ছাত্রসংবাদ…. ছাত্রসমাজের কন্ঠস্বর
প্রথম পেজদারস»প্রচ্ছদ রচনা»বিশেষ রচনা»নিয়মিত»সিরাতুন্নবী (স) সংখ্যাই ছাত্রসংবাদ
নিজভূমে পরবাসী মিয়ানমারের মুসলমান
মিয়ানমারের মুসলিম সমাজ
মিয়ানমারের মুসলমানেরা আজ ভয়ানক বিপদের মুখে। তাদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশ, সৈন্যরা লাশগুলোকে দাফন করতে না দিয়ে গায়েব করে দিচ্ছে। এশিয়ান ক্যারেসপন্ডেন্ট ডট কমের সাংবাদিক ফ্রান্সিস ওয়াদের রিপোর্ট, পুলিশ দাঙ্গাকারী বার্মিজদের সাথে মিলে মুসলমানদের ঘরবাড়িতে আগুন দিচ্ছে। পুলিশ মুসলমানদের দিকে তাক করে গুলি ছুড়ছে। এমনও রিপোর্ট এসেছে, নিহত ও আহত মুসলমানদের মাথা মুড়িয়ে ও গায়ে গেরুয়া পোশাক পরিয়ে ছবি তুলে বৌদ্ধ বলে বিশ্বময় প্রচার চালাচ্ছে। সমুদ্রে নামা ছাড়া মুসলমানদের সামনে আশ্রয় লাভের কোন স্থান নেই। বাংলাদেশই একমাত্র প্রতিবেশী মুসলিম দেশ। কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে আসাও তাদের জন্য অসম্ভব করা হয়েছে। আহত ও ক্ষুধার্ত নারী-শিশুদের নিয়ে তাদের নৌকাগুলো দিবারাত্র সাগরে ভাসছে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য এ এক নিদারুণ দুরবস্থা।
সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে ১৪/০৬/১২ তারিখে রয়টার্স জানায়, বুধবার রাতেও বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন রাখাইন রাজ্যের দুটো গ্রামে ঘরে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সাম্প্রদায়িক এই দাঙ্গায় অন্তত ১,৬০০ ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি জানায়, এই দাঙ্গায় অন্তত ৩০ হাজার মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে এবং রাখাইন রাজ্যে স্থাপিত ৩৭টি আশ্রয় শিবিরে অন্তত ৩১,৯০০ জন আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের স্থানীয় সূত্রগুলো দাবি করছে, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা রাখাইনদের সহায়তায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীবাহিনী নাসাকা, পুলিশ ও ‘লুন্টিন’ বাহিনী এই হত্যাকাণ্ড ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। গত ৬ দিনে শুধু মংডুতেই নিহত হয়েছে ৪ শতাধিক। এদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা। এদিকে নিজদেশেই চরম নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশের পথও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পরিবার-পরিজন নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হচ্ছেন তারা। বুকফাটা কান্না আর মৃত্যুকে মেনে নিয়ে আবার মিয়ানমারে ফিরে যেতে হচ্ছে হতভাগ্য রোহিঙ্গাদের। অনেকে আবার জীবন বাঁচাতে নৌকায় করে নদীতে থাকার চেষ্টা করছেন। অনেকের লাশ ভাসছে বঙ্গোপসাগরে। জাতিসংঘের মতে, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত সংখ্যালঘু হচ্ছে রোহিঙ্গা মুসলিমরা। (সূত্র : দৈনিক আমার দেশ, ১৫/০৬/১২) মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড বলেছেন, ‘আমরা এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন, বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আসতে বাধা দিচ্ছে এবং তাদের পুশব্যাক করছে।’ বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এ কথা বলেন। এর আগে জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশকে একই আহ্বান জানায়। বাংলাদেশ সরকারের বড় দায়িত্বহীনতা হলো, মিয়ানমারের মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়া উচ্ছেদপ্রক্রিয়াকে বিশ্ববাসী যেভাবে দেখছে সরকার সেভাবে সেটিকে দেখছে না। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি এটিকে মিয়ানমার সরকারের সাথে সুর মিলিয়ে জামায়াতে ইসলামীর কাণ্ড বলে উদ্ধৃত করেছে। এভাবে সরকার একটি গুরুতর আন্তর্জাতিক বিষয়কে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ ব্যাপার রূপে চিত্রিত করলো। দায়িত্বহীনতা আর কাকে বলে!
