বাংলাদেশের বৃদ্ধিজীবি, "র" এবং মোসাদের হালখাতা
ক. গত ১ ফেব্রুয়ারী কলকাতা কনফারেন্স ২০০৯ নামে কলকাতার সুবাস ইন্সটিটিউটে বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের কটি অংগ সংগঠনের ৪র্থ বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষন ছিল, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির প্রযোজিত ডকুমেন্টারী “মানুষ না মালাউন”? (দেখুন, YouTube.com এ)। ডকুমেন্টারীর ধারা বিবরনীতে বলা হয় বাংলাদেশে সংঘটিত সকল নির্যাতন নিপিড়নের জন্য দায়ী হচ্ছে, বর্বর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, সেনাবাহিনী । ইসলাম ও সেনাবাহিনীকে উতখাত করতে না পারলে এ সংকটের সমাধা হবে না। এ ব্যপারে ভারতসহ সকল আন্তর্জাতিক শক্তির সহযোগিতা চাওয়া হয়। ঐ কনফারেন্সে বাংলাদেশ থেকে উপস্থিত ছিলেন চরম ইসলাম, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত কথিত সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম আকাশ ও সুমি খান।
খ. বাংলাদেশে ইসলামী সন্ত্রাসবাদের বিস্তার বাড়ছে। আর এটা হচ্ছে সেনাবাহিনীতে দিন দিন ইসলামপন্থী সদস্যের সংখ্যা বাড়ার কারনে। এমনটিই মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। হার্ভাড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউতে লিখেছেন, Before this madrassa Entrance Exam campaign, only 5 percent of military recruits came from madrasses in 2001. By 2006, at the end of the BNP’s reign, madrassas supplied nearly 35 percent of the Army recruits (গত ২০০১ সালের শেষে মাদ্রাসা থেকে মাত্র ৫ শতাংশ ছাত্র সেনাবাহিনীতে চান্স পেত সেখানে ২০০৬ সালে এটা বেড়ে হয়েছে ৩৫%)। সেনাবাহিনীতে ইসলামপন্থীদের বৃদ্ধির এই হার তার মতে অত্যন্ত্ উদ্দেগজনক। গত পাচ বছরে বাংলাদেশে রোরখার ব্যবহার বা বিক্রি বেড়েছে ৫০০ শতাংশ, Can the Awami League stop the growing tide of Islamism in a country that has seen the sale of burkas rise nearly 500 percent in the last five years? লেখক বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের উপরোক্ত প্রভাব সম্পর্কে তথ্য দিয়েই ক্ষান্ত হননি, তা মোকাবেলার একটি “সেকুলার পন্থা"ও পেশ করেছেন। এর মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন, “সেকুলার প্রাথমিক বিদ্যালয়, " সেকুলার হাসপাতাল” নির্মান উল্লেখযোগ্য। এছাড়া “সেকুলার ক্যাডেট কলেজ” প্রতিষ্টার মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে সেকুলার মনোভাবাপন্ন সদস্য বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। (Source: Stemming the rise of islamic extremism in bangladesh , Harvard International Review, Online Version, 19 November 2008)
গ. A 2 days international seminar on religious minorities in Bangladesh, titled, 'Minorities want their rights back' concluded in Stockholm, Sweden on Sunday, 30th May 2010. The seminar held in Stockholm university was presided over by Mr. Tarun Chowdhury, president, Bangladesh Hindu Buddhist Christian Unity Council (BHBCUC), Europe & Sweden, the meeting was addressed by people from almost a dozen countries, including leaders of BHBCUC.
