Tuesday 25 August 2015

পর্ব এক কস্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥বিতর্কিত রবি বাবু আমার সোনার বাংলা গানটি চুরি করেছিলেন ॥



পর্ব  এক  ক
স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥
বিতর্কিত রবি বাবু  আমার সোনার বাংলা গানটি চুরি করেছিলেন ॥
সূফি বরষণ 
আমি এখন যে বিষয়ে লেখায় হাত দিয়েছি  তা আমার জন্য রীতিমতো দুঃসাহস দেখানো মতো একটি কাজ॥ তারপরেও একটাই  আশা  মানুষের কাছে সত্য তুলে ধরার চেষ্টা ॥ এবং সেটা নিজের বিবেকের তাড়নার  দায়বদ্ধতা থেকে ॥ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি কোনো প্রকার বিদ্বেষ হিংসা ক্রোধ বা রাগ_ অনুরাগের বশীভূত হয়ে নয় ॥ আমার ছোটোবেলা থেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি ডাউট ছিল সেটা কবি নজরুলের প্রতি  তাঁর বিরুপ আচরণ করার কারণে॥
আর সেই ডাউট থেকে কলেজে পড়ার সময়ে  একদিন বাংলার অধ্যাপক ম্যাডাম কে দেখিয়ে দিলাম সোনার তরী কবিতার মধ্যে লাইন চয়নের মিল অমিল আর সেটা যে মাত্রাবৃত্ত ছন্দে যায়না !!?? তখন বাংলার ম্যাডাম আমার দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে বললেন এটা ভুলের মধ্যে পড়ে তুমি যা বলেছ আর আমি বলে দিলাম তুমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবা ॥ যাক সে ভিন্ন এক ঘটনা প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি নিজের পান্ডিত্য জাহির করার জন্য ॥ আমার মাত্রাতিরিক্ত জানার আগ্রহ আছে বিতর্কিত মানুষের সম্পর্কে ॥
সেই আগ্রহের সূত্র ধরেই এই লেখার অবতারণা॥ বাঙালী জাতির  একটি আদি মুদ্রার দোষ হলো তাঁরা জ্ঞানী মানুষের যথাযোগ্য  সম্মান করতে পারেনা বা জানে না!!??॥ আরও পারেনা গঠন মূলক বিশ্লেষণ বা সমালোচনা করতে ॥ তাদেরকে সমালোচনা করতে বললে  শ্রব্য অশ্রাব্য ভাষা গালাগালি শুরু করে !! এভাবেই বাঙালীর যত শ্রেষ্ঠ সন্তান আছে তাদের প্রত্যেকেই বিতর্কিত করেছে খন্ডিত দৃষ্টি কোণ থেকে ॥ আর করা হয়েছে ধর্মের নামে এবং রাজনৈতিক মতাদর্শের নামে॥ সেই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পরিচয় দিয়েছে আওয়ামী লীগ বিএনপি জামায়াত ও বামপন্থীরা( তৎকালীন মুসলিম লীগ) ॥ এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দু শিক্ষিত সমাজও বাদ যায়নি তারাও এই সব রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় বুদ্ধি ভিত্তিক দৈন্যদশার  আগুনে ঘি ঢেলেছে ॥ আর কিছু বাঙালী আছে রবীন্দ্রনাথ নজরুলকে এক করে ফেলে ??
নিজেদের মধ্যে এতোই দীনতা যে তারা দুজনের মধ্যে পার্থক্য করেতে পারে না!?॥ এটা পরিষ্কার ভাবে বুঝতে হয়ে যে, বিতর্কিত রবীন্দ্রনাথ আর বিশুদ্ধ চির জাগ্রত বাঙালী জাতিসত্ত্বার  মুসলিম চেতনার কবি নজরুল এক হতে পারে না কোনো কালেই॥ কারণ দুটি ভিন্ন সত্ত্বা দুটি ভিন্ন আদর্শ দুটি ভিন্ন চেতনা দুটি ভিন্ন আত্মা পরিচয় কোনো ভাবেই এক হতে পারে না আর হবেও না কোনো সময় ॥ আর বাঙালীর রাজনৈতিক ইতিহাসে গত একশত বছর ধরে সবচেয়ে বেশি বুদ্ধি ভিত্তিক দীনতার পরিচয় দিয়েছে মুসলিম শিক্ষিত সমাজ যার ফল বর্তমানেও তারা ভোগ করছে ॥ যদি তারা খন্ডিত দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে বেরিয়ে না আসতে পারে তবে ভবিষ্যতেও ভোগ করতে হবে ॥
আমাদের কে শিখানো হয়েছে ৫২ আর ৭১ই একমাত্র ইতিহাস ॥