ঘরবাড়ি আগুনে বিধ্বস্ত হলে পাশের প্রতিবেশী আশ্রয় দিতে এগিয়ে আসে। তেমনি কোন দেশে একটি জনগোষ্ঠি নির্মূলের মুখে পড়লে প্রতিবেশী দেশ এগিয়ে আসে। কিন্তু পাশে সমুদ্র ছাড়া মিয়ানমারের মুসলমানদের সে রকম প্রতিবেশী নেই। তাদের দুর্ভাগ্য, তারা প্রতিবেশী রূপে পেয়েছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানে যখন সোভিয়েত আগ্রাসন শুরু হয় তখন ৩০ লাখ আফগান নাগরিক ৩০ বছর যাবৎ পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিল। ২০ লাখ আশ্রয় নিয়েছিল ইরানে। সাতচল্লিশে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় মুসলমান জানমাল বাঁচাতে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিল। একইভাবে ইসরাইলের আগ্রাসন থেকে প্রাণ বাঁচাতে লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনি প্রতিবেশী আরব দেশগুলিতে আশ্রয় নিয়েছে। সম্প্রতি সিরিয়ার হাজার হাজার নাগরিক আশ্রয় নিচ্ছে পাশের তুরস্ক, জর্দান ও লেবাননে। ইতিহাসে এমন উদাহরণ ভূরি ভূরি। অসহায় উদ্বাস্তুতের প্রবেশ রুখতে কোন প্রতিবেশী দেশই দরজা বন্ধ করে দেয় না। মিয়ানমারের মুসলমানেরা প্রতিবেশী থেকে সেরূপ আচরণ পায়নি।
বাংলাদেশের নতুন রেকর্ড
বাংলাদেশ অতীতে ৫ বার রেকর্ড করেছিল বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বৃত্তকবলিত দেশ রূপে। এবার আরেক রেকর্ড যোগ হলো। সেটি হৃদয়হীনতার। প্রতিবেশী রূপে বাংলাদেশ যে কতটা খারাপ সেটিই বিশ্ববাসীর সামনে প্রমাণ করলো। মিয়ানমারের মুসলমানদের এটি এক বড় দুর্ভাগ্য। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী, কোস্টাল গার্ড ও পুলিশ বাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানভর্তি নৌকাগুলোকে বাংলাদেশের সীমান্তে ভিড়তে দিচ্ছে না। সীমান্ত রক্ষীরা তাদের পুশব্যাক করছে। কক্সবাজারের ১৭ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল খালেকুজ্জামান পিএসসি বলেন, সীমান্ত ও উপকূলীয় এলাকায় বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। গতকাল সীমান্ত দিয়ে কোনো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেনি। নাইক্ষ্যংছড়িস্থ ১৫ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুব বলেন, পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে কোনো রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। সীমান্ত এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। (সূত্র : নয়া দিগন্ত, ১৪/০৬/১২) রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢুকতে না দেয়াই যে সরকারি নীতি এ হলো তার প্রমাণ। অথচ আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক বাংলাদেশ দায়বদ্ধ এমন উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিতে। জান বাঁচানোর স্বার্থে কেউ যদি অন্য দেশে প্রবেশ করে তবে কোন সভ্যদেশেই তাকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে না। জান বাঁচানো প্রতিটি নাগরিকেরই মৌলিক মানবিক অধিকার। সেটি কোন দেশে বিপন্ন হলে সে অন্য যে কোন দেশে আশ্রয় নেয়ার অধিকার রাখে। সেটিই আন্তর্জাতিক নীতি।
রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে সরকারের প্রতি ইতোমধ্যে আহ্বান জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি আবারও সে দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। সরকারের অনড় অবস্থানের ফলেই ১১৪ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়নি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড। (সূত্র : আমার দেশ, ১৪/০৬/১২) এভাবে বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশ সরকার জানিয়ে দিল, দেশটি শুধু হাত পেতে ত্রাণ নিতেই জানে, দিতে নয়। তারা শুধু দুর্নীতিতে বিশ্বে প্রথম হওয়ার সামর্থ্যই রাখে না, বিপদে পড়া প্রতিবেশীদের প্রতি অতি নির্দয় ও নিষ্ঠুর হওয়ারও সামর্থ্য রাখে। একটি জনগোষ্ঠীর বিবেকের পচন আর কত কাল এভাবে প্রকাশ পেতে থাকবে?