Special guest Dr. Peter Custers, president, international committee for democracy in Bangladesh (ICDB), who joined the conference from Holland told that, 'I am sympathizer to the minority cause and happy to see that, both religious minority and CHT (Chittagong Hill Tracks) are working together. Dr. Peter insisted that, to stop Islamization of Bangladesh, two amendments (He meant 5/8th) needs to be removed from the constitution. Dr. Peter Custers said, Jamaat & military are the two main obstacle for democracy in Bangladesh (Source: Emails circulated in different e-groups by Sitangsu Guha, secretary general of BHBCUC in USA). ড পিটার কাষ্টার যা বলতে চান, তা হলো, বাংলাদেশে ইসলামীকরন বন্ধ করতে হবে। জামায়াত ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য মূল বাধা। এদিকে গত ১৮-২০ জুন ২০১০ ঢাকায় অনুষ্টিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ঘাদানিক) আয়োজিত আর্ন্তজাতিক অনুষ্টানের অন্যতম অতিথি ছিলেন নেদারল্যান্ডসের নাগরিক এই ড. পিটার।
ঘ. কার্লেকারের পাচ শর্ত। হিরয়ন্ময় কার্লেকার ভারতের ইংলিশ দৈনিক দি পাইওনিয়ারের (Daily Pioneer) নিয়মিত কলামিষ্ট। বাংলাদেশ পরবর্তী আফগানিস্থান হবে এমন আশা করে লিখেছিলেন, Bangladesh: Next Afghanistan?(বাংলাদেশ কি পরবর্তি আফগানিস্থান হচ্ছে?) নামক বাংলাদেশ বিরোধী একটি বই (দেখুন, Bangladesh: Next Afghanistan?, Sage Publications, New Delhi, 2005)। সেই বাবু কার্লেকার বাংলাদেশের মইন-ফখরুদ্ধিন সরকারের মুল কর্তাব্যক্তি জেনারেল মইন ২০০৮ এর শুরুতে ভারত সফর করতে গেলে পাচটি শর্ত পেশ করেছিলেন। লিখেছিলেন, জেনারেল মইনকে ভারতের সমর্থন ও স্বীকৃতি পেতে হলে, পাচটী কাজ করতে হবে। তার মধ্যে গুরুত্বপুর্ণ হচ্ছে জামায়াতকে শায়েস্তা (curb) করতে হবে, জামায়াতের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে এবং তাদের তথা মৌলবাদীদের অর্থনীতি ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে হবে। A message for Gen Moeen শীর্ষক কলামে কার্লেকার লিখেছে, Before gifting legitimacy to Gen Ahmed, India must ensure that he closes the camps Bangladesh maintains for North-Eastern insurgents, hands over ULFA's Paresh Baruah (Anup Chetia alone is not enough), tries war criminals and curbs the JeIB (Jamaat-e-Islami Bangladesh). (Source: Daily Pioneer, 28 February 2008)
অবশ্য মি. কার্লেকারের এই কাজটি বেশ সহজ করে দিয়েছিলেন ড. আবুল বারাকাত। তিনি তার গবেষণায়(?) কোন তথ্যসুত্র ছাড়াই প্রমাণ করে দেখিয়েছেন জামায়াত তথা মৌলবাদীরা বছরে পনের শত কোটি টাকারও বেশী নিট মুনাফা করছে। কার্লেকার তার লেখায় ড. বারাকাত গবেষণাকেই(?) মুল সুত্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ড. বারাকাত অবশ্য সেই বিখ্যাত গবেষণার (?) পুরস্কার স্বরুপ পেযেছেন বাংলাদেশের অন্যতম বড় ব্যাংক, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদটি।
ঙ. ‘সাঈদীকে সরকারের দুই শর্ত’ শীর্ষক একখানা খবর দিয়েছে দৈনিক মানবজমিন ২ ফেব্রয়ারী ২০১০। মানবজমিন লিখেছে, “এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী কোন তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে যেতে পারছেন না। সরকার থেকে তাকে দুটি অপশন দেওয়া হয়েছে। হয় তাকে আগামী পাচ বছর তাফসিরুল কোরআন মাহফিল বন্ধ রাখতে হবে না হয় বিদেশে চলে যেতে হবে। গত ১১ মাসে অন্তত ১২টি মাহফিল ১৪৪ ধারা জারির কারণে বানচাল হয়ে যায়।“ (সুত্রঃ মানবজমিন, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। যদিও মাওলানা সাঈদী মানবজমিনে প্রকাশিত রিপোর্টের কিছু অংশের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, তার পরেও বলা যায়, রিপোর্টি অনেকাংশে সত্য। উল্লেখ্য, ওয়ান-ইলেভেনের পর পরেই চট্রগ্রামের ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে সেই মাহফিলসহ আর কোন মাহফিলেই মাওলানা সাঈদী অংশ নিতে পারেননি।
চ. সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কথিত ইসলামী ভুতের প্রভাব দেখেছেন সেদিন ২০০৮-এ। কিন্তু বিগত চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার (গত হাসিনা সরকারের শেষকালে ২০০১-এ) আগেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইসলামীপন্থার দিকে ঝুকলে ইন্ডিয়ার কি কি হুমকি হতে পারে তার ফিরিস্তি দিয়েছিলেন ‘র এর সাবেক কর্তাব্যক্তি ড. সুবাস কাপিলা। তিনি লিখেছেন,
