Tuesday 30 June 2015

শুভ জন্মদিন প্রাণের ঢাবি ॥গণতন্ত্রের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই পারে আওয়ামী দুঃশাসনের কবল থেকে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ॥

শুভ জন্মদিন প্রাণের ঢাবি ॥
গণতন্ত্রের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই পারে আওয়ামী দুঃশাসনের কবল থেকে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ॥
সূফি বরষণ
কোন দিন আমি যদি পত্রিকা অফিস থেকে রাতে দেরি করে হল ফিরতাম ॥ তখন আনুসাঙ্গগিক কাজ শেষ করে শুয়তে যাওয়ার আগে জানালা দিয়ে একবার প্রাণ ভরে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতাম ॥ আমার বিছানায় শুয়ে ঝাঁও গাছের পাতার ফাঁকে চাঁদের লোকচুরি খেলা সে দৃশ্য কি কোন দিন ভুলা যাবে॥ সে কথা অন্য একসময় বলবো॥ গভীর রাতে জানালা দিয়ে প্রায় সময় দেখতাম বেপারীরা মহিষ নিয়ে যাচ্ছে ॥ আমি মুহসীন হলের মাঠের পাশের দক্ষিণ ব্লকে থাকার
কারণে মাঠের ওপাশে রাস্তার সব
দৃশ্যই পরিষ্কার দেখা যেতো॥ একদিন গভীর রাতে আমার রুমমেইট সোহেলকে ঘুম থেকে ডেকে বলি দেখ মহিষ গরু হয়ে যাওয়ার অডিশন॥ আচমকা সোহেল ঘুম থেকে উঠে
জানালা দিয়ে দেখে মহিষের পাল যাচ্ছে॥ আমি তাকে বলি এই মহিষ যাচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন কসাইখানায় আর সকালে বিক্রি হবে গরুর মাংস হিসেবে ॥ আমরা ঢাকাবাসী আজকাল যে গরুর মাংস খাই তা আসলেই মহিষের মাংস আপনি বিশ্বাস করেন আর নাই করেন॥ যদি নিরীহ প্রাণী মহিষ এই কথা জানতো তবে লঙ্গকা কান্ড বেঁধে যেতো॥ তবে মহিষের মাংস গরুর মাংস থেকে
অনেক ভালো॥ এলার্জি নাই স্বাদও অনেক বেশি॥ যাই হোক নাস্তিক নাহিদ যে ভয়ানক ভাবে বাঁশটা দিলো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ॥ আর বাকী বাঁশটা দিলো আরেফীন ॥ যেভাবে গরু বলদ আর মহিষ ছাগলদের ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে , তাতে আগামী দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে ঐ মহিষ ঢুকবে আর সব গরু হয়ে বের হবে ॥ আর এই সব গরু ছাগল বলদ মহিষ নামক দলবাজ মেধাহীরা শিক্ষক হলে ??, তারা পিএইচডি করবে কিভাবে সম্ভব ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন বৃদ্ধির কলা কৌশল নিয়ে !!! আর ক্লাসে গবেষণা হবে মেয়েদের চুল মুখ বুক কোমরের মাপ ঝোঁক নিয়ে ॥ ছি ছি ছি শত ধিক এই সব জ্ঞানপাপী দলকানা বকধার্মীকদের ॥ শিক্ষার একমাত্র পবিত্র স্হান সকল আশার সম্ভল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেও আমরা আজ হারাতে বসেছি ॥ স্বপ্ন ছিলো পরিবারের নতুন প্রজন্মের
সবাইকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবো সেটা মনে হয় আর সম্ভব হচ্ছে না ॥
সেই কারণে আজ দেশের দুর্দিনেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নীরব নিথর হয়ে আছে ॥ ১৯২১ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথিতযশা শিক্ষাবিদদের তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু জ্ঞানচর্চায় নয় ৫২’ র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জুগিয়েছে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। যে বিশ্ববিদ্যালয় এক সময় ইংরেজ পাক হানাদার আর স্বৈরাচার এরশাদকে বিতাড়িত করছিল সেই বিশ্ববিদ্যালয় আজ আর আগের চেতনায় নাই ॥ কেমন যেন মলিন হয়ে আছে॥ যে দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন করে চেতনা ফিরে আসবে সেই দিনই বাংলাদেশে আওয়ামী দুঃশাসনের কবল থেকে মুক্তি পাবে ॥ আরও একদিন নতুন করে অপরাজয় বাংলার পাদদেশে শ্লোগান হবে আওয়ামী বাকশাল নিপাত যাক গণতন্ত্র মুক্তি পাক ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ। ১৯২১ সালের এ দিনে তখনকার পূর্ববাংলায় উচ্চশিক্ষা বিকাশের মহতি লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নানা আয়োজন রয়েছে আজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

জাতীয় প্রেস ক্লাবের এজিএম নিয়ে কিছু কথা ॥ অতঃপর মারামারি ও শোক প্রস্তাব ??

জাতীয় প্রেস ক্লাবের এজিএম নিয়ে  কিছু কথা ॥
অতঃপর মারামারি ও শোক প্রস্তাব ??