লক্ষণীয় হলো, নির্দয়তা শুধু সরকারের একার নয়। বরং আক্রান্ত যেন সমগ্র দেশ। মুসলিম উৎখাতের ন্যায় নিষ্ঠুরতা থামাতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মহলে যেমন কোন উদ্যোগ নেই, তেমনি সে মুসলিম-নির্মূল নীতির বিরুদ্ধে ঢাকার রাস্তায়ও কোন প্রতিবাদ নেই। বাংলাদেশ সরকারের মানবতাশূন্য নীতির বিরুদ্ধে দেশের বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, লেখক-বুদ্ধিজীবী, ছাত্রশিক্ষক ও আলেম-উলামাদের পক্ষ থেকেও কোন নিন্দাবাদ নেই। মিয়ানমারের মুসলিম-নির্মূলের বিষয়টি নতুন নয়। আশির ও নব্বইয়ের দশকের শুরুতে একই রূপ নির্মূল অভিযান শুরু হয়েছিল। হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে তখন দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। তাদের বহু হাজার মুসলমান এখন বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়ে আছে।
দেশহীন থেকে গৃহহীন
আরাকানের মুসলমানদের সাথে বড়ই অবিচার হলো তারা শত শত বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাস করলেও তাদের সে দেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। এর চেয়ে বড় অবিচার আর কী হতে পারে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে মাত্র ৫ বছর বৈধ বসবাসের সার্টিফিকেট দেখাতে পারলে নাগরিকত্ব দেয়া হয়। অথচ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানরা শত শত বছর ধরে বসবাস করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউরোপ ও আফ্রিকা থেকে বসতি স্থাপনকারীগণ যত বছর ধরে বসবাস করছে তার চেয়ে বেশি বছর যাবৎ আরাকানে বসবাস করছে রোহিঙ্গারা। অথচ তাদের নাগরিকত্ব না দিয়ে এখন বহিষ্কারের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি নিছক ধর্মীয় কারণে। আর এখন তাদের গৃহহীন করা হচ্ছে।
প্রতি দেশেই নানা ধর্ম, নানা ভাষা ও নানা বর্ণের মানুষ বাস করে। বাংলাদেশে যেমন মুসলমানের পাশাপাশি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান আছে তেমনি বাংলাভাষীদের পাশে বহু অবাঙালিও আছে। বহু চাকমা, গারো, হাজং, মুনিপুরি, মগও আছে। শুধু এক ধর্ম, এক ভাষা ও এক বর্ণের মানুষ দিয়ে দেশ গড়ার প্রেরণাটি অতি অসুস্থ চেতনার। সে অসুস্থ চেতনার মানুষেরা ভিন্ন জাতিসত্তার মানুষদের নির্মূল করার ন্যায় ভয়ানক অপরাধটি ঘটায়। জার্মানিতে ইহুদিদের বিরুদ্ধে সেটিই ঘটেছিল। তেমনটি ঘটেছে ইসরাইল ও বসনিয়ায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে। আজ একই অপরাধ ঘটছে মিয়ানমারে। মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ থেকে ভিন্নতর ধর্ম ও ভাষা হওয়ার কারণেই কারো নাগরিকত্ব হরণ করা যায় না। অথচ মিয়ানমারে সেটিই হয়েছে। এমনটি হয়েছে মুসলিমভীতি থেকে। মুসলমানদের নাগরিকত্ব হরণের কারণ রূপে দেখানো হচ্ছে তারা এসেছে পাশের বাংলাদেশ থেকে। কথা হলো তারা যদি বাংলাদেশ থেকে গিয়েও থাকে সে জন্য কি তাদের নাগিরকত্ব থেকে বঞ্চিত করা যায়? নানা দেশে বিচিত্র মানুষের যে সংমিশ্রণ দেখা যায় তার কারণ এই নয় যে মানুষগুলো আসমান থেকে নাজিল হয়েছে। বরং আসে পাশের দেশ থেকে। বাংলাদেশে বহু মানুষ ভারত