Wednesday 8 June 2016

বাংলাদেশ নিয়ে তিন গোয়েন্দার গল্প পর্ব এক এর দ্বিতীয় পাঠ । ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র হালখাতা ।


সূফি বরষণ
দুই.
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের রাজনীতি এখন টালমাটাল। শ্রীলঙ্কায় তামিল টাইগারদের তৎপরতা এখনো অব্যাহত আছে। তবে আশার দিক নেপালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে র সেখানে বড় ধরনের হোঁচট খেয়েছে। বাংলাদেশে সামরিক বাহিনী না রাখার চেষ্টায় সংস্থাটি সফল হয়নি। র-এর বড় মাথাব্যথা নিজ দেশের কাশ্মীর ও পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের স্বাধীনতা আন্দোলন। অর্থনৈতিকভাবে চীনের সাথে মোকাবেলা। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা চাচ্ছে এ অঞ্চলে একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করার। চীনের সাথে ভারতের বিরোধ হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে সে জন্য কিছুটা সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। ভয় আছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সিআইএ’র সহায়তায় জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধিরও। এসব কিছু শেষ পর্যন্ত ইউনাইটেড ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠার সহায়তা করবে না ভারত ভেঙে আরো দু-একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম নেবে, তা এখন দেখার বিষয়। অবশ্য র তার তৎপরতায় নিয়মিতই কৌশল পরিবর্তন করছে।

অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠা করা হিন্দুস্থানীয়দের আদর্শিক স্বপ্ন, আর সেটা বাস্তবায়ন করতে তারা সেই ১৯৪৭ সাল থেকেই গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে আসছে। ভারতকে বুঝতে তাঁদের এই আদর্শিক ড্রাইভ জানা দরকার। একটা বিষয় জেনে রাখা ভাল; হিন্দুস্থানীয়দের কাছে ‘লক্ষ্য’ হচ্ছে Task Oriented, not time oriented অর্থাৎ, সময় যতই লাগুক কার্য সম্পাদন হচ্ছে মূল কথা (এতে তারা মুসলমানদের মত অস্থির নয় )। অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠায় তাই তাঁদের তাড়াহুড়ো নাই। সময় লাগুক কিন্তু ‘লক্ষ্য’ বাস্তবায়নে কাজ এগিয়ে নিতে হবে। সেজন্য তাঁদের কাছে আওয়ামীলীগ বলুন আর বিএনপি বলুন, দিন শেষে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ হচ্ছে প্রধান। তারা ডিপ্লোমেসীতে এতটাই প্রফেশনালিজম অর্জন করেছে যে বাংলাদেশের দুই প্রধান দলই আজ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত কে তাঁদেরকে বেশী সেবা দিতে পারে।তবে আওয়ামীলীগ তাঁদের কাছে বেশী প্রিয় ঐতিহাসিক কারণে। তবে মনে রাখা দরকার, ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু হলে ভারত বিবৃতি দিয়েছিল; ‘এটা বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার’।

দিন শেষে, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হলে ভারতের কিছু হবেনা।  উল্লেখিত ‘যে বাণিজ্যিক বাজার’, চুক্তি, ট্রানজিট, বন্দর সুবিধা তারা বাংলাদেশে তৈরি করেছে সেটা কোন সরকারই উল্টাবেনা । আনন্দবাজার পত্রিকার খবর : বাংলাদেশে সরকার বদল নিয়ে চিন্তায় নেই নয়াদিল্লি, আমার দেশ , ১৯ জুলাই ২০১৩। বরং সেগুলোতে কোন ধরণের হস্তক্ষেপ করা হবেনা মর্মে চুক্তিবদ্ধ হলেই তবে এন্টি-আওয়ামী কোন দলকে তারা স্পেস দিবে।যেমনটা তারা করেছে তারেক রহমানের ক্ষেত্রে (শর্ত দেয়া হয়েছে তাকে কো-চেয়ারম্যান করা যাবেনা,যা বিএনপি নিরবে মেনে নিয়েছে)।এটাই হচ্ছে বাংলাদেশীদের বর্তমান জাতীয় সংকট।

কিছু উদ্ধৃতি সংবাদপত্র থেকে:
‘অখণ্ড ভারত’ প্রতিষ্ঠিত হবে: শীর্ষ বিজেপি  কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব আলজাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে জনগণের শুভবোধের মাধ্যমে আবার অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠিত হবে। আলজাজিরার ‘হেড টু হেড’ অনুষ্ঠানে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের আসল চরিত্র, বদরুদ্দীন উমর, যুগান্তর, ২১ জুন ২০১৫। ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) সভাপতি মোহন ভগবৎ গত ১২ জুন মথুরায় তাদের দলের এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উপলক্ষে দেয়া এক বক্তব্যে বলেছেন, ভারত, বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের প্রত্যেক নাগরিকই হিন্দু! এই তত্ত্ব এবং একই সঙ্গে বিপজ্জনক বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত একটি হিন্দু রাষ্ট্র। এ বিষয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়। আর এ বিশ্বাসেই আমাদের আটকে থাকতে হবে। নিজেদের এলাকা ভিন্ন করেই নিতে পারি আমরা। কিন্তু তাতে ভারত যে একটি হিন্দু জাতির দেশ, সে বিষয়টি কোনোভাবেই বাতিলের খাতায় ফেলা যেতে পারে না (যুগান্তর, ১৪.০৬.১৫)। তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ নিজেদের হিন্দু বলেন। কেউ বলেন, তারা ভারতীয়। এমন মানুষও আছেন যারা নিজেদের আর্য হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং অনেকে বলেন, তারা মূর্তিপূজায় বিশ্বাসী নন। কিন্তু এসব বক্তব্যে ভারত যে একটি হিন্দু রাষ্ট্র, তা মনে করতে কোনো বাধা নেই।

২০২০ সালের মধ্যে ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হবে-‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অশোক সিংহাল, ভোরের কাগজ,  ১৯ জুলাই ২০১৫

ভারত কার্যত একটি হিন্দু রাষ্ট্র: দাবি সিনিয়র বিজেপি নেতার, রেডিও তেহরান, 07 মার্চ 2016

বাংলাদেশ, পাকিস্তানও হিন্দু রাষ্ট্র–  আরএসএস প্রধান,  এন টিভি, ১৩ জুন ২০১৫

ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে হিন্দু ধর্মভিত্তিক ৩৭ রাজনৈতিক দল, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা, ৩১ জানুয়ারি ২০১৪


কার্যক্রম: 1971 Bangladesh war: RAW heroes India forgot to honour,  dailyo.in,  16-12-2015

R K YADAV নামে সাবেক র এর এই এজেন্ট দাবী করেছেন যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করেছে ‘র’, যারা স্বাধীনতার বহু আগে থেকেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে  গোয়েন্দা তৎপরতা চালাত। এই পোস্টের বাংলা অনুবাদ পড়ুন  ‘র’ এর পরিচালনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ-দাবী সাবেক ভারতীয় গোয়েন্দা যাদব।