সূফি বরষণ
পৃথিবীতে বহু  স্বৈরশাসকের  আবির্ভাব ঘটেছে॥ রোম নগরী যখন আগুনে পুড়ছিল সম্রাট নিরো তখন বেহালা বাঁজাচ্ছিলেন??!!॥ মহান দার্শনিক সক্রেটিস থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বহু বিখ্যাত মহা মনীষীকে  স্বৈরশাসকরা  নির্মম ভাবে হত্যা করে॥ শুধুমাত্র তাদের ক্ষমতাকে চির স্থায়ী করার জন্য॥
কিন্তু কেউ ক্ষমতা ধরে রাখতে পারিনি ॥ এমনকি তাদের কে ইতিহাসের পাতায় কুখ্যাত খলনায়ক হিসেবে ঘৃণার সাথে স্মরণ করে ॥ গণধিকৃত এই স্বৈরাচাররা তাদের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদেরকে প্রাণ নিতে দ্বিধা করেনি।॥॥ বন্দী করে জেলের মধ্যে সীমাহীন নির্যাতন করতো॥
বিশ্বখ্যাত গ্রীক দার্শনিক সক্রেটিসকে প্রাণ দিতে হয়েছে তখনকার স্বৈরশাসনের প্রহসনমূলক বিচারে॥ ইমাম আবু হানিফা রহঃ কেও হত্যা করে স্বৈশাসক॥  যিশু খৃস্টকেও ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল॥ সক্রেটিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল সমকামীতার আর যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করার। জগৎ খ্যাত দার্শনিকে হ্যামলক পানে  মৃত্যু  বরণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল ॥
আজ কোথায় ইতিহাসের সেই কুখ্যাত  স্বৈরশাসক আর কোথায় সক্রেটিস, হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ সক্রেটিসকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে, আর স্বৈরাচারকে জানাচ্ছে ধিক্কার।
ইতিহাস সাক্ষী বাংলাদেশে ২% জনসমর্থন পাওয়া গণধিকৃত খুনী ডিক্টেটর হাসিনা  অন্যায়ভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা একজন ইতিহাসের নব্য স্বৈরাচার॥
শুধুমাত্র  হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার দেশের বিখ্যাত সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানসহ অনেক খ্যাতনামা রাজনৈতিক নেতা কর্মী ॥ দেশের  প্রতিভাবান খ্যাতনামা দুইজন সাংবািদক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য এবং ডিইউজে ও  বিএফইউজের নেতা ছিলেন ॥ অবৈধ আওয়ামী সরকার তথাকথিত ট্রাইবোনালের মাধ্যমে  মৃত্যুদন্ড  কার্যকর করে ??। যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু থেকেই প্রশ্ন বিদ্ধ ॥  শাহবাগের মোড়ে কিছু লম্পট কুলাঙ্গার ফাঁসির দাবি জানালে স্বৈরসরকারের অধীন কথিত আইন  সংশোধন করে ফাঁসির রায় দেয়। তাদের সাথে সুর মিলিয়ে সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটি (সবুজ-আবদাল) তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের সদস্য পদ বাতিল করে ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে দেয়। আর ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অবৈধ সরকারের সাথে গোপনে যোগাযোগ করতে থাকে ???!!
পৃথিবীর ইতিহাস সাক্ষী দেয়  সাংবাদিকরা সব সময়ই সত্যের পক্ষে থাকে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিল । কিন্তু আমাদের ব্যবস্থাপনা কমিটি ইতিহাসকে কলঙ্কিত করে সত্যের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ছিল॥ শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ॥ কাকে খুশি করতে দুইজন সিনিয়র সদস্যের সদস্য পদ বাতিল করেছিলেন কোনো রকম ফোরামে আলোচনা না করে ? সাংবাদিকতার পেশার মান-সম্মান ভূলুণ্ঠিত করেছিলেন তৎকালীন ব্যবস্হাপনা কমিটি ॥ কিন্তু তাদের দূর্ভাগ্য �শেষ রক্ষা হয়নি॥
অবৈধ সরকার তাদেরকে জোর করে গলা ধাক্কা দিয়ে বিতাড়িত করে॥

ন্যায় কোনোদিন অন্যায়ের কাছে মাথানত করেনি॥ যারা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত তারাই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে। আর যারা কলুষিত তাদের প্রতিবাদের সাহস থাকে না। নতজানু হতে হতে উঁটের মতো কুঁজো হয়ে সোজা হওয়ার শক্তি-সমর্থ থাকে না। অবস্থা তাই হয়েছে সাংবাদিক সবুজ ও আবদাল ভাইয়ের ক্ষেত্রে । গত সোমবারজাতীয় প্রেস ক্লাবের ইজিএমের শোক প্রস্তাবে (মরহুম আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান) দুইজনের নাম যুক্ত না করে অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ করেছেন। আমি একজন সাধারণ সাংবাদিক হিসেবে  তীব্র নিন্দা জানাই।
আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ দিন। ইজিএমে সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ কোথায়? বার বার ঘোষণা দিয়েছেন অপেক্ষাও করেছেন, বলেছেন, “যানজটে আটকে আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবেন।” কোথায় তিনি? চিন্তার দিক দিয়ে অসৎ ব্যক্তি কখনোই সত্যের মুখোমুখি হতে পারে না ॥ কারণ দেখা গাড়ী ঝামে পড়েছে ॥
লেন্দুপ দর্জি, মীরজাফরদের যোগ্য উত্তরসূরি  আপনারা ॥ আমরাই মানে সৎ সাংবাদিকরাই ভুল করে  এদেরকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছিল। সম্মানিত করেছিল। তার বিনিময়ে এরা গোটা জাতির সাথে বেইমানী করেছে ॥ আজ প্রেস ক্লাবের এই অবস্থার জন্যে এই লেন্দুপ দর্জিরাই দায়ী। এরা সদস্যদের ভাষা বুঝে না।
যাদের জন্যে আজ নতজানু হয়েও খুশি করতে চেয়েছেন তারা কি এই ভোগে খুশি হয়েছে? হয়নি: বরং ঘার ধাক্কা দিয়ে আপনাকে  রুম থেকে বের করে দিয়েছে। আপনি দুর্বল ঈমান নিয়ে নতজানু হয়েই আছেন মেরুদ- সোজা করে দাঁড়াতে পারছেন না।
ন্যায় আর অন্যায়ের ভীষণ ফারাক; বিপরীত! দেখছেন না! ন্যায় প্রতিষ্ঠার সৈনিকেরা অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়ায়নি; হিমালয়সম শির উঁচু করে হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি গলায় পরেছেন। জীবন যাদের সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত কেবল তারাই পারে উপভোগ করতে। পারে শহীদী মর্যাদা পেতে। সত্যের সেনানী আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এখন দেশ-কালের ঊর্ধ্বে মানবজাতির গৌরব।
আর আপোসকামী নতজানুরা অপদস্ত হতেই থাকবে। স্বৈরাচার হাসিনার শাসন দীর্ঘ হবে না ঠিকই কিন্তু  দোমুখি এই সব মুনাফেকদের মানুষ সব সময় ধিক্কার জানাবে॥ আগামী দিনের বাংলাদেশের ইতিহাস ভিন্ন ভাবেই লেখা হবে ॥
মুক্ত বুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

Sunday 28 June 2015

নকশাল মাওবাদী আন্দোলন আর ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ পার্থক্য কি ?? আদর্শিক নাকি শুধুই বিপ্লবের কথা বলে মানুষ হত্যা??

নকশাল মাওবাদী আন্দোলন আর ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ পার্থক্য কি ??

