Thursday, 27 August 2015

পর্ব তিন কস্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র প্রমথনাথনের লেখা বিশ্বরচনা বইটি রবীন্দ্রনাথ জোর করে নিজের নামে বিশ্বপরিচয় দিয়ে ছাপিয়ে ছিলেন ??!!

পর্ব  তিন   ক
স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র
প্রমথনাথনের লেখা বিশ্বরচনা বইটি রবীন্দ্রনাথ জোর করে নিজের নামে বিশ্বপরিচয় দিয়ে ছাপিয়ে ছিলেন ??!!

সূফি বরষণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র
প্রমথনাথনের লেখা বিশ্বরচনা বইটি রবীন্দ্রনাথ জোর করে নিজের নামে বিশ্বপরিচয় দিয়ে ছাপিয়ে ছিলেন ??!!
বিশ্বভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের তরুণ অধ্যাপক প্রমথনাথ সেনগুপ্তের বিশ্বরচনা বইটি রবীন্দ্রনাথ ভাষাগত সম্পাদনার নাম করে নিজের নামে জোর করে বিশ্বপরিচয় নাম দিয়ে ছাপিয়ে ফেলে ছিলেন॥
মূল ঘটনায় যাবার আগে বিশ্বপরিচয় গ্রন্থটি শুরুর ঘটনা একটু জেনে নেয়া যাক। রবীন্দ্রনাথের এক সময় ইচ্ছে হয়েছিলো পশ্চিমের ‘হোম ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরি’র অনুকরণে ‘লোকশিক্ষা গ্রন্থমালা’ তৈরির–যেটি জনপ্রিয় সহজ ভাষায় বিজ্ঞানকে সর্বসাধারণের কাছে পোঁছিয়ে দিবে ।
কাজেই ভাষা হতে হবে যথাসম্ভব সহজ সরল, পাণ্ডিত্য পূর্ণ বিবর্জিত ভাষা । তিনি ভেবেছিলেন মহাবিশ্বের সাথে সাধারণ পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য একটা বই লেখা হবে, এবং বইটির ভার তিনি দেন পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকের কাজ নিয়ে বিশ্বভারতীতে যোগ দেয়া তরুণ অধ্যাপক প্রমথনাথ সেনগুপ্তের উপর।
রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণ করে বলেছেন [প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়,রবীন্দ্রজীবনী ও রবীন্দ্রসাহিত্য-প্রবেশক, ৪র্থ খণ্ড, বিশ্বভারতী, ১৪০১, পৃ. ৯৬] :
‘আমাদের আলোচ্য পর্বে রবীন্দ্রনাথকে আর-একটি বিষয়ে আলোচনা করিতে দেখিতেছি, সেটি হইতেছে লোকশিক্ষার ক্ষেত্রে। পাঠকদের স্মরণে আছে বহু বৎসর পূর্বে Home University Libraryর অনুরূপ গ্রন্থমালা বাংলাভাষায় প্রকাশনের কথা কবির মনে আসিয়াছিল। এতকাল পরে বিশ্বভারতী প্রকাশন-বিভাগের অধ্যক্ষ চারুচন্দ্র ভট্টাচার্যের উদ্যোগে লোকশিক্ষা গ্রন্থমালা প্রকাশের পরিকল্পনা গৃহীত হইল।