থেকে এসে বসতি গড়েছে, সেটি যেমন শত শত বছর আগে, তেমনি অনেকের আগমনের বয়স ৬৫ বছরের বেশি নয়। তেমনি বহু মানুষ বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েও বসবাস করছে। মানুষ যেমন জন্ম নেয়, তেমনি মাইগ্রেশনও করে। সেটিই সভ্যতার রীতি। হাজার হাজার বছর ধরে সে রীতি চলে আসছে। কিন্তু সে মাইগ্রেশনের জন্য কি কারো নাগরিকত্ব হরণ করা যায়? অথচ সে নিদারুণ অবিচার হচ্ছে মিয়ানমারের মুসলমানদের সাথে।
মুসলিম বসতি হাজার বছরের
আরাকানে মুসলমানদের বসতি হাজার বছরেরও বেশি পুরনো, তার পেছনে দলিল রয়েছে। সে দলিল রয়েছে খোদ মিয়ানমারে। সেখানে মুসলমান বসতির সূত্রপাত প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ড. মুহাম্মদ এনামুল হক আরাকানের জাতীয় ইতিহাসবিষয়ক গ্রন্থ ‘রাজোয়াং’ থেকে নিম্নোক্ত বিবরণটি উদ্ধৃত করেছেন : “খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর শেষ পাদে যখন আরাকান রাজ মহতৈং চন্দয় (গধযধঃড়রহম ঞংধহফুধ- ৭৮৮-৮১০ অ.উ.) রাজত্ব করছিলেন, তখন কতকগুলো মুসলমান বণিক জাহাজ ভাঙিয়া যাওয়ার ফলে আরাকানের দক্ষিণ দিকস্থ ‘রনবী’ (আধুনিক রামরী) দ্বীপে উঠিয়া পড়েন। তাঁহারা আরাকানীগণ কর্তৃক ধৃত হইয়া রাজার সম্মুখে নীত হয়েছিলেন। রাজা তাঁহাদের দুরবস্থা দেখিয়া দয়াপরবশ হইয়া তাঁহাদিগকে স্বীয় রাজ্যে গ্রামে গিয়া বসবাস করিতে আদেশ দিয়াছিলেন।” ড. এনামুল হক মনে করেন যে, “রাজোয়াংএ উল্লিখিত এ সব মুসলমান বণিক আরব দেশীয় ছিলেন এবং চাটগাঁ থেকে উপকূল বেয়ে দক্ষিণ মুখে যাবার পথে, কিংবা দক্ষিণ উপকূল হয়ে উত্তরে চাটগাঁর দিকে এগুবার সময়ই ঝঞ্ঝাতাড়িত হয়ে সম্ভবত তারা রামরী দ্বীপে গিয়ে আশ্র্য় নিয়েছিলেন।” সুপ্রাচীন আরবীয় ঐতিহ্য অনুসারে একই সাথে জীবিকা অর্জন ও ধর্ম প্রচারের সুমহান চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুসলমানেরা দলে দলে নৌ ও স্থলপথে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। এরই অংশ হিসেবে খ্রিষ্টীয় নবম শতাব্দীর প্রারম্ভে বার্মায় মুসলিম উপনিবেশ গড়ে ওঠে। জীবন-জীবিকার অনিবার্য প্রয়োজনে স্থানীয় মহিলাদেরকে বিবাহ-শাদি করে তারা সেখানে ধনে-জনে বর্ধিত হতে থাকে।
পরীক্ষার মুখে বাংলাদেশের মুসলমান
আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলমানদের এ ভয়ানক বিপদে বাংলাদেশের মুসলমানদের ওপর বিশাল দায়ভার। আল্লাহতায়ালা মানুষকে নানাভাবে পরীক্ষা করেন। কখনো তার নিজের ওপর বিপদ দিয়ে, আবার কখনো প্রতিবেশীর ওপর বিপদ দিয়ে। বাংলাদেশের মুসলমানগণ তাই এখানে এক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি। এ পরীক্ষায় ফেল করলে শুধু মানবজাতির ইতিহাসেই তাদের কদর্যতা বাড়বে না, আল্লাহর দরবারেও তাদের ব্যর্থতা বাড়াবে। প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে প্রতিবেশী মাত্রই সর্ব সামর্থ্য নিয়ে সে আগুন থামানোর চেষ্টা করে। প্রতিবেশীর মাঝে সে তাড়না না থাকলে বুঝতে হবে সে ব্যক্তিটি অমানুষ। জন্তু-জানোয়ার ও উদ্ভিদের সে সামর্থ্য থাকে না বলেই তারা ইতর। প্রতিবেশীসুলভ এমন কাজের জন্য মুসলমান হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এমনকি