আদর্শিক নাকি শুধুই বিপ্লবের কথা বলে মানুষ হত্যা??
সূফি বরষণ
এক
নকশাল ও মাওবাদী আন্দোলন আর ইসলামের নামে কথিত জঙ্গীবাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি ?? আমি যদি পরিস্কার বাংলায় বলি কোনো পার্থক্য নাই॥সন্ত্রাসীর কোনো আদর্শ বা মতবাদ থাকতে পারে না ॥ এদের সবার একই কর্ম মানুষ হত্যা করা ॥ আর যাই হোক মানুষ হত্যাকারীদের আমি সব সময় ঘৃণার চোখে দেখি ॥ সেটা নকশাল নামে হোক, ইসলামের নামে কথিত জঙ্গীবাদ হোক, আই এস হোক, ইহুদিবাদ হোক আর বৌদ্ধদের  969 আন্দোলন হোক ॥
সেটা যে নামেই ডাকা হোক হত্যাকারী হত্যাকারী হয়েই থাকে ॥ সে কোনদিন মানবিক মূল্যবোধ সম্পূর্ণ সুস্থ বিবেকের  মানুষ হতে পারে না ॥ তা না হলে  নকশাল নেতা কানু স্যানাল আত্মহত্যা করেছিল কেন ॥ জঙ্গলে থেকে মানুষ হত্যা করে দেশের মঙ্গল করে ফেলবেন বলে তরুণ তরুণীদের বিপ্লবের স্বপ্ন দেখিয়ে বিপদগামী করেছিলেন ॥
আর সেই স্বপ্নদ্রষ্টা কেন আত্মহত্যা করে ॥ কারণ সবই মানুষ হত্যার পাপের ফল॥ এর প্রতিফলন দেখি আমরা আর এক জঙ্গী নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ক্ষেত্রেও ॥ সে সিলেট থেকে গ্রেপ্তারের পূর্বে আত্মহত্যা করতে চেষ্টা করেছিল ॥  পৃথিবীতে কোনো হত্যাকারীই সমাজের আদর্শ প্রচারক হয়নি কারণ হত্যাকারী নিজের জীবন দিয়েই তার পাপের দেনা সুদ করে যায়॥ কিন্তু এসব বিপদগামী মানুষের ভ্রান্ত বিপ্লবের ক্ষতের মাশুল দিতে হয় সমাজকে যুগ যুগ ধরে॥ নকশালবাদী ও মাওবাদীরা শ্রেণি শত্রু খতমের নামে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ কে হত্যা করছে ॥ তেমনি জঙ্গীরা দুই একটা পটকা বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে এরা কোন ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলছে ??!! ইসলামের কোথায় এদেরকে মানুষ হত্যা করার আদেশ দিয়েছে ॥ ইসলাম প্রতিষ্ঠা নয় এর পেছনে কাজ করে কোটি কোটি টাকার অর্থ প্রাপ্তি ॥ ভবিষ্যতে প্রকাশিত হবে এদের অর্থ যোগান দাতা কারা॥ আসলে জঙ্গী  আর নকশালবাদীর মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই॥ এদের আইডি একটিই সন্ত্রাসী ॥ ইসলাম বা সমাজতন্ত্র যে কোনো আদর্শ সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে হলে মানুষকে বুকেজড়িয়ে আদর্শ বুঝিয়েই করতে হবে ॥ সেটা  বন্দুকের নল বা বোমা মেরে সম্ভব নয়॥ আর কোনদিন সম্ভব হবেও না ॥
সমরেশ মজুমদারের কালবেলা উপন্যাসে সম্ভ্রান্ত পরিবারের শিক্ষিত অনিমেষ পঙ্গু হয়ে বিশেষ ক্ষমায় জেল থেকে মুক্তি পাই॥ আর আমার প্রিয় লেখক মহাশ্বেতা দেবী তার ‘’’হাজার চুরাশির মা’’’ উপন্যাসে উচ্চবিত্ত পরিবারের নিহত নকশাল নেতা প্রীতির মা ছেলের স্মৃতি খোঁজে বেড়ায় আর নির্যাতিত  হয়ে জেল থেকে  ফিরে নন্দীনি ॥ এই উপন্যাস কে নিয়ে ইয়াসপাল শার্মা ১৯৯৮ সালে মুভিও বানায় ॥
অরুন্ধতী রায় বুকার পুরস্কার জয়ী “গড অব স্মল থিংস্” উপন্যাসে একটি চরিত্র নকশাল আন্দোলনে যোগ দেয়। সাম্প্রতিক  পরিচালক দেবাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় ‘নকশাল’ সিনেমা মুক্তি পেয়েছে ॥ অনির্বাণ আর সিদ্ধার্থ চরিত্রে  অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী এবং ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়॥ নকশাল নিয়ে শংকর বসুর কমুনিস-ও অনেকটাই বেলেঘাটা কেন্দ্রিক। সেদিক থেকে অশোককুমার মুখোপাধ্যায় , ‘আটটা-ন’টার সূর্য’ অনেক সামগ্রিক॥
শিলিগুড়ির চারু মজুমদার রাজশাহীর  হাগুরিয়া গ্রামের জমিদার পরিবারে জন্ম নেয়া  পাবনা এডোয়ার্ড কলেজের  ছাত্রের হাত ধরেই ১৯৬৭ সালের ২৫ মে নকশালবাড়ি গ্রামে নকশাল নামের উগ্র সন্ত্রাসী আন্দোলনের সূচনা হয় ॥ তাঁর সহযোদ্ধা নকশাল নেতা কানু স্যানাল আত্মহত্যা করেছিল ॥ আর চারু মজুমদারও  বন্দি অবস্থায় নিহত হয়॥ আরও অনেক বিখ্যাত নকশাল কমরেড
নিহত হয়॥ যেমনি জীবন হারায় বাংলাদেশের অনেক জঙ্গী নেতা ॥
এদের কেউ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে না বরং  ঘৃণা করে ॥ আর কালের গর্ভে হারিয়ে যায়  অনেক কমরেড ও জঙ্গীর নাম ॥ কারণ আবর্জনা আবর্জনাই থাকে কেউ আর সময়ের আবর্তনে এদের মনে রাখে না ॥
লেখক-মানবাধিকারকর্মী অরুন্ধতী রায় গত মে মাসে  ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এতে তিনি কথা বলেছেন জাতপ্রথা, ভূমি সমস্যা ও প্রগতিবাদী বা বিপ্লবী আন্দোলন নিয়ে।
অরুন্ধতী মনে করেন, ভারতীয় সমাজে জাতিপ্রথা যে ভূমিকা পালন করছে, বামপন্থীদের এখন তার বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্মূল্যায়ন করা দরকার। শুধু নেতৃত্বের পরিবর্তন করে বামদের ভাগ্যে কোনো নাটকীয় পরিবর্তন আসবে না। অরুন্ধতী বিষাদ নিয়ে বলেন, ষাটের দশক ও সত্তরের দশকের তুলনা করলে এখনকার ভূমি ঘিরে চলা বিতর্ককে আর বিপ্লবী বলা যায় না।
“যখন নকশাল আন্দোলন শুরু হয় এবং জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলছিল, তখন ইন্দিরা গান্ধীর এক সমালোচক বলেছিলেন, তারা কী বলছে? তারা সামাজিক ন্যায়বিচারের কথা বলছে, জমির পুনর্বণ্টনের কথা বলছে, কৃষকের কাছে জমি দেওয়া এবং এ রকম আরো অনেক কথা বলছে। আর এখন, এমনকি সবচেয়ে ‘বিপ্লবী’ আন্দোলনও কে বলে আদিবাসীদের জমি তাদের হাতেই ছেড়ে দেওয়ার দাবি করছে,” বলেন অরুন্ধতী॥
দুই
নকশাল কি:
নকশাল আন্দোলন একটি মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন উগ্র সন্ত্রাসী কমিউনিস্ট আন্দোলনের নাম। বিংশ শতাব্দীর সপ্তম দশকে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ি থেকে শুরু হয়ে এটি ধীরে ধীরে ছত্রিশঘড় এবং অন্ধ্র প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমে এটি একটি সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনেরূপ নিয়েছিল।
নকশাল বা নকশালবাদী বলতে উগ্র বামপন্থী দলগুলোকে নির্দেশ করা হয়। এসব দলের জন্ম হয়েছিল চিন-সোভিয়েত(son of soviet split) ভাঙনের সময়। মতাদর্শগত ভাবে এরা মাও সে তুং-এর পদাঙ্ক অনুসরণকারী।  এরা মার্ক্সবাদ এবং লেনিনবাদে বিশ্বাসী॥ ২০০৪ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) নামক দল প্রতিষ্ঠা করে ॥ ভারতের সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা “রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং” (“র”) এর হিসেব অনুযায়ী প্রায় ২০০০০ মাওবাদী সক্রিয় ভাবে এ কার্যক্রমে যুক্ত আছে। আরও ৫০ হাজার সদস্য এদের সহযোগীতা করে॥ তাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবে শঙ্কিত হয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীগণ  মাওবাদীদের কে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিরুদ্ধে সর্বাপেক্ষা বৃহত্তর হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। উল্লেখ যে নকশালই মাওবাদী আন্দোলনের নতুন রূপ ॥
সিপিআই (মাওবাদী) এবং আরও কিছু নকশালপন্থী দলকে ভারত সরকার সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত সরকার নকশাল নির্মূলে তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করে। এতে উগ্রবামপন্থী আক্রান্ত অঞ্চল ছত্তিশগড়,উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খন্ড, বিহার,উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে, তাদের পলায়নের সব রাস্তা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিহাস:
নকশাল শব্দটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি ছোটগ্রাম ’’’নকশালবাড়ি’’’ থেকে।এখানে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র একাংশ ১৯৬৭ সালে তাদের নেতৃবৃন্দের বিরোধিতা করে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী) একটি পৃথক উগ্র বামপন্থী দল গঠন করেন। এ বিপ্লবী দলের নেতৃত্বে ছিলেন চারু মজুমদার এবং কানু স্যানাল। এ বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল ১৯৬৭ সালের ২৫ মে ॥   চারু মজুমদার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মাও সে তুং এর অনুসারী ছিলেন। তিনি মনে করতেন ভারতের কৃষক এবং গরিব মানুষদের মাও সে তুং এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে শ্রেণিশত্রুদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করা প্রয়োজন। তার কারণ তারাই সর্বহারা কৃষক শ্রমিকদের শোষণ করে। তিনি নকশালবাড়ি আন্দোলনকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তার লেখনীর মাধ্যমে। তার বিখ্যাত রচনা হল ‘’’হিস্টরিক এইট ডকুমেন্টস্’’’, যা নকশাল মতাদর্শের ভিত্তি রচনা করে।পরবর্তীতে তারা সিপিই(এম) থেকে বেড়িয়ে ‘’’অল ইন্ডিয়া কমিটি অব কমিউনিস্ট রেভুলশনারী’’’(এ আই সি সি সি আর) গঠন করেন। ১৯৬৯ সালে এ আই সি সি সি আর থেকে জন্ম নেয় কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)। বাস্তবে সকল নকশালবাদী দলেরই উদ্ভব হয়েছে সিপিআই(এম এল) থেকে । তবে “মাওয়াবাদী কমিউনিস্ট সেন্টার্” নামে একটি ভিন্ন মতাদর্শের দল ছিল। তাদের উদ্ভব হয়েছির “দক্ষণদেশ গ্রুপ” নামে একটি সংগঠন থেকে। পরবর্তীতে তারা “পিপলস ওয়ার গ্রুপ” এর সাথে যুক্ত হয়ে “কমিউনিস্টি পার্টি অব ইন্ডিয়া”(মাওয়াবাদী) গঠন করে। এছাড়া ভিন্ন মতাদর্শের আর একটি দল হল “অন্ধ্র রেভুলশনারী কমিউনিস্টস্” এবং তারা “টি. নাগি রেড্ডি”-র “মাস লাইন” মতবাদের অনুসারী ছিল।
১৯৭০ সালের দিকে এ আন্দোলন অন্তর্দ্বন্দের কারণে কয়েকটি বিরোধী অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালের দিকে প্রায় ৩০ টি নকশালবাদী দল সক্রিয় ছিল এবং তাদের জনবল ছিল প্রায় ৩০ হাজার ॥ ২০০৪ সাল ভারতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেব মতে প্রায় ৯৩০০ নকশালবাদী বা মাওবাদী  ক্যাডার সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের কাছে প্রায় ৬৫০০ অনিবন্ধিত অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে, এছাড়া দেশী অস্ত্র তো আছেই। তারা তাদের কর্মকান্ড ভারতের ভারতের ৬০৪ টি জেলার ভেতর ১৬০ টিতে বিস্তার করেছে॥
তিন
একটি বড় অংশ লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বিপ্লবী কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছিল। চারু মজুমদার বলেছিলেন বিপ্লবী কার্যক্রম শুধুমাত্র গ্রামাঞ্চলে চালিয়ে গেলেই চলবে না, বরং একে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি নকশালদের শ্রেণীশত্রু খতম করার নির্দেশ দেন। এ শ্রেণীশত্রুদের মধ্যে যেমন ছিল ভূস্বামী তেমনি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পুলিশ অফিসার, রাজনীতিবিদ এবং আরও অনেকে।
সে সময় কলকাতার সব স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নকশালপন্থী ছাত্ররা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে নিয়ে তার মেশিন শপে পুলিশদের সাথে লড়ার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করেছিল। প্রেসিডেন্সি কলেজ ছিল তাদের সদর দফতর।
নকশালরা অল্পসময়ের মধ্যে ভারতের শিক্ষিত সমাজের ব্যপক সমর্থন পেয়েছিল। দিল্লীর “সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ” তাদের বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।
এরপর সরকার নকশালদের কে শক্ত হাতে দমনের সিদ্ধান্ত নেয়। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় নকশালদের উপর প্রতি আক্রমণের নির্দেশ দেন। পুলিশকে বিশেষ  ক্ষমতা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছিল নির্বিচারে হত্যা এবং অকারণে যে কাউকে বন্দী করার ক্ষমতা।
সেই সময় মাত্র এক মাসের ভেতরে সরকার নকশাল আন্দোলন দমন করেছিল। “ নকশালদের শক্ত হাতে দমন করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই” ভারত সরকার এবং পুলিশের মনোভাব ছিল এমনি। তারা দেশের জনগন কে এ কথাও ভাল ভাবে বুঝিয়েছিল যে “দেশ এখন ঐ চরমপন্থীদের সাথে গৃহযুদ্ধে নেমেছে, এ যুদ্ধে গণতন্ত্রের নামে পরিহাসের কোন স্থান নেই। কেননা ঐ চরমপন্থীদের কাছে গণত্ন্ত্র মূল্যহীন”। এর ফলে দেশবাসীর কাছে নকশালদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যায়, আর তাদের প্রতি সহানুভূতিশীলরা মুখ ফিরিয়ে নেয়।
এছাড়া অর্ন্তকোন্দলের কারণে আন্দোলনে ছেদ পড়ে। দলের একটি বড় অংশ চারু মজুমদারের নির্দেশিত পথের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ১৯৭১ সালে সিপিআই(এম এল) ভেঙে দু টুকরো হয়ে যায়। চারু মজুমদারের দল থেকে সত্য নারায়ন সিং বেরিয়ে যান। ১৯৭২ সালে চারু মজুমদার পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এবং আলীপুর জেলে নিহত হন। কানু স্যানাল ২০১০ সালের ২৩শে মার্চ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ী থানার হাতিঘিষা গ্রামের নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
২০০৯ সালের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের লালগড়ে পুলিশদের তাড়িয়ে দেয় এবং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কর্মিদের উপর হামলা চালায়। এই এলাকায়  মাওবাদী জঙ্গীরা তাদের প্রভাব বাড়াচ্ছে। রাজ্য সরকার জুনের প্রথম দিকে পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে অভিযান চারিয়ে লালগড় পুনরুদ্ধার করে। মাওবাদী নেতা কিষেন জি এক সাক্ষাতকারে বলেন- “তারা পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন বাম এবং তাদের পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে নিজেদের জন্য মুক্তাঞ্চল গড়ে তুলতে চায়। আর তারই শুরু হিসেবে তারা লালগড়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ১৯৭০ সালের পরে তারা আবার সংগঠিত হচ্ছে ॥ মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ







Friday 26 June 2015

জামায়াতের ইফতার ... ইসলামী রাজনীতির নতুন মেরুকরন ॥ দেরিতে হলেও জামাত ও আলেমদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে ????

জামায়াতের ইফতার ...
ইসলামী রাজনীতির নতুন মেরুকরন ॥
দেরিতে হলেও জামাত ও আলেমদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে ????

সূফি বরষণ
জামায়াতে ইসলামীর সাথে  দেশের পীর ওলামা মাশায়েক দেওবন্দী আলেম এবং কওমী আলেমদের দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দীর  ভুল বুঝাবুঝির অবসান হতে চলেছে॥ ইতিমধ্যেই দেশে ইসলামী  রাজনীতির নতুন করে মেরুকরন শুরু হয়েছে ॥ দীর্ঘকাল যেসব পীর আলেম ওলামা মাশায়েক জামাতের নাম শুনলে গায়ে জ্বালা করতো আর মওদুদীবাদী বলে কাদা ছুড়াছুড়ি করতো ॥ আরও বলতো জামাত কোনো আলেমদের দল নয়?! কিন্তু কোনো সময় জামাতের পক্ষ থেকে তাদের প্রতিবাদ করা হয়নি ॥ মনেহয় এরই সুফল পেতে শুরু করেছে জামাত॥ দেশের প্রধান বৃহত্তর ইসলামী দল হিসেবে জামাতকে আরও আগেই অন্যান্য ধর্মীয় দল গুলোর সাথে দূরত্ব কমিয়ে আনা উচিত ছিল ॥ সরকারের রক্ত চক্ষু আর গোয়েন্দাদের কড়া নজরদারিকে উপেক্ষা করে  এই সব পীর আলেম ওলামা মাশায়েকদের সাহসী উপস্হিতি বিরাট প্রংশার দাবি রাখে॥ অনেক আগেই জামাতের উচিত ছিল এসব সম্মতি আলেমদের লেখা প্রকাশের জন্য তাদের মিডিয়ায় সুযোগ দেয়া, জামাতের হাসপাতালে চিকিত্সার বিশেষ ব্যবস্হা রাখা, ইসলামী ব্যাংকের শরীয়াহ বোর্ডের সদস্য হিসেবে রাখার ব্যবস্হা করা॥  শর্ষিণা গাউসিয়া বি-বাড়িয়ার পীর সাহেবদের উপস্হিতির মাধ্যমে প্রমাণ হলো জামাত পীরদের সাথেও দূরত্ব কমিয়ে এনেছে ॥ আগে দেশের সব আলেম ওলামা পীর মাশায়েকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন এবং তাদের সুখ দুঃখের খোঁজ খবর নিতেন শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা ॥
অদুর ভবিষ্যতে হয়তো এর মাধ্যমে আমরা দেখতে পাবো জামাত বৃহত্তর ইসলামী ঐক্য গড়ে তুলেছে ॥ আজ দেশের গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য ঐক্য খুবই জরুরী ॥
বর্তমানে ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন এমন অসংখ্য নেতা জামায়াতের ডাকা ইফতারে অংশ নিয়েছেন হাস্যোজ্জ্বল ভূমিকায়। হাত নেড়ে মোসাফা করেছেন জামায়াত নেতাদের সঙ্গে। পাশাপাশি বসে একে-অপরের খোঁজও নিলেন । গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত জামায়াত আয়োজিত ইফতার মাহফিলের।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ইফতার শুরুর দুই মিনিটের মধ্যে অাসলেও কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা অাসলেন অনেকটা অাগেই।  জামাতের নায়েবে অামির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এসেছেন ইফতারের খানিকটা অাগে।
তবে সবচেয়ে অাগ্রহের সঙ্গে যাদের দেখা গেছে তারা হলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নায়েব অামির মাওলানা অাবদুর রব ইউসূফী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা রেজাউল করিম, সহ-সভাপতি মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাওলানা রশিদ অাহমদ এবং যুব জমিয়ত ঢাকা মহানগরী যুগ্ম অাহ্বায়ক মাওলানা শফিকুর রহমান। অাইম্মাহ পরিষদের অাহ্বায়ক, ফয়জুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মহিউদ্দীন রাব্বানীও প্রায় একই সময়ে ইফতারে অংশ নেন।
জমিয়ত প্রসঙ্গে জানা গেছে, এই দলটি শুরু থেকে জামায়াতের বিরোধিতা করেছে এবং সবচেয়ে অগ্রগণ্য সমালোচনাকারীও এ দলটি। সাড়ম্বরে জামায়াতের ইফতারে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মাওলানা রশিদ অাহমদ জানান, দাওয়াত পেয়েছেন এবং ২০ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে তারা এসেছেন ইফতারে।
মঞ্চে উপবিষ্ট জামাত নেতার সঙ্গে মাওলানা নেজামী ও মাওলানা ইউসূফীই  নয় শুধু , ইসলামী ঐক্যজোটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক অামিনী জীবিতকালীন তুমুল জামায়াতবিরোধীতা  করলেও দলটির বর্তমান কমিটির চেয়ারম্যান মাওলানা অাবদুল লতিফ নেজামী ও মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ইফতারে অংশ নেন॥ এসময় ইসলামী ঐক্যজোটের অারও তিনজন নেতাকে ইফতারে অংশ নিতে দেখা যায়। ২০ দলীয় জোটের শরিক না হলেও বাংলাদেশ খেলাফত অান্দোলনের অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপক। দলের জামায়াতপন্থী মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত থাকলেও দলের অন্যতম নেতা মাওলানা ফখরুল ইসলামসহ কয়েকজন নেতা ইফতারে অংশ নেন।
ইফতারের কিছু সময় অাগে মঞ্চে অাসেন কওমিপন্থী দল খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব অধ্যাপক অাহমদ অাবদুল কাদের। রাজনীতিকদের বাইরে সাধারণ অালেমদেরও অংশগ্রহণ ছিল জামায়াতের ইফতারে। আলেমদের মধ্যে উপস্থিত
ছিলেন,  তৌহিদি জনতা পরিষদের অাহ্বায়ক মাওলানা অাজিজুল রহমান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আবদুর রহমান চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, শর্ষিণা দরবার শরিফের পীর মাওলানা শাহ আরিফ বিল্লাহ, ওলামা-মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সভাপতি মাওলানা জয়নাল আবেদীন ও সেক্রেটারি মাওলানা ড. খলিলুর রহমান মাদানী, ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটির আমীর ও বি-বাড়িয়ার পীর  মাওলানা আজিজুর রহমান আজিজ, তৌহিদী জনতা পরিষদের মহাসচিব মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, তা’মীরুল কামিল মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল ড. আবু ইউসুফ, গাউসিয়া দরবার শরিফের পীর  মুফতি মাওলানা ড. আবদুল কাইয়ুম আজহারী, কুরআন শিক্ষা সোসাইটির সভাপতি মাওলানা আবদুস শহীদ নাসিম। মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহর,  শামীম সাঈদী॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

