Sunday 30 August 2015

পর্ব পাঁচ ক_স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥বিতর্কিত রবীন্দ্রনাথের অধিকাংশ গান ভাঙাগান বা নকল_চুরি করা ॥

পর্ব  পাঁচ  ক_ এবং শেষ পর্ব
স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥
বিতর্কিত রবীন্দ্রনাথের অধিকাংশ    গান ভাঙাগান বা নকল_চুরি
করা  ॥

সূফি বরষণ
রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাঙালিত্ব অসম্পূর্ণ ইত্যাদি উচ্ছ্বাসভরা কথাবার্তা রবীন্দ্র ভক্তদের কাছে  খুবই স্বাভাবিক ঘটনা?! । তবে, তাঁর গান নিয়ে যা হয় সেটাকে ঠিক মাতামাতি শব্দটা দিয়ে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না। কারণ সেটাকে বলতে হয় রবীন্দ্র অন্ধ ভক্তদের রীতিমতো উন্মাদনা॥ রবীন্দ্রনাথের গানকে একরকম প্রার্থনা সংগীত বানিয়ে ফেলেছেন তাঁর পূজারীর দল। যে ভাবগম্ভীর পবিত্রতা নিয়ে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করা হয় বা শোনা হয়, তা দেখলেই যে কেউই একে পূজোর আচার আচরণ ভেবে ভুল করে বসে থাকতে পারেন। ভেবে বসে থাকতে পারেন যে, একদল পূজারী গভীর ভক্তিভরে তাঁদের কোনো প্রাণপ্রিয় দেবতার উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য পরিবেশন করে চলেছেন। এর পূজারীর দল রবীন্দ্র সংগীত ছাড়া পৃথিবীতে যে অন্য কোনো সংগীত থাকতে পারে, আর সেগুলো যে এর থেকেও ভাল হতে পারে সেটা কোনোভাবে মেনে নিতে রাজি নন। অনেকেই খুব ‘গৌরবের সাথে’  নির্দ্বিধায় বলে দেন যে, রবীন্দ্র সংগীত ছাড়া অন্য কোনো সংগীতই শোনেন না। বাংলা গান শোনার ক্ষেত্রে কিছু বাঙালি এমন  একপেশে আচরণ করে যা রীতিমতো সংকীর্ণমনতার পর্যায়ে চলে গেছে ॥
ভক্তি এবং ভাবে গদগদ ভক্তদের এক্ষেত্রে অবশ্য এককভাবে দোষ দেওয়াটাও অনুচিত। রবীন্দ্রনাথই একমাত্র বিরল ব্যক্তিত্ব, যাঁর তিনটি  গান তিনটি স্বাধীন  সার্বভৌম রাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত।
তবে এই তিন দেশের মধ্যে শ্রীলংকার জাতীয় সংগীতটি রচনা করেন শান্তি নিকেতনের ছাত্র আনন্দ সামারাকুন॥ সংগীতটির রচয়িতা ও সুরকার সে দেশের প্রখ্যাত সংগীতকার আনন্দ সামারাকুন ।
রবীন্দ্রনাথের নিজেরও তাঁর গান সম্পর্কে অত্যন্ত উচ্চ ধারণা ছিল। তাঁর অন্য কোনো সাহিত্যকর্ম দীর্ঘস্থায়ী না হলেও গান যে হবে সে বিষয়ে তিনি নিঃসন্দেহ ছিলেন। তাই তো তিনি বলেছিলেন, “জীবনের আশি বছর অবধি চাষ করেছি অনেক। সব ফসলই যে মরাইতে জমা হবে তা বলতে পারি না। কিছু ইঁদুরে খাবে, তবু বাকি থাকবে কিছু। জোর করে বলা যায় না, যুগ বদলায়, তার সঙ্গে তো সবকিছু বদলায়। তবে সবচেয়ে স্থায়ী আমার গান, এটা জোর করে বলতে পারি। বিশেষ করে বাঙালীরা, শোকে দুঃখে সুখে আনন্দে আমার গান না গেয়ে তাদের উপায় নেই। যুগে যুগে এ গান তাদের গাইতেই হবে।” [লেখক সমাবেশ, ৫ম বর্ষ সংখ্যা–১৩, প্রথম পক্ষ মে ১৯৮৫, পরেশ ধর – উদ্ধৃত]॥
রবীন্দ্রনাথের কথা আপাত সত্য। তবে, আজীবনের জন্য সত্য নয়। কোনো জিনিসই চিরস্থায়ী হয় না, তা সে সেই সময়ের জন্য যতই উৎকৃষ্ট হোক না কেন। এর জ্বলন্ত প্রমাণ মধুসূদন। এরকম একজন অসাধারণ মেধাবী কবি এখন শুধু টিকে আছেন পাঠ্য বইয়ে। কাল সবকিছুকেই গ্রাস করে নেয়। রবীন্দ্রনাথও একসময় প্রাচীন কবি হবেন, তাঁর অধিকাংশ রচনা মূল্য হারাবে–রবীন্দ্র-মহিমাও হবে ম্লান থেকে ম্লানতর। তাঁর উপন্যাস কিংবা গল্পের অনেক কিছুতেই ‘সেকেলের ছাপ’ লেগে গেছে ইতোমধ্যেই, এমনকি বহু আধুনিক মেধাবী কবিদের কবিতা কিংবা গীতিকারদের গান রবীন্দ্ররচনার সঙ্গে সমানে পাল্লা দিচ্ছে, কখনো বা উৎরে গেছে রবীন্দ্র সংগীতকে পিছনে ফেলে দিয়ে।
রবীন্দ্রনাথ বাইশ শ’-র উপরে গান লিখেছেন। বাঙালিরা গভীর ভক্তিভরে, সশ্রদ্ধ চিত্তে এগুলোকে শুনে থাকে, গেয়ে থাকে। এর ভাবসম্পদকে আবিষ্কার করার চেষ্টা করে। পরম পূজনীয় ভেবে এর বিশুদ্ধতা রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করে। কিন্তু এরাই জানে না যে, রবীন্দ্রনাথের এই বাইশ শ’ গানের অনেকগুলোই বিশুদ্ধ নয়, রবীন্দ্রনাথের মৌলিক গান নয়। অন্য কোনো গানের সুর থেকে সরাসরি নকল করা বা সেগুলোকে ভেঙেচুরে রবীন্দ্রনাথ নিজের মত করে নিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথের অসংখ্য গান আছে বিদেশী সুর থেকে নেয়া, অনেক গান আছে লোকসংগীত থেকে নেয়া, অনেক গান আছে বাউল সুর থেকে নেয়া। নিচে একটা বিদেশী গান দিচ্ছি। একটা খুব জনপ্রিয় রবীন্দ্র গানের সুর নেয়া হয়েছে এই গানটা থেকে। যাঁরা রবীন্দ্র সংগীত শোনেন, খুব বেশি দেরি হবে না তাঁদের সুরটাকে শনাক্ত করতে। যাঁরা পারবেন না তাঁদের জন্য রবীন্দ্রনাথের গানটাও দিয়ে দেওয়া হচ্ছে তার নিচেই।
১. পুরানো সেই দিনের কথা
এই গানটা  স্কটিস লোকসংগীত থেকে নেয়া॥
https://m.youtube.com/watch?feature=youtu.be&v=jGIHuqUnEm8
আর এটি হলো রবীন্দ্রনাথের নকল করা
https://m.youtube.com/watch?v=AJjDVCgp0Ao
২. এই গানটিও স্কটিস লোকগীতি থেকে নেয়া https://m.youtube.com/watch?feature=youtu.be&v=OzWsxv0Uae8
আর এটি নকল করা
https://m.youtube.com/watch?v=y57FdECaQss
৩. এই গানটির  রচয়িতা ও সুরকার বাউল শিল্পী গগণ হরকরা দাস