যদিও ১৯৭১ সালে ভারতের বিএসএফ এর তৎকালীন আঞ্চলিক প্রধান গোলক বিহারি মজুমদারের মত শেখ মুজিব রহমান একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার বরণের আগে সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমেদ সহ আওয়ামী লীগ নেতাদের চীনে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। চীন যদি সহযোগিতা না করে তাহলেই ভারতে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন তিনি। ( Golak’s Untold Story of Bangladesh Liberation War, By Manas Ghosh, The New Indian Express, 17th December 2015).এই রিপোর্টে বলা হয়

Well before the 25th March Pakistan army crackdown, Sheikh Mujib had made up his mind that he would not go underground and stay put in his Dhanmondi home in Dhaka. But he had instructed his second in command in Awami League, Tajuddin Ahmed that in case he was arrested or killed, Awami League leaders  should “cross over to China” because “India should not be embarrassed under any circumstances. But if China refused to help, Indian help should be sought as a last resort.”

India’s secret war in Bangladesh, The Hindu, 11/02/2012

Seven months before the December 3 Pakistan Air Force raid that marked the beginning of the war, India’s Chief of Army Staff issued a secret order to the General Officer Commanding, Eastern Command, initiating the campaign that would end with the dismemberment of Pakistan.

ঠিক একই ধরনের কার্যক্রম তারা পরিচালনা করে যাচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি তাঁদের এক গোয়েন্দা ধরা পরে পাকিস্তানে।

‘ভারতীয় গুপ্তচর’ যাদবের স্বীকারোক্তি, মানবজমিন ডেস্ক, ৩০ মার্চ ২০১৬

এ মাসের প্রথম সপ্তাহে ‘ভারতীয় গুপ্তচর’ কুলভূষণ যাদব  পাকিস্তানের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন হাতেনাতে আটক করে। অনলাইন ডন এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কুলভূষণ যাদব ইরানের সঙ্গে বেলুচিস্তানের সারাবন সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। তার স্বীকারোক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্ট মঙ্গলবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দেশটির তথ্য, সম্প্রচার ও জাতীয় প্রতিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী সিনেটর পারভেজ রশিদ, আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল অসীম সালিম বাজওয়া।

সরবরাহ করা ডকুমেন্টে কুলভূষণ যাদব স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, আমি কমান্ডার কুলভূষণ যাদব। ভারতীয় নৌ বাহিনীতে নিয়োজিত একজন কর্মকর্তা আমি। এখন আমি ভারতীয় নৌবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের একজন ক্যাডার। আমার নাম হিসিবে হুসেইন মুবারিক প্যাটেলও ব্যবহার করি। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার জন্য তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে আমি এ নামটি ব্যবহার করি। ১৯৮৭ সালে ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমিতে যোগ দিই। এরপর ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে যোগ দিই ভারতীয় নৌবাহিনীতে। ২০০১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানেই দায়িত্ব পালন করি। এ সময়ে পার্লামেন্টে হামলা হয়। তখন থেকেই আমি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ শুরু করি।

কুলভূষণ যাদব বলেন, আমার বসবাস ভারতের মুম্বই শহরে। এখনও ভারতীয় নৌবাহিনীতে কর্মরত। ১৪ বছর চাকরির বয়স শেষ করে ভারতীয় নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসার হিসেবে আমার অবসরে যাওয়ার কথা ২০২২ সালে। ২০০৩ সালে গোয়েন্দা অপারেশন শুরু করি। ইরানের চাবাহারে চালু করি একটি ছোট ব্যবসা। ২০০৩ ও ২০০৪ সালে করাচি সফরে আসি। এখানে অবস্থান করি। কেউ তখন আমাকে সনাক্ত করতে পারে নি। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’য়ের জন্য মৌলিক কিছু এসাইনমেন্ট নিয়ে কাজ করি। ২০১৩ সালে আমাকে নিয়ে নেয় ‘র’। তারপর থেকেই আমি বেলুচিস্তান ও করাচিতে এ সংস্থার পক্ষে বিভিন্ন কর্মকা- পরিচালনা করছি। তার মধ্য দিয়ে করাচির আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হয়।

আমি ‘র’য়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি অনীল কুমার গুপ্তের লোক ছিলাম প্রকৃতপক্ষে। আমার কাজ ছিল বেলুচিস্তানে বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সহযোগিতায় কর্মকা- পরিচালনা করা। এসব কর্মকাণ্ড ছিল ক্রিমিনাল প্রকিৃতির। এতে মানুষ মারা যেতেন। পাকিস্তানি নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। এ প্রক্রিয়ায় আমি বুঝতে পারি যে, বেলুচিস্তানে যে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছে তাতে ‘র’ জড়িত।

প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের নিয়ন্ত্রণে ‘র’, বাংলামেইল২৪ডটকম,  ০৯ এপ্রিল ২০১৬

কোন আওয়াজ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’। আর এতে করে প্রধানমন্ত্রীর পায়ের নিচ থেকে আস্তে আস্তে মাটি সরে যাচ্ছে, অথচ সেটা উনি জানতেও পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন,  পথের (জনতার) আওয়াজ কোনটা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে, না যাবে- সেটি কোনো বাংলাদেশি গোয়েন্দা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে না। ডিজিএফআই, এনএসআই, পুলিশ সেটা (নিয়ন্ত্রণ) করে না। এটার জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ আছে। ‘র’ স্থির করে কোন খবর যাবে, কোথায় যাবে, কাকে জানাতে হবে? এটির মজা হলো, প্রধানমন্ত্রীর পায়ের নিচ থেকে আস্তে আস্তে মাটি সরে যাচ্ছে, অথচ সেটা উনি জানতেও পারেন না।’

ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের দৌরাত্ম্য, বিপন্ন দক্ষিণ এশিয়া, সঞ্জীব বর্মন, ডয়সে ভেলে,  13.11.2015।

ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতার মৌলিক কাঠামোর ভিত্তিতে আঘাত হানছে হিন্দুত্ববাদীরা৷ এমন পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠছে৷ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মৌলবাদী শক্তি উৎসাহিত হচ্ছে৷

বেড়ে চলা অসহিষ্ণুতার অভিযোগে ভারতের সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, অভিনেতারা সোচ্চার হয়ে উঠছেন৷ দলমত নির্বিশেষে লেখকরা দলে দলে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন৷ অথচ সরকার এর পেছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত দেখছে৷

কখনো অক্ষরে অক্ষরে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয় না বটে, কিন্তু তা সত্ত্বেও ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত৷ ভারতের আজকের প্রবণতা জার্মানিতে নাৎসি স্বৈরতন্ত্রের প্রথম পর্যায়ের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ ভারতে মোদী-বিরোধীদের অনেকেই নাৎসি-বিরোধী যাজক মার্টিন নিম্যোলার-এর মতো ভাবছেন:

‘‘নাৎসিরা যখন কমিউনিস্টদের ধরতে এলো, আমি তখন নীরব ছিলাম৷

আমি তো আর কমিউনিস্ট ছিলাম না৷

ওরা যখন সামাজিক গণতন্ত্রীদের জেলে পুরলো, আমি তখন নীরব ছিলাম৷

আমি তো আর সামাজিক গণতন্ত্রী ছিলাম না৷

ওরা যখন শ্রমিক নেতাদের ধরলো, আমি তখন নীরব ছিলাম৷

আমি তো আর সামাজিক গণতন্ত্রী ছিলাম না৷

ওরা যখন আমাকে ধরতে এলো৷

তখন প্রতিবাদ করার জন্য আর কেউ অবশিষ্ট ছিল না৷’

বিজেপি নেতার হুমকি : প্রয়োজনে বাংলাদেশকেও ঠাণ্ডা করে দেবো, আমার দেশ ০৪ মার্চ, ২০১৬ এবং মানব জমিন, ৫ মার্চ, ২০১৬

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ উত্তেজক ভাষণ দেয়ায় রীতিমতো দক্ষ। সাবেক এই আরএসএস নেতা গত বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলার সিউড়িতে রীতিমতো হুমকির সুরে বলেছেন, যে সব নেতা, অভিনেতা, লেখক, গায়ক, শিক্ষাবিদ উগ্রপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদকে মদত দেবে তাদের ধরে এনে লাথি মেরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে। সেই সঙ্গে বিজেপি নেতার সদম্ভ ঘোষণা, বোমার বদলে বুলেট দিয়ে পাকিস্তানকে ঠাণ্ডা করে দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বাংলাদেশকেও ঠাণ্ডা করে দেয়া হবে। অন্যদিকে তার হুঁশিয়ারি, পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিলেই তাদের মুণ্ডু কেটে কবর দিয়ে দেয়া হবে। ফেসবুকে একটি উত্তেজনাকর পোস্টকে ঘিরে এমনিতেই সিউড়ির কাছে ইলামবাজার এলাকা উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে।

BJP secret meeting on Bangladesh, The Telegraph India, 03/03/2016

Ram Lal, a joint national general secretary of the BJP, held a secret meeting with some opinion-makers from Bangladesh at a resort near Calcutta last week as part of the party’s attempts to understand the ground reality in the aftermath of alleged attacks on minorities across the border.

No one wanted to go on record confirming the meeting but a source in Delhi said: “Dattatreya Hosabale, the RSS’s joint general secretary, had played a role in the meeting, organised as part of the Sangh’s plan of firming up linkages with Nepal, Bangladesh, Sri Lanka, Bhutan and the Maldives.”

“During our meeting, we gave details of the situation of the minority community in Bangladesh. There were also discussions on how to develop stronger bonds between the BJP and our party,” said an Awami League leader who had attended the meeting.


ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র” এর বাংলাদেশে গোপন অপারেশন ও কার্যক্রম। বাংলাদেশ সরকারের ভেতরে-বাহিরে ৩০ হাজার র’-এর এজেন্ট তৎপর মন্ত্রী, এমপি, আমলা, রাজনীতিবিদ, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবি, লেখক, কবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, শিল্পী, প্রকাশক, অফিসার, কর্মচারী পর্যায়ের লোকজনই শুধু নয়; ছাত্র, শ্রমিক, কেরানী, পিওন, রিক্সাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, কুলি, টেক্সিড্রাইভার, ট্রাভেল এজেন্ট, ইন্ডেটিং ব্যবসায়ী, সিএন্ডএফ এজেন্ট, নাবিক, বৈমানিক, আইনজীবিসহ বিভিন্ন স্তরে তাদের এজেন্ট সক্রিয় রয়েছে।বাংলাদেশে কমপক্ষে ১ লক্ষ ‘র” কর্মী ও ইনফর্মার সক্রিয় আছে বলে জানা যায় এর মধ্যে ভারতীয় ৪,০০০ এর মত (স্পেকুলেশন) আর বাকিরা ইনফর্মার ,ধর্মীয় ও মতাদর্শগতভাবে 'র" এর প্রতি চরম সহানুভুতিশীল যাদের যেকোন কাজে লাগানো সম্ভব।

মেজর জিয়াউল হকের একটি ই-মেইল তার একজন ঘনিষ্ঠ মানুষ ফেসবুকসহ বিভিন্ন জায়গায় পোস্ট করেছিলেন, সে সুবাধেই সেনাবাহিনীর বিভেদ সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা পাওয়া গিয়েছিল। যদিও এটার সত্য-মিথ্যা যাচাই করা সম্ভব ছিল না।সেই ই-মেইলটিতে মেজর জিয়াউল হক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র’-এর অনুপ্রবেশের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তাকে অপহরণ করার পর গোপন জিজ্ঞাসাবাদের সময় ডিজিএফআই-এর পাশাপাশি র’-এর গোয়েন্দারাও সেখানে উপস্থিত ছিলো এবং তারাও তাকে দোভাষীর সাহায্যে জেরা করেছিলো। মেজর জিয়ার ভাষ্য মতে, ‘র’এর এজেন্টরা যখন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের পাশে বসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন মেজরকে জেরা করতে পারে তখন নিশ্চিত বোঝা যায় ডিজিএফআই এখন চালাচ্ছে ভারতীয় সরকার।

মেজর জিয়ার ভাষ্যমতে, র’ বাংলাদেশের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের কেন্দ্রীয় এবং ৬৪টি জেলাভিত্তিক ফিল্ড অফিসের মেধাবী অফিসারদের ব্যবহার করে এক-এগারোর মতো আরেকটি অবস্থা সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। র’এর সাথে হাত মিলিয়েছে কিছু উচ্চাভিলাষী জেনারেল। এরা বর্তমান শাসক দলকে মদদ দেয়ার ভান করছে। কিন্তু যখন এদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে তখন খোদ সরকারি দলের অনেক বড় নেতাদের নির্মূল করা হবে। এ ঘটনা যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রটির জন্য তা এক ভয়াবহ বিপদ সংকেত।বেশ কয়েকবছর আগে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র’ নিয়ে আমাদের দেশে একটি বই বেরিয়েছিলো। বইটির মাধ্যমে না জানা অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য সেসময় জানা গিয়েছিল।বইটির নাম ‘বাংলাদেশে র’। এর লেখকের নাম সাবেক সেনাসদস্য ও সাবেক ডিজিএফআই-এর মহাপরিচালক লে. (অব) আবু রুশদ।

