নকশাল মাওবাদী আন্দোলন আর ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ পার্থক্য কি ??
আদর্শিক নাকি শুধুই বিপ্লবের কথা বলে মানুষ হত্যা??
আদর্শিক নাকি শুধুই বিপ্লবের কথা বলে মানুষ হত্যা??
সূফি বরষণ
এক
নকশাল ও মাওবাদী আন্দোলন আর ইসলামের নামে কথিত জঙ্গীবাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি ?? আমি যদি পরিস্কার বাংলায় বলি কোনো পার্থক্য নাই॥সন্ত্রাসীর কোনো আদর্শ বা মতবাদ থাকতে পারে না ॥ এদের সবার একই কর্ম মানুষ হত্যা করা ॥ আর যাই হোক মানুষ হত্যাকারীদের আমি সব সময় ঘৃণার চোখে দেখি ॥ সেটা নকশাল নামে হোক, ইসলামের নামে কথিত জঙ্গীবাদ হোক, আই এস হোক, ইহুদিবাদ হোক আর বৌদ্ধদের 969 আন্দোলন হোক ॥
সেটা যে নামেই ডাকা হোক হত্যাকারী হত্যাকারী হয়েই থাকে ॥ সে কোনদিন মানবিক মূল্যবোধ সম্পূর্ণ সুস্থ বিবেকের মানুষ হতে পারে না ॥ তা না হলে নকশাল নেতা কানু স্যানাল আত্মহত্যা করেছিল কেন ॥ জঙ্গলে থেকে মানুষ হত্যা করে দেশের মঙ্গল করে ফেলবেন বলে তরুণ তরুণীদের বিপ্লবের স্বপ্ন দেখিয়ে বিপদগামী করেছিলেন ॥
আর সেই স্বপ্নদ্রষ্টা কেন আত্মহত্যা করে ॥ কারণ সবই মানুষ হত্যার পাপের ফল॥ এর প্রতিফলন দেখি আমরা আর এক জঙ্গী নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ক্ষেত্রেও ॥ সে সিলেট থেকে গ্রেপ্তারের পূর্বে আত্মহত্যা করতে চেষ্টা করেছিল ॥ পৃথিবীতে কোনো হত্যাকারীই সমাজের আদর্শ প্রচারক হয়নি কারণ হত্যাকারী নিজের জীবন দিয়েই তার পাপের দেনা সুদ করে যায়॥ কিন্তু এসব বিপদগামী মানুষের ভ্রান্ত বিপ্লবের ক্ষতের মাশুল দিতে হয় সমাজকে যুগ যুগ ধরে॥ নকশালবাদী ও মাওবাদীরা শ্রেণি শত্রু খতমের নামে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ কে হত্যা করছে ॥ তেমনি জঙ্গীরা দুই একটা পটকা বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে এরা কোন ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলছে ??!! ইসলামের কোথায় এদেরকে মানুষ হত্যা করার আদেশ দিয়েছে ॥ ইসলাম প্রতিষ্ঠা নয় এর পেছনে কাজ করে কোটি কোটি টাকার অর্থ প্রাপ্তি ॥ ভবিষ্যতে প্রকাশিত হবে এদের অর্থ যোগান দাতা কারা॥ আসলে জঙ্গী আর নকশালবাদীর মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই॥ এদের আইডি একটিই সন্ত্রাসী ॥ ইসলাম বা সমাজতন্ত্র যে কোনো আদর্শ সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে হলে মানুষকে বুকেজড়িয়ে আদর্শ বুঝিয়েই করতে হবে ॥ সেটা বন্দুকের নল বা বোমা মেরে সম্ভব নয়॥ আর কোনদিন সম্ভব হবেও না ॥
সমরেশ মজুমদারের কালবেলা উপন্যাসে সম্ভ্রান্ত পরিবারের শিক্ষিত অনিমেষ পঙ্গু হয়ে বিশেষ ক্ষমায় জেল থেকে মুক্তি পাই॥ আর আমার প্রিয় লেখক মহাশ্বেতা দেবী তার ‘’’হাজার চুরাশির মা’’’ উপন্যাসে উচ্চবিত্ত পরিবারের নিহত নকশাল নেতা প্রীতির মা ছেলের স্মৃতি খোঁজে বেড়ায় আর নির্যাতিত হয়ে জেল থেকে ফিরে নন্দীনি ॥ এই উপন্যাস কে নিয়ে ইয়াসপাল শার্মা ১৯৯৮ সালে মুভিও বানায় ॥