Bangladesh cannot be expected to be in perpetual gratitude to India for its military assistance for its liberation. By and large Bangladesh Armed Forces are anti Indian. Islamic fundamentalist influence is growing and will have an impact on the Army. It would be dangerous for India to under estimate the potential of the Bangladesh Armed Forces despite their limited size. The recent border incidents should be a wake up call for India. (১৯৭১ সালের ভারতের সামরিক সাহায্যের বিনিময়ে বাংলাদেশের কাছে চিরদিনের জন্য কৃতঞতা আশা করা যায় না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরাট অংশ ইন্ডিয়া বিরোধী। ইসলামী শক্তির প্রভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে যার প্রভাব সেনাবাহিনীতেও পড়বে। এতে আকারে ছোট হলেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইন্ডিয়ার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ (পাদুয়াতে বিডিআর-বিএসএফ সংঘর্ষ, এপ্রিল, ২০০১)তারই আলামত দিচ্ছে এবং ইন্ডিয়াকে এখনই জেগে উটতে হবে)
(Source: Dr. Subhash Kapila, Bangladesh Armed Forces and Islamic Fundamentalism, New Delhi, May, 2001)
আর বেশী তথ্যের উল্লেখ করে আপনাদের বিরক্তি বাড়াতে চাই না। উপরে উল্লেখ্যখিত তথ্য গুলোর সারাংশ করলে যা হয়ঃ বাংলাদেশের টিকে থাকার জন্য সবচেয়ে বড় উপাদান হচ্ছে, জনগনের মাঝে ব্যাপক ও গভীর ইসলামী চেতনা, ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্টান, ইসলামী সংগঠন, দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী ও সত্যিকারের জাতীয়তাবাদী শক্তি। এটা আমরা না বুঝলেও বাংলাদেশ বিরোধীরা ঠিকই বুঝে।
“র-মোসাদের সাম্প্রতিক মিতালী
সাম্প্রতিক প্রকাশিত কিছু খবরে বেশ পরিষ্কার হচ্ছে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র ও ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ নিবিড় ভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। বিস্তারিত বিশ্লেষনের আগে কিছু তথ্য দেখে নেয়া যাক-
ক. ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র (Research & Analysis Wing, R&AW) সাবেক প্রধান বাহুকুতুম্বি রমন (বি রমন হিসেবেই পরিচিত) কয়েকটি গুরুত্বপুর্ণ তথ্য দিয়েছেন তার The Kaoboys of R&AW: Down Memory Lane গ্রন্থে। বি রমন লিখেছেন, “যদিও মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের জন্য ভারত ইসরাইলের সাথে সরাসরি কুটনৈতিক সম্পর্ক রাথতো না। কিন্তু, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে অনেক আগে থেকেই সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বলতে গেলে সেই ১৯৬২ তে। ইসরাইলি গোয়েন্দাদের সাথে ভারতীয় গোয়েন্দাদের গুরুত্বপুর্ণ বৈঠক হতো নেপালের রাজধানী কাটমুন্ডুতে। নেপালেই ছিল আমাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের নিরাপদ জায়গা” (সুত্রঃ The Kaoboys of R&AW: Down Memory Lane, Lancer Publishers, Delhi, 2007)
খ. বাংলাদেশে ভয়াবহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল-কায়েদা। আমেরিকা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতের পর এবার আল কায়েদার টার্গেট বাংলাদেশ। হামলা সফল করতে আল কায়েদাকে সহযোগিতা করছে জামায়াতে ইসলামী, হুজি ও জেএমবি। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এক সম্মিলিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে বিশেষ প্রতিবেদনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনের একটি কপি বিশেষ ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে ভারত সরকারকেও সাবধানতা অবলম্বন করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চলতি বছর ৩ জানুয়ারি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে এক অতিজরুরী গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় দিল্লীর সাইমুন প্লাজায় ওই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক চলে কয়েক ঘণ্টা। বৈঠকে ১শ' ১১ জন শীর্ষ গোয়েন্দা অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এসব গোয়েন্দারা আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন। তাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। ওই বৈঠকে যাঁরা অংশগ্রহণ করেন তাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুধু জঙ্গীদের ওপর কাজ করেন। ভারতের প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থা ওই বৈঠকের আয়োজন ও সমন্বয় করে। (সুত্রঃ জনকন্ঠ, ১৯ এপ্রিল ২০১০)।
পাঠক রিপোর্টটি কোন মৌলবাদী ঘরনার পত্রিকার নয়, খোদ কট্টর ভারতপন্থি হিসেবে পরিচিত পত্রিকা দৈনিক জনকন্ঠের। রিপোর্টি থেকে বুঝা যায়, বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বের বড় বড় গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর সম্মিলিত মিটিং হয়েছে নয়া দিল্লিতে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা “র এটি আয়োজন করে। ইসলামী মৌলবাদ দলনে পটূ বিশ্বের অন্যতম কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা ইসরাইলের মোসাদ (MOSSAD) যে এতে অংশ নিয়েছিল তা মনে হয় বলার অপেক্ষা রাখে না।
গ.