এই বইটিতে লেখক এমন অনেক তথ্য তুলে ধরেছেন, যার মাধ্যমে নতুন করে জাতি চিন্তার খোরাক (পঙ্গু দুশ্চিন্তার খোরাক) পায়। ওনার দেয়া সেই চাঞ্চল্যকর তথ্যগুলো আজ আবার জাতির মাঝে আলোচিত হয়ে ঘুরে-ফিরে আসছে। তাই সেই চাঞ্চল্যকর বইটির কিছু তথ্য লেখকের ভাষায় হুবহু আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হলো।তিনি লিখেছেন:যেহেতু আমি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান গোয়েন্দা সংগঠন ‘ডিজিএফআই’ তথা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি, সেহেতু এ দেশের বুকে র’-এর অপতৎপরতা সম্পর্কে আমার অল্প-বিস্তর ধারণা রয়েছে। অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে স্বাধীন এ দেশে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে বৈরী গুপ্তচর সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে এ দেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিককে অবশ্যই অবহিত ও সচেতন থাকতে হবে।

 সবচেয়ে বড় কথা, মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সহায়তা করেছে বলে তাদের পরবর্তী সকল কার্যক্রমকে বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূল বলে মনে করার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। বরং একটি আত্মমর্যাদা বোধসম্পন্ন জাতি হিসেবে আমাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদেরকেই ভাবতে হবে। আর তাই স্থায়ীভাবে কাউকে আমাদের শত্রু বা মিত্র বলে জ্ঞান করার কোনো অবকাশ আছে বলে আমি মনে করি না। আজ যে আমাদের পরম মিত্র, পরিবর্তিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কাল সে ঘোরতর শত্রু বলে পরিগণিত হতে পারে। আধুনিক বিশ্বে এ ধরনের নজির বিরল নয়।তিনি তার বইটিতে বাংলাদেশে র’এর অপকীর্তি সম্বন্ধে যেসব কথা উল্লেখ করেছেন, যা আমাদের দেশের মানুষকে ব্যপকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে।

তিনি র-এর সেসব অপকীর্তি তালিকা আকারে সে বইতে উল্লেখ করেছেন:
১) পার্বত্য চট্টগ্রামে (সন্ত্রাসী) শান্তিবাহিনী গঠন করে যাবতীয় উপায়ে ভারতীয় সেনারা প্রশিক্ষণ ও সমরাস্ত্র সরবরাহ করেছে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনী ২৫ বছর যুদ্ধ করেছে। বহু অন্যায় দাবিতে তারা বিদ্রোহ করেছে এবং বাঙালিদের হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন হয়ে তাদের সকল দাবি মেনে নিয়ে বাঙালিদের নিজ দেশে পরবাসী বানিয়ে দিয়েছে।

২) প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হত্যা: লেখক অনেক তথ্য-প্রমাণ দিয়ে উল্লেখ করেছেন, ভারত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী শক্তিকে হটিয়ে একটি বন্ধুভাবাপন্ন শক্তিকে ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। জিয়া হত্যার মাত্র ১২ দিন পূর্বে শেখ হাসিনা ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসে। জিয়া হত্যার খবর পেয়ে শেখ হাসিনা ব্রাক্ষণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সীমান্তরক্ষী বাহিনীরা বাধ সাধায় তিনি সে যাত্রায় পার হতে পারেননি।

৩) স্বাধীন বঙ্গভূমি আন্দোলন: ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। পরের দিনই ‘স্বাধীন বঙ্গভূমি’ নামে পৃথক হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছিলো। এক সময়কার আওয়ামীলীগ নেতা ডঃ কালীদাস বৈদ্য ‘বঙ্গসেনা’ নামে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীও গড়ে তুলেছিলো। খুলনা, যশোর, ফরিদপুর, কুয়িা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা নিয়ে এই হিন্দুর্রা গঠনের চক্রান্ত চালানো হয়েছিলো। এটার পেছনেও র’ এর হাত ছিল।

৪) বাংলাদেশ সরকারের ভেতরে-বাহিরে ৩০ হাজার র’-এর এজেন্ট তৎপর শিরোনামে তিনি লিখেছেন, মন্ত্রী, এমপি, আমলা, রাজনীতিবিদ, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবি, লেখক, কবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, শিল্পী, প্রকাশক, অফিসার, কর্মচারী পর্যায়ের লোকজনই শুধু নয়; ছাত্র, শ্রমিক, কেরানী, পিওন, রিক্সাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, কুলি, টেক্সিড্রাইভার, ট্রাভেল এজেন্ট, ইন্ডেটিং ব্যবসায়ী, সিএন্ডএফ এজেন্ট, নাবিক, বৈমানিক, আইনজীবিসহ বিভিন্ন স্তরে তাদের এজেন্ট সক্রিয় রয়েছে।

৫) ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি: এ কমিটির পেছনেও র’-এর হাত রয়েছে বলে লেখক তার বইতে উল্লেখ করেছেন।
লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ১৯৯৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সৃষ্ট আন্দোলনে জামাত আওয়ামী লীগের শরীকে পরিণত হওয়ার সাথে সাথে এ ঘাদানিক কমিটির সকল দাবি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। অথচ তারা একসময় গণ-আদালত গঠন করে গো’আযমের ফাঁসী দাবি করলেও আওয়ামী লীগ-জাপা-জামাত জোট গঠনের পর একটি বারের জন্যও সে ফাঁসির রায় কার্যকর করার একটি টু শব্দও তারা করেনি। একদিকে ঘাদানিক গঠন ও এর উদ্দেশ্য যে ঘাতকদের বিচার নয় ভিন্ন কিছু ছিলো সে ব্যাপারে ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়। ১৯৯১ সালে বিশেষ উদ্দেশ্য সামনে রেখে গঠন হলেও ১৯৯২ সালের পর হতে ১৯৯৯ সালের ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত এই ঘাদানিক-এর কোনো সাড়া-শব্দ ছিলো না। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঘটনা বিশ্লেষণ করে কি বোঝা যায় না, কী উদ্দেশ্যে, কাদের স্বার্থে এ কমিটির সৃষ্টি?উপরে উল্লেখিত মেজর জিয়াউল হক এবং লে. (অব) আবু রুশদ-এর ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, প্রিয় মাতৃভুমি বাংলাদেশে ভারত তার গোয়েন্দা সংস্থা র’-এর মাধ্যমে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সেক্টরে কল-কাঠি নাড়ছে।

ভারত তার পছন্দের এবং সমর্থনপুষ্ট ব্যক্তি ও গোষ্ঠী দ্বারা বাংলাদেশে এক মহাবিপর্যয় ঘটাতে চাচ্ছে। ৪০ বছর হয়েছে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। বিগত যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হিংসা-বিদ্বেস চরম আকারে ধারণ করেছে। যার পরিণাম এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ।দেশের মানুষের অজান্তে দেশে যেকোনো সময় এমন বিপর্যয় নেমে আসতে পারে, যখন আর কিছুই করার থাকবে না। তাই নিজেদের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এখন সময়ের দাবি। কে দেশপ্রেমিক আর কে দেশদ্রোহী, এই বাছ-বিচার ত্যাগ করে নতুন উদ্যমে দেশকে এক নতুন দিগন্তে নিয়ে যাওয়ায় এখন লক্ষ্য হওয়া উচিত।বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি বাহিনী গঠন ও পরিচালনায় “র” জরিত আছে বলে ধারনা করা হয়।