Thursday 25 June 2015

BEKAS মুভি জাতিকে মুক্ত করার সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি

গতকাল রাত্রে BEKAS  মুভিটা দেখলাম ॥ কুর্দি ভাষায় এই মুভিটা অসাধারণ সুন্দর ॥ আপনার হ্নদয়ে নাড়া দিবে  ॥ বাবা মাসহ পরিবারের সব সদস্যদের হারিয়ে এতিম দুই ভাইয়ের সেকি চেষ্টা প্রচেষ্টা জাতিকে রক্ষা করার ॥ সেটা আবার তৎকালীন প্রভাবশালী শাসক সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে ??!! ॥ এই দুই ভাইয়ের �চেষ্টার ১% ও যদি আমরা করতাম বা করি তবে হাসিনা এতদিন অ�বৈধ ভাবে ক্ষমতায় থাকতে পারেনা ॥ মুভিটির পটভূমি ১৯৯০ সালের ইরাকের কুর্দিস্থানের একটি গ্রামের দুই এতিম ভাইকে কেন্দ্র করে ॥ মুভিতে ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের যে ভালোবাসা মমতা ফোটে উঠেছে তা দেখে আপনার চোখে নিজের অজান্তেই জল এসে পড়বে॥ মুভিটির লেখক ও পরিচালক Karzan Kader॥ তিনি একজন সুইডিশ নাগরিক ॥ আসলে এটা পরিচালকেরই জীবন কাহিনী ॥ পড়ে এক সময়ে মুভির রিভিউ বিস্তারিত লিখবো ॥

Tuesday 23 June 2015

মীর জাফরদের সব সময় জয় হয় ??!

পৃথিবীতে সব সময় মীর জাফরদেরই জয় হয়॥
তা না হলে কিভাবে মীর জাফরের বংশধর পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি হয়??? আজও ইতিহাসের সেই মুর্শিদাবাদের সব মীর জাফররা ঢাকায় চলে এসেছে ॥ এখনও চলছে সমান তালে সেই ষড়যন্ত্র ॥ আজ দেশের সামরিক আধা সামরিক বাহিনীর কর্তারা , সাংবাদিক ব্যবসায়ী আমলা রাজনৈতিক সবাই আজ মীর জাফরের ভূমিকায়॥ দেশ আজ সেই পলাশীর খপ্পরে পড়েছে ॥
এবার বলি মীর জাফরের কথা,
ইস্কান্দার আলি মির্জা
(১৩ নভেম্বর ১৮৯৯ – ১৩ নভেম্বর ১৯৬৯) ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি। মেজর জেনারেল সাহেবজাদা সৈয়দ ইস্কান্দার আলি মির্জা পিতার দিক থেকে হলেন মীর জাফর আলির বংশধর।  তিনি মীর জাফরের নাতি ছিলেন ॥ তিনি মুর্শিদাবাদের লোক। তিনি ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত এই পদে দায়িত্বপালন করেন। এর পূর্বে ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের শেষ গভর্নর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৫৮ সালে তিনি সংবিধান স্থগিত করে সামরিক আইন জারি করেন। সেনাপ্রধানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত করা হয়। রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর প্রভাব তার সময়ে শুরু হয়। সামরিক আইন জারির বিশ দিন পর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক আইয়ুব খান তাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করেন। ইস্কান্দার মির্জা লন্ডনেনির্বাসিত হন।

পলাশীর অম্রকাননের কৃষকদের চেয়ে কি বর্তমান বাংলাদেশের জনগণ বেশি অপদার্থ ??? আজ সেই ঐতিহাসিক পলাশী

পলাশীর অম্রকাননের কৃষকদের চেয়ে কি বর্তমান বাংলাদেশের জনগণ বেশি অপদার্থ  ???
আজ সেই ঐতিহাসিক পলাশী