যে কারণে আমাদের মাঝে স্থায়ী  বুদ্ধিভিত্তিক রাজনৈতিক চিন্তা চেতনার দৈন্যদশা  সংকীর্ণতা সৃষ্টি হয়েছে ॥ বাঙালী মুসলমানদের নিজেদের আত্মা পরিচয় জানতে হলে ফিরে যেতে হবে বখতিয়ার, আলাদ্দিন হোসেন শাহ, শায়েস্তা খাঁ, শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ, ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ, ইশা খাঁ , নবাব সিরাজউদ্দোলা, তিতুমীর হাজি শরীয়তুল্লাহ, শাহ মাহদুম, শাহ জালাল, খান জাহান আলীসহ অসংখ্য বীর সেনানীদের কাছে॥ আরও জানতে হবে ১৭৫৭, ১৮৫৭, ১৯০৫, ১৯১১, ১৯৪৭, ১৯৫৪ এই সাল গুলোর সঠিক এবং প্রকৃত ইতিহাস তাইলে আমাদের দীনতা  হীনমন্যতা সংকীর্ণতা অনেকটা দূর হয়ে যাবে॥
আমরা জানতে পারবো আমাদের আত্মা পরিচয়ের সঠিক ইতিহাস ॥
আমাদের দীনতা  হীনমন্যতা সংকীর্ণতার কারণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি ফররুখ আহমেদ, আল মাহমুদ, শেখ মুজিব, শহীদ জিয়া, গোলাম আযম কাউকেই বাদ দেয়নি বিতর্কিত করা
থেকে ॥ এবার আসি মূল আলোচনায় রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে॥ রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে একটি সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন
নীরদ সি চৌধুরী ॥ তাঁর আত্মঘাতী বাঙালী গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্ড ‘আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ’-এর ভূমিকাতে লিখেছিলেন :
তাঁহার (রবীন্দ্রনাথের) সম্বন্ধে সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা আজ পর্যন্ত হয় নাই। যাহা হইয়াছে তাহা একপক্ষে হিন্দুর মূর্তিপূজার মত, অন্য পক্ষে মুসলমানের মূর্তি ভাঙার মত। জীবিতকালে তিনি যেন হিন্দু হইয়া মুসলমানের রাজত্ব বাস করিয়াছিলেন, অর্থাৎ প্রধানত আক্রমণেরই লক্ষ্য ছিলেন। এই অবস্থার জন্য তাঁহার ব্যক্তিত্ব, মতামত ও রচনা সম্বন্ধে যেসব কথা বলা ও লেখা হইয়াছিল তাহাকে মিথ্যা নিন্দা ভিন্ন আর কিছু বলা যাইতে পারে না। আবার এই বিদ্বেষপ্রসূত নিন্দার পরিমাণ, তীব্রতা ও ইতরতা এমনই হইয়াছিল যে উহার ভারে ও ধারে বেশীর ভাগ বাঙালির কাছেই তাঁহার আসল রূপ চাপা ও কাটা পড়িয়াছিল।
পর্ব এক খ
অবশ্য ইহাদের প্রতিপক্ষও যে ছিল না তাহা নয়, অর্থাৎ ভক্তও তাঁহার জুটিয়াছিল। ইহারা বিদ্বেষীদের তুলনায় সংখ্যায় অনেক কম হইলেও দলে নিতান্তই অল্পসংখ্যক ছিল না। তবে ইহাদের দ্বারাও রবীন্দ্রনাথের হিত হয় নাই। ইহারাও তাঁহার যে রূপ প্রচার করিয়াছিল তাহা অন্ধ স্তাবকের প্রশস্তি ভিন্ন কিছু নয়। এমন কি এই রবীন্দ্রভক্তি এমনই বাক্যভঙ্গি ও আচরণে প্রকাশ পাইত যে, উহাকে হাস্যাস্পদ করা নিন্দাকারীদের পক্ষে খুবই সহজ হইত। ফলে, রবীন্দ্র ভক্তেরাও রবীন্দ্র বিদ্বেষীদের মতই মিথ্যারই প্রচারক হইয়াছিল।
বর্তমানে অবশ্য অবস্থাটা উল্টা হইয়াছে, অর্থাৎ রবীন্দ্র নিন্দুকেরা লোপ না পাইলেও রবীন্দ্রভক্তেরাই প্রবল হইয়াছে। কিন্তু না ভক্তি না নিন্দা, কোনটাই উচ্চস্তরে উঠে নাই। এখনও রবীন্দ্রনাথের সত্যরূপ আত্মপ্রকাশ করিতে পারিতেছে না।
নীরদ সি চৌধুরীর কথা গুলো আজ বাস্তব প্রমাণিত হয়েছে ॥ একদল সংকীর্ণমনা অন্ধ বিশ্বাসীরা রবীন্দ্রনাথকে দেবতা বানিয়ে পূজা করা শুরু করেছে  ॥  রবীন্দ্রনাথের সামান্যতম সমালোচনা তাদেরকে ক্ষিপ্ত করে তুলে ॥ হিংস্র উন্মাদের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে চান সমালোচনাকারীদের উপরে॥ এই অন্ধ রবীন্দ্র বিশ্বাসীরা  কোনো ভাবেই মানতে চান না যে রবীন্দ্রনাথ দেবতা নয় তিনি আমাদের মতো রক্তে মাংসে গড়া একজন মানুষ ॥
তিনিও চুরি করতে পারেন, তিনিও ভুল করতে পারেন, তাঁরও খ্যাতির প্রতি লোভ লালসা  আছে ॥ তিনিও হিংসা বিদ্বেষ এবং মানবীয় দোষ গুণের ঊর্ধ্বে নয়॥ পরের পর্বে আসছে রবীন্দ্রনাথের প্রতারণা মিথ্যাচার নিয়ে ॥ বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই লেখার সিরিজের শেষ পর্বে তথ্য সূত্র দেয়া হবে॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

No comments:

Post a Comment