অরুন্ধতী রায় বুকার পুরস্কার জয়ী “গড অব স্মল থিংস্” উপন্যাসে একটি চরিত্র নকশাল আন্দোলনে যোগ দেয়। সাম্প্রতিক পরিচালক দেবাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় ‘নকশাল’ সিনেমা মুক্তি পেয়েছে ॥ অনির্বাণ আর সিদ্ধার্থ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী এবং ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়॥ নকশাল নিয়ে শংকর বসুর কমুনিস-ও অনেকটাই বেলেঘাটা কেন্দ্রিক। সেদিক থেকে অশোককুমার মুখোপাধ্যায় , ‘আটটা-ন’টার সূর্য’ অনেক সামগ্রিক॥
শিলিগুড়ির চারু মজুমদার রাজশাহীর হাগুরিয়া গ্রামের জমিদার পরিবারে জন্ম নেয়া পাবনা এডোয়ার্ড কলেজের ছাত্রের হাত ধরেই ১৯৬৭ সালের ২৫ মে নকশালবাড়ি গ্রামে নকশাল নামের উগ্র সন্ত্রাসী আন্দোলনের সূচনা হয় ॥ তাঁর সহযোদ্ধা নকশাল নেতা কানু স্যানাল আত্মহত্যা করেছিল ॥ আর চারু মজুমদারও বন্দি অবস্থায় নিহত হয়॥ আরও অনেক বিখ্যাত নকশাল কমরেড
নিহত হয়॥ যেমনি জীবন হারায় বাংলাদেশের অনেক জঙ্গী নেতা ॥
এদের কেউ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে না বরং ঘৃণা করে ॥ আর কালের গর্ভে হারিয়ে যায় অনেক কমরেড ও জঙ্গীর নাম ॥ কারণ আবর্জনা আবর্জনাই থাকে কেউ আর সময়ের আবর্তনে এদের মনে রাখে না ॥
লেখক-মানবাধিকারকর্মী অরুন্ধতী রায় গত মে মাসে ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এতে তিনি কথা বলেছেন জাতপ্রথা, ভূমি সমস্যা ও প্রগতিবাদী বা বিপ্লবী আন্দোলন নিয়ে।
অরুন্ধতী মনে করেন, ভারতীয় সমাজে জাতিপ্রথা যে ভূমিকা পালন করছে, বামপন্থীদের এখন তার বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্মূল্যায়ন করা দরকার। শুধু নেতৃত্বের পরিবর্তন করে বামদের ভাগ্যে কোনো নাটকীয় পরিবর্তন আসবে না। অরুন্ধতী বিষাদ নিয়ে বলেন, ষাটের দশক ও সত্তরের দশকের তুলনা করলে এখনকার ভূমি ঘিরে চলা বিতর্ককে আর বিপ্লবী বলা যায় না।
“যখন নকশাল আন্দোলন শুরু হয় এবং জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলছিল, তখন ইন্দিরা গান্ধীর এক সমালোচক বলেছিলেন, তারা কী বলছে? তারা সামাজিক ন্যায়বিচারের কথা বলছে, জমির পুনর্বণ্টনের কথা বলছে, কৃষকের কাছে জমি দেওয়া এবং এ রকম আরো অনেক কথা বলছে। আর এখন, এমনকি সবচেয়ে ‘বিপ্লবী’ আন্দোলনও কে বলে আদিবাসীদের জমি তাদের হাতেই ছেড়ে দেওয়ার দাবি করছে,” বলেন অরুন্ধতী॥
দুই
নকশাল কি:
নকশাল আন্দোলন একটি মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন উগ্র সন্ত্রাসী কমিউনিস্ট আন্দোলনের নাম। বিংশ শতাব্দীর সপ্তম দশকে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ি থেকে শুরু হয়ে এটি ধীরে ধীরে ছত্রিশঘড় এবং অন্ধ্র প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমে এটি একটি সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনেরূপ নিয়েছিল।
নকশাল বা নকশালবাদী বলতে উগ্র বামপন্থী দলগুলোকে নির্দেশ করা হয়। এসব দলের জন্ম হয়েছিল চিন-সোভিয়েত(son of soviet split) ভাঙনের সময়। মতাদর্শগত ভাবে এরা মাও সে তুং-এর পদাঙ্ক অনুসরণকারী। এরা মার্ক্সবাদ এবং লেনিনবাদে বিশ্বাসী॥ ২০০৪ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) নামক দল প্রতিষ্ঠা করে ॥ ভারতের সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা “রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং” (“র”) এর হিসেব অনুযায়ী প্রায় ২০০০০ মাওবাদী সক্রিয় ভাবে এ কার্যক্রমে যুক্ত আছে। আরও ৫০ হাজার সদস্য এদের সহযোগীতা করে॥ তাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবে শঙ্কিত হয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীগণ মাওবাদীদের কে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিরুদ্ধে সর্বাপেক্ষা বৃহত্তর হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। উল্লেখ যে নকশালই মাওবাদী আন্দোলনের নতুন রূপ ॥