শুরুর কথা চায়না (১৯৬২) এবং পাকিস্তান (১৯৬৫) এর সাথে যুদ্বে পারাজ্য়ের পর ভারতীয় সরকার উপলদ্বি করে তাদের একটি শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা দরকার। এই উপলদ্বি থেকেই ১৯৬৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স অফিসার ও আইবি র ডেপুটি ডাইরেক্টর আর.এন.কাও র নেতৃত্বে ভারতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে Research and Analysis Wing (RAW). কাও ইন্দিরা সরকার কে বুজাতে সক্ষম হন যে একটি শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়া যুদ্বে জয়লাভ করা সম্ভব না। নিঊ দিল্লীতে “র” এর হেডকোয়ার্টার অবস্থিত ইতিহাস (১৯৩৩-১৯৬৮) ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বে লোক নিয়োগ এবং সিমান্তে গোয়েন্দাগিরি চালানোর নিমিত্তে Intelligence bureau (IB) গঠন করেন, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর সঞ্জীব পিল্লাই প্রথম ভারতীয় হিসাবে IB র ডিরেক্টর পদে আসীন হন। পিল্লাই ব্রিটিশগোয়েন্দা সংস্থা M15 এর মত করে ভারতীয় IB কে সাজান কিন্তু ১৯৬২ র ইন্দো চায়না যুদ্বে (২০শে অক্টোবর-২১শে নভে ম্ব র১৯৬২) ভারতের শোচনীয় ব্যার্থতায় প্রধানমন্ত্রী নেহেরু ইন্ডিয়ান আর্মি চীপ জেনারেল জয়ন্ত নাথ চৌধুরী কে IB কে নতুন করে ঢেলে সাজাতে বলেন। (১৯৬৮-বর্তমান) এর পরম্পরায় ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে কাও “র” র নীল নকশা আকেন। শুরুতে মাত্র ২৫০ জন জনবল নিয়ে ২ কোটি রুপী বাজেট নিয়ে কাও কাজে ঝাপিয়ে পড়েন।

১৯৭১ সালে কাও আকাশ গোয়েন্দা পরিচালনার জন্য Aviation Research Centre (ARC) গঠন করতে বাধ্য করেন। ১৯৯০ সালে “র” প্রথম প্যারা মিলিটারি বাহিনী Sepecial Frontier Force (SFF) গঠন করে। ভারত সরকার 2004 সালেএর সাথে যোগ করেন National Technical Facilities Organisation(NTFO), National Technical Research Organization (NTRO) র মত সংগঠন ঊদ্দ্যেশ্য পার্শবর্তী দেশসমুহ যাদের সাথে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সরাসরি জরিত তাদের রাজনৈতিক ও সামরিক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে ঐ সব দেশের বৈদেশিক নীতি নির্ধারনে ভুমিকা রাখা। প্রবাসে অবস্থানকারী ভারতীয় বা ভারতীয় বংশভুত জনগোস্টীকে ব্যাবহার করে আন্তর্জাতিক সমর্থন সহানুভুতি নিজের পক্ষে নিয়া আসা। পশ্চিম ইউরোপ ও যুক্তরাস্ট্র থেকে পাওয়া পার্শবর্তি দেশগুলি বিশেষত পাকিস্তানের সমরাস্ত্র সাপ্লাই পর্যবেক্ষনে রাখা ও সীমিত করা চেস্টা। সংগঠন রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর সাংগঠনিক কাঠামোসম্পর্কে যতদুর জানা যায় তা মার্কিন সি আই এ ধাঁচে গঠিত।

 একজন ক্যাবিনেট সেক্রেটারির(রিসার্চ)পদর্যাদা সম্পন্ন প্রধানের অধীনে বিভিন্ন ডেস্ক ও অপারেশনাল গ্রুপে বিভক্ত।বিভিন্ন ডেস্কের অধীনস্তরা বেশির ভাগ চীন ওপাকিস্তান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ।“র”প্রধান প্রাশনিক ভাবে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের কাছে রিপোর্ট করেন এবং মন্ত্রী পরিষদ সচিব প্রধানমন্ত্রীকে রিপর্ট করে থাকে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে “র” সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও রিপোর্ট করে থাকে। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেস্টার কাছেও রুটিন মাফিক প্রতিদিন “র” প্রধান রিপোর্ট দেন। “র” এর সংঠন ভৌগলিক এলাকা ও অপারেশনাল কার্যক্রমের ভিত্তিতে বিভক্ত। দুইজন বিশেষ সচিবের ও একজন ডাইরেক্টর পদমর্যাদার এ্যাভিয়েশন রিসার্চ সেন্টারের জন্য চারজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা বিভিন্ন ভৌগলিক এলাকার জন্য এছাড়া ৪০টি ডেস্কে বিভক্ত কার্যক্রমের জন্য কমপক্ষে ৪০জন জয়েন্ট সেক্রেটারী পদমর্যাদা কর্মকর্তা বর্তমানে কর্মরত।

নয়াদিল্লীর লোদি রোডের সদর দফতর –আঞ্চলিক সদর দফতর-বিদেশে অবস্থিত স্টেষন অফিস-মাঠকর্মী। বিদেশে অবস্থিত স্টেষন অফিস গুলি একজন কন্ট্রোলিং আফিসারের অধীনে যারা মাঠ পর্যায়ে অবস্থানকারী কর্মীদের অ্যাসাইন্টমেন্ট প্রদান, নিয়ন্ত্রন, সুপারভিশন তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষন করে থাকে। বিভিন্ন সুত্র থেকে ফিল্ড অফিসার ও সহকারী ফিল্ড অফিসাররা তথ্য সংগ্রহ করে সিনিয়ার ফিল্ড অফিসারকে দেয় সিনিয়ার ফিল্ড অফিসার বা স্টেশন অফিসার সেই প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে আঞ্চলিক বা সদর দফতরের বিভিন্ন ডেস্কে প্রেরন করেন।এরপর ডেস্ক প্রধান সেই তথ্য গুরত্ব বিচারে আরো উপরে প্রেরন করেন। “র” এ কর্মীদের কে এজেন্ট হিসাবে না বলে রিসার্চ অফিসার বলা হয়। এই গোয়েন্দা সংস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিমানে নারী অফিসার কাজ করে থাকে। বগত বছরে চীন ও পাকিস্তান ডেস্ক ভেঙ্গে আলাদা ভাবে চীনের জন্য একটি ডেস্ক করা হয়েছে। এস এফ এফঃ এস্টাবলিশমেন্ট ২২ “র” পরিচালিত বিশেষ বাহিনী।যারা ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা করে থাকে। রিক্রুটমেন্টঃ স্বাধীন সংস্থা হিসাবে “র” এর কর্মকর্তা বা মাঠ পর্যায়ে কর্মী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সাধারনত ধরাবাঁধা কোন নিয়ম নেই।

সাধারনত ভারতীয় সেনা,নৌ,বিমান বাহিনীর স্পেশালফোর্স, পুলিশ বাহিনী,আই এ এস ক্যাডার, আই, বি, সিবিআই অথবা মেধা বিচারে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজ্যুয়েট ও শিক্ষা প্রতিস্টান থেকেও নেয়া হয়ে থাকে। “র” এ কর্মরত চাকরিকে অ্যানালাইসিস ক্যাডার সার্ভিস বা আরএএস বলা হয়। আই এ এস (বাংলাদেশি মান্দন্ডে বি সি এস) অফিসারদের মধ্য থেকে যারা “র” তে যেতে ইচ্ছুক তাদের ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়েট এর অধীনে ডেপুটি ফিল্ড অফিসার DFO পদের পরীক্ষায় বসতে হয়.পরীক্ষায় উত্তির্নদের মধ্য থেকে মেধার ভিত্তিতে সেরাদের বেছে নেয়া হয় এরা সবাইরিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ক্যাডার নামে পরিচিত হয়। কমপক্ষে ৮ বছর DFO থাকার পরে তাকে পরবর্তি লেভেলে ফিল্ড অফিসার FO পদে পদায়ন করা হয়। কমপক্ষে ৫ বছর FO থাকার পর তাকে সিনিয়ার ফিল্ড অফিসার SFO (ক্লাশ ওয়ান) হিসাবে প্রমোশল করা হয়। এরপরের ধাপে স্টেষন প্রধান বা রেসিডেন্স অফিসার RO হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়।এরপর তাকে কোন ডেস্ক প্রধান হিসাবে “র” আঞ্চলিক দফতর,সদর দফতর এ রাখা হয় অথবা নিজ নিজ বাহিনী বা ভারতের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের যেকোন স্থানে পাঠানো হয়। DFO FO SFO রা সরাসরি বিদেশের মাটিতে কর্মরত থাকে।

তারা তাদের স্টেশন অফিসারের ভাগ করে দেয়া দায়িত্ব অনুযায়ি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে এবং ইনফর্মার হিসাবে স্থানীয় গুরুত্বপুর্ন ও প্রয়োজনিয় ব্যক্তিদের,ঐ দেশের গোয়েন্দা সংস্থা বা ঐ দেশে অবস্থানকারি তৃতীয় কোন দেশের গুপ্তচর কর্মীকে নিজের পক্ষে আনার চেস্টা করে। পরিচালকরা “র” প্রায় সব পরিচালকই ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস থেকে এসেছে। একমাত্র অশোক চর্তুরবেদী ছাড়া সমস্ত পরিচালকেরা চীন, পাকিস্তান expert ছিলেন। অশোক চর্তুরবেদী ছিলেন নেপাল বিষেশজ্ঞ।

১।আর.এন.কাও এবং শঙ্কর নায়ার ইম্পেরিয়াল পুলিশ (IP) থেকে এসেছেন যা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকের পুলিশ সার্ভিস ছিল 1947 পর্যন্ত ।

 ২. এন.এফ. সান্তুক ভারতীয় নেভিতে পরে ভারতীয় পুলিশসার্ভিস এবং Indian Frontier Adminastration Force এ ছিলেন।

৩।বিক্রমসুদ Indian Postal Service এ ছিল এবং পরে স্থায়ীভাবে RAS ক্যাডারে যান। এখন সে পর্যবেক্ষক উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করে।

৪।এ.এস.দুলাত একজন ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস অফিসার, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো থেকে আসেন।

 ৫।কে.সি. ভার্মা একজন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো অফিসার ছিলেন।

 ৬।সঞ্জীব ত্রিপাঠী বর্তমান ডিরেক্টর যিনি RAS থেকে এসেছেন।

প্রশিক্ষনঃ রিক্রুট হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পড় নির্বাচিত ব্যাক্তিকে প্রয়োজন ভেদে সল্পমেয়াদি বেসিক ও দীর্ঘমেয়াদি কালেক্টিভ ট্রেনিং প্রদান করা হয়। সল্প মেয়াদে ১০ দিনের ট্রেনিং এ প্রধানত রিক্রুটের মনবল বৃদ্ধির ব্যাবস্থা করা হয় পাশাপাশি বহির্দুনিয়া আরগোয়েন্দা জগতের পার্থক্য ব্যাখ্যা,প্রতিপক্ষের গোয়েন্দা চেনার উপায়,গোয়েন্দা জগতে শত্রু বা বন্ধু নেই সবাই প্রতিদন্দ্বি, সাধারন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসব্যাবহার যেমন রেডিও ট্রান্সমিটার ব্যাবহার ইত্যাদি।এই ট্রেনিং সাধারনত হরিয়ানার গুরুগাও এ ট্রেনিং স্কুলে প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রশিক্ষিত অফিসারদের মুম্বাইয়ে ফিনান্সীয়াল ইন্টেলিজেন্স স্কুলে প্রশিক্ষন দেয়া হয়। প্রাথামিক ট্রেনিং শেষ প্রয়োজনমাফিক দেরাদুনে ১-২ বছরের ফিল্ড ট্রেনিং প্রদান করা হয়।

ফিল্ড ট্রেনিং এ আন্ডার কাভার অপারেশন,কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স,
স্যাবোটেজ,জনমত ম্যানিপুলেট ও দন্দ্ব সৃস্টির কৌশল সহ অনেক বিষয়ে ব্যাপক ট্রেনিং প্রদান করা হয়। ট্রেনিং সেন্টারে সবাই নিজ নিজ নাম পরিচয়ের বদলে কোড ব্যবহার করে থাকে। সরাসরি নিয়োগকৃত DFO দের সাধারনত বেসিক ও অ্যাডভান্স দুই ধরনের ট্রেনিং সম্পন্ন করার পর বিদেশে ডেপুটি ফিল্ড অফিসার হিসাবে পাঠানো হয়।।সংস্লিস্ট দেশের স্থানীয় রিক্রুটদের মেধা,গুতুত্ব ও কাজের ধরন বুঝে শুধু বেসিক অথবা অ্যাডভান্স ট্রেনিং উভয়ই দেয়া হয়। কর্ম পদ্ধতিঃ “যা বল প্রয়োগে অর্জন সম্ভব নয় তা ধোঁকা দিয়ে সিদ্ধ করা যায়, বিষাক্ত গোখারা সাপও কাক আর সোনার হারের ফাঁদে পরাজিত হয়।“ –চানক্য তথ্য সংগ্রহ: কভার্ট ও নন কভার্ট উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করে “র” তথ্যা সংগ্রহ করে থাকে।