বঙ্গবন্ধুর বিদেশ পলাতক খুনিদের বিদেশের মাটিতেই হত্যা করতে ’৯৮ সালে বাংলাদেশ সরকারকে ইসরায়েলি ভাড়াটে সেনা (মার্সেনারি) প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হননি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় খুনিদের দেশে ফেরত আনতে একটি টাস্স্কফোর্স গঠিত হয়। সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত ওয়ালি উর রহমান ছিলেন ওই টাস্কফোর্সের প্রধান সমন্বয়ক। ঘটনার ১১ বছর পর ওয়ালি উর রহমান বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফেরত আনতে ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমি ইতালি যাই। ইতালির রোমে অবস্থানকালেই ইসরায়েলি ভাড়াটে সেনা (মার্সেনারি) কর্নেল জ্যাক আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিরা পৃথিবীর যে দেশেই পালিয়ে থাকুক আমরা তাদের হত্যা করব। কিন্তু তার বিনিময়ে আমাদের মোটা অংকের ডলার দিতে হবে। ( সুত্রঃ আমাদের সময়, ২২ নভেম্বর, ২০০৯)
ঢাকার অন্যতম ইংরেজী সাপ্তাহিক হলিডে Israeli help শিরোনামে লিখেছে, A former Bangladesh Ambassador to Italy and a strong AL supporter, Waliur Rahman recently in a newspaper interview first leaked to the media as to how the AL government of 1996-2001 - in collaboration with Israel - tried to bring back the fugitive coup leaders. ( Source: 26/02/2010 Weekly Holiday)। উল্লেখ্য, ওয়ালি উর রহমান বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশানের সচিব ও তিনিই প্রথম কোন রকম সুত্র ছাড়াই দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে এখন ৩৫% রিক্রটমেন্ট আসছে মাদ্রাসা থেকে।
বাংলাদেশের সাথে ইসরাইলের কোন ধরনের কুটনৈতিক যোগাযোগ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ভাড়াটে লোকজন কি হঠাত করেই বাংলাদেশকে এই প্রস্তাব দিয়েছিল? আওয়ামীলীগ বা লীগ সরকারের সাথে কি ইসরাইলী গোয়েন্দার কোন বোঝাপড়া হয়েছিল? বাংলাদেশে ইসরাইলের এমন কি স্বার্থ ছিল যার বিনিময়ে ইসরাইল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের গুপ্ত হত্যা করতে চেয়েছিল?
ঘ. ২৯ মার্চ ২০১০ দৈনিক আমাদের সময় বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ইসরায়েল, ঢাকার সঙ্গে সংলাপ চায় তেলআবিব, শীরোনামে প্রোব নিউজ ম্যাগাজিনের (Probe News Magazine) প্রধান সম্পাদক ইরতিজা নাসিম আলী (নেপাল থেকে ফিরে) পরিবেশিত রিপোর্টে লিখেছে“ ইসরায়েলই বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল। নেপালে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যান স্ট্যাভ ও ইসরাইলের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মহাপরিচালক রুথ ক্যানফ বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা সংলাপ চাই।“ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কে স্বাভাবিক করার সূচনা হতে পারে এ সরকারের আমলেই।“ রাষ্ট্রদূত স্ট্যাভ বলেন, ‘সেকারণে ইসরায়েল মনে করে- উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় কোনো বাধা নেই। কিন্তু একথাও সত্য যে, ইসরায়েল ও বাংলাদেশের মধ্যে কোনো বিরোধপূর্ণ ইসু নেই। বরং উভয় দেশ পরস্পরকে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে (সুত্রঃ আমাদের সময়, ২৯ মার্চ, ২০১০)। উল্লেখ্য, ইরতেজা নাসিম আলী তার রিপোর্টে কোথাও উল্লেখ করেননি, ইসরাইলের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মহাপরিচালক রুথ ক্যানফ ও রাষ্ট্রদূত স্ট্যাভ কি উপলক্ষে তাকে ঐ সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন। ইরতেজা নাসিমই বা কি কারনে হটাত করে তাদের সাক্ষাত দিতে বা সাক্ষাতকার নিতে কাটমুন্ডু গিয়েছিলেন? “র এর সাবেক প্রধান বি রমনের তথ্যমতে, বাংলাদেশের ইসরাইলপন্থিরাও ভারতের মত তাদের পরিকল্পনা ও শলা-পরামর্শের জন্য নেপালকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যাবহার করছেন নাতো?......সূত্র আমার ব্লগ