সিপিআই (মাওবাদী) এবং আরও কিছু নকশালপন্থী দলকে ভারত সরকার সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত সরকার নকশাল নির্মূলে তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করে। এতে উগ্রবামপন্থী আক্রান্ত অঞ্চল ছত্তিশগড়,উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খন্ড, বিহার,উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে, তাদের পলায়নের সব রাস্তা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিহাস:
নকশাল শব্দটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি ছোটগ্রাম ’’’নকশালবাড়ি’’’ থেকে।এখানে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র একাংশ ১৯৬৭ সালে তাদের নেতৃবৃন্দের বিরোধিতা করে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী) একটি পৃথক উগ্র বামপন্থী দল গঠন করেন। এ বিপ্লবী দলের নেতৃত্বে ছিলেন চারু মজুমদার এবং কানু স্যানাল। এ বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল ১৯৬৭ সালের ২৫ মে ॥ চারু মজুমদার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মাও সে তুং এর অনুসারী ছিলেন। তিনি মনে করতেন ভারতের কৃষক এবং গরিব মানুষদের মাও সে তুং এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে শ্রেণিশত্রুদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করা প্রয়োজন। তার কারণ তারাই সর্বহারা কৃষক শ্রমিকদের শোষণ করে। তিনি নকশালবাড়ি আন্দোলনকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তার লেখনীর মাধ্যমে। তার বিখ্যাত রচনা হল ‘’’হিস্টরিক এইট ডকুমেন্টস্’’’, যা নকশাল মতাদর্শের ভিত্তি রচনা করে।পরবর্তীতে তারা সিপিই(এম) থেকে বেড়িয়ে ‘’’অল ইন্ডিয়া কমিটি অব কমিউনিস্ট রেভুলশনারী’’’(এ আই সি সি সি আর) গঠন করেন। ১৯৬৯ সালে এ আই সি সি সি আর থেকে জন্ম নেয় কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)। বাস্তবে সকল নকশালবাদী দলেরই উদ্ভব হয়েছে সিপিআই(এম এল) থেকে । তবে “মাওয়াবাদী কমিউনিস্ট সেন্টার্” নামে একটি ভিন্ন মতাদর্শের দল ছিল। তাদের উদ্ভব হয়েছির “দক্ষণদেশ গ্রুপ” নামে একটি সংগঠন থেকে। পরবর্তীতে তারা “পিপলস ওয়ার গ্রুপ” এর সাথে যুক্ত হয়ে “কমিউনিস্টি পার্টি অব ইন্ডিয়া”(মাওয়াবাদী) গঠন করে। এছাড়া ভিন্ন মতাদর্শের আর একটি দল হল “অন্ধ্র রেভুলশনারী কমিউনিস্টস্” এবং তারা “টি. নাগি রেড্ডি”-র “মাস লাইন” মতবাদের অনুসারী ছিল।
১৯৭০ সালের দিকে এ আন্দোলন অন্তর্দ্বন্দের কারণে কয়েকটি বিরোধী অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালের দিকে প্রায় ৩০ টি নকশালবাদী দল সক্রিয় ছিল এবং তাদের জনবল ছিল প্রায় ৩০ হাজার ॥ ২০০৪ সাল ভারতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেব মতে প্রায় ৯৩০০ নকশালবাদী বা মাওবাদী ক্যাডার সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের কাছে প্রায় ৬৫০০ অনিবন্ধিত অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে, এছাড়া দেশী অস্ত্র তো আছেই। তারা তাদের কর্মকান্ড ভারতের ভারতের ৬০৪ টি জেলার ভেতর ১৬০ টিতে বিস্তার করেছে॥
তিন
একটি বড় অংশ লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বিপ্লবী কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছিল। চারু মজুমদার বলেছিলেন বিপ্লবী কার্যক্রম শুধুমাত্র গ্রামাঞ্চলে চালিয়ে গেলেই চলবে না, বরং একে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি নকশালদের শ্রেণীশত্রু খতম করার নির্দেশ দেন। এ শ্রেণীশত্রুদের মধ্যে যেমন ছিল ভূস্বামী তেমনি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পুলিশ অফিসার, রাজনীতিবিদ এবং আরও অনেকে।
সে সময় কলকাতার সব স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নকশালপন্থী ছাত্ররা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে নিয়ে তার মেশিন শপে পুলিশদের সাথে লড়ার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করেছিল। প্রেসিডেন্সি কলেজ ছিল তাদের সদর দফতর।
নকশালরা অল্পসময়ের মধ্যে ভারতের শিক্ষিত সমাজের ব্যপক সমর্থন পেয়েছিল। দিল্লীর “সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ” তাদের বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।
এক
নকশাল ও মাওবাদী আন্দোলন আর ইসলামের নামে কথিত জঙ্গীবাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি ?? আমি যদি পরিস্কার বাংলায় বলি কোনো পার্থক্য নাই॥সন্ত্রাসীর কোনো আদর্শ বা মতবাদ থাকতে পারে না ॥ এদের সবার একই কর্ম মানুষ হত্যা করা ॥ আর যাই হোক মানুষ হত্যাকারীদের আমি সব সময় ঘৃণার চোখে দেখি ॥ সেটা নকশাল নামে হোক, ইসলামের নামে কথিত জঙ্গীবাদ হোক, আই এস হোক, ইহুদিবাদ হোক আর বৌদ্ধদের 969 আন্দোলন হোক ॥
সেটা যে নামেই ডাকা হোক হত্যাকারী হত্যাকারী হয়েই থাকে ॥ সে কোনদিন মানবিক মূল্যবোধ সম্পূর্ণ সুস্থ বিবেকের মানুষ হতে পারে না ॥ তা না হলে নকশাল নেতা কানু স্যানাল আত্মহত্যা করেছিল কেন ॥ জঙ্গলে থেকে মানুষ হত্যা করে দেশের মঙ্গল করে ফেলবেন বলে তরুণ তরুণীদের বিপ্লবের স্বপ্ন দেখিয়ে বিপদগামী করেছিলেন ॥
আর সেই স্বপ্নদ্রষ্টা কেন আত্মহত্যা করে ॥ কারণ সবই মানুষ হত্যার পাপের ফল॥ এর প্রতিফলন দেখি আমরা আর এক জঙ্গী নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ক্ষেত্রেও ॥ সে সিলেট থেকে গ্রেপ্তারের পূর্বে আত্মহত্যা করতে চেষ্টা করেছিল ॥ পৃথিবীতে কোনো হত্যাকারীই সমাজের আদর্শ প্রচারক হয়নি কারণ হত্যাকারী নিজের জীবন দিয়েই তার পাপের দেনা সুদ করে যায়॥ কিন্তু এসব বিপদগামী মানুষের ভ্রান্ত বিপ্লবের ক্ষতের মাশুল দিতে হয় সমাজকে যুগ যুগ ধরে॥ নকশালবাদী ও মাওবাদীরা শ্রেণি শত্রু খতমের নামে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ কে হত্যা করছে ॥ তেমনি জঙ্গীরা দুই একটা পটকা বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে এরা কোন ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলছে ??!! ইসলামের কোথায় এদেরকে মানুষ হত্যা করার আদেশ দিয়েছে ॥ ইসলাম প্রতিষ্ঠা নয় এর পেছনে কাজ করে কোটি কোটি টাকার অর্থ প্রাপ্তি ॥ ভবিষ্যতে প্রকাশিত হবে এদের অর্থ যোগান দাতা কারা॥ আসলে জঙ্গী আর নকশালবাদীর মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই॥ এদের আইডি একটিই সন্ত্রাসী ॥ ইসলাম বা সমাজতন্ত্র যে কোনো আদর্শ সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে হলে মানুষকে বুকেজড়িয়ে আদর্শ বুঝিয়েই করতে হবে ॥ সেটা বন্দুকের নল বা বোমা মেরে সম্ভব নয়॥ আর কোনদিন সম্ভব হবেও না ॥