https://m.youtube.com/watch?v=jQOLkeHbyyE
আর রবীন্দ্রনাথ চুরি করে
লেখে জাতীয় সংগীত
https://m.youtube.com/watch?v=zVjbVPFeo2o
৪. বাউল গান দেখেছি রূপ সাগরে মনের মানুষ https://m.youtube.com/watch?v=mL8OGpvQ9_s
আর রবীন্দ্রনাথ নকল করে লিখে কিন্তু সুর ঠিকই থাকে https://m.youtube.com/watch?v=F5hfAlwFc4c
এই রকম আরও অসংখ্য গান আছে Shazam সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপনারা বের করতে পারবেন যেগুলোর রবীন্দ্রনাথ সুর নকল এবং গানের কথাও নকল করেছে ॥
পৃথিবীর প্রায় সব বিখ্যাত সাহিত্যিক বা সংগীত স্রষ্টাই অন্যের সৃষ্টি দিয়ে অনুপ্রাণিত হয়। এতে দোষের কিছু নেই। রবীন্দ্রনাথও তাঁর ভক্তদের ভাষায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তবে, হুবহু অন্যের সৃষ্টিকে নকল করা অর্থাৎ সরাসরি কুম্ভীলকতা বা চৌর্যবৃত্তি কীভাবে ‘অনুপ্ররেণাযোগ্য’ হয় সেটা অবশ্য আমরা জানি না॥ রবীন্দ্রনাথ একদিনে পাঁচটি কবিতা এমনকি দশটা গান পর্যন্ত লিখেছেন !!?? এতে আমার যথেষ্ট  সন্দেহ হয় তিনি কি চুরি করেছেন নাকি নিজে লিখেছেন ?? নাকি জমিদার হিসেবে পয়সা দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন না জোর করে জমিদার বাবু গরীব প্রজার লেখা নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন ??? সন্দেহ শুধুই সন্দেহ জাগে ॥ রবীন্দ্রনাথের এই সমস্ত ‘অনুপ্রাণিত’ গানকে ভাঙা গান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবী রবীন্দ্রনাথের ভাঙা গানের একটা তালিকা করেছিলেন। সেখানে তিনি ২৩৪টি গানকে ভাঙা গান হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন। ইন্দিরা দেবীর বক্তব্যকে যদি সত্যি বলে ধরে নেই, তাহলেও দেখা যাচ্ছে যে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট গানের এক দশমাংশেরও বেশি অন্যের সৃষ্ট সুর থেকে ‘অনুপ্রাণিত’। যে রবীন্দ্রনাথে নিজেই অন্যদের সুরকে ভেঙেচুরে বা অবিকল ভাবে নকল করেছেন, সেই রবীন্দ্রনাথের অনুসারীদের তাঁর গানকে অবিকৃত রাখা বা বিধিনিষেধের বেড়াজাল দিয়ে বিশুদ্ধ রাখার প্রচেষ্টা যে অনুচিত এবং অভব্য কাজ, সেটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না।
শুধু কি তাই
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যের অনেক কিছুই মৌলিক নয়, বরং বলা যায় বিদেশী সাহিত্যের ছায়া-অবলম্বনে লেখা। যেমন, গবেষক প্রতাপনারায়ণ বিশ্বাস তার লেখা ‘রবীন্দ্রনাথের রহস্য গল্প ও অন্যান্য প্রবন্ধ’ নামের একটি বইয়ে বলেছেন, রবীন্দ্রনাথের চারটি অতি পরিচিত গল্প–যেমন ‘মহামায়া’, ‘গুপ্তধন’, ‘নিশীথে’, এবং ‘সম্পত্তি সমর্পণ’–বিখ্যাত মার্কিন রহস্য গল্পলেখক এডগার অ্যালান পো’র সে সময়কার চারটি গল্প থেকে ‘অনুপ্রাণিত’। ফরাসি লেখক তেওফিল গতিয়ের লেখা­ Le Pied de Mome (১৮৬৬) গল্পের প্রভাব আছে তার বিখ্যাত গল্প ‘ক্ষুধিত পাষাণে’র ওপর; আর রক্তকরবীর ওপর আছে সুইডিশ নাট্যকার অগাস্ট স্ট্রিন্ডবার্গের ‘A Dream Play’-এর ছাপ [প্রতাপনারায়ণ বিশ্বাস, ‘রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী : তত্ত্ব ও তথ্য’, অনুষ্টুপ, ১৯৮৯]। রবীন্দ্রনাথের আরও একটি বিষয় আছে ছোটো গল্প ॥ আরবী সাহিত্যের ছোটো গল্পের জনক মুস্তফা লূৎফী মানফালুতির থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রবীন্দ্রনাথ ছোটো গল্প লেখা শুরু করেন ॥
কিন্তু এগুলোর ক্ষেত্রে কেবল ‘বিদেশী গল্পের ছায়া’ থাকায় সরাসরি প্লেইজারিজমের অভিযোগ থেকে না হয় তাকে অব্যাহতি দেয়া যায়, কিন্তু হতদরিদ্র গগন হরকরার সাথে জমিদারবাবু যা করেছিলেন তার কোনো তুলনা নেই। ২০০৬ সালে বিবিসি সর্বকালের সেরা বাংলা গান কোনটি তাঁর একটি জরিপ চালিয়েছিল। সেই জরিপে বিপুল ভোট পেয়ে সেরা গান হয়েছিল ‘আমার সোনার বাংলা’। অথচ কী আশ্চর্য! সর্বকালের সেরা গানের সুরস্রষ্টা গগন হরকরাকে আমরা চিনি-ই না, চিনি একজন কুম্ভীলক রবীন্দ্রনাথকে। এর চেয়ে দুঃখজনক বিষয় আর কী হতে পারে। এই গানটা আবার আমাদের জাতীয় সংগীতও। শত শত বছর ধরে এটা গাওয়া হবে, অনাগত দিনের বাংলাদেশীরা সকৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে রবীন্দ্রনাথ নামের একজন মহান কবি এবং সংগীতকারকে, এরকম একটি অসাধারণ শ্রুতিমধুর গানকে সৃষ্টি করার জন্য। এর পিছনের বঞ্চনার ইতিহাস, চুরির ইতিহাস ঢাকা পড়ে যাবে অন্ধ পূজারীদের পরম মিথ্যায় এবং রবির কিরণের তীব্র কষাঘাতে। বেচারা গগন হরকরা। তাঁর সৃষ্ট সম্পদ অন্যে চুরি করেছে বলে যে হতাশামাখানো দীর্ঘশ্বাসটুকু ফেলবেন, তাঁর সুযোগও নেই। জানতেই পারেন নি যে, নিজের অজান্তেই সর্বকালের সেরা বাংলা গানের সুর সৃষ্টি করে ফেলেছিলেন তিনি। আর সেই অনন্য সুরটাকে নির্দ্বিধায় মেরে দিয়েছিল, তাঁর গানের কথাকে অনুকরণ করে কবিতা লিখেছিল, তাঁদেরই গান পাগলা জমিদারবাবু ঠাকুরমশাই॥ এভাবেই রবীন্দ্রনাথের মতো জমিদার বাবুরা এবং কুম্ভীলক প্রতারকরা চুরি করে গগণ হরকরার মতো প্রমথনাথের মতো  সাধারণ লেখকদের ঠকিয়েছেন॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ
এই লেখার সবগুলো পর্বের তথ্য সূত্র :