অচেনা মুখ-এর ব্লগ
ক. গত ১ ফেব্রুয়ারী কলকাতা কনফারেন্স ২০০৯ নামে কলকাতার সুবাস ইন্সটিটিউটে বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের কটি অংগ সংগঠনের ৪র্থ বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষন ছিল, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির প্রযোজিত ডকুমেন্টারী “মানুষ না মালাউন”? (দেখুন, YouTube.com এ)। ডকুমেন্টারীর ধারা বিবরনীতে বলা হয় বাংলাদেশে সংঘটিত সকল নির্যাতন নিপিড়নের জন্য দায়ী হচ্ছে, বর্বর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, সেনাবাহিনী । ইসলাম ও সেনাবাহিনীকে উতখাত করতে না পারলে এ সংকটের সমাধা হবে না। এ ব্যপারে ভারতসহ সকল আন্তর্জাতিক শক্তির সহযোগিতা চাওয়া হয়। ঐ কনফারেন্সে বাংলাদেশ থেকে উপস্থিত ছিলেন চরম ইসলাম, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত কথিত সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম আকাশ ও সুমি খান।
খ. বাংলাদেশে ইসলামী সন্ত্রাসবাদের বিস্তার বাড়ছে। আর এটা হচ্ছে সেনাবাহিনীতে দিন দিন ইসলামপন্থী সদস্যের সংখ্যা বাড়ার কারনে। এমনটিই মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। হার্ভাড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউতে লিখেছেন, Before this madrassa Entrance Exam campaign, only 5 percent of military recruits came from madrasses in 2001. By 2006, at the end of the BNP’s reign, madrassas supplied nearly 35 percent of the Army recruits (গত ২০০১ সালের শেষে মাদ্রাসা থেকে মাত্র ৫ শতাংশ ছাত্র সেনাবাহিনীতে চান্স পেত সেখানে ২০০৬ সালে এটা বেড়ে হয়েছে ৩৫%)। সেনাবাহিনীতে ইসলামপন্থীদের বৃদ্ধির এই হার তার মতে অত্যন্ত্ উদ্দেগজনক। গত পাচ বছরে বাংলাদেশে রোরখার ব্যবহার বা বিক্রি বেড়েছে ৫০০ শতাংশ, Can the Awami League stop the growing tide of Islamism in a country that has seen the sale of burkas rise nearly 500 percent in the last five years? লেখক বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের উপরোক্ত প্রভাব সম্পর্কে তথ্য দিয়েই ক্ষান্ত হননি, তা মোকাবেলার একটি “সেকুলার পন্থা"ও পেশ করেছেন। এর মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন, “সেকুলার প্রাথমিক বিদ্যালয়, " সেকুলার হাসপাতাল” নির্মান উল্লেখযোগ্য। এছাড়া “সেকুলার ক্যাডেট কলেজ” প্রতিষ্টার মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে সেকুলার মনোভাবাপন্ন সদস্য বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। (Source: Stemming the rise of islamic extremism in bangladesh , Harvard International Review, Online Version, 19 November 2008)
গ. A 2 days international seminar on religious minorities in Bangladesh, titled, 'Minorities want their rights back' concluded in Stockholm, Sweden on Sunday, 30th May 2010. The seminar held in Stockholm university was presided over by Mr. Tarun Chowdhury, president, Bangladesh Hindu Buddhist Christian Unity Council (BHBCUC), Europe & Sweden, the meeting was addressed by people from almost a dozen countries, including leaders of BHBCUC.
Special guest Dr. Peter Custers, president, international committee for democracy in Bangladesh (ICDB), who joined the conference from Holland told that, 'I am sympathizer to the minority cause and happy to see that, both religious minority and CHT (Chittagong Hill Tracks) are working together. Dr. Peter insisted that, to stop Islamization of Bangladesh, two amendments (He meant 5/8th) needs to be removed from the constitution. Dr. Peter Custers said, Jamaat & military are the two main obstacle for democracy in Bangladesh (Source: Emails circulated in different e-groups by Sitangsu Guha, secretary general of BHBCUC in USA). ড পিটার কাষ্টার যা বলতে চান, তা হলো, বাংলাদেশে ইসলামীকরন বন্ধ করতে হবে। জামায়াত ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য মূল বাধা। এদিকে গত ১৮-২০ জুন ২০১০ ঢাকায় অনুষ্টিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ঘাদানিক) আয়োজিত আর্ন্তজাতিক অনুষ্টানের অন্যতম অতিথি ছিলেন নেদারল্যান্ডসের নাগরিক এই ড. পিটার।
ঘ. কার্লেকারের পাচ শর্ত। হিরয়ন্ময় কার্লেকার ভারতের ইংলিশ দৈনিক দি পাইওনিয়ারের (Daily Pioneer) নিয়মিত কলামিষ্ট। বাংলাদেশ পরবর্তী আফগানিস্থান হবে এমন আশা করে লিখেছিলেন, Bangladesh: Next Afghanistan?(বাংলাদেশ কি পরবর্তি আফগানিস্থান হচ্ছে?) নামক বাংলাদেশ বিরোধী একটি বই (দেখুন, Bangladesh: Next Afghanistan?, Sage Publications, New Delhi, 2005)। সেই বাবু কার্লেকার বাংলাদেশের মইন-ফখরুদ্ধিন সরকারের মুল কর্তাব্যক্তি জেনারেল মইন ২০০৮ এর শুরুতে ভারত সফর করতে গেলে পাচটি শর্ত পেশ করেছিলেন। লিখেছিলেন, জেনারেল মইনকে ভারতের সমর্থন ও স্বীকৃতি পেতে হলে, পাচটী কাজ করতে হবে। তার মধ্যে গুরুত্বপুর্ণ হচ্ছে জামায়াতকে শায়েস্তা (curb) করতে হবে, জামায়াতের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে এবং তাদের তথা মৌলবাদীদের অর্থনীতি ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে হবে। A message for Gen Moeen শীর্ষক কলামে কার্লেকার লিখেছে, Before gifting legitimacy to Gen Ahmed, India must ensure that he closes the camps Bangladesh maintains for North-Eastern insurgents, hands over ULFA's Paresh Baruah (Anup Chetia alone is not enough), tries war criminals and curbs the JeIB (Jamaat-e-Islami Bangladesh). (Source: Daily Pioneer, 28 February 2008)
অবশ্য মি. কার্লেকারের এই কাজটি বেশ সহজ করে দিয়েছিলেন ড. আবুল বারাকাত। তিনি তার গবেষণায়(?) কোন তথ্যসুত্র ছাড়াই প্রমাণ করে দেখিয়েছেন জামায়াত তথা মৌলবাদীরা বছরে পনের শত কোটি টাকারও বেশী নিট মুনাফা করছে। কার্লেকার তার লেখায় ড. বারাকাত গবেষণাকেই(?) মুল সুত্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ড. বারাকাত অবশ্য সেই বিখ্যাত গবেষণার (?) পুরস্কার স্বরুপ পেযেছেন বাংলাদেশের অন্যতম বড় ব্যাংক, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদটি।
ঙ. ‘সাঈদীকে সরকারের দুই শর্ত’ শীর্ষক একখানা খবর দিয়েছে দৈনিক মানবজমিন ২ ফেব্রয়ারী ২০১০। মানবজমিন লিখেছে, “এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী কোন তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে যেতে পারছেন না। সরকার থেকে তাকে দুটি অপশন দেওয়া হয়েছে। হয় তাকে আগামী পাচ বছর তাফসিরুল কোরআন মাহফিল বন্ধ রাখতে হবে না হয় বিদেশে চলে যেতে হবে। গত ১১ মাসে অন্তত ১২টি মাহফিল ১৪৪ ধারা জারির কারণে বানচাল হয়ে যায়।“ (সুত্রঃ মানবজমিন, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। যদিও মাওলানা সাঈদী মানবজমিনে প্রকাশিত রিপোর্টের কিছু অংশের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, তার পরেও বলা যায়, রিপোর্টি অনেকাংশে সত্য। উল্লেখ্য, ওয়ান-ইলেভেনের পর পরেই চট্রগ্রামের ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে সেই মাহফিলসহ আর কোন মাহফিলেই মাওলানা সাঈদী অংশ নিতে পারেননি।
চ. সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কথিত ইসলামী ভুতের প্রভাব দেখেছেন সেদিন ২০০৮-এ। কিন্তু বিগত চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার (গত হাসিনা সরকারের শেষকালে ২০০১-এ) আগেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইসলামীপন্থার দিকে ঝুকলে ইন্ডিয়ার কি কি হুমকি হতে পারে তার ফিরিস্তি দিয়েছিলেন ‘র এর সাবেক কর্তাব্যক্তি ড. সুবাস কাপিলা। তিনি লিখেছেন,