সমরেশ মজুমদারের কালবেলা উপন্যাসে সম্ভ্রান্ত পরিবারের শিক্ষিত অনিমেষ পঙ্গু হয়ে বিশেষ ক্ষমায় জেল থেকে মুক্তি পাই॥ আর আমার প্রিয় লেখক মহাশ্বেতা দেবী তার ‘’’হাজার চুরাশির মা’’’ উপন্যাসে উচ্চবিত্ত পরিবারের নিহত নকশাল নেতা প্রীতির মা ছেলের স্মৃতি খোঁজে বেড়ায় আর নির্যাতিত হয়ে জেল থেকে ফিরে নন্দীনি ॥ এই উপন্যাস কে নিয়ে ইয়াসপাল শার্মা ১৯৯৮ সালে মুভিও বানায় ॥
অরুন্ধতী রায় বুকার পুরস্কার জয়ী “গড অব স্মল থিংস্” উপন্যাসে একটি চরিত্র নকশাল আন্দোলনে যোগ দেয়। সাম্প্রতিক পরিচালক দেবাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় ‘নকশাল’ সিনেমা মুক্তি পেয়েছে ॥ অনির্বাণ আর সিদ্ধার্থ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী এবং ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়॥ নকশাল নিয়ে শংকর বসুর কমুনিস-ও অনেকটাই বেলেঘাটা কেন্দ্রিক। সেদিক থেকে অশোককুমার মুখোপাধ্যায় , ‘আটটা-ন’টার সূর্য’ অনেক সামগ্রিক॥
শিলিগুড়ির চারু মজুমদার রাজশাহীর হাগুরিয়া গ্রামের জমিদার পরিবারে জন্ম নেয়া পাবনা এডোয়ার্ড কলেজের ছাত্রের হাত ধরেই ১৯৬৭ সালের ২৫ মে নকশালবাড়ি গ্রামে নকশাল নামের উগ্র সন্ত্রাসী আন্দোলনের সূচনা হয় ॥ তাঁর সহযোদ্ধা নকশাল নেতা কানু স্যানাল আত্মহত্যা করেছিল ॥ আর চারু মজুমদারও বন্দি অবস্থায় নিহত হয়॥ আরও অনেক বিখ্যাত নকশাল কমরেড
নিহত হয়॥ যেমনি জীবন হারায় বাংলাদেশের অনেক জঙ্গী নেতা ॥
এদের কেউ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে না বরং ঘৃণা করে ॥ আর কালের গর্ভে হারিয়ে যায় অনেক কমরেড ও জঙ্গীর নাম ॥ কারণ আবর্জনা আবর্জনাই থাকে কেউ আর সময়ের আবর্তনে এদের মনে রাখে না ॥
লেখক-মানবাধিকারকর্মী অরুন্ধতী রায় গত মে মাসে ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এতে তিনি কথা বলেছেন জাতপ্রথা, ভূমি সমস্যা ও প্রগতিবাদী বা বিপ্লবী আন্দোলন নিয়ে।
অরুন্ধতী মনে করেন, ভারতীয় সমাজে জাতিপ্রথা যে ভূমিকা পালন করছে, বামপন্থীদের এখন তার বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্মূল্যায়ন করা দরকার। শুধু নেতৃত্বের পরিবর্তন করে বামদের ভাগ্যে কোনো নাটকীয় পরিবর্তন আসবে না। অরুন্ধতী বিষাদ নিয়ে বলেন, ষাটের দশক ও সত্তরের দশকের তুলনা করলে এখনকার ভূমি ঘিরে চলা বিতর্ককে আর বিপ্লবী বলা যায় না।
“যখন নকশাল আন্দোলন শুরু হয় এবং জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলছিল, তখন ইন্দিরা গান্ধীর এক সমালোচক বলেছিলেন, তারা কী বলছে? তারা সামাজিক ন্যায়বিচারের কথা বলছে, জমির পুনর্বণ্টনের কথা বলছে, কৃষকের কাছে জমি দেওয়া এবং এ রকম আরো অনেক কথা বলছে। আর এখন, এমনকি সবচেয়ে ‘বিপ্লবী’ আন্দোলনও কে বলে আদিবাসীদের জমি তাদের হাতেই ছেড়ে দেওয়ার দাবি করছে,” বলেন অরুন্ধতী॥
দুই
নকশাল কি:
নকশাল আন্দোলন একটি মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন উগ্র সন্ত্রাসী কমিউনিস্ট আন্দোলনের নাম। বিংশ শতাব্দীর সপ্তম দশকে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ি থেকে শুরু হয়ে এটি ধীরে ধীরে ছত্রিশঘড় এবং অন্ধ্র প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমে এটি একটি সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনেরূপ নিয়েছিল।
নকশাল বা নকশালবাদী বলতে উগ্র বামপন্থী দলগুলোকে নির্দেশ করা হয়। এসব দলের জন্ম হয়েছিল চিন-সোভিয়েত(son of soviet split) ভাঙনের সময়। মতাদর্শগত ভাবে এরা মাও সে তুং-এর পদাঙ্ক অনুসরণকারী। এরা মার্ক্সবাদ এবং লেনিনবাদে বিশ্বাসী॥ ২০০৪ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) নামক দল প্রতিষ্ঠা করে ॥ ভারতের সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা “রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং” (“র”) এর হিসেব অনুযায়ী প্রায় ২০০০০ মাওবাদী সক্রিয় ভাবে এ কার্যক্রমে যুক্ত আছে। আরও ৫০ হাজার সদস্য এদের সহযোগীতা করে॥ তাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবে শঙ্কিত হয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীগণ মাওবাদীদের কে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিরুদ্ধে সর্বাপেক্ষা বৃহত্তর হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। উল্লেখ যে নকশালই মাওবাদী আন্দোলনের নতুন রূপ ॥
সিপিআই (মাওবাদী) এবং আরও কিছু নকশালপন্থী দলকে ভারত সরকার সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত সরকার নকশাল নির্মূলে তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করে। এতে উগ্রবামপন্থী আক্রান্ত অঞ্চল ছত্তিশগড়,উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খন্ড, বিহার,উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে, তাদের পলায়নের সব রাস্তা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিহাস:
নকশাল শব্দটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি ছোটগ্রাম ’’’নকশালবাড়ি’’’ থেকে।এখানে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র একাংশ ১৯৬৭ সালে তাদের নেতৃবৃন্দের বিরোধিতা করে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী) একটি পৃথক উগ্র বামপন্থী দল গঠন করেন। এ বিপ্লবী দলের নেতৃত্বে ছিলেন চারু মজুমদার এবং কানু স্যানাল। এ বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল ১৯৬৭ সালের ২৫ মে ॥ চারু মজুমদার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মাও সে তুং এর অনুসারী ছিলেন। তিনি মনে করতেন ভারতের কৃষক এবং গরিব মানুষদের মাও সে তুং এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে শ্রেণিশত্রুদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করা প্রয়োজন। তার কারণ তারাই সর্বহারা কৃষক শ্রমিকদের শোষণ করে। তিনি নকশালবাড়ি আন্দোলনকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তার লেখনীর মাধ্যমে। তার বিখ্যাত রচনা হল ‘’’হিস্টরিক এইট ডকুমেন্টস্’’’, যা নকশাল মতাদর্শের ভিত্তি রচনা করে।পরবর্তীতে তারা সিপিই(এম) থেকে বেড়িয়ে ‘’’অল ইন্ডিয়া কমিটি অব কমিউনিস্ট রেভুলশনারী’’’(এ আই সি সি সি আর) গঠন করেন। ১৯৬৯ সালে এ আই সি সি সি আর থেকে জন্ম নেয় কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)। বাস্তবে সকল নকশালবাদী দলেরই উদ্ভব হয়েছে সিপিআই(এম এল) থেকে । তবে “মাওয়াবাদী কমিউনিস্ট সেন্টার্” নামে একটি ভিন্ন মতাদর্শের দল ছিল। তাদের উদ্ভব হয়েছির “দক্ষণদেশ গ্রুপ” নামে একটি সংগঠন থেকে। পরবর্তীতে তারা “পিপলস ওয়ার গ্রুপ” এর সাথে যুক্ত হয়ে “কমিউনিস্টি পার্টি অব ইন্ডিয়া”(মাওয়াবাদী) গঠন করে। এছাড়া ভিন্ন মতাদর্শের আর একটি দল হল “অন্ধ্র রেভুলশনারী কমিউনিস্টস্” এবং তারা “টি. নাগি রেড্ডি”-র “মাস লাইন” মতবাদের অনুসারী ছিল।
১৯৭০ সালের দিকে এ আন্দোলন অন্তর্দ্বন্দের কারণে কয়েকটি বিরোধী অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালের দিকে প্রায় ৩০ টি নকশালবাদী দল সক্রিয় ছিল এবং তাদের জনবল ছিল প্রায় ৩০ হাজার ॥ ২০০৪ সাল ভারতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেব মতে প্রায় ৯৩০০ নকশালবাদী বা মাওবাদী ক্যাডার সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের কাছে প্রায় ৬৫০০ অনিবন্ধিত অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে, এছাড়া দেশী অস্ত্র তো আছেই। তারা তাদের কর্মকান্ড ভারতের ভারতের ৬০৪ টি জেলার ভেতর ১৬০ টিতে বিস্তার করেছে॥
তিন
একটি বড় অংশ লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বিপ্লবী কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছিল। চারু মজুমদার বলেছিলেন বিপ্লবী কার্যক্রম শুধুমাত্র গ্রামাঞ্চলে চালিয়ে গেলেই চলবে না, বরং একে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি নকশালদের শ্রেণীশত্রু খতম করার নির্দেশ দেন। এ শ্রেণীশত্রুদের মধ্যে যেমন ছিল ভূস্বামী তেমনি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পুলিশ অফিসার, রাজনীতিবিদ এবং আরও অনেকে।
সে সময় কলকাতার সব স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নকশালপন্থী ছাত্ররা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে নিয়ে তার মেশিন শপে পুলিশদের সাথে লড়ার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করেছিল। প্রেসিডেন্সি কলেজ ছিল তাদের সদর দফতর।
নকশালরা অল্পসময়ের মধ্যে ভারতের শিক্ষিত সমাজের ব্যপক সমর্থন পেয়েছিল। দিল্লীর “সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ” তাদের বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।
এরপর সরকার নকশালদের কে শক্ত হাতে দমনের সিদ্ধান্ত নেয়। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় নকশালদের উপর প্রতি আক্রমণের নির্দেশ দেন। পুলিশকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছিল নির্বিচারে হত্যা এবং অকারণে যে কাউকে বন্দী করার ক্ষমতা।
সেই সময় মাত্র এক মাসের ভেতরে সরকার নকশাল আন্দোলন দমন করেছিল। “ নকশালদের শক্ত হাতে দমন করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই” ভারত সরকার এবং পুলিশের মনোভাব ছিল এমনি। তারা দেশের জনগন কে এ কথাও ভাল ভাবে বুঝিয়েছিল যে “দেশ এখন ঐ চরমপন্থীদের সাথে গৃহযুদ্ধে নেমেছে, এ যুদ্ধে গণতন্ত্রের নামে পরিহাসের কোন স্থান নেই। কেননা ঐ চরমপন্থীদের কাছে গণত্ন্ত্র মূল্যহীন”। এর ফলে দেশবাসীর কাছে নকশালদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যায়, আর তাদের প্রতি সহানুভূতিশীলরা মুখ ফিরিয়ে নেয়।