আক্রমনাত্তক গোয়েন্দাবৃত্তি: “র” এলাকা ভেদে আক্রমনাত্তক গোয়েন্দা কৌশল পরিচালনা করে। এরমধ্যে গুপ্তচরবৃত্তি,মানসিক যুদ্ধ পরিচালন,অন্তর্ঘাতমুলক কর্ম কান্ড। ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশনঃ সাম্রিক বাহিনীর স্পেশাল ফোর্স থেকে নেয়া বিশেষ প্রশিক্ষনপ্রাপ্তদের সহায়তায় গুপ্তহত্যা পরিচালনা করা হয়। প্রতিগোয়েন্দাবৃত্তি: “র” দেশের অভ্যন্তরে ও দেশেরবাইরে প্রতিবেশি রাস্ট্রগুলিতে প্রতিদন্দ্বি গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা করে। মেইল হ্যাকিং ও ইন্টার্সেপ্সহনঃ “র” আই টি এক্সপার্টরা নিয়নিত স্থানীয় গুতুত্বপুর্ন দফতর ও ব্যক্তির ইমেইল হ্যাক করে থাকে এবং পোস্টাল মেইল ইন্টার্সেপ্ট করে থাকে।

 গুরুত্বপুর্ন স্থাপনার কাছাকাছি ট্রান্সমিটার স্থাপনঃ সংশ্লিস্ট দেশের গুরুত্বপুর্ন স্থাপনা যেমন বিভিন্ন বাহিনী সদর দফতর,সরকারী গুরুত্বপুর্নঅফিস ও অত্যন্ত স্পর্ষ্কাতর ব্যক্তিবর্গর বাড়িতে টেলিফোনে আড়ি পাতে ও আশেপাশে স্থায়ী বা ভ্রাম্যমান হাই ফ্রিকোয়েন্সী ট্রান্সমিটার সহ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহ করে। জনমত ঘুরানোঃ “র” বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে সংশ্লিস্ট দেশের জনমত তার পছন্দ ও সুবিধা অনুযায়ি ঘুরাতে চেস্টা করে এজন্য RO নির্দেশনা অনুযায়ি ঐ দেশে অবশানকারি DFO এবং FO রা তাদের স্থানীয় নেটওয়ার্ক, লোকাল ইনফর্মার ও রিক্রুটদের ব্যবহার করে প্রকাশিত তথ্য ম্যানিপুলেট করার চেস্টা করে। পর্যবেক্ষন,ম্যাসেজ ইন্টারসেপশন, সিগন্যাল ও পোস্টাল চ্যানেল ব্যাবহার,পর্যবেক্ষন,ফোন ট্যাপিং,ই মেইল হ্যাক,কোড উদ্ধারের মত আধুনিক গোয়েন্দা কৌশল ব্যাবহার করে তথ্যা সংগ্রহ করা হয়।একই তথ্য একাধিক উতস হলে সংগ্রহ করে ক্রস চেক করে দেখা হয়।

এম্ন কি ব্ল্যাকবেরি কোম্পানীর পরিসেবা ও নেটওয়ার্ক “র” পর্যবেক্ষন ও নিয়ন্ত্রনেরচেস্টা করে। এপর্যন্ত পরিচালিত গুরুত্বপুর্ন অপারেশনঃ হিমালয়ে ELINT অপারেশন যা ১৯৬৪ সালে চীনের পারমানবিক পরীক্ষা চালানোর পর সি আই এ ও “র” ১৯৬৮ সালে যৌথভাবে চীনের মিসাইল স্টেষন ও ঐ বিস্ফোরনের স্থান নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিখ্যাত ভারপ্ত্যীয় পর্বতারোহী নন্দা দেবীর সহায়তায় পরিচালনা করে। ১৯৭১ এ বাংলাদেশ অপারেশনঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহন। ১৯৭০ এ কাশ্মীরী বিচ্ছিন্নতাবাদি দের ব্যবহার করে ভারতের বিমান ছিনতাই করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া যার ফলশ্রুতিতে ভারত তার আকাশসীমার উপর দিয়ে পাকিস্তানে দুই পাশের বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করে দিতে পারে। অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধাঃ “র” এর দেয়া ১৯৭৪ সালে ভারতের পারমানবিক অস্ত্র প্রোগ্রাম এর কোড নেম।১৯৭৪ এর ১৮ মে পারমানবিক অস্ত্র তৈরী ও পরীক্ষার আগে পর্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা। সিকিম দখলঃ ১৯৭৫ এ “র” এর সহোযোগীতায় ভারতীয় বাহিনী সিকিম একিভুত করে।

কাহুটা ব্লু প্রিন্ট ফাঁসঃ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের রাওয়াল পিন্ডিতে কাহুটা এলাকায় খান রিসার্চ ল্যাবটারিতে পাকিস্তানের পারমানবিক কর্মসুচির খবর উদ্ধার করে “র”। ল্যাবটারির কাছে তাদের পরিচালিত একটি নাপিতের দোকান থেকে সংগ্রহ করা চুলের স্যাম্পল এ বেডিয়েশন পরীক্ষা করে। এরপর তারা ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা করে প্রকল্প ধংস করতে চাইলে ভারতের ততকালীন প্রধান মন্ত্রী মোরাজি দেশাই তাদের নিবৃত্ত করেন এবং পাক প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক কে ফোন করে “র” এর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দেন।

অপারেশন মেঘদুতঃ ১৯৮২ তে ভারতের সেনা বাহিনীর যে ধরনের স্নো ওয়ার্ফেয়ারের গীয়ার ব্যবহার করে একই ধরনের আর্টিক ওয়ার্ফেয়ারের গীয়ার পাকিস্তান লন্ডনের একটি কোম্পানী থেকে সংগ্রহ করছে জানতে পারে “র”।যার ফলে ভারতীয় সেনা বাহিনী পাকিস্তানি দের পুর্বেই সিয়াচেল হিমবাহের সিংভাগ দখল করে নেয়। ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশনঃ মধ্য আশির দশক জুড়ে পাকিস্তানের অবস্থিত খালিস্তানি (শিখ) বিদ্রোহীদের ঘাটিতে ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা করে। অপারেশন ক্যাকটাসঃ ২০০ তামিল গেরিলার হাতে দখল হয়ে যাওয়া মালদ্বীপ কে সহায়তায় “র’ ও ভারতীয় বিমান বাহিনী একসাথে অভিযান পরিচালনা করে।