অমুসলিম কাফেরগণও সে কাজ করে। তবে মুসলমানদের ওপর সে পরীক্ষাটি আরো বেশি বেশি আসে। কারণ জাহান্নামের আগুন থেকে রেহাই দিয়ে জান্নাতে মৃত্যুহীন এক অনন্ত জীবন দেয়ার আগে আল্লাহতায়ালা তাদের যাচাই বাছাই করে নেন। তাই চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো আসে সে যাচাই বাছাইয়ের অপরিহার্য অংশ রূপে। সে পরীক্ষায় পাস করার তাগিদে মুসলমান তাই শুধু প্রতিবেশীর ঘরের আগুন নেভাতে ছুটে যায় না, তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতেও সচেষ্ট হয়।
মুসলমানের পরিচয়টি শুধু আল্লাহর হুকুমের প্রতি আত্মসমর্পিত গোলাম রূপেই নয়। আরেক গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় হলো সে অন্যান্য মুসলমানদের ভাই। সে পরিচয়টি মহান আল্লাহর দেয়া। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহতায়ালার সে ঘোষণাটি হলো, “মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমরা ভ্রাতৃগণের মধ্যে শান্তি স্থাপন করো আর আল্লাহকে ভয় করো যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও।” (সূরা হুজরাত : আয়াত ১০) কাউকে ভাই বলাটি কোনো ফাঁকা বুলি নয়। এটি মুমিনের ঈমানের প্রকাশ। ফলে ভাই বলার মধ্য দিয়ে ঈমানদারের ঘাড়ে ঈমানী দায়ভারও এসে যায়। ইসলামের সীসাঢালা প্রাচীরের মতো বিশ্বভ্রাতৃত্বের মজবুত বন্ধনটি গড়ে ওঠে এ পরিচয়টির ওপর। এ পরিচয়টি না থাকলে উম্মতে ওয়াহেদা গড়ে ওঠার আর কোনো ভিত্তিই থাকে না। তাই মুসলমান হওয়ার অর্থ যেমন আল্লাহর পাকাপোক্ত গোলাম হয়ে যাওয়া, তেমনি অপর মুসলিমকে নিজের ভাই রূপে কবুল করে নেয়া। সেটি শুধু মুখে নয়, হৃদয় দিয়ে। চেতনা, কর্ম ও আচরণে সে ভ্রাতৃত্বের প্রকাশ না ঘটলে সে মহান আল্লাহর দরবারে মুনাফিক রূপে চিত্রিত হয়। ভ্রাতৃত্বের সে মজবুত বন্ধনের কারণে সে অন্য কোনো মুসলিমের বিপদে তা সে রোহিঙ্গা হোক, বিহারি হোক, কাশ্মিরি হোক বা ফিলিস্তিনি হোক, সর্বাত্মক সাহায্যে নিয়ে ছুটে। মারাঠা হিন্দুদের হাতে নির্মূল হওয়া থেকে ভারতের মুসলমানদের বাঁচাতে তাই বাদশাহ আহম্মদ শাহ আবদালীর নেতৃত্বে আফগান সৈন্যরা নিজ অর্থ ও নিজ রক্ত দিয়ে লড়েছিল পানিপথের যুদ্ধে। মারাঠাদের শক্তি নির্মূল করার পর আবার তারা নিজ দেশে ফিরে যায়। তেমনি রুশদের আগ্রাসন থেকে আফগান মুসলমানদের বাঁচাতে হাজার হাজার পাকিস্তানি, আরব, চেচেন লড়েছে আফগানিস্তানে গিয়ে। এ হলো মুসলমান হওয়ার দায়ভার। শুধু নামাজ-রোজার মধ্য দিয়ে সে দায়ভার পালিত হয় না, জানমালের কোরবানিও পেশ করতে হয়।
অন্য মুসলমানের বিপদে সাহায্য করায় যদি মুসলমানের জীবনে আগ্রহ না থাকে তবে বুঝতে হবে তার মুসলমান হওয়াতেই দারুণ সমস্যা রয়ে গেছে। আল্লাহপ্রদত্ত ভ্রাতৃত্বের এ বন্ধনকে অস্বীকার করার অর্থ আল্লাহর দেয়া এ পরিচয়কে অস্বীকার করা। সেটি তাই আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে সরাসরি বিদ্রোহ। শরিয়তের বিধানে এ বিদ্রোহ একটি কঠিন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কারণ যে ব্যক্তি মুসলমানদের সাথে নয়, সে নিশ্চিতভাবেই দুশমনদের সাথে। মুসলমানদের সাথে ভ্রাতৃত্বের সে বন্ধন গড়তে