এছাড়া অর্ন্তকোন্দলের কারণে আন্দোলনে ছেদ পড়ে। দলের একটি বড় অংশ চারু মজুমদারের নির্দেশিত পথের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ১৯৭১ সালে সিপিআই(এম এল) ভেঙে দু টুকরো হয়ে যায়। চারু মজুমদারের দল থেকে সত্য নারায়ন সিং বেরিয়ে যান। ১৯৭২ সালে চারু মজুমদার পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এবং আলীপুর জেলে নিহত হন। কানু স্যানাল ২০১০ সালের ২৩শে মার্চ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ী থানার হাতিঘিষা গ্রামের নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
২০০৯ সালের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের লালগড়ে পুলিশদের তাড়িয়ে দেয় এবং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কর্মিদের উপর হামলা চালায়। এই এলাকায় মাওবাদী জঙ্গীরা তাদের প্রভাব বাড়াচ্ছে। রাজ্য সরকার জুনের প্রথম দিকে পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে অভিযান চারিয়ে লালগড় পুনরুদ্ধার করে। মাওবাদী নেতা কিষেন জি এক সাক্ষাতকারে বলেন- “তারা পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন বাম এবং তাদের পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে নিজেদের জন্য মুক্তাঞ্চল গড়ে তুলতে চায়। আর তারই শুরু হিসেবে তারা লালগড়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ১৯৭০ সালের পরে তারা আবার সংগঠিত হচ্ছে ॥ মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ
এছাড়া অর্ন্তকোন্দলের কারণে আন্দোলনে ছেদ পড়ে। দলের একটি বড় অংশ চারু মজুমদারের নির্দেশিত পথের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ১৯৭১ সালে সিপিআই(এম এল) ভেঙে দু টুকরো হয়ে যায়। চারু মজুমদারের দল থেকে সত্য নারায়ন সিং বেরিয়ে যান। ১৯৭২ সালে চারু মজুমদার পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এবং আলীপুর জেলে নিহত হন। কানু স্যানাল ২০১০ সালের ২৩শে মার্চ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ী থানার হাতিঘিষা গ্রামের নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
২০০৯ সালের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের লালগড়ে পুলিশদের তাড়িয়ে দেয় এবং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কর্মিদের উপর হামলা চালায়। এই এলাকায় মাওবাদী জঙ্গীরা তাদের প্রভাব বাড়াচ্ছে। রাজ্য সরকার জুনের প্রথম দিকে পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে অভিযান চারিয়ে লালগড় পুনরুদ্ধার করে। মাওবাদী নেতা কিষেন জি এক সাক্ষাতকারে বলেন- “তারা পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন বাম এবং তাদের পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে নিজেদের জন্য মুক্তাঞ্চল গড়ে তুলতে চায়। আর তারই শুরু হিসেবে তারা লালগড়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ১৯৭০ সালের পরে তারা আবার সংগঠিত হচ্ছে ॥ মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ
No comments:
Post a Comment