কবির মতে, ‘সাধারণ জ্ঞানের আলোকে সহজবোধ্য ভূমিকায়  আরম্ভ হইবে এইদেশের বিজ্ঞানচর্চা। তদুদ্দেশে কবির ইচ্ছা যে, এই লোকশিক্ষা গ্রন্থমালার প্রথম গ্রন্থ হইবে বিশ্বপরিচয়। কবি বলেন, ‘বুদ্ধিকে মোহমুক্ত ও সতর্ক করবার জন্য প্রধান প্রয়োজন বিজ্ঞানচর্চার।… জ্ঞানের এই পরিবেশন কার্যে পাণ্ডিত্য (pedantry) যথাসাধ্য বর্জনীয় মনে করি। এই প্রথম গ্রন্থখানি লিখিবার ভার অর্পণ করা হইয়াছিল প্রমথনাথ সেনগুপ্তের উপর। প্রমথনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র, সত্যেন বসুর প্রিয় শিষ্য, শিক্ষাভবনে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক।’
তরুণ শিক্ষক প্রমথনাথ শান্তিনিকেতনে চাকরী পেয়েছিলেন সত্যেন বোস এবং জ্ঞানচন্দ্র ঘোষের সুপারিশে। তিনি বিজ্ঞানের ভাল মেধাবী  ছাত্র ছিলেন। কিন্তু বাংলায় খুব বেশি দখল ছিল না, এটা তো সাধারণ বিষয় ?? ফেবুতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পোস্ট দেখি যাতে অসংখ্য বানান ভুল থাকে !?? আরও থাকে না বাক্যে অব্যয় ক্রিয়া প্রত্যয়ের যথাযথ ব্যবহার ॥ (অন্ততঃ রবীন্দ্রনাথের সমপর্যায়ের নন বলে তিনি মনে করতেন)।
রবীন্দ্রনাথ প্রমথবাবুকে ব্রিটিশ পদার্থবিদ জেমস জিনসের একটা বই — ‘থ্রু স্পেস অ্যান্ড টাইম’ পড়তে দিয়েছিলেন। জেমস জিন্স খুব বড় মাপের বিজ্ঞানী ছিলেন না, কিন্তু জনপ্রিয় বিজ্ঞানগ্রন্থের প্রণেতা হিসেবে কিছু সুনাম তাঁর ছিল। ফলে, তার বই থেকে জনপ্রিয় বিজ্ঞানের বই কীভাবে লিখতে হয় তার একটা রসদ পাবেন প্রমথবাবু — সেরকম একটা ধারণা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কাজেই, রবীন্দ্রনাথ যখন প্রমথবাবুকে বই লেখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন (তখন কি তিনি কস্মিনকালেও জানতেন, তার এই রসদ রবিবাবু পুরোটাই নিজের বইয়ের কাজে ব্যবহার করবেন) যারপরনাই খুশি হয়েছিলেন। কী রকম উচ্ছ্বাস তার হয়েছিল, তা প্রমথবাবুর ভাষ্য থেকেই শোনা যাক:
সেদিন থেকেই বিজ্ঞানের সহজ বই পড়তে লেগে গেলাম, তারপর ধীরে ধীরে শুরু হল বই লেখার কাজ। সে এক বিপর্যয় কাণ্ড। কোনদিন বৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়ে সুসংবদ্ধ বাংলা রচনায় হাত দেইনি, দু একটা ছোটখাট রচনা যা লিখেছি তা ছিলো ইংরেজীতে। তাই এই অনভ্যস্ত পথে প্রতি পদে পদে কেবল হোঁচট খেতে হল। এগোন  আর হচ্ছিলো না। নিজের লেখা নিজেরই এত খারাপ লাগতে লাগল যে, দু এক পাতা লিখেই তা ছিঁড়ে ফেলতাম। ফলে ছিন্ন কাগজের পাতায় ঝুড়ি ভর্তি হয়ে উঠল। খাতাখানাও সম্বল হারিয়ে ক্রমশঃ শীর্ণকায় হয়ে উঠল। অবশ্য এতে একজন খুব খুশি হলেন, উনুন ধরাবার কাজে অনায়াসলব্ধ এই ছিন্নপত্রগুলো আমার স্ত্রী যথাযথ সদব্যবহার  করে চললেন।