আহমদ শরীফ : বাঙালির চিন্তা-চেতনার বিবর্তনধারা ॥
আহমদ শরীফরচনাবলী ০১ ॥
আহমদ ছফা:  বাঙালী মুসলমানের মন  ॥
আহমদ ছফার বই সাম্প্রতিক বিবেচনা  বুদ্ধিবৃত্তির নতুন  বিন্যাস ॥
 নীরদ সি চৌধুরীর বই  আত্মঘাতী বাঙালী গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্ড ‘আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ’॥
ইব্রাহিম হোসেন   : ফেলে আসা দিনগুলো ॥
আবুল আসাদ:  একশ' বছরের রাজনীতি॥
http://www.amarboi.com/2008/12/blog-post_4110.html?m=1
https://humannewspaper.wordpress.com/2011/05/07/
http://www.amardeshonline.com/pages/printnews/2010/05/16/145175
https://m.facebook.com/lalon.shai/posts/10153211584749706
http://www.somewhereinblog.net/blog/deshpremik13/29590713
http://www.sachalayatan.com/node/41311
http://bloggermamun.blogspot.co.uk/2011/03/blog-post_02.html?m=1
http://arts.bdnews24.com/?p=3955
https://blog.mukto-mona.com/2011/08/25/18310/
http://www.shodalap.org/munim/20070/
http://www.istishon.com/node/7420
http://www.shapludu.com/1418/07/article_details.php?article_serial=104
http://vubangram.blogspot.co.uk/2010/09/blog-post_549.html?m=1
http://satkahan.weebly.com/245324762495-2451-245324762495246824942480-24552482250924743.html


দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য জাফর ইকবালের মতো নর্দমার কীটরা গণধোলায়ই প্রাপ্য

দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য
জাফর ইকবালের মতো নর্দমার কীটরা গণধোলায়ই প্রাপ্য