সূফি বরষণ
১৭৫৭  সালের ২৩ জুন যখন নবারের সৈন্য বাহিনীর সাথে ইংরেজদের যুদ্ধ চলছিলো, তখন জমিতে কাজে রত কৃষকরা সেই দৃশ্য দেখছি আর বলছিলো
রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় তাতে আমাদের কি॥ রাজার পরিবর্তন হয় কিন্তু আমাদের উপরে খাজনা অত্যাচার নির্যাতনের ধরনের কোনো পরিবর্তন হয় না ॥এবং যখন মুর্শিদাবাদে সিংহাসন লর্ড
ক্লাইব মাত্র সাড়ে তিন হাজার সৈন্য নিয়ে রাজপ্রসাদে প্রবেশ করে তখন রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার বাঙালী সে দৃশ্য অবলোকন করে॥
তখনও তারা বুঝতে পারেনি তাদের কপালে দুশত বছরের গোলামী অপেক্ষা করছে॥ সেই দিন যদি তারা বুঝে খালি হাতেও দাওয়া করতো ক্লাইব আর তার সৈন্য বাহিনী কৃষকের পায়ের তলায় পিসে মরতো॥ আর ইতিহাসের মোড় ঘোরতো অন্য ভাবে॥ ক্লাইব বাংলার কৃষকদের উপর সীমাহীন অত্যাচারের ফলে সে নিজেই একসময় আত্মহত্যা
করে॥  আর একজন অবাঙালী
ফার্সি ভাষী নবাব সিরাজদ্দৌলাও ষড়যন্ত্র করে নানা আলি বর্দি খানকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেছিল ॥ সেই হিসেবে ইতিহাস তাকেও ক্ষমা করেনি ॥ পাপের শাস্তি সে ভোগ করেছে ॥ পলাশীর ঘটনা কৃষকরা সেদিন বুঝতে না পারলেও ১৮৫৭ সালে কৃষকের সন্তানরা বুঝতে  পেরে ছিলো ॥ কিন্তু এর জন্যে একশত বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিলো ॥ গোলামীর একশত বছর পর শুরু হওয়া মুক্তির সংগ্রাম চলে আরও ৯০ বছর॥ জন্ম হয় তিতুমীর শরিয়াতুল্লাহ মতো মহান মহান বীর  মুক্তি সেনানীদের॥ এখন সিদ্ধান্ত আপনার ?? আল মাহমুদের কবিতা মতো হাসিনা আর ভারত বলছে ... বুকের উপর ছুরি রেখে খুলে দে হারামজাদি চুপ ???!!!  আমরাতো চুপ করেই আছি কিন্তু আর কতকাল॥ নাকি সেটা দুশত বছরের নতুন করে গোলামীর পর???!!! ঐতিহাসিক তিতাসের ওপর দিয়ে মাটির বাঁধ তৈরী করে ভারতীয় অস্ত্র গোলা বারুদের লরি যায় ফ্রী ট্রনজিটে ত্রিপুরা আমরা চুপ!!! একদিন হইতো তিতাস নদীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবেনা ॥ পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতিরা অস্ত্র গোলা বারুদের বিশাল মজুত গড়ে তুলছে প্রশিক্ষণ  নিচ্ছে আমাদেরই বিরুদ্ধে কিন্তু আমরা চুপ!!॥ সাগর দিয়ে দিলো  আমরা চুপ! ট্রনজিট দিয়ে দিলো  আমরা চুপ !তেল গ্যাস দিলো  আমরা চুপ! সিনেমা স্যটেলাইট দিলো  আমরা চুপ!॥
বন্দর দিয়ে দিলো  আমরা চুপ !
বিদ্যুত্ দিয়ে দিলো আমরা চুপ!
ন্যায্য পানির অধিকার  বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দিলো আমরা চুপ !
টেলি যোগাযোগ দাদাজি হাতে দিয়ে দিলাম তারপরেও আমরা চুপ!
সীমান্তে পাখির মতো  বিএসএফ গুলি করে আমাদের জনগণকে হত্যা করছে আমরা চুপ! বার্মা আমাদের বিজিবির সদস্যকে ধরে নিয়ে যায় আমরা চুপ! বার্মা ও ভারত ইয়াবা ফেনসিডিলসহ মাদক আমাদের দেশে পাঠাচ্ছে আমরা চুপ! কিন্তু ভাবে চুপ করে আর কতদিন ??? আমরা কি ঐ পলাশীর কৃষকদের মতো
চুপ করে থেকে দুশত বছরের গোলামীর জন্যে অপেক্ষা করছি॥???!!! আমরা কি ঐ কৃষকদের থেকেও বেশি
বাকরুদ্ধ অপদার্থ ॥ আমরা কি প্রতিবাদ করার সাহস হারিয়ে বধির নপুংসক হয়ে গেলাম ???
আলীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এখনই আমাদের কে লড়াই
শুরু করতে হবে॥ তা না হলে শুধু দৌড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে গিয়ে বলতে হবে শুয়োরের বাচ্চা  লীগ ॥ ক্লাইবের মতো রাক্ষুসী হাসিনা কিন্তু আমাকে আপনাকে ছেড়ে দিবে না॥ সামান্যতম বোধ সম্পূর্ণ মানুষ হলেও আজ বুঝে গেছে হাসিনার ক্ষমতা চাই ॥ দেশ ও দেশের জনগণের তাঁর প্রয়োজন নেই॥ শুধুই ক্ষমতা চাই তাঁর ॥ এই অবস্থা থেকে  বাঁচাতে চাইলে এখনই লড়াই শুরু কর ॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

Monday 22 June 2015

ফার্নেস অয়েলে ভাসছে কর্ণফুলী॥?? পরিবেশ স্বাস্থ্যসহ জীব বৈচিত্র্য বিপর্যয়ের মুখে পড়বে ॥

ফার্নেস অয়েলে ভাসছে কর্ণফুলী॥??
পরিবেশ স্বাস্থ্যসহ জীব বৈচিত্র্য বিপর্যয়ের মুখে পড়বে ॥

সূফি বরষণ
ফার্নেস অয়েল বোয়ালখালি খাল হয়ে ভেসে যাচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে॥চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীর পানিতে ভাসছে ফার্নেস অয়েলের স্তর। জেলার বোয়ালখালী উপজেলার গোমদন্ডিতে রেলসেতু ভেঙে বোয়ালখালি খালে পড়ে যাওয়া ফার্নেস অয়েলবাহী তিনটি ওয়াগন থেকে প্রায় এক লাখ লিটার তেল খাল দিয়ে নদীর দিকে ভেসে যাচ্ছে। এতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়তে যাচ্ছে। গত শুক্রবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কিন্তু এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যায় যেই লাইনের উপর দিয়ে শত শত বছর ধরে রেল চলছে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি ॥ সেখানে এখন কেন এই দুর্ঘটনা ??? আর দুর্ঘটনা নদীর প্রধান খালের উপরেই কেন ঘটবে ॥ না কেউ চক্রান্ত করে আমাদের প্রাকৃতিকে ধ্বংস করার জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে??? আর রেলওয়ের কর্মচারীরা
ওয়াগন থেকে তেল পড়া আগে বন্ধ না করে লাইন মেরামতে কেন ব্যস্ত হয়ে পড়লো ???! সেখানেও প্রশ্ন থেকেই যায়॥
সুন্দরবনের মতো এটাও একটা ষড়যন্ত্র আমাদের জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস করার ॥