Bangladesh cannot be expected to be in perpetual gratitude to India for its military assistance for its liberation. By and large Bangladesh Armed Forces are anti Indian. Islamic fundamentalist influence is growing and will have an impact on the Army. It would be dangerous for India to under estimate the potential of the Bangladesh Armed Forces despite their limited size. The recent border incidents should be a wake up call for India. (১৯৭১ সালের ভারতের সামরিক সাহায্যের বিনিময়ে বাংলাদেশের কাছে চিরদিনের জন্য কৃতঞতা আশা করা যায় না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরাট অংশ ইন্ডিয়া বিরোধী। ইসলামী শক্তির প্রভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে যার প্রভাব সেনাবাহিনীতেও পড়বে। এতে আকারে ছোট হলেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইন্ডিয়ার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ (পাদুয়াতে বিডিআর-বিএসএফ সংঘর্ষ, এপ্রিল, ২০০১)তারই আলামত দিচ্ছে এবং ইন্ডিয়াকে এখনই জেগে উটতে হবে)
(Source: Dr. Subhash Kapila, Bangladesh Armed Forces and Islamic Fundamentalism, New Delhi, May, 2001)
আর বেশী তথ্যের উল্লেখ করে আপনাদের বিরক্তি বাড়াতে চাই না। উপরে উল্লেখ্যখিত তথ্য গুলোর সারাংশ করলে যা হয়ঃ বাংলাদেশের টিকে থাকার জন্য সবচেয়ে বড় উপাদান হচ্ছে, জনগনের মাঝে ব্যাপক ও গভীর ইসলামী চেতনা, ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্টান, ইসলামী সংগঠন, দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী ও সত্যিকারের জাতীয়তাবাদী শক্তি। এটা আমরা না বুঝলেও বাংলাদেশ বিরোধীরা ঠিকই বুঝে।
“র-মোসাদের সাম্প্রতিক মিতালী
সাম্প্রতিক প্রকাশিত কিছু খবরে বেশ পরিষ্কার হচ্ছে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র ও ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ নিবিড় ভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। বিস্তারিত বিশ্লেষনের আগে কিছু তথ্য দেখে নেয়া যাক-
ক. ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র (Research & Analysis Wing, R&AW) সাবেক প্রধান বাহুকুতুম্বি রমন (বি রমন হিসেবেই পরিচিত) কয়েকটি গুরুত্বপুর্ণ তথ্য দিয়েছেন তার The Kaoboys of R&AW: Down Memory Lane গ্রন্থে। বি রমন লিখেছেন, “যদিও মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের জন্য ভারত ইসরাইলের সাথে সরাসরি কুটনৈতিক সম্পর্ক রাথতো না। কিন্তু, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে অনেক আগে থেকেই সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বলতে গেলে সেই ১৯৬২ তে। ইসরাইলি গোয়েন্দাদের সাথে ভারতীয় গোয়েন্দাদের গুরুত্বপুর্ণ বৈঠক হতো নেপালের রাজধানী কাটমুন্ডুতে। নেপালেই ছিল আমাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের নিরাপদ জায়গা” (সুত্রঃ The Kaoboys of R&AW: Down Memory Lane, Lancer Publishers, Delhi, 2007)
খ. বাংলাদেশে ভয়াবহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল-কায়েদা। আমেরিকা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতের পর এবার আল কায়েদার টার্গেট বাংলাদেশ। হামলা সফল করতে আল কায়েদাকে সহযোগিতা করছে জামায়াতে ইসলামী, হুজি ও জেএমবি। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এক সম্মিলিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে বিশেষ প্রতিবেদনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনের একটি কপি বিশেষ ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে ভারত সরকারকেও সাবধানতা অবলম্বন করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চলতি বছর ৩ জানুয়ারি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে এক অতিজরুরী গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় দিল্লীর সাইমুন প্লাজায় ওই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক চলে কয়েক ঘণ্টা। বৈঠকে ১শ' ১১ জন শীর্ষ গোয়েন্দা অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এসব গোয়েন্দারা আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন। তাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। ওই বৈঠকে যাঁরা অংশগ্রহণ করেন তাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুধু জঙ্গীদের ওপর কাজ করেন। ভারতের প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থা ওই বৈঠকের আয়োজন ও সমন্বয় করে। (সুত্রঃ জনকন্ঠ, ১৯ এপ্রিল ২০১০)।
পাঠক রিপোর্টটি কোন মৌলবাদী ঘরনার পত্রিকার নয়, খোদ কট্টর ভারতপন্থি হিসেবে পরিচিত পত্রিকা দৈনিক জনকন্ঠের। রিপোর্টি থেকে বুঝা যায়, বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বের বড় বড় গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর সম্মিলিত মিটিং হয়েছে নয়া দিল্লিতে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা “র এটি আয়োজন করে। ইসলামী মৌলবাদ দলনে পটূ বিশ্বের অন্যতম কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা ইসরাইলের মোসাদ (MOSSAD) যে এতে অংশ নিয়েছিল তা মনে হয় বলার অপেক্ষা রাখে না।
গ.
বঙ্গবন্ধুর বিদেশ পলাতক খুনিদের বিদেশের মাটিতেই হত্যা করতে ’৯৮ সালে বাংলাদেশ সরকারকে ইসরায়েলি ভাড়াটে সেনা (মার্সেনারি) প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হননি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় খুনিদের দেশে ফেরত আনতে একটি টাস্স্কফোর্স গঠিত হয়। সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত ওয়ালি উর রহমান ছিলেন ওই টাস্কফোর্সের প্রধান সমন্বয়ক। ঘটনার ১১ বছর পর ওয়ালি উর রহমান বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফেরত আনতে ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমি ইতালি যাই। ইতালির রোমে অবস্থানকালেই ইসরায়েলি ভাড়াটে সেনা (মার্সেনারি) কর্নেল জ্যাক আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিরা পৃথিবীর যে দেশেই পালিয়ে থাকুক আমরা তাদের হত্যা করব। কিন্তু তার বিনিময়ে আমাদের মোটা অংকের ডলার দিতে হবে। ( সুত্রঃ আমাদের সময়, ২২ নভেম্বর, ২০০৯)
ঢাকার অন্যতম ইংরেজী সাপ্তাহিক হলিডে Israeli help শিরোনামে লিখেছে, A former Bangladesh Ambassador to Italy and a strong AL supporter, Waliur Rahman recently in a newspaper interview first leaked to the media as to how the AL government of 1996-2001 - in collaboration with Israel - tried to bring back the fugitive coup leaders. ( Source: 26/02/2010 Weekly Holiday)। উল্লেখ্য, ওয়ালি উর রহমান বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশানের সচিব ও তিনিই প্রথম কোন রকম সুত্র ছাড়াই দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে এখন ৩৫% রিক্রটমেন্ট আসছে মাদ্রাসা থেকে।
বাংলাদেশের সাথে ইসরাইলের কোন ধরনের কুটনৈতিক যোগাযোগ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ভাড়াটে লোকজন কি হঠাত করেই বাংলাদেশকে এই প্রস্তাব দিয়েছিল? আওয়ামীলীগ বা লীগ সরকারের সাথে কি ইসরাইলী গোয়েন্দার কোন বোঝাপড়া হয়েছিল? বাংলাদেশে ইসরাইলের এমন কি স্বার্থ ছিল যার বিনিময়ে ইসরাইল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের গুপ্ত হত্যা করতে চেয়েছিল?
ঘ. ২৯ মার্চ ২০১০ দৈনিক আমাদের সময় বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ইসরায়েল, ঢাকার সঙ্গে সংলাপ চায় তেলআবিব, শীরোনামে প্রোব নিউজ ম্যাগাজিনের (Probe News Magazine) প্রধান সম্পাদক ইরতিজা নাসিম আলী (নেপাল থেকে ফিরে) পরিবেশিত রিপোর্টে লিখেছে“ ইসরায়েলই বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল। নেপালে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যান স্ট্যাভ ও ইসরাইলের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মহাপরিচালক রুথ ক্যানফ বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা সংলাপ চাই।“ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কে স্বাভাবিক করার সূচনা হতে পারে এ সরকারের আমলেই।“ রাষ্ট্রদূত স্ট্যাভ বলেন, ‘সেকারণে ইসরায়েল মনে করে- উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় কোনো বাধা নেই। কিন্তু একথাও সত্য যে, ইসরায়েল ও বাংলাদেশের মধ্যে কোনো বিরোধপূর্ণ ইসু নেই। বরং উভয় দেশ পরস্পরকে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে (সুত্রঃ আমাদের সময়, ২৯ মার্চ, ২০১০)। উল্লেখ্য, ইরতেজা নাসিম আলী তার রিপোর্টে কোথাও উল্লেখ করেননি, ইসরাইলের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মহাপরিচালক রুথ ক্যানফ ও রাষ্ট্রদূত স্ট্যাভ কি উপলক্ষে তাকে ঐ সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন। ইরতেজা নাসিমই বা কি কারনে হটাত করে তাদের সাক্ষাত দিতে বা সাক্ষাতকার নিতে কাটমুন্ডু গিয়েছিলেন? “র এর সাবেক প্রধান বি রমনের তথ্যমতে, বাংলাদেশের ইসরাইলপন্থিরাও ভারতের মত তাদের পরিকল্পনা ও শলা-পরামর্শের জন্য নেপালকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যাবহার করছেন নাতো?......সূত্র আমার ব্লগ
অচেনা মুখ-এর ব্লগ
No comments:
Post a Comment