হয় ভাষা, বর্ণ, আঞ্চলিকতার ঊর্ধ্বে ওঠে। তাই আরবের আলী (রা:) ও উমর (রা:), ইথিওপিয়ার বেলাল (রা:), পারস্যের সালমান (রা:) এবং গ্রিকের সোহায়েল (রা:) সে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে একাকার হয়ে গিয়েছিলেন। এমন মুসলমানদের নিয়েই আল্লাহপাক গর্ব করেন; ভাষা, বর্ণ, গোত্র ও আঞ্চলিকতার গর্বে ভেসে যাওয়া বর্ণবাদীদের নিয়ে নয়। তাই শুধু মসজিদ, মাদ্রাসা বাড়িয়ে আল্লাহর কাছে প্রিয় হওয়া যায় না, একক উম্মতের চেতনায় ভ্রাতৃত্বও গড়ে তুলতে হয়। সে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে খেলাফতও গড়তে হয়। নইলে আজ যে বিপদ আরাকানের মুসলমানদের ওপর নেমে আসছে সেটি বাংলাদেশের মুসলমানদের ওপরও একদিন নেমে আসবে। সেটি আসবে আল্লাহর পক্ষ থেকে মহা আজাব রূপে।
রোগটি জাতীয়তাবাদের
জাতীয়তাবাদীদের বড় অপরাধ এবং সে সাথে চূড়ান্ত বেঈমানীটি হলো তারা আল্লাহর আরোপিত প্যান-ইসলামিক ভ্রাত্বের পরিচয় মেনে নিতে রাজি নয়। তাদের কাছে বন্ধন বা ভ্রাতৃত্বের নিজস্ব মডেল বা ভিত্তি রয়েছে। সে মডেলটি ভাষা, বর্ণ বা আঞ্চলিকতার ভিত্তিতে। সে মডেলের ভিত্তিতেই তারা দল গড়ে এবং সে দলের রাজনীতি, স্বদেশনীতি ও বিদেশনীতি গড়ে। দেয়ালের সিমেন্ট খসে গেলে তার ইটগুলোও খসে পড়ে। তেমনি মুসলমানদের মধ্য থেকে প্যান-ইসলামিক ভ্রাতৃত্বের মৃত্যু হলে মুসলমানগণও খণ্ডিত হয়। দেহ থেকে হাত-পা খণ্ডিত হলে তাতে ব্যথা-বেদনা থাকে না। তেমনি মুসলিম ভ্রাতৃত্বের বাঁধন ছিঁড়ে গেলে শুধু বিচ্ছিন্নতাই আসে না, খণ্ডিতহ অঙ্গে বেদনাহীন চেতনাহীনতাও আসে। এ জন্যই মিয়ানামারের রোহিঙ্গাদের বিপদে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের চেতনায় কোনরূপ দুঃখ নেই। ভারতীয় নেতা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ লিখেছিলেন, কোন তুর্কি সৈনিকের পায়ে যদি কাঁটা বিদ্ধ হয় আর সে কাঁটার ব্যথা যদি তুমি হৃদয়ে অনুভব না করো তবে খোদার কসম তুমি মুসলমান নও। (মাওলানা আবুল কালাম আযাদ রচনাবলি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)। মাওলানা আযাদ যে সময় এমন কথা লিখেছিলেন তখন খেলাফত বাঁচাতে তুর্কি সৈনিকেরা শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড লড়াই লড়ছিল।
কিন্তু রোহিঙ্গাদের পায়ে আজ কাঁটা বিঁধছে না, বরং গুলিবিদ্ধ হচ্ছে তাদের দেহ। এবং ভস্মীভূত হচ্ছে তাদের ঘরবাড়ি- দোকানপাট। তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের নিজ দেশ থেকে। সে গুলোর বেদনা এবং সে ঘরবাড়ি ভস্মীভূত হওয়ার দুঃখ কি বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা অনুভব করেন? যাদের মধ্যে সে বেদনা নেই তাদের কী মুসলমান বলা যায়? বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, আরকানে মুসলিম নিধন করা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তিনি আরো বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের সুযোগ দেয়া ঠিক হবে না। দায়িত্বহীনতা আর কাকে বলে? অথচ আন্তর্জাতিক নীতি হলো, যখন কোন জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নির্মূল প্রক্রিয়া চলে তখন সেটি আর সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় থাকে না। সেটি আন্তর্জাতিক বিষয়ে পরিণত হয়। এমন প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ তখন অনিবার্য হয়ে পড়ে। তাছাড়া মুসলমান হওয়ার অর্থই হলো দায়িশীলতা, সেটি যেমন আল্লাহর প্রতি, তেমনি প্রতিবেশী মুসলমানদের প্রতি। বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে সে প্রতিবেশী হলো রোহিঙ্গা মুসলিম। বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ কি তেমন দায়িত্বশীল রূপে নিজেদের পরিচয়টি দিতে পারছে?
লেখক : কলামিস্ট
No Comments
Start the ball rolling by posting a comment on this article!
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Name *
Email *
Website
Comment
You may use these HTML tags and attributes:<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <strike> <strong>
Notify me of follow-up comments by email.
Notify me of new posts by email.
Sign me up for the newsletter
আমাদের সাথে থাকুন
উল্লেখযোগ্য পাতা
প্রচ্ছদপরিচিতিযেমন বই তেমনসিরাতুন্নবী (স) সংখ্যাফটোগ্যালারিঅ্যালবামযোগাযোগ
সূচিপত্র
কুরআনের মর্যাদা ও শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠাই হোক মে দিবসের অঙ্গীকারইসলামী আন্দোলনের পথে আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার উপযুক্ত হওয়াই আমাদের কাজসংবাদপত্রের সততা ও নিরপেক্ষতাআমার ভাবনায় মুহাম্মদ কামারুজ্জামানইতিহাসের সাথে ঐতিহ্যের পথেআল কুরআনের অবমাননা জীবন দিয়ে রুখে দিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীর জনতাঅধিকারবঞ্চিত মেহনতি মানুষের মুক্তি কবে?গৃহদাহ থেকে দেশকে বাঁচাতে হবেশহীদ আসাদুল্লাহ তুহিন যে স্মৃতি হৃদয়ে নাড়া দেয়আগামী বাজেটে খড়ক নামবে সাধারণ মানুষের ওপরশহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান স্মৃতির পাতা থেকেশহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের জানাজা এবং জনতার ঢলযুগোপযোগী পরিকল্পনা : বাস্তবায়নই মূল কাজ
সম্পাদকীয়
কুরআনের মর্যাদা ও শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠাই হোক মে দিবসের অঙ্গীকার
12 May 2015 11:55 PM | No Commentsবৈশাখি ঝড়ে মুছে যাক সরকারের দানবীয় রূপ
08 April 2015 11:58 AM | No Comments
বিগত সংখ্যা
Select Month May 2015 April 2015 March 2015 February 2015 January 2015 December 2014 November 2014 October 2014 September 2014 August 2014 July 2014 June 2014 May 2014 April 2014 March 2014 February 2014 January 2014 December 2013 November 2013 October 2013 September 2013 August 2013 July 2013 June 2013 May 2013 February 2013 January 2013 December 2012 November 2012 October 2012 September 2012 August 2012 July 2012 June 2012 May 2012 April 2012 March 2012 February 2012 January 2012 December 2011 November 2011 October 2011 September 2011 August 2011 July 2011 May 2011 October 2009
ধারাবাইহক রচনা