স্থানীয়রা  জানায়, শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম দোহাজারী রেলপথের বোয়ালখালী উপজেলা গোমদন্ডি এলাকায় একটি রেলসেতু ভেঙে ট্রেনের ইঞ্জিনসহ তিনটি অয়েল ট্যাংকার ওয়াগন খালে পড়ে যায়। এতে তিন ওয়াগনে প্রায় এক লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল কর্ণফুলী নদীতে ভেসে যাচ্ছে এই অয়েল॥  ঐ দিন সন্ধ্যা দিকে  রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেনের ইঞ্জিন ও ওয়াগন উদ্ধারে কাজ করলেও ফার্নেস অয়েল অপসারণে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি!!!!??
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদী গবেষক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, খালে ভেসে যাওয়া ফার্নেস অয়েল কর্ণফুলী নদীর পানিতে মিশে গেলে জীব বৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে এই ফার্নেস অয়েল হালদা খালের পানিতে গিয়ে মিশে দেশের বৃহত্তম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্রের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।॥

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হ্নদয় টানেঃ
কর্ণফুলী নদীর শান্ত শীতল জল, দুপাশে দিগন্ত বিস্তৃত  অরণ্য পাহাড়ে অনাবিল সবুজের সমারোহ, নাম না জানা পাখির কিচির মিচির,  নদীর পানির বয়ে চলা কল কল শব্দ, জলে ভেসে উঠা নিজের মুখচ্ছবি মনে আলোরণ না তুলে পারে কি , সব মিলিয়ে এ এক স্বপ্নময় রাজ্যে বিচরণের অপার সম্ভাবনাময় উপাদান নিয়ে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষকে বার বার কাছে টানে॥ 
কর্ণফুলী নদীর স্বচ্ছ জলরাশি ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের কারণেই পর্যটকদের কাছে কাপ্তাই আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে উঁচু-নিচু পাহাড় আর সবুজ অরণ্যঘেরা বনাঞ্চল, কর্ণফুলী নদীর স্বচ্ছ পানির হৃদয় ছোঁয়া ঝিকিমিকি, চোখ জুড়ানো কাপ্তাই লেক সব মিলিয়ে এ এক অপূর্ব স্বপ্নপুরী॥ মৌসুম ছাড়াও প্রতিদিনই শত শত পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে কর্ণফুলী তীরের এই সবুজ অরণ্যভূমিতে।
কর্ণফুলীর তীরে গড়ে ওঠা কাপ্তাইয়ের প্রধান ৬টি পর্যটন স্পট সব সময় মুখরিত থাকে পর্যটকের পদভারে। কিন্তু আজ এইসবই ধ্বংস হতে চলেছে  ফার্নেস অয়েলের কারণে ॥
নদীর উৎসঃ
কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি প্রধান নদী।এটি ভারতের মিজোরামের লুসাই পাহাড়ে শুরু হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার কাছে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। এই নদীর মোহনাতে বাংলাদেশের প্রধান সমূদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দর অবস্থিত। এই নদীর দৈর্ঘ্য ৩২০ কিলোমিটার।
কথিত আছে এক রাজকন্যা রাত্রিকালীন নৌকা ভ্রমণের সময় তার কানের ফুল পানিতে পড়ে যায় ॥ এই ফুল তুলতে রাজকন্যা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সলীল সমাধি হয়॥ আর রাজকন্যার শোকে রাজপুত্র পানিতে ডুবে আত্মাহুতি দেন। এই করুণ কাহিনী থেকেই নদীটির নাম হয় 'কর্ণফুলী। মার্মা উপজাতিদের কাছে নদীটির নাম কান্সা খিওং॥

কর্ণফুলী নদীর চরঃ
১৮৮৩ সালে কর্ণফুলীর মোহনায় সৃষ্টি হয় লুকিয়া চর। ১৮৭৭ সালে জুলদিয়া চ্যানেল। জুলদিয়া চ্যানেলটি আড়াই মাইল দীর্ঘ এবং দেড় মাইল প্রশস্ত। ১৯০১ সাল থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে পতেঙ্গা চ্যানেলটি জুলদিয়া চ্যানেল থেকে প্রায় দেড় হাজার ফুট পশ্চিমে সরে যায়। হালদা নদীর সাথে কর্ণফুলীর সংযোগ স্থলে আছে বিশাল চর। যা হালদা চর হিসাবে পরিচিত। নদীর প্রবাহের কিছু অংশ নাজিরচর ঘেঁষে, কিছু অংশ বালু চ্যানেলের মধ্যে দিয়ে এবং কিছু মুল স্রোত হিসেবে প্রবাহিত হচ্ছে। ১৯৩০ সালে কালুরঘাট রেলওয়ে সেতু নির্মাণের আগে নদীর মূল প্রবাহ প্রধানত কুলাগাঁও অভিমুখে বাম তীর ঘেষেই প্রবাহিত হত। কালুরঘাট সেতু হওয়ার পর সেতুর ডান দিকে আরও একটি প্রবাহের মুখ তৈরি হয়। ফলে নদীর মাঝ পথে সৃষ্টি হয় বিশাল একটি চর- যা কুলাগাঁও চর নামে পরিচিত॥
কর্ণফুলী নদী সংস্কৃতিতে প্রভাবঃ
কবি ওহীদুল আলম ১৯৪৬ সালে কর্ণফুলীর মাঝি নামে একটি কাহিনী-কাব্য রচনা করেন। ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ ১৯৬২ সালে রচনা করেন তার উপন্যাসকর্ণফুলী। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামতার কবিতায় লিখেছেন,
“ওগো ও কর্ণফুলী
তোমার সলিলে পড়েছিল কবে কার কানফুল খুলি
তোমার স্রোতের উজান ঠেলিয়া কোন তরুণী, কে জানে
সাম্পান নায়ে ফিরেছিল তার দয়িতের সন্ধানে।
এছাড়াও চট্টগ্রামী ভাষার গানে এবং লোক-সংস্কৃতিতে এই নদীর প্রভাব অনেক। চট্টগ্রামী ভাষার ক’টি জনপ্রিয় গান,
১. ছোড ছোড ঢেউ তুলি পানিত ছোড ছোড ঢেউ তুলি
লুসাই ফা-রত্তুন লামিয়ারে যারগই কর্ণফুলী’।
২. ‘ওরে সাম্পানওয়ালা,
তুই আমারে করলি দিওয়ানা’।
প্রিয় পাঠক দেশের নদী বাঁচলে আমরা বাঁচবো॥ আমাদের নদীকে রক্ষা করতে হবে ॥

মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