহীদের। যাদের রক্ত আমাদের ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু আজ আমাদের বিবেক মরে গেছে জাগতিক স্বার্থে কাছে। চির উন্নত শির আপোষের মাধ্যমে নতজানু হচ্ছি প্রতিনিয়ত? আর সেই আপোষনামা লিখছি শহীদের রক্ত দিয়ে।
আপোষ আপোষ কোনো সময় প্রতিরোধ জারি রাখে কি?? আর কতকাল আপোষ করে যাবো আমরা। যখন খুনিরা আমারই বিশ্বাসী ভাইদের সারারাত মেরে রক্তাক্ত হাতে পেটপুরে পরোটা-গোশতের সাথে মজাদার সব সুস্বাদু খাবার খেয়েছিল। আর ওয়াইন ও বেয়ারের গ্লাসে চুমুক দিয়ে অট্র হাসিতে ফেটে পড়েছিল। আর করেছিল ডিজে পার্টি । সেই খুনীদের হুকুমদাতারা যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে পড়ে যাচ্ছেন কোনো প্রকার অনুশোচনা ছাড়াই! অথবা গুলির হুকুমদাতা অফিসারা যখন আজোও আত্মহত্যা করে নাই! অথবা তাদের হাত অবশ হয়ে যায়নি? আল্লাহ গজবে, কিশোর হাফেজে কুরআন রাসূল (সা.) প্রেমিক কওমী ছাত্রটি যখন তারই বুলেটের আঘাতে কাতরাতে কাতরাতে শহীদ হওয়ার দৃশ্য দেখেও??!! আমি অবাক হয় না।
আমি শুধু স্মরণ করি সেই করপোরেশনের ঝাড়ুদার ও মেথরকে যে শাপলার রক্ত মুছে ফেলাকেই জীবনের সবচেয়ে বড় অপরাধ মনে করে, ৪ বছর পরেও তওবা করে বেড়ান। যে কিনা ঘুমের ঘরে শুধুই শহীদদের রক্ত দেখে চিৎকার দিয়ে জেগে উঠে। কিন্তু আমরা জাগিনি আর কোনো দিনই হতো আমরা জাগতে পারবো না। কারণ আজ বিশ্বব্যাপী শয়তানের অনুসারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরা ওয়ান ওয়াল্ড অর্ডার প্রতিষ্ঠা করে চাই।
শয়তানের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। এরাই পিছন থেকে সব কিছুর কলকাঠি নাড়ে। যত আল্লাহ বিশ্বাস বান্দাকে হত্যা করতে পারে এদের অশুভ ক্ষমতা ততোধিক বাড়ে বলে এরা মনে করে। তাই অশুভ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এরাই সারা দুনিয়ায় বিভিন্ন ফাঁদ তৈরী করে মুমিনদের হত্যা অব্যাহত রাখছে।
শয়তানের অনুসরণকারীদের কাছে শহীদের সংজ্ঞা এক রকম। আর আল্লাহর বিশ্বাসী বান্দাদের কাছে আর এক রকম। দেশে শাহবাগ আর শাপলা যেন দুটো দেশ হয়ে গেছে, দুটো সংজ্ঞা হয়ে গেছে আগামী দিনের বাংলাদেশের ইতিহাসের জন্য । এক শয়তানের উপ দেবতার অনুসরণকারী আর অপর পক্ষ আল্লাহ রাহে জীবন দানকারী শহীদ বিশ্বাসী মুমিন। এক দেশে দুই ধরণের শহীদের সংজ্ঞা নির্মিত হয়েছে। তবু ইতিহাস ইতিহাসই, শহীদ শহীদই।
আমাদের পবিত্র কালাম বলেছে শহীদেরা মরে না বরং তারা জীবিত। আর আমি দেখার অপেক্ষায় আছি জয় কাদের হয়। আল্লাহ বিশ্বাসী মুমিনদের নাকি শয়তানের অনুসরণকারীদের। একটি কথা মনে রাখবেন এরা মুমিনদের হত্যা করে যতই অশুভ কালো ক্ষমতার অধিকারীই হোক না কেন এরা মহান আল্লাহর থেকে শক্তিশালী নয় এবং কোনো দিন হতেও পারবে না। আল্লাহ মহান শক্তিধর এবং কোনো কিছু করার ইচ্ছে করলে তা সাথে সাথে হয়ে যায়। তবে হতাশ হবেন না দিনের শেষে আল্লাহ ও তার বিশ্বাসী মুমিনদের জয় হবে কিন্তু এর জন্য আরও অনেক রক্ত ঝরবে আর আমাদেরকে আরও নিরেট আল্লাহ বিশ্বাসী হয়ে উঠতে হবে।
No comments:
Post a Comment