এ বইয়ের বিষয় বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা ও তাঁর বংশের প্রামাণ্য ইতিহাস। বাংলার সুবাদার বাহাদুর খানের পৌত্র এবং নবাব আলিবর্দি খানের দৌহিত্র ছিলেন সিরাজ-উদ-দৌলা। তিনি ছিলেন সরল, সহজ-বিশ্বাসী ও ধর্মপ্রাণ তরুণ। কীভাবে ইংরেজদের শঠতা, ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়ে তিনি রাজ্য ও প্রাণ হারান এবং কীভাবে তাঁর নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হয়, এ বইয়ে রয়েছে সেই করুণ ইতিহাস।
জগেশঠ, দুর্লভরাম প্রমুখের সঙ্গে মিলে লোভী, ষড়যন্ত্রকারী, বিশ্বাসঘাতক ও রাজদ্রোহী মির জাফর আলি খান এ দেশ তুলে দেন ইংরেজদের হাতে। মির জাফর ছিলেন সিরাজের প্রধান সেনাপতি ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তিনি পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধের নামে একটি প্রহসনের মাধ্যমে সিরাজকে মুষ্টিমেয় ইংরেজ সৈন্যের হাতে পরাজয় বরণ করতে বাধ্য করেছিলেন। সেই ইতিহাস তুলে ধরেছে তথ্যসমৃদ্ধ এ বই। লেখকের বক্তব্যের প্রামাণিকতা এ বইয়ের গ্রহণযোগ্যতা ও মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার জন্ম ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিকান্দি গ্রামে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে এমএ। বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে অবসর নেন ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে। বহুভাষাবিদ। প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস, নৃতত্ত্ব, মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য, ফারসি সাহিত্য থেকে অনুবাদ ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ। উল্লেখযোগ্য বই বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ, বাংলাদেশের প্রাচীন কীর্তি (২ খণ্ড), বাংলা সাহিত্যে গাজী-কালু ও চম্পাবতী উপাখ্যান, গুপীচন্দ্রের সন্ন্যাস, দিনাজপুর মিউজিয়াম, বরেন্দ্র অঞ্চলের ইতিহাস ইত্যাদি। ফারসি ভাষা থেকে বাংলায় অনূদিত গ্রন্থ সিয়ার-উল-মুতাখখিরিন, তবকাত-ই-নাসিরি, তারিখ-ই-বঙ্গালা-ই-মহাব্বত জঙি, মোজাফ্ফরনামা।
No comments:
Post a Comment