পর্ব তিনের খ

এই উদ্ধৃতিটি আছে প্রমথনাথ সেনগুপ্তের আনন্দ রূপমবইয়ে, যা বাসুমতি, কলকাতা থেকে একসময় প্রকাশিত হয়েছিল (এখন বইটি দুর্লভ, খুঁজলেও পাওয়া যায় না)। বইয়ের এই উদ্ধৃতি থেকে বোঝা যায় লেখক বাংলা নিয়ে অতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না, কিন্তু এটি অন্ততঃ ভেবেছিলেন বইটি তাঁরই হবে। কারণ বইটি তিনিই লিখেছিলেন এবং সেটা বাংলায় , রবীন্দ্রনাথ লেখকের পান্ডলিপি সংশোধন করে দিয়েছেন মাত্র॥ এতে করেই রবীন্দ্রনাথ বইটির সত্ত্বাধিকারী হতে পারেন না ॥ পৃথিবীর সাধারণ নিয়ম তো তাই বলে॥
এ সময় পাঠভবনের অধ্যাপক তনয়বাবু (তননেন্দ্রনাথ ঘোষ, পাঠভবনের অধ্যাপক) এসে বললেন:
এভাবে তো হবে না, আপনি যা পারেন লিখুন। তবে তথ্যের দিক থেকে যেন হাল্কা না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। আমাদের বিচারে যে ভাষা সাধারণতঃ ভালো বলে আখ্যা পায়, গুরুদেবের হাতে পড়লে তার খোল-নলচে বদলে গিয়ে এক নতুন ভাষা প্রকাশ পায়। কাজেই বৈজ্ঞানিক তথ্য পর পর সাজিয়ে দিন, ভাষার ভার গুরুদেব নেবেন। গুরুদেব সেই ভাষা দেখে পরবর্তী পর্যায়ে লিখতে শুরু করবেন।
পাঠক, বুঝতেই পারছেন, কোথাকার জল কোথায় গড়িয়ে যাচ্ছে। কীভাবে রবীন্দ্রনাথকে দিয়ে কেবল ভাষার মাধুর্য বাড়িয়ে প্রমথনাথের মূল তথ্যগুলো হাতিয়ে নেবার পায়ঁতারা চলছে। কিন্তু তারপরেও বই লেখার এ পদ্ধতি ঠিক হবার পরেও হতভাগ্য প্রমথবাবু কিন্তু ভাবছেন বইটা তাঁরই হবে। তিনি বইয়ের নামও ঠিক করে রেখেছিলেন–‘বিশ্বরচনা’। তাই তিনি লিখলেন:
ওদের উপদেশ মেনে নিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হল। বইটার নামকরণ করলাম “বিশ্বরচনা”। ধীরে ধীরে কাজ এগুতে লাগল। ‘পরমাণুলোক’ দিয়ে শুরু হল বইয়ের প্রথম অধ্যায়, এটা শেষ করে গুরুদেবের কাছে নিয়ে যেতে হবে।’
প্রথম অধ্যায় লেখা শেষ করে প্রমথনাথ রবীন্দ্রনাথের কাছে নিয়ে গেলেন। রবীন্দ্রনাথ দেখে বললেন:
“রচনাটি আমার কাছে রেখে যাও, কাল ফেরৎ পাবে। বিজ্ঞানের সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটাতে হলে ভাষাটা কীরকম হবে, তাই শুধু দেখিয়ে দেব।”
শুধু পরমাণুলোক নয়, এর পর নক্ষত্রলোক, সৌরজগৎ, ভূলোক এবং উপসংহার সব অধ্যায়ই লিখেছেন প্রমথবাবু। আর রবীন্দ্রনাথ খোল নলচে বদলে দিয়েছেন। সেই সংশোধন করা পাণ্ডুলিপিগুলো প্রমথনাথ অবশ্য আনন্দরূপম বইয়ে ছাপিয়েছিলেন কিছু
কিছু ।
আনন্দরূপম বইয়ের পৃষ্ঠা ১৪৬-এ আমরা পাই শেষ অধ্যায় লিখে গুরুদেবের কাছে পৌঁছিয়ে দেবার কথা:
‘শেষ অধ্যায় লিখে দিয়ে এলাম গুরুদেবের হাতে। এটা সংশোধিত হয়ে ফিরে এলে তৈরি করতে হবে নতুন করে সমগ্র পাণ্ডুলিপি সুন্দর নির্ভুলভাবে লিখে, তারপর তা তুলে দিতে হবে ওঁর হাতে, আলমোড়া যাবার আগে …’
প্রমথবাবু পুরো বইটি এবং তার উপসংহার শেষ করার পরে রবীন্দ্রনাথ ঠিক করেন বইটার নাম ‘বিশ্বপরিচয়’ হবে। কিন্তু প্রমথনাথকে ঘুণাক্ষরেও তিনি জানতে দেননি একথা। বরং ভিন্ন একধরণের নাটকের অবতারণা করলেন ধীরেন্দ্রমোহন সেনকে নিয়ে এসে। নাটক বলছি কেন সেটা পাঠকেরা শুনেই বুঝতে পারবেন আশা করছি।
ড. সেন হঠাৎ ওকে (প্রমথ বাবুকে) বললেন:
‘বিশ্বপরিচয়’ নিয়ে আপনি যে পরিশ্রম করেছেন তাতে বইটার যুক্তগ্রন্থকার হওয়া উচিৎ–- রবীন্দ্রনাথ-প্রমথনাথ।
‘গুরুদেব’ সাথে সাথে বললেন:
সে কীরে, বইটার বিষয়বস্তু রচনার কাজ তো প্রমথই করেছে। আমি শুধু ভাষার দিকটা দেখে দিয়েছি। গ্রন্থকার তো প্রমথেরই হওয়া উচিৎ। তবে আমার নামের সাথে যদি প্রমথ যুক্ত করতে চান, তাহলে প্রমথনাথ-রবীন্দ্রনাথ হওয়াই ঠিক হবে।
নিঃসন্দেহে এটা প্রমথবাবুর জন্য বড় রকমের ধাক্কা ছিল। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন তার নামেই বইটা হবে। বইয়ের সব তথ্য যে তাঁরই যোগাড় করা! তারপরেও রবীন্দ্রনাথ যেহেতু ভাষার সবকিছু ঢেলে সাজিয়েছেন, সেহেতু যুক্তগ্রন্থকার হলেও খুব বেশি হারাবার নেই বলেই ভেবেছিলেন হয়তো। সেই বিহবল অবস্থা ধরা পড়ে প্রমথবাবুর লেখায়:
তারপর পাণ্ডুলিপি নিয়ে কিছুক্ষণ আলোচনা করলেন, তারপর ওখান থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে ডক্টর সেন বললেন যে, সম্ভব হলে ঐ গ্রীষ্মের ছুটির মধ্যেই যেন ‘পৃথ্বী-পরিচয়’ বইটা আমি শেষ করি। ওর কথা বলার ধরণ দেখে মনে হচ্ছিল ‘বিশ্বপরিচয়’ বইটার লেখকের নাম নিয়ে কোথায় যেন একটা সংশয় জেগেছে, অবশ্য এ ব্যাপারে ওঁকে খোলাখুলি কিছু জিজ্ঞেস করাও সম্ভব নয়।’
এর বেশ কিছুদিন পর নাটকের আসল যবনিকাপাত। রবিঠাকুর ঠিক করলেন প্রমথবাবুকে জানাবেন ব্যাপারটা যে, নিজেই বইয়ের লেখক হতে চান, প্রমথবাবুকে বাদ দিয়ে। কীভাবে সেটা প্রমথবাবুর মুখেই শোনা যাক:
গ্রীষ্মের ছুটির পর গুরুদেব আলমোড়া থেকে ফিরে একদিন সন্ধ্যার সময় ডেকে পাঠালেন। উত্তরায়নে গিয়ে দেখি ক্ষিতিমোহনবাবু ও শাস্ত্রীমশায়ের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন, আমাকে ডেকে সস্নেহে পাশে বসালেন, কুশল প্রশ্ন করলেন। তারপর বললেন, “দেখো, বিশ্বপরিচয় লিখতে লিখতে দেখলুম এর ভাষাটা আমারই হয়ে গেছে, তাই এর মধ্যে তোমাকে..
 পর্ব তিনের গ
কোথাও স্থান দিতে পারলুম না।” !!!!? একটু থেকে বললেন, “অবশ্য তুমি শুরু না করলে আমি সমাধা করতে পারতুম না, তা ছাড়া বিজ্ঞানের অনভ্যস্ত পথে চলতে শেষ পর্যন্ত এই অধ্যবসায়ীর সাহসে কুলাতো না। তুমি ক্ষুণ্ণ হয়ো না।”
এই হচ্ছে বিশ্বপরিচয় গ্রন্থ রচনার ইতিবৃত্ত। রবীন্দ্রনাথের বিশাল পরিচিত এবং ব্যক্তিত্বের কাছে নতজানু প্রমথনাথ ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন কি না জানা নেই আমাদের। তবে, এই ঘটনা জেনে আমি  যে ভয়ঙ্কর রকমের ক্ষুব্ধ, ক্ষুণ্ন এবং ক্ষীপ্ত সে বিষয়ে কোনো সন্দেহই নেই। রবীন্দ্রনাথের মত একজন বিশাল ব্যক্তিত্ব তাঁরই অধীনস্থ সামান্য একজন শিক্ষকের সাথে এরকম প্রতারণা করবেন, তাঁর লেখা বইকে নিজের নামে ছাপিয়ে দেবেন কোনো ধরনের চক্ষুলজ্জার ধার না ধেরে, সেটা মেনে নেওয়াটা আসলেই কষ্টকর। এই হলো রবীন্দ্রনাথের আসল চেহারা ॥ এভাবে জমিদার রবি বাবু আরও যে কত কত প্রজার লেখা বই কবিতা গল্প নাটক উপন্যাস গানের ভাষা  সংশোধন করে দেয়ার নামে জোর করে নিজের নামেই ছাপিয়ে ফেলেছেন তা আল্লাহ মালুম॥ আর গরীব প্রজা যে তার প্রতিবাদ করতে সাহস পাইনি সেটা পরিষ্কার বুঝা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের লেখা বই জোর করে রবিবাবু নিজের নামে ছাপানোর মধ্য দিয়ে॥
প্রিয় পাঠক আপনারা একবার চিন্তা করেন রবীন্দ্রনাথ মুখোশের অন্তরালে কত বড় একজন ডাকাত আর জঘন্য জ্ঞানপাপী ছিলেন ॥ এরপর কি আপনারা এই ব্যক্তিকে শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছে করবে ॥ পাঠক আপনারা যদি আমার মতামত জানতে চান তবে আমি এক বাক্যে বলবো না কখনও নয়॥ এই ব্যক্তি কোনো ভাবেই আমার কাছ থেকে সম্মান পাওয়ার যোগ্য নয়॥ সেই রবীন্দ্রনাথ হোক আর আমার প্রয়াত জন্মদাতা পিতা হোক আমি সেই সূফি বরষণ যে চোরকে চোর বলতে দ্বিতীয় বার চিন্তা করতে হয় না॥ আমি কাউকেই যে ছেড়ে দিয়ে কথা বলি না সেটা আপনারা ভালো করেই জানেন ॥
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ‘রাহাজানির’ (হ্যাঁ, এটি আমাদের চোখে রাহাজানিই, ছোটখাট ‘জোচ্চুরি’ নয়) ঘটনার পুরো বিবরণ আছে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত দীপঙ্কর চট্টোপাধায়ের লেখা রবীন্দ্রনাথ ও বিজ্ঞান [আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, জানুয়ারি, ২০০০] বইয়ে।
এই হলো রবীন্দ্রনাথের আসল চেহারা ॥ তিনি যে কয়েকটি বই নিজে লিখেছেন আর কয়েকটি অন্যের লেখা বই নিজের নামে ছাপিয়ে ফেলেছেন এই এখন যথেষ্ট পরিমাণে সন্দেহ দেখা দিয়েছে ॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ


No comments:

Post a Comment