৩ রা নভেম্বর ১৯৮৮ ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের সহায়তায় মালদ্বীপ ক্ষ্মতা পূর্ন্দখল। শ্রীলংকায় তামিল ট্রেনিংঃ আশির দশক ধরে “র” শ্রীলংকায় তামিলদের স্বাধীন রাস্ট্রের জন্য উদ্বুদ্ধকরন ট্রেনিং পরিচালনা সহ পরবর্তিতে ভারতীয় বাহিনীর অভিযানে সহায়তা করে। অপারেশন চানক্যঃ পুরো ৯০ এর দশক ধরে কাশ্মীর উপত্যাকায় আই এস আই ও তাদের ট্রেনিং প্রাপ্ত গেরিলাদের ধরতে এ অভিযান চালানো হয়। অ্যান্টি অ্যাপারটিড মুভমেন্টঃ RAW অনেক স্বাধীনআফ্রিকান দেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ও নামিবিয়া বিরোধী জাতিবিদ্বেষ সংগ্রাম করতে সাহায্য করে।

 RAW অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিছু আফ্রিকান দেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান কাজ সহায়তা করে। অপারেশন লিচঃ মায়নমার কে দমন করার জন্য কোচিন বিদ্রোহীদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে, পরে নিজেরাই KIA (Kochin Independence Army) র ৬ জন শীর্ষ নেতাদের হ ত্যা করে আসলেই গোয়েন্দা কর্মকান্ডে কোন শত্রুমিত্র নেই। নর্দান এলায়েন্সঃ এছাড়া আফগান গৃহযুদ্ধে ৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে নর্দান অ্যালায়েন্স কে র” সহায়তা করে। মার্কিন যুক্তরাস্ট্র পরিচালিত ওয়ার অন টেরর এ সক্রিয়ভাবে সি আই এ মোসাদ সহ অন্যান্য পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থার সাথে অংশগ্রহন। অপারেশ মেহেরানঃ ২০১১ সালে পাকিস্তানের মেহেরান নৌঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে তিনটি অত্যাধুনি আর্লি ওয়ার্নিং রাডারযুক্ত পাকিস্তানের একমাত্র আর্লি ওয়ার্নিং বিমান স্কোয়াড্রন ধংস করা। পাকিস্তানের বালুচিস্তানে বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষনও অস্ত্র প্রদান।পাকিস্তানের করাচী ভিত্তিক রাজৈতিক হত্যাকান্ড পরিচালনা।নেপালের রাজা বিরেন্দ্র বীর বিক্রম কে নির্বংশ করা।

৯০ এর দশকে নেয়া এক পরিকল্পনার অংশ হিসাবে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলিতে গত দেড় দশক ধরে ৫,০০০ ভারতীয় তরুনীদের বিয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্রী হিসাবে তৈরী করে প্রেরন করা হয়েছে। সমালোচনা ১।8 ফেব্রুয়ারি 2010 “আউটলুক ম্যাগাজিন” রিপোর্টকরে সাবেক চীফ অশোক চর্তুরবেদীকে নিয়ে, ভারত সরকারের তহবিল ব্যবহার করে তার স্ত্রীকে নিয়ে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ করে অবসর গ্রহণ করার পরে, অশোক চর্তুরবেদীর কুটনৈতিক পাসপোর্ট সারেন্ডার তো করেইনি উপরন্ত তার স্ত্রী জন্য জারি করে আর একটি. ২।অবসর গ্রহন করার পর মেজর জেনারেল ভি কে সিং “র” এর আভ্যান্ত্রীন দূর্নীতি নিয়ে একটি বই লেখেন। এরপর ই “অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট” র আওতায় গ্রেফতার হন ৩। ১৯শে অগষ্ট ২০০৯ “র” এর গুরগাও প্রশিক্ষন একাডেমির ভাষা পরিচালক ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সামনে আত্নহত্যা করতে উদ্যত হন।

এ ব্যাপারে খুব বেশি কিছু জানা যায় না ৪।একজন সিনিয়র প্রযুক্তিগত অফিসার সিবিআই দ্বারা ঘুস গ্রহনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন 4 ফেব্রুয়ারী 2009, ডিরেক্টর স্তরের এই কর্মী, যে "সংবেদনশীল" প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সরঞ্জাম এর এক্সপোর্ট লাইসেন্স মঞ্জুর কাজ করত। তার বিরুদ্বে অভিযোগ ১ লক্ষ রুপি ঘুস গ্রহনের। ৫।সেপ্টেম্বর ২০০৯, ৭ জন RAS ক্যাডার এ.বি.মথুর কে special secretary র(IPS cader) বিধিবর্হিরভূত পদোন্নতি প্রদান করায় পদ ত্যাগ করে বাংলাদেশে এ “র” এর অপারেশন ও কার্যক্রমঃ বাংলাদেশে কমপক্ষে ১ লক্ষ ‘র” কর্মী ও ইনফর্মার সক্রিয় আছে বলে জানা যায় এর মধ্যে ভারতীয় ৪,০০০ এর মত (স্পেকুলেশন) আর বাকিরা ইনফর্মার ,ধর্মীয় ও মতাদর্শগতভাবে 'র" এর প্রতি চরম সহানুভুতিশীল যাদের যেকোন কাজে লাগানো সম্ভব। বাংলাদেশে যে সব বড় ঘটনার সাথে রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর সংশ্লিস্টতা নিয়ে আঙ্গুল তোলা হয়ঃ বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি বাহিনী গঠন ও পরিচালনায় “র” জরিত আছে বলে ধারনা করা হয়।

১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান হত্যা পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে র” এর সংশ্লিস্টতা ছিলো বলে ধরা হয়। এরশাদের ক্ষমতায় আরোহন এ সহযোগীতা ও তাকে ডবল এজেন্ট সন্দেহে এরশাদের পতনে সহায়তা। ১৯৯৬ এর জেনারেল নাসিমের ব্যার্থ অভ্যুত্থান প্রচেস্টা। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়া হত্যাকান্ড। ১/১১ বি্ডিআর বিদ্রোহ ইলি্য়াস আলী নিরুদ্দেশ এছাড়া বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা তৈরীর জন্য রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং কে দায়ি করা হয়। অসর্মথিত সুত্র বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল,এন জিও,সরকারী প্রতিস্টান,বানিজ্য অ্যাসোসিয়েশন থেকে শুরু করে প্রতিটি সরকারী বেসরকারি গুরুত্বপুর্ন প্রতিস্টানের মধ্যে রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর কর্মীরা সক্রিয় আছেন। বাংলাদেশে তাদের প্রধানতম রিক্রুটিং মাধ্যম হচ্ছে "ইন্ডিয়ান কালচারাল সেন্টার"। ঢাকা শহরের অন্তত দুইটি মসজিদ এর ইমাম অথবা সহকারি হিসাবে "র" কর্মকর্তা কাজ করছেন। চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, গোপালগঞ্জ ও সিলেটের একাধিক মাদ্রাসার শিক্ষক কভারে "র" অফিসার কর্মরত আছেন।বাংলাদেশের প্রতিটা গ্যারিসন শহরের প্রবেশ মুখে এবং আশেপাশে একাধিক "র" সার্ভেইলেন্স পোস্ট এ"র" অফিসাররা কর্মরত আছেন। 

No comments:

Post a Comment