জামায়াতের ইফতার ...
ইসলামী রাজনীতির নতুন মেরুকরন ॥
দেরিতে হলেও জামাত ও আলেমদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে ????
সূফি বরষণ
জামায়াতে ইসলামীর সাথে দেশের পীর ওলামা মাশায়েক দেওবন্দী আলেম এবং কওমী আলেমদের দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দীর ভুল বুঝাবুঝির অবসান হতে চলেছে॥ ইতিমধ্যেই দেশে ইসলামী রাজনীতির নতুন করে মেরুকরন শুরু হয়েছে ॥ দীর্ঘকাল যেসব পীর আলেম ওলামা মাশায়েক জামাতের নাম শুনলে গায়ে জ্বালা করতো আর মওদুদীবাদী বলে কাদা ছুড়াছুড়ি করতো ॥ আরও বলতো জামাত কোনো আলেমদের দল নয়?! কিন্তু কোনো সময় জামাতের পক্ষ থেকে তাদের প্রতিবাদ করা হয়নি ॥ মনেহয় এরই সুফল পেতে শুরু করেছে জামাত॥ দেশের প্রধান বৃহত্তর ইসলামী দল হিসেবে জামাতকে আরও আগেই অন্যান্য ধর্মীয় দল গুলোর সাথে দূরত্ব কমিয়ে আনা উচিত ছিল ॥ সরকারের রক্ত চক্ষু আর গোয়েন্দাদের কড়া নজরদারিকে উপেক্ষা করে এই সব পীর আলেম ওলামা মাশায়েকদের সাহসী উপস্হিতি বিরাট প্রংশার দাবি রাখে॥ অনেক আগেই জামাতের উচিত ছিল এসব সম্মতি আলেমদের লেখা প্রকাশের জন্য তাদের মিডিয়ায় সুযোগ দেয়া, জামাতের হাসপাতালে চিকিত্সার বিশেষ ব্যবস্হা রাখা, ইসলামী ব্যাংকের শরীয়াহ বোর্ডের সদস্য হিসেবে রাখার ব্যবস্হা করা॥ শর্ষিণা গাউসিয়া বি-বাড়িয়ার পীর সাহেবদের উপস্হিতির মাধ্যমে প্রমাণ হলো জামাত পীরদের সাথেও দূরত্ব কমিয়ে এনেছে ॥ আগে দেশের সব আলেম ওলামা পীর মাশায়েকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন এবং তাদের সুখ দুঃখের খোঁজ খবর নিতেন শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা ॥
অদুর ভবিষ্যতে হয়তো এর মাধ্যমে আমরা দেখতে পাবো জামাত বৃহত্তর ইসলামী ঐক্য গড়ে তুলেছে ॥ আজ দেশের গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য ঐক্য খুবই জরুরী ॥
বর্তমানে ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন এমন অসংখ্য নেতা জামায়াতের ডাকা ইফতারে অংশ নিয়েছেন হাস্যোজ্জ্বল ভূমিকায়। হাত নেড়ে মোসাফা করেছেন জামায়াত নেতাদের সঙ্গে। পাশাপাশি বসে একে-অপরের খোঁজও নিলেন । গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত জামায়াত আয়োজিত ইফতার মাহফিলের।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ইফতার শুরুর দুই মিনিটের মধ্যে অাসলেও কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা অাসলেন অনেকটা অাগেই। জামাতের নায়েবে অামির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এসেছেন ইফতারের খানিকটা অাগে।
তবে সবচেয়ে অাগ্রহের সঙ্গে যাদের দেখা গেছে তারা হলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নায়েব অামির মাওলানা অাবদুর রব ইউসূফী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা রেজাউল করিম, সহ-সভাপতি মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাওলানা রশিদ অাহমদ এবং যুব জমিয়ত ঢাকা মহানগরী যুগ্ম অাহ্বায়ক মাওলানা শফিকুর রহমান। অাইম্মাহ পরিষদের অাহ্বায়ক, ফয়জুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মহিউদ্দীন রাব্বানীও প্রায় একই সময়ে ইফতারে অংশ নেন।
জমিয়ত প্রসঙ্গে জানা গেছে, এই দলটি শুরু থেকে জামায়াতের বিরোধিতা করেছে এবং সবচেয়ে অগ্রগণ্য সমালোচনাকারীও এ দলটি। সাড়ম্বরে জামায়াতের ইফতারে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মাওলানা রশিদ অাহমদ জানান, দাওয়াত পেয়েছেন এবং ২০ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে তারা এসেছেন ইফতারে।
মঞ্চে উপবিষ্ট জামাত নেতার সঙ্গে মাওলানা নেজামী ও মাওলানা ইউসূফীই নয় শুধু , ইসলামী ঐক্যজোটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক অামিনী জীবিতকালীন তুমুল জামায়াতবিরোধীতা করলেও দলটির বর্তমান কমিটির চেয়ারম্যান মাওলানা অাবদুল লতিফ নেজামী ও মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ইফতারে অংশ নেন॥ এসময় ইসলামী ঐক্যজোটের অারও তিনজন নেতাকে ইফতারে অংশ নিতে দেখা যায়। ২০ দলীয় জোটের শরিক না হলেও বাংলাদেশ খেলাফত অান্দোলনের অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপক। দলের জামায়াতপন্থী মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত থাকলেও দলের অন্যতম নেতা মাওলানা ফখরুল ইসলামসহ কয়েকজন নেতা ইফতারে অংশ নেন।
ইফতারের কিছু সময় অাগে মঞ্চে অাসেন কওমিপন্থী দল খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব অধ্যাপক অাহমদ অাবদুল কাদের। রাজনীতিকদের বাইরে সাধারণ অালেমদেরও অংশগ্রহণ ছিল জামায়াতের ইফতারে। আলেমদের মধ্যে উপস্থিত
ছিলেন, তৌহিদি জনতা পরিষদের অাহ্বায়ক মাওলানা অাজিজুল রহমান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আবদুর রহমান চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, শর্ষিণা দরবার শরিফের পীর মাওলানা শাহ আরিফ বিল্লাহ, ওলামা-মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সভাপতি মাওলানা জয়নাল আবেদীন ও সেক্রেটারি মাওলানা ড. খলিলুর রহমান মাদানী, ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটির আমীর ও বি-বাড়িয়ার পীর মাওলানা আজিজুর রহমান আজিজ, তৌহিদী জনতা পরিষদের মহাসচিব মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, তা’মীরুল কামিল মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল ড. আবু ইউসুফ, গাউসিয়া দরবার শরিফের পীর মুফতি মাওলানা ড. আবদুল কাইয়ুম আজহারী, কুরআন শিক্ষা সোসাইটির সভাপতি মাওলানা আবদুস শহীদ নাসিম। মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহর, শামীম সাঈদী॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ
No comments:
Post a Comment