যুদ্ধাপরাধ নয় কুরআনের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়াই আল্লামা সাঈদীর অপরাধ
10 December 2014 12:21 AM | No Commentsযুদ্ধাপরাধ নয় কুরআনের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়াই আল্লামা সাঈদীর অপরাধ
04 November 2014 11:35 PM | No Comments
ইসলামী আন্দোলন দেশে দেশে
মিসরে ইসলামী আন্দোলন ও ইখওয়ানুল মুসলিমুন
01 June 2014 6:03 AM | No Commentsমিসরে ইসলামী আন্দোলন ও ইখওয়ানুল মুসলিমুন
01 April 2014 4:12 AM | No Comments
আলোকিত মানুষ চাই
ভীষণ নয়, চাই ‘ভিশন বাংলাদেশ’
10 December 2013 1:24 AM | No Commentsজ্ঞানের লড়াই এবং একটি খসে পড়া তারা
14 November 2013 3:56 AM | No Comments
বিশেষ রচনা
ইসলামী আন্দোলনের পথে আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার উপযুক্ত হওয়াই আমাদের কাজ
12 May 2015 11:51 PM | No Commentsআমার ভাবনায় মুহাম্মদ কামারুজ্জামান
12 May 2015 11:46 PM | No Comments
ক্যারিয়ার
যুগোপযোগী পরিকল্পনা : বাস্তবায়নই মূল কাজ
12 May 2015 10:33 PM | No Commentsসময় ব্যবস্থাপনা : সময়ের দাবি
08 April 2015 11:19 AM | No Comments
আমাদের যারা দেখেন
ই ছাত্রসংবাদ
দারসুল-কোরআন
কুরআনের আলো মুছে ফেলা যায় না
13 March 2015 6:53 AM | No Commentsনির্যাতিতদের আল্লাহ পুরষ্কৃত করবে।
10 December 2014 2:28 AM | No Comments
দারসুল-হাদিস
সর্বোচ্চ শান্তি ও সুরক্ষা লাভের উপায়
04 February 2015 12:06 PM | No Commentsরাসূলুল্লাহ (সা.) এর আনুগত্য ও অনুকরণের অপরিহার্যতা
10 January 2015 3:05 AM | No Comments
প্রচ্ছদ রচনা
বাংলাদেশ কি অকার্যকর রাষ্ট্র হওয়ার পথে?
08 April 2015 12:30 PM | No Commentsক্ষমতালিপ্সুদের রোষানলে প্রিয় মাতৃভূমি
13 March 2015 6:57 AM | No Comments
ইমেইল সাবক্রিপশন
ইমেইল লিখুন
ফেইসবুকে আমরা
মন্তব্য সমূহ
nishan on যুদ্ধাপরাধ বিচারের নামে তরুণদের ধোঁকা দেয়া হচ্ছেnishan on শিক্ষা বিস্তার ও নিরক্ষরতা দূরীকরণ : রাসূলের (সা) পদ্ধতিToufiq on যুদ্ধাপরাধ বিচারের নামে তরুণদের ধোঁকা দেয়া হচ্ছেRahat on যুদ্ধাপরাধ বিচারের নামে তরুণদের ধোঁকা দেয়া হচ্ছেShahin Fakir on যুদ্ধাপরাধ বিচারের নামে তরুণদের ধোঁকা দেয়া হচ্ছেAbdul Mannan on আমি গর্বিতHaroon Rashid onঅক্টোবার মাসের দারসুল কোরআনSalahuddin Nasim onপরিচিতিdelower on ফটোগ্যালারিsalah uddin sagor onঅ্যালবাম
এ মাসে শহীদ যারা
জানুয়ারি মাসে শাহাদাত বরণ করেছেন যাঁরা
14 January 2014 1:25 AM | No Commentsনভেম্বর মাসে শাহাদাত বরণ করেছেন যারা
21 November 2012 1:30 AM | No Comments
স্মৃতিচারণ
শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের জানাজা এবং জনতার ঢল
12 May 2015 10:36 PM | No Commentsবালাকোট দিবস
12 May 2015 9:51 PM | No Comments
সম্পাদকঃ মো: আতিকুর রহমান, প্রকাশনায়: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ৪৮/১-এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে সম্পাদক কর্তৃক প্রকাশিত
Designed by: chhatrasangbadbd.com
Copyright ছাত্রসংবাদ. All Rights Reserved.
No comments:
Post a Comment