সূফি বরষণ
জাফর ইকবালের মতো নর্দমার কীটবিশেষের উপরে  যদি বৃষ্টির বদলে �ঢান্ডা বা জুতা পেটা করা হয় তবুও  তার ফ্যাসিস্ট অপরাধী চেহারা আড়াল করার সুযোগ নাই! এই জ্ঞানপাপী কুলাঙ্গার বৃষ্টিতে ভিজে বসেছিল মিডিয়ার জন্য কোনো প্রকার মন খারাপ হওয়াতে নয়॥ এইসব জাতীয় আবর্জনাদের কি আর মান অপমান আছে??
এই রক্তপিপাসু ফ্যাসিস্ট অমানুষ শাহবাগে দাঁড়িয়ে দৈনিক আমারদেশ  হত্যায় শামিল হয়েছিল, এই নিকৃষ্টতম বাঙালি  সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে  বছরের পর বছর অন্তরীণ করে রাখতে রাষ্ট্রকে উস্কানি যুগিয়ে ছিল। এই হায়েনার কথা কখনো ভুলে যাই না, যে  কুলাঙ্গার জাফর বিরোধী দলের দুই থেকে পাঁচ লাখ সদস্যকে হত্যার প্রস্তাব দিয়েছে অনির্বাচিত সরকারকে। কাজেই ছাত্রলীগ যদি ওকে পিটিয়ে লুলা করে তাঁর স্ত্রীকে বিশেষ মালিশ প্রদান  করে  তবুও একজন রক্তপিপাসু ফ্যাসিস্ট হিসেবে জাফর দায়মুক্তি পেতে পারে না।
সে এতোই কাপুরুষ যে, নিজের স্ত্রীকে রক্ষা করা তো পরের কথা নিজেকেই রক্ষা করতে পারেনি !!??
যাদের কে তিনি বিশেষ চেতনার ফিল্টার দিয়ে তৈরী করেছেন তাদের হাত থেকে ॥ তাইলে কি ফিল্টারের চেতনার অভাব আছে ?? নাকি ফিল্টার বিকল হয়ে গেছে ॥
আমরা মানবতার শত্রু জাফর ইকবালের গ্রেপ্তার ও বিচার চাই। তবে তার ফাঁসি চাই না, কারণ নীতিগতভাবে আমি  ফাঁসি বিরোধী।
জাফর ইক বালের মতো পাচাটা কুত্তারা এর চেয়ে বেশি কি আশা করতে পারে না॥ এটাই এদের যথাযোগ্য প্রাপ্য ॥
যে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সে স্লোগানের এতো বড় অপমান আমার জীবনে দেখিনি বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন  অধ্যাপক জাফর ইকবাল।

জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় তিনি বলেন, ‘হামলাকারীরা যদি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে থাকে তাহলে এর শিক্ষক হিসেবে আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়া উচিৎ।’ বল তোর চেতনার সোনার ছেলে ॥ মুখে ছাত্র�লীগ বলতে কি ভয় করে??
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চড়াও হয়ে তাদের মারধর করার ঘটনায় এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্যই ছাত্রলীগের কর্মীদের ব্যবহার করেছেন, এমন অভিযোগ এনে তিনি বলেন, উপাচার্য যদি মনে করেন এভাবে আন্দোলন থামানো সম্ভব, তাহলে সেটা ভুল করছেন।

ছাত্রলীগের এমন ন্যাক্কারজনক হামলায় নিস্তব্ধ, নির্বাক হয়ে গেছেন  ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অভিমানে আঝোর ধারায় বৃষ্টিতে ভিজছেন তিনি। লজ্জা আর ঘৃণা তার চোখেমুখে ভর করেছে। অন্য শিক্ষকদের মাথায় ছাতা থাকলেও জাফর ইকবাল ছাতা ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবনের সামনে বসে আছেন। অন্য শিক্ষকরা তার পাশে ভিড় করে আছেন।

রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের।

এদিকে শাবি ভিসি আমিনুল হক ভূইয়া রোববার বিকাল ৩ টায় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়।

এরইমধ্যে ভিসিকে সমর্থন দিয়ে আসা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভোর সাড়ে ৫টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। আন্দোলনরত শিক্ষকরা ব্যানার নিয়ে সেখানে যান সকাল সাড়ে ৭টার দিকে।

সকাল সাড়ে ৮টায় শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এলে ছাত্রলীগ কর্মীরা ব্যানার কেড়ে নেয় এবং শিক্ষকদের গলা ধাক্কা দিয়ে এবং মারধর করে সরিয়ে দেয়। তাদের ধাক্কায় ড. জাফর ইকবালের স্ত্রী প্রফেসর ড. ইয়াসমিন হক মাটিতে পড়ে যান। এসময় সুযোগ পেয়ে ভিসি ভবনে ঢুকে দোতলায় নিজের কার্যালয়ে চলে যান।

প্রফেসর ইয়াসমিন হক ছাড়াও মারধরের শিকার শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনূস, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আবদুল গণি, প্রফেসর এ ন ক সমাদ্দার, মোস্তফা কামাল মাসুদ, এসোসিয়েট প্রফেসর মো. ফারুক উদ্দিন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, হামলার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ


Friday 28 August 2015

পর্ব চার ক_স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥বিতর্কিত রবি বাবু আমার সোনার বাংলা গানটি চুরি করেছিলেন ॥

পর্ব  চার  ক_
স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥
বিতর্কিত রবি বাবু  আমার সোনার বাংলা গানটি চুরি করেছিলেন ॥

সূফি বরষণ
রবীন্দ্রনাথের মত অতুলনীয় সৌভাগ্য নিয়ে পৃথিবীতে খুব কম সাহিত্যিকই জন্মেছেন। তাঁর রচনাসমূহ নিয়ে ভক্তদের মাতামাতি, উচ্চ প্রশংসা, জীবনের সর্ব আবেগের প্রকাশ রয়েছে এখনও আছে ॥ তাদের মুখে  রবীন্দ্রনাথের গান  বা রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাঙালিত্ব অসম্পূর্ণ ! ইত্যাদি উচ্ছ্বাসভরা কথাবার্তা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। তবে, তাঁর গান নিয়ে যা হয় সেটাকে ঠিক মাতামাতি শব্দটা দিয়ে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না। কারণ তারা রবীন্দ্রনাথের গানকে একরকম প্রার্থনা সংগীত বানিয়ে ফেলেছেন তাঁরই পূজারীর দল। যে ভাবগম্ভীর পবিত্রতা নিয়ে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করা হয় বা শোনা হয়, তা দেখলেই যে কেউই একে পূজোর আচার আচরণ ভেবে ভুল করে বসে থাকতে পারেন। ভেবে বসে থাকতে পারেন যে, একদল পূজারী গভীর ভক্তিভরে তাঁদের কোনো প্রাণপ্রিয় দেবতার উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য পরিবেশন করে চলেছেন। এর পূজারীর দল রবীন্দ্র সংগীত ছাড়া পৃথিবীতে যে অন্য কোনো সংগীত থাকতে পারে, আর সেগুলো যে এর থেকেও ভাল হতে পারে সেটা কোনোভাবে মেনে নিতে রাজি ননই??। অনেকেই খুব ‘গৌরবের সাথে’ এবং নির্দ্বিধায় বলে দেন যে, রবীন্দ্র সংগীত ছাড়া অন্য কোনো সংগীতই শোনেন নাই????!।॥ কিন্তু এখন যে ঘটনা আমি আপনাদের কে বলবো তা শুনে আপনাদের চোখে মুখে বিস্ময় জাগবে॥
রবীন্দ্রনাথদের পৈত্রিক জমিদারী ছিল কুষ্টিয়ার শিলাইদহে। ১৮৮৯ সাল থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারী দেখাশোনার জন্য এখানে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
এখানেই গগন হরকরার সাথে পরিচয় ঘটে রবীন্দ্রনাথের। গগন হরকরার জন্ম শিলাইদহের আড়পাড়া গ্রামে। কাজ করতেন ডাক বিভাগে ডাক হরকরা হিসাবে। তিনি একজন বিশিষ্ট
কুষ্টিয়ার শিলাইদহের বাউল শিল্পী গগন দাসের গান "আমি কোথায় পাব তারে" থেকে রবীন্দ্রনাথ "আমার সোনার বাংলা" এবং অবশেষে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত "আমার সোনার বাংলা" রচনা করেছিলেন ॥ এবং গানটির একটি লাইনও হুবহু কপি করেছিলেন ॥
রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং গগন হরকরার মূল গান "আমি কোথায় পাব তারে"-এর সুরটি ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে তাঁর "আমার সোনার বাংলা" গানটিতে ব্যবহার করেন॥ বাংলার মুসলমানদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য বঙ্গভঙ্গ করা হয় ॥ কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ও উচ্চ হিন্দুরা এর বিরোধীতা শুরু করে ॥
তিনি একটি বৈধ  কাজকে অবৈধ ভাবে বন্ধ করতে  আর একটি বড় ধরনের জঘন্য অপরাধ করেন যেটা ক্ষমার অযোগ্য ॥ যেমন বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলন করাটা ছিল আত্মাঘাতী  (বাঙালী মুসলমানদের জন্য ) এবং উগ্র  সাম্প্রদায়িক কাজ,  তেমনি  না বলে গগন হরকরার গানের  সুর চুরি  করা ছিল বড় অপরাধ ॥ এবং সেই সময় গগণ হরকরা জীবিত থাকলেও তাঁর কাছ থেকে অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি!!??? কারণ কি একটিই রবীন্দ্রনাথ জমিদার আর গগণ হরকরা তাঁরই সামান্য প্রজা ?? আজ ইতিহাসের কাঠগড়ায় রবীন্দ্রনাথ দুই জায়গায় বড় একজন জঘন্য অপরাধী॥
আপনারাই বলেন বাংলার মুসলমানদের  অধিকার প্রতিষ্ঠার ন্যায্য দাবি  বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে একটি চুরি করা আরএক বাঙালীর গান আমার সোনার বাংলা কি করে আমাদের জাতীয় সংগীত হয়??
অধ্যাপক মনসুরুদ্দিনের "হারামণি" গ্রন্থের ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ লিখছেন, "শিলাইদহে যখন ছিলাম, বাউল দলের সঙ্গে আমার সর্বদাই দেখাসাক্ষাৎ ও আলাপ-আলোচনা হত। আমার অনেক গানেই আমি বাউলের সুর গ্রহণ করেছি এবং অনেক গানে অন্য রাগ রাগিণীর সঙ্গে আমার জ্ঞাত বা অজ্ঞাত-সারে বাউল সুরের মিলন ঘটেছে। এর থেকে বোঝা যাবে বাউলের সুর ও বাণী কোন্ -এক সময়ে আমার মনের মধ্যে সহজ হয়ে মিশে গেছে। আমার মনে আছে, তখন আমার নবীন বয়স, শিলাইদহ অঞ্চলেরই এক বাউল কলকাতায় একতারা বাজিয়ে গেয়েছিল—
আমি কোথায় পাব তারে
আমার মনের মানুষ যে রে!
হারায়ে সেই মানুষে তার উদ্দেশে
দেশ-বিদেশে বেড়াই ঘুরে"॥
একজন ব্লগার প্রশ্ন তুলেছিলেন "একটি চুরি করা গান কেন হবে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত?" এই প্রশ্ন শুধুমাত্র একজন ব্লগারেরই নয় এখন এই প্রশ্ন সকলের ॥
সবার সন্দেহ দূর করার জন্য একটি সফটওয়্যারের নাম বলছি Shazam এটি ডাউনলোড করে, Shazam ওপনে করে জাতীয় বাজান দেখবেন  কিছুই আসছেনা কিন্তু গগণ হরকরার গানটা বাজান দেখবেন সাথে সাথে এসে পড়েছে ॥ কারণ এই গানটা অরজিনাল আদি সুর আদি
গান ॥ রবীন্দ্রনাথ  বেঈমান প্রতারক হলেও সফটওয়্যার বেঈমানী বা প্রতারণা করেনি ॥ সত্যকে যতই চাপা দিয়ে রাখা হোক না কেন শত শত বছর পর হলেও তা প্রকাশ পাবেই॥
যে সোনার বাংলা গানটা গীতাণ্জলী গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত এবং যে বইটির জন্য রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তাঁর আংশিক দাবিধার কিন্তু গগণ হরকরা দাসও ॥ কিন্তু প্রতারক লোভী রবির কিরণে হারিয়ে গেল গরীব গগণ হরকরা ॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

Thursday 27 August 2015

পর্ব তিন কস্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র প্রমথনাথনের লেখা বিশ্বরচনা বইটি রবীন্দ্রনাথ জোর করে নিজের নামে বিশ্বপরিচয় দিয়ে ছাপিয়ে ছিলেন ??!!

পর্ব  তিন   ক
স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র
প্রমথনাথনের লেখা বিশ্বরচনা বইটি রবীন্দ্রনাথ জোর করে নিজের নামে বিশ্বপরিচয় দিয়ে ছাপিয়ে ছিলেন ??!!

সূফি বরষণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র
প্রমথনাথনের লেখা বিশ্বরচনা বইটি রবীন্দ্রনাথ জোর করে নিজের নামে বিশ্বপরিচয় দিয়ে ছাপিয়ে ছিলেন ??!!
বিশ্বভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের তরুণ অধ্যাপক প্রমথনাথ সেনগুপ্তের বিশ্বরচনা বইটি রবীন্দ্রনাথ ভাষাগত সম্পাদনার নাম করে নিজের নামে জোর করে বিশ্বপরিচয় নাম দিয়ে ছাপিয়ে ফেলে ছিলেন॥
মূল ঘটনায় যাবার আগে বিশ্বপরিচয় গ্রন্থটি শুরুর ঘটনা একটু জেনে নেয়া যাক। রবীন্দ্রনাথের এক সময় ইচ্ছে হয়েছিলো পশ্চিমের ‘হোম ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরি’র অনুকরণে ‘লোকশিক্ষা গ্রন্থমালা’ তৈরির–যেটি জনপ্রিয় সহজ ভাষায় বিজ্ঞানকে সর্বসাধারণের কাছে পোঁছিয়ে দিবে ।
কাজেই ভাষা হতে হবে যথাসম্ভব সহজ সরল, পাণ্ডিত্য পূর্ণ বিবর্জিত ভাষা । তিনি ভেবেছিলেন মহাবিশ্বের সাথে সাধারণ পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য একটা বই লেখা হবে, এবং বইটির ভার তিনি দেন পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকের কাজ নিয়ে বিশ্বভারতীতে যোগ দেয়া তরুণ অধ্যাপক প্রমথনাথ সেনগুপ্তের উপর।
রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণ করে বলেছেন [প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়,রবীন্দ্রজীবনী ও রবীন্দ্রসাহিত্য-প্রবেশক, ৪র্থ খণ্ড, বিশ্বভারতী, ১৪০১, পৃ. ৯৬] :
‘আমাদের আলোচ্য পর্বে রবীন্দ্রনাথকে আর-একটি বিষয়ে আলোচনা করিতে দেখিতেছি, সেটি হইতেছে লোকশিক্ষার ক্ষেত্রে। পাঠকদের স্মরণে আছে বহু বৎসর পূর্বে Home University Libraryর অনুরূপ গ্রন্থমালা বাংলাভাষায় প্রকাশনের কথা কবির মনে আসিয়াছিল। এতকাল পরে বিশ্বভারতী প্রকাশন-বিভাগের অধ্যক্ষ চারুচন্দ্র ভট্টাচার্যের উদ্যোগে লোকশিক্ষা গ্রন্থমালা প্রকাশের পরিকল্পনা গৃহীত হইল।
কবির মতে, ‘সাধারণ জ্ঞানের আলোকে সহজবোধ্য ভূমিকায়  আরম্ভ হইবে এইদেশের বিজ্ঞানচর্চা। তদুদ্দেশে কবির ইচ্ছা যে, এই লোকশিক্ষা গ্রন্থমালার প্রথম গ্রন্থ হইবে বিশ্বপরিচয়। কবি বলেন, ‘বুদ্ধিকে মোহমুক্ত ও সতর্ক করবার জন্য প্রধান প্রয়োজন বিজ্ঞানচর্চার।… জ্ঞানের এই পরিবেশন কার্যে পাণ্ডিত্য (pedantry) যথাসাধ্য বর্জনীয় মনে করি। এই প্রথম গ্রন্থখানি লিখিবার ভার অর্পণ করা হইয়াছিল প্রমথনাথ সেনগুপ্তের উপর। প্রমথনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র, সত্যেন বসুর প্রিয় শিষ্য, শিক্ষাভবনে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক।’
তরুণ শিক্ষক প্রমথনাথ শান্তিনিকেতনে চাকরী পেয়েছিলেন সত্যেন বোস এবং জ্ঞানচন্দ্র ঘোষের সুপারিশে। তিনি বিজ্ঞানের ভাল মেধাবী  ছাত্র ছিলেন। কিন্তু বাংলায় খুব বেশি দখল ছিল না, এটা তো সাধারণ বিষয় ?? ফেবুতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পোস্ট দেখি যাতে অসংখ্য বানান ভুল থাকে !?? আরও থাকে না বাক্যে অব্যয় ক্রিয়া প্রত্যয়ের যথাযথ ব্যবহার ॥ (অন্ততঃ রবীন্দ্রনাথের সমপর্যায়ের নন বলে তিনি মনে করতেন)।
রবীন্দ্রনাথ প্রমথবাবুকে ব্রিটিশ পদার্থবিদ জেমস জিনসের একটা বই — ‘থ্রু স্পেস অ্যান্ড টাইম’ পড়তে দিয়েছিলেন। জেমস জিন্স খুব বড় মাপের বিজ্ঞানী ছিলেন না, কিন্তু জনপ্রিয় বিজ্ঞানগ্রন্থের প্রণেতা হিসেবে কিছু সুনাম তাঁর ছিল। ফলে, তার বই থেকে জনপ্রিয় বিজ্ঞানের বই কীভাবে লিখতে হয় তার একটা রসদ পাবেন প্রমথবাবু — সেরকম একটা ধারণা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কাজেই, রবীন্দ্রনাথ যখন প্রমথবাবুকে বই লেখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন (তখন কি তিনি কস্মিনকালেও জানতেন, তার এই রসদ রবিবাবু পুরোটাই নিজের বইয়ের কাজে ব্যবহার করবেন) যারপরনাই খুশি হয়েছিলেন। কী রকম উচ্ছ্বাস তার হয়েছিল, তা প্রমথবাবুর ভাষ্য থেকেই শোনা যাক:
সেদিন থেকেই বিজ্ঞানের সহজ বই পড়তে লেগে গেলাম, তারপর ধীরে ধীরে শুরু হল বই লেখার কাজ। সে এক বিপর্যয় কাণ্ড। কোনদিন বৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়ে সুসংবদ্ধ বাংলা রচনায় হাত দেইনি, দু একটা ছোটখাট রচনা যা লিখেছি তা ছিলো ইংরেজীতে। তাই এই অনভ্যস্ত পথে প্রতি পদে পদে কেবল হোঁচট খেতে হল। এগোন  আর হচ্ছিলো না। নিজের লেখা নিজেরই এত খারাপ লাগতে লাগল যে, দু এক পাতা লিখেই তা ছিঁড়ে ফেলতাম। ফলে ছিন্ন কাগজের পাতায় ঝুড়ি ভর্তি হয়ে উঠল। খাতাখানাও সম্বল হারিয়ে ক্রমশঃ শীর্ণকায় হয়ে উঠল। অবশ্য এতে একজন খুব খুশি হলেন, উনুন ধরাবার কাজে অনায়াসলব্ধ এই ছিন্নপত্রগুলো আমার স্ত্রী যথাযথ সদব্যবহার  করে চললেন।
পর্ব তিনের খ

এই উদ্ধৃতিটি আছে প্রমথনাথ সেনগুপ্তের আনন্দ রূপমবইয়ে, যা বাসুমতি, কলকাতা থেকে একসময় প্রকাশিত হয়েছিল (এখন বইটি দুর্লভ, খুঁজলেও পাওয়া যায় না)। বইয়ের এই উদ্ধৃতি থেকে বোঝা যায় লেখক বাংলা নিয়ে অতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না, কিন্তু এটি অন্ততঃ ভেবেছিলেন বইটি তাঁরই হবে। কারণ বইটি তিনিই লিখেছিলেন এবং সেটা বাংলায় , রবীন্দ্রনাথ লেখকের পান্ডলিপি সংশোধন করে দিয়েছেন মাত্র॥ এতে করেই রবীন্দ্রনাথ বইটির সত্ত্বাধিকারী হতে পারেন না ॥ পৃথিবীর সাধারণ নিয়ম তো তাই বলে॥
এ সময় পাঠভবনের অধ্যাপক তনয়বাবু (তননেন্দ্রনাথ ঘোষ, পাঠভবনের অধ্যাপক) এসে বললেন:
এভাবে তো হবে না, আপনি যা পারেন লিখুন। তবে তথ্যের দিক থেকে যেন হাল্কা না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। আমাদের বিচারে যে ভাষা সাধারণতঃ ভালো বলে আখ্যা পায়, গুরুদেবের হাতে পড়লে তার খোল-নলচে বদলে গিয়ে এক নতুন ভাষা প্রকাশ পায়। কাজেই বৈজ্ঞানিক তথ্য পর পর সাজিয়ে দিন, ভাষার ভার গুরুদেব নেবেন। গুরুদেব সেই ভাষা দেখে পরবর্তী পর্যায়ে লিখতে শুরু করবেন।
পাঠক, বুঝতেই পারছেন, কোথাকার জল কোথায় গড়িয়ে যাচ্ছে। কীভাবে রবীন্দ্রনাথকে দিয়ে কেবল ভাষার মাধুর্য বাড়িয়ে প্রমথনাথের মূল তথ্যগুলো হাতিয়ে নেবার পায়ঁতারা চলছে। কিন্তু তারপরেও বই লেখার এ পদ্ধতি ঠিক হবার পরেও হতভাগ্য প্রমথবাবু কিন্তু ভাবছেন বইটা তাঁরই হবে। তিনি বইয়ের নামও ঠিক করে রেখেছিলেন–‘বিশ্বরচনা’। তাই তিনি লিখলেন:
ওদের উপদেশ মেনে নিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হল। বইটার নামকরণ করলাম “বিশ্বরচনা”। ধীরে ধীরে কাজ এগুতে লাগল। ‘পরমাণুলোক’ দিয়ে শুরু হল বইয়ের প্রথম অধ্যায়, এটা শেষ করে গুরুদেবের কাছে নিয়ে যেতে হবে।’
প্রথম অধ্যায় লেখা শেষ করে প্রমথনাথ রবীন্দ্রনাথের কাছে নিয়ে গেলেন। রবীন্দ্রনাথ দেখে বললেন:
“রচনাটি আমার কাছে রেখে যাও, কাল ফেরৎ পাবে। বিজ্ঞানের সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটাতে হলে ভাষাটা কীরকম হবে, তাই শুধু দেখিয়ে দেব।”
শুধু পরমাণুলোক নয়, এর পর নক্ষত্রলোক, সৌরজগৎ, ভূলোক এবং উপসংহার সব অধ্যায়ই লিখেছেন প্রমথবাবু। আর রবীন্দ্রনাথ খোল নলচে বদলে দিয়েছেন। সেই সংশোধন করা পাণ্ডুলিপিগুলো প্রমথনাথ অবশ্য আনন্দরূপম বইয়ে ছাপিয়েছিলেন কিছু
কিছু ।
আনন্দরূপম বইয়ের পৃষ্ঠা ১৪৬-এ আমরা পাই শেষ অধ্যায় লিখে গুরুদেবের কাছে পৌঁছিয়ে দেবার কথা:
‘শেষ অধ্যায় লিখে দিয়ে এলাম গুরুদেবের হাতে। এটা সংশোধিত হয়ে ফিরে এলে তৈরি করতে হবে নতুন করে সমগ্র পাণ্ডুলিপি সুন্দর নির্ভুলভাবে লিখে, তারপর তা তুলে দিতে হবে ওঁর হাতে, আলমোড়া যাবার আগে …’
প্রমথবাবু পুরো বইটি এবং তার উপসংহার শেষ করার পরে রবীন্দ্রনাথ ঠিক করেন বইটার নাম ‘বিশ্বপরিচয়’ হবে। কিন্তু প্রমথনাথকে ঘুণাক্ষরেও তিনি জানতে দেননি একথা। বরং ভিন্ন একধরণের নাটকের অবতারণা করলেন ধীরেন্দ্রমোহন সেনকে নিয়ে এসে। নাটক বলছি কেন সেটা পাঠকেরা শুনেই বুঝতে পারবেন আশা করছি।
ড. সেন হঠাৎ ওকে (প্রমথ বাবুকে) বললেন:
‘বিশ্বপরিচয়’ নিয়ে আপনি যে পরিশ্রম করেছেন তাতে বইটার যুক্তগ্রন্থকার হওয়া উচিৎ–- রবীন্দ্রনাথ-প্রমথনাথ।
‘গুরুদেব’ সাথে সাথে বললেন:
সে কীরে, বইটার বিষয়বস্তু রচনার কাজ তো প্রমথই করেছে। আমি শুধু ভাষার দিকটা দেখে দিয়েছি। গ্রন্থকার তো প্রমথেরই হওয়া উচিৎ। তবে আমার নামের সাথে যদি প্রমথ যুক্ত করতে চান, তাহলে প্রমথনাথ-রবীন্দ্রনাথ হওয়াই ঠিক হবে।
নিঃসন্দেহে এটা প্রমথবাবুর জন্য বড় রকমের ধাক্কা ছিল। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন তার নামেই বইটা হবে। বইয়ের সব তথ্য যে তাঁরই যোগাড় করা! তারপরেও রবীন্দ্রনাথ যেহেতু ভাষার সবকিছু ঢেলে সাজিয়েছেন, সেহেতু যুক্তগ্রন্থকার হলেও খুব বেশি হারাবার নেই বলেই ভেবেছিলেন হয়তো। সেই বিহবল অবস্থা ধরা পড়ে প্রমথবাবুর লেখায়:
তারপর পাণ্ডুলিপি নিয়ে কিছুক্ষণ আলোচনা করলেন, তারপর ওখান থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে ডক্টর সেন বললেন যে, সম্ভব হলে ঐ গ্রীষ্মের ছুটির মধ্যেই যেন ‘পৃথ্বী-পরিচয়’ বইটা আমি শেষ করি। ওর কথা বলার ধরণ দেখে মনে হচ্ছিল ‘বিশ্বপরিচয়’ বইটার লেখকের নাম নিয়ে কোথায় যেন একটা সংশয় জেগেছে, অবশ্য এ ব্যাপারে ওঁকে খোলাখুলি কিছু জিজ্ঞেস করাও সম্ভব নয়।’
এর বেশ কিছুদিন পর নাটকের আসল যবনিকাপাত। রবিঠাকুর ঠিক করলেন প্রমথবাবুকে জানাবেন ব্যাপারটা যে, নিজেই বইয়ের লেখক হতে চান, প্রমথবাবুকে বাদ দিয়ে। কীভাবে সেটা প্রমথবাবুর মুখেই শোনা যাক:
গ্রীষ্মের ছুটির পর গুরুদেব আলমোড়া থেকে ফিরে একদিন সন্ধ্যার সময় ডেকে পাঠালেন। উত্তরায়নে গিয়ে দেখি ক্ষিতিমোহনবাবু ও শাস্ত্রীমশায়ের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন, আমাকে ডেকে সস্নেহে পাশে বসালেন, কুশল প্রশ্ন করলেন। তারপর বললেন, “দেখো, বিশ্বপরিচয় লিখতে লিখতে দেখলুম এর ভাষাটা আমারই হয়ে গেছে, তাই এর মধ্যে তোমাকে..
 পর্ব তিনের গ
কোথাও স্থান দিতে পারলুম না।” !!!!? একটু থেকে বললেন, “অবশ্য তুমি শুরু না করলে আমি সমাধা করতে পারতুম না, তা ছাড়া বিজ্ঞানের অনভ্যস্ত পথে চলতে শেষ পর্যন্ত এই অধ্যবসায়ীর সাহসে কুলাতো না। তুমি ক্ষুণ্ণ হয়ো না।”
এই হচ্ছে বিশ্বপরিচয় গ্রন্থ রচনার ইতিবৃত্ত। রবীন্দ্রনাথের বিশাল পরিচিত এবং ব্যক্তিত্বের কাছে নতজানু প্রমথনাথ ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন কি না জানা নেই আমাদের। তবে, এই ঘটনা জেনে আমি  যে ভয়ঙ্কর রকমের ক্ষুব্ধ, ক্ষুণ্ন এবং ক্ষীপ্ত সে বিষয়ে কোনো সন্দেহই নেই। রবীন্দ্রনাথের মত একজন বিশাল ব্যক্তিত্ব তাঁরই অধীনস্থ সামান্য একজন শিক্ষকের সাথে এরকম প্রতারণা করবেন, তাঁর লেখা বইকে নিজের নামে ছাপিয়ে দেবেন কোনো ধরনের চক্ষুলজ্জার ধার না ধেরে, সেটা মেনে নেওয়াটা আসলেই কষ্টকর। এই হলো রবীন্দ্রনাথের আসল চেহারা ॥ এভাবে জমিদার রবি বাবু আরও যে কত কত প্রজার লেখা বই কবিতা গল্প নাটক উপন্যাস গানের ভাষা  সংশোধন করে দেয়ার নামে জোর করে নিজের নামেই ছাপিয়ে ফেলেছেন তা আল্লাহ মালুম॥ আর গরীব প্রজা যে তার প্রতিবাদ করতে সাহস পাইনি সেটা পরিষ্কার বুঝা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের লেখা বই জোর করে রবিবাবু নিজের নামে ছাপানোর মধ্য দিয়ে॥
প্রিয় পাঠক আপনারা একবার চিন্তা করেন রবীন্দ্রনাথ মুখোশের অন্তরালে কত বড় একজন ডাকাত আর জঘন্য জ্ঞানপাপী ছিলেন ॥ এরপর কি আপনারা এই ব্যক্তিকে শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছে করবে ॥ পাঠক আপনারা যদি আমার মতামত জানতে চান তবে আমি এক বাক্যে বলবো না কখনও নয়॥ এই ব্যক্তি কোনো ভাবেই আমার কাছ থেকে সম্মান পাওয়ার যোগ্য নয়॥ সেই রবীন্দ্রনাথ হোক আর আমার প্রয়াত জন্মদাতা পিতা হোক আমি সেই সূফি বরষণ যে চোরকে চোর বলতে দ্বিতীয় বার চিন্তা করতে হয় না॥ আমি কাউকেই যে ছেড়ে দিয়ে কথা বলি না সেটা আপনারা ভালো করেই জানেন ॥
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ‘রাহাজানির’ (হ্যাঁ, এটি আমাদের চোখে রাহাজানিই, ছোটখাট ‘জোচ্চুরি’ নয়) ঘটনার পুরো বিবরণ আছে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত দীপঙ্কর চট্টোপাধায়ের লেখা রবীন্দ্রনাথ ও বিজ্ঞান [আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, জানুয়ারি, ২০০০] বইয়ে।
এই হলো রবীন্দ্রনাথের আসল চেহারা ॥ তিনি যে কয়েকটি বই নিজে লিখেছেন আর কয়েকটি অন্যের লেখা বই নিজের নামে ছাপিয়ে ফেলেছেন এই এখন যথেষ্ট পরিমাণে সন্দেহ দেখা দিয়েছে ॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ


Wednesday 26 August 2015

পর্ব দুই ক_স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥বিতর্কিত রবি বাবু কারো সমালোচনা সহ্য করতেন না!!?

পর্ব  দুই   ক
স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥
বিতর্কিত রবি বাবু  কারো সমালোচনা সহ্য করতেন না!!?
সূফি বরষণ 
রবীন্দ্রনাথ নিজেই বলতেন ৪০ বছর পর কারো কবিতা লেখা উচিত নয়॥ কারণ কবির  যৌবনের কবিতা আর বৃদ্ধ বয়সের কবিতার মধ্যে মিল থাকে না॥
রবীন্দ্রনাথ তাঁর শেষের কবিতার নায়ক অমিতের মুখ দিয়ে  বলিয়েছিলেন যে, কবি মাত্রেরই পাঁচ বছরের জন্য কবিত্ব করা উচিত। তা না হলে শেষকালটায় অনুকরণের দল চারি দিকে ব্যূহ বেঁধে তাদেরকে মুখ ভ্যাংচাতে থাকে। তাদের লেখার চরিত্র বিগড়ে যায়, পূর্বের লেখা থেকে চুরি শুরু করে হয়ে পড়ে পূর্বের লেখার ‘রিসীভর্স্ অফ স্টোল্‌ন্‌ প্রপার্টি’।
কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানেন রবীন্দ্রনাথ নিজেই লিখেছেন অন্যদের নিষেধ করে?! এটা কি এক ধরনের প্রতারণা নয়? আর তিনি  কি শুধুই  লিখেছেন!  শেষে জীবনে একদিনে পাঁচটি কবিতা এমনকি দশটি গান পর্যন্ত রচনা করেছেন ??!!
আপনারা  প্রমাণ স্বরূপ তাঁর রচনাবলী থেকে তারিখ পরীক্ষা করে দেখতে পারেন॥ মনে বিস্ময় জাগে এটা কিভাবে সম্ভব ?? । শুধু লিখে গিয়েছেন বললে ভুল হবে, উৎকর্ষের দিক দিয়ে এই শেষের বছরগুলো বরং ছাড়িয়ে গিয়েছে আগের রবীন্দ্রনাথকে। এ বিষয়ে নীরদ চৌধুরী লিখেছেন:
ওয়ার্ডসওয়ার্থ, টেনিসন, ব্রাউনিং কেহই পরবর্তী জীবনে আগের রচনার তুলনায় উৎকৃষ্টতর কবিতা লেখেন নাই –ইঁহাদের কবিকীর্তি চল্লিশ বৎসরের আগে রচিত কাব্যের উপর প্রতিষ্ঠিত। একমাত্র রবীন্দ্রনাথ ও হুগো শেষ জীবনে যাহা লিখিয়াছিলেন তাহা আগের জীবনে যাহা লিখিয়াছিলেন তাহার সমানতো বটেই, কোনো কোনো রচনায় উচ্চতর।
আজকের যুগে অনেক বাঙালিই রবীন্দ্রনাথকে প্রায় দেবতার আসনে বসিয়ে ফেলেছেন। তাঁকে নিয়ে ভক্তিতে  গদ্গদ হয়ে পুজোর আসর বসিয়ে, তাঁর গানকে উপাসনার ভক্তিসংগীত বানিয়ে ফেলেছে । রবীন্দ্রনাথের সামান্যতম সমালোচনা, ক্ষীণতম ত্রুটি-বিচ্যুতির উল্লেখ তাঁদেরকে ক্ষিপ্ত করে তোলে।
উন্মাতালের মত ঝাপিয়ে পড়তে চান সমালোচনাকারীর উপরে॥ আর এই শ্রেণীটি হলো সংকীর্ণমনা শিক্ষিত  মধ্যবিত্ত বাঙালী মুসলিম পরিবারের সন্তান, সাথে আছে হিন্দুরাও ॥ ধর্মনিরপেক্ষতার নামধারী একটি  জ্ঞানপাপী চক্র ॥ এদের হীনমন্যতা আর নিজের আত্মা পরিচয় ভুলে যাওয়া দেখে লজ্জায় ঘৃণায় আমার মুখ ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছে করে॥ এই শ্রেণীর বুদ্ধি ভিত্তিক দৈন্যদশার জন্য আজও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে ॥ রবীন্দ্রনাথ আমাদের মতোই রক্তে মাংসে গড়া মানুষ তিনি কিছুতেই দেবতা হতে পারেন না॥ তাঁরও অনেক ভুল ত্রুটি থাকতেই পারে॥
এটা এই শ্রেণী মানতে নারাজ, এরাই রবীন্দ্রনাথকে সাম্প্রদায়িকতার জালে বন্দী করে ফেলেছে ॥ যে জাল থেকে রবীন্দ্রনাথকে বের করে আনা আজও সম্ভব হয়নি ॥ এরা রবীন্দ্রনাথের অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে কোনো প্রকার আলোচনা করতে নারাজ॥ যে কারণে রবীন্দ্রনাথের জীবিত অবস্থায় যে সমস্ত সমালোচনা হয়েছিল তা আর এখন খুঁজে পাওয়া যায় না॥ কারণ নীরদ সি চৌধুরীর ভাষায় : রবীন্দ্রনাথের জীবিতকালে প্রশংসার তুলনায় তাঁর সমালোচনায় বেশি
হয়েছিল ॥
আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দুজন সম্মানিত শিক্ষক ড. আহমদ শরীফ ও ড. হুমায়ুন আজাদ স্যারদ্বয় খুবই গঠন মূলক ভাবে তীক্ষ্ণ তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথের॥ আহমদ শরীফ তাঁর রবীন্দ্রোত্তর তৃতীয় প্রজন্মে রবীন্দ্র মূল্যায়ন প্রবন্ধে লিখেছেন:
তাঁর লঘু-গুরু ত্রুটি-বিচ্যুতি, মন-মননের সীমাবদ্ধতা বিমুগ্ধ-বিমূঢ় ভক্ত-অনুরক্তেরা এতো কাল চেপে রেখেছেন, অন্য কেউ উচ্চারণ করতে চাইলেও মারমুখো হয়ে উঠেছেন। প্রমাণ ষাটের দশকে বুদ্ধদেব বসুকে এবং ইদানীং সুশোভন সরকারকে ও সুভোঠাকুরকে গালমন্দ শুনতে হয়েছে। আর পঞ্চাশের দশকে কম্যুনিস্টরাও হয়েছিল নিন্দিত রবীন্দ্র বিরোধিতার জন্যে।
বার বুঝতেই পারছেন রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে সমালোচনা করা খুবই বিপদজনক কাজ ॥ যেখানে রবীন্দ্রনাথ নিজেই তাঁর সমালোচনা সহ্য করতে পারতেন না ॥আর তাঁর ভক্তরা কতটা উগ্র হবে তা সহজেই বুঝা যায়॥ ।
—————————————————————-
রবীন্দ্রনাথ যে দোষেগুণে মিলিয়ে আমাদের মতো এক রক্তমাংসের মানুষই ছিলেন তার প্রমাণ আছে তাঁর নিজের জীবনেই। তাঁর ভক্তদের মত রবীন্দ্রনাথ নিজেও নিজের বিরূপ সমালোচনা সইতে পারতেন না। সমালোচনায় উদ্বেলিত হয়ে, উৎকণ্ঠিত হয়ে তা খণ্ডনের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়তেন তিনি। তাঁর হয়ে কেউ প্রতিবাদ করুক, সেই আশায় বসে থাকতেন তিনি। সেরকম কাউকে পাওয়া না গেলে নিজেই ছদ্ম কোনো নাম নিয়ে প্রতিবাদ, প্রতিকারে নেমে পড়তেন।
পর্ব দুই খ
এ প্রসঙ্গে আহমদ শরীফ বলেন:
রবীন্দ্রনাথ বিরূপ সমালোচনা সহ্য করতে পারতেন না, প্রতিবাদ করার লোক পাওয়া না গেলে বেনামে লিখে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করতেন। রবীন্দ্রানুরাগী ও রবীন্দ্রস্নেহভাজন অন্নদাশংকর রায় বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ তাঁর ত্রুটি-নিন্দা-কলঙ্কের সাক্ষ্য প্রমাণ সতর্ক প্রয়াসে অপসারিত বা বিনষ্ট করতেন। তা সত্ত্বেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সুশোভন সরকার তাঁর প্রণাম-প্রীতিরূপ দুর্বলতার কথা বলে গেছেন। তাঁর সেজো ভাইয়ের পৌত্র সুভোঠাকুর [সুভগেন্দ্রনাথ ঠাকুর] জমিদার পরিচালনায় তাঁর স্বার্থবুদ্ধির কথা বর্ণনা করেছেন।
প্রিয় পাঠক আপনারা ইতিমধ্যে বুঝতে পারেছেন যে, প্রতারক রবীন্দ্রনাথ যেমন সমালোচনা সহ্য করতে পারতেন না তেমনি তাঁর ভক্তরাও পারেনা সমালোচনা সহ্য করতে ॥
আর এই হলো যাদের অবস্থা আমি তাদেরকে জ্ঞানপাপী সংকীর্ণমনা গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত করেছি ॥ পরের পর্বে আসছে প্রতারক রবীন্দ্রনাথ কিভাবে আর একজনের বই জোর করে নিজের নামে ছাপিয়ে ছিলেন ॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

Tuesday 25 August 2015

পর্ব এক কস্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥বিতর্কিত রবি বাবু আমার সোনার বাংলা গানটি চুরি করেছিলেন ॥



পর্ব  এক  ক
স্বাধীনতার পর বাঙালীর প্রথম বুদ্ধিভিত্তিক দৈন্যদশা শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও রবীন্দ্র পূজার মধ্য দিয়ে ॥
বিতর্কিত রবি বাবু  আমার সোনার বাংলা গানটি চুরি করেছিলেন ॥
সূফি বরষণ 
আমি এখন যে বিষয়ে লেখায় হাত দিয়েছি  তা আমার জন্য রীতিমতো দুঃসাহস দেখানো মতো একটি কাজ॥ তারপরেও একটাই  আশা  মানুষের কাছে সত্য তুলে ধরার চেষ্টা ॥ এবং সেটা নিজের বিবেকের তাড়নার  দায়বদ্ধতা থেকে ॥ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি কোনো প্রকার বিদ্বেষ হিংসা ক্রোধ বা রাগ_ অনুরাগের বশীভূত হয়ে নয় ॥ আমার ছোটোবেলা থেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি ডাউট ছিল সেটা কবি নজরুলের প্রতি  তাঁর বিরুপ আচরণ করার কারণে॥
আর সেই ডাউট থেকে কলেজে পড়ার সময়ে  একদিন বাংলার অধ্যাপক ম্যাডাম কে দেখিয়ে দিলাম সোনার তরী কবিতার মধ্যে লাইন চয়নের মিল অমিল আর সেটা যে মাত্রাবৃত্ত ছন্দে যায়না !!?? তখন বাংলার ম্যাডাম আমার দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে বললেন এটা ভুলের মধ্যে পড়ে তুমি যা বলেছ আর আমি বলে দিলাম তুমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবা ॥ যাক সে ভিন্ন এক ঘটনা প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি নিজের পান্ডিত্য জাহির করার জন্য ॥ আমার মাত্রাতিরিক্ত জানার আগ্রহ আছে বিতর্কিত মানুষের সম্পর্কে ॥
সেই আগ্রহের সূত্র ধরেই এই লেখার অবতারণা॥ বাঙালী জাতির  একটি আদি মুদ্রার দোষ হলো তাঁরা জ্ঞানী মানুষের যথাযোগ্য  সম্মান করতে পারেনা বা জানে না!!??॥ আরও পারেনা গঠন মূলক বিশ্লেষণ বা সমালোচনা করতে ॥ তাদেরকে সমালোচনা করতে বললে  শ্রব্য অশ্রাব্য ভাষা গালাগালি শুরু করে !! এভাবেই বাঙালীর যত শ্রেষ্ঠ সন্তান আছে তাদের প্রত্যেকেই বিতর্কিত করেছে খন্ডিত দৃষ্টি কোণ থেকে ॥ আর করা হয়েছে ধর্মের নামে এবং রাজনৈতিক মতাদর্শের নামে॥ সেই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পরিচয় দিয়েছে আওয়ামী লীগ বিএনপি জামায়াত ও বামপন্থীরা( তৎকালীন মুসলিম লীগ) ॥ এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দু শিক্ষিত সমাজও বাদ যায়নি তারাও এই সব রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় বুদ্ধি ভিত্তিক দৈন্যদশার  আগুনে ঘি ঢেলেছে ॥ আর কিছু বাঙালী আছে রবীন্দ্রনাথ নজরুলকে এক করে ফেলে ??
নিজেদের মধ্যে এতোই দীনতা যে তারা দুজনের মধ্যে পার্থক্য করেতে পারে না!?॥ এটা পরিষ্কার ভাবে বুঝতে হয়ে যে, বিতর্কিত রবীন্দ্রনাথ আর বিশুদ্ধ চির জাগ্রত বাঙালী জাতিসত্ত্বার  মুসলিম চেতনার কবি নজরুল এক হতে পারে না কোনো কালেই॥ কারণ দুটি ভিন্ন সত্ত্বা দুটি ভিন্ন আদর্শ দুটি ভিন্ন চেতনা দুটি ভিন্ন আত্মা পরিচয় কোনো ভাবেই এক হতে পারে না আর হবেও না কোনো সময় ॥ আর বাঙালীর রাজনৈতিক ইতিহাসে গত একশত বছর ধরে সবচেয়ে বেশি বুদ্ধি ভিত্তিক দীনতার পরিচয় দিয়েছে মুসলিম শিক্ষিত সমাজ যার ফল বর্তমানেও তারা ভোগ করছে ॥ যদি তারা খন্ডিত দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে বেরিয়ে না আসতে পারে তবে ভবিষ্যতেও ভোগ করতে হবে ॥
আমাদের কে শিখানো হয়েছে ৫২ আর ৭১ই একমাত্র ইতিহাস ॥
যে কারণে আমাদের মাঝে স্থায়ী  বুদ্ধিভিত্তিক রাজনৈতিক চিন্তা চেতনার দৈন্যদশা  সংকীর্ণতা সৃষ্টি হয়েছে ॥ বাঙালী মুসলমানদের নিজেদের আত্মা পরিচয় জানতে হলে ফিরে যেতে হবে বখতিয়ার, আলাদ্দিন হোসেন শাহ, শায়েস্তা খাঁ, শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ, ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ, ইশা খাঁ , নবাব সিরাজউদ্দোলা, তিতুমীর হাজি শরীয়তুল্লাহ, শাহ মাহদুম, শাহ জালাল, খান জাহান আলীসহ অসংখ্য বীর সেনানীদের কাছে॥ আরও জানতে হবে ১৭৫৭, ১৮৫৭, ১৯০৫, ১৯১১, ১৯৪৭, ১৯৫৪ এই সাল গুলোর সঠিক এবং প্রকৃত ইতিহাস তাইলে আমাদের দীনতা  হীনমন্যতা সংকীর্ণতা অনেকটা দূর হয়ে যাবে॥
আমরা জানতে পারবো আমাদের আত্মা পরিচয়ের সঠিক ইতিহাস ॥
আমাদের দীনতা  হীনমন্যতা সংকীর্ণতার কারণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি ফররুখ আহমেদ, আল মাহমুদ, শেখ মুজিব, শহীদ জিয়া, গোলাম আযম কাউকেই বাদ দেয়নি বিতর্কিত করা
থেকে ॥ এবার আসি মূল আলোচনায় রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে॥ রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে একটি সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন
নীরদ সি চৌধুরী ॥ তাঁর আত্মঘাতী বাঙালী গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্ড ‘আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ’-এর ভূমিকাতে লিখেছিলেন :
তাঁহার (রবীন্দ্রনাথের) সম্বন্ধে সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা আজ পর্যন্ত হয় নাই। যাহা হইয়াছে তাহা একপক্ষে হিন্দুর মূর্তিপূজার মত, অন্য পক্ষে মুসলমানের মূর্তি ভাঙার মত। জীবিতকালে তিনি যেন হিন্দু হইয়া মুসলমানের রাজত্ব বাস করিয়াছিলেন, অর্থাৎ প্রধানত আক্রমণেরই লক্ষ্য ছিলেন। এই অবস্থার জন্য তাঁহার ব্যক্তিত্ব, মতামত ও রচনা সম্বন্ধে যেসব কথা বলা ও লেখা হইয়াছিল তাহাকে মিথ্যা নিন্দা ভিন্ন আর কিছু বলা যাইতে পারে না। আবার এই বিদ্বেষপ্রসূত নিন্দার পরিমাণ, তীব্রতা ও ইতরতা এমনই হইয়াছিল যে উহার ভারে ও ধারে বেশীর ভাগ বাঙালির কাছেই তাঁহার আসল রূপ চাপা ও কাটা পড়িয়াছিল।
পর্ব এক খ
অবশ্য ইহাদের প্রতিপক্ষও যে ছিল না তাহা নয়, অর্থাৎ ভক্তও তাঁহার জুটিয়াছিল। ইহারা বিদ্বেষীদের তুলনায় সংখ্যায় অনেক কম হইলেও দলে নিতান্তই অল্পসংখ্যক ছিল না। তবে ইহাদের দ্বারাও রবীন্দ্রনাথের হিত হয় নাই। ইহারাও তাঁহার যে রূপ প্রচার করিয়াছিল তাহা অন্ধ স্তাবকের প্রশস্তি ভিন্ন কিছু নয়। এমন কি এই রবীন্দ্রভক্তি এমনই বাক্যভঙ্গি ও আচরণে প্রকাশ পাইত যে, উহাকে হাস্যাস্পদ করা নিন্দাকারীদের পক্ষে খুবই সহজ হইত। ফলে, রবীন্দ্র ভক্তেরাও রবীন্দ্র বিদ্বেষীদের মতই মিথ্যারই প্রচারক হইয়াছিল।
বর্তমানে অবশ্য অবস্থাটা উল্টা হইয়াছে, অর্থাৎ রবীন্দ্র নিন্দুকেরা লোপ না পাইলেও রবীন্দ্রভক্তেরাই প্রবল হইয়াছে। কিন্তু না ভক্তি না নিন্দা, কোনটাই উচ্চস্তরে উঠে নাই। এখনও রবীন্দ্রনাথের সত্যরূপ আত্মপ্রকাশ করিতে পারিতেছে না।
নীরদ সি চৌধুরীর কথা গুলো আজ বাস্তব প্রমাণিত হয়েছে ॥ একদল সংকীর্ণমনা অন্ধ বিশ্বাসীরা রবীন্দ্রনাথকে দেবতা বানিয়ে পূজা করা শুরু করেছে  ॥  রবীন্দ্রনাথের সামান্যতম সমালোচনা তাদেরকে ক্ষিপ্ত করে তুলে ॥ হিংস্র উন্মাদের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে চান সমালোচনাকারীদের উপরে॥ এই অন্ধ রবীন্দ্র বিশ্বাসীরা  কোনো ভাবেই মানতে চান না যে রবীন্দ্রনাথ দেবতা নয় তিনি আমাদের মতো রক্তে মাংসে গড়া একজন মানুষ ॥
তিনিও চুরি করতে পারেন, তিনিও ভুল করতে পারেন, তাঁরও খ্যাতির প্রতি লোভ লালসা  আছে ॥ তিনিও হিংসা বিদ্বেষ এবং মানবীয় দোষ গুণের ঊর্ধ্বে নয়॥ পরের পর্বে আসছে রবীন্দ্রনাথের প্রতারণা মিথ্যাচার নিয়ে ॥ বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই লেখার সিরিজের শেষ পর্বে তথ্য সূত্র দেয়া হবে॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

Friday 21 August 2015

সানি লিওন আর ইসলাম পন্থীদের দৈন্যতা নিয়ে কিছু কথা

সানি লিওন আর ইসলাম পন্থীদের দৈন্যতা নিয়ে কিছু কথা

সূফি বরষণ
গতকাল আমি ফেবুতে মজাকরে সানি লিওন আর হেফাজতকে নিয়ে একটা ছোট্ট পোস্ট করেছিলাম ॥  আমার কথা গুলোর  তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় অনেকেই ?॥ এতে বুঝা যায় অনেকেরই ধর্মীয়  অনুভুতিতে আঘাত লেগেছে, আর লাগাটাই স্বাভাবিক কারণ বুঝা না বুঝার বোঝা ॥ এবার আপনাদেরকে আত্মাপক্ষ সমর্থন করে কিছু বলি ॥ বর্তমান অবৈধ সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ॥ আর এই আস্থা  আমেরিকা ভারত রাশিয়াকে পরিপূর্ণ ভাবে বুঝাতে সক্ষম হয়েছে এই অবৈধ সরকার ॥
সানি লিওনের মতো জগৎ নষ্টাদের দেশে এনে ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টির মাধ্যমে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে ॥ আর বার বার সরকারের প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছে ইসলামপন্থীরা  ॥ এখানে বলতেই হবে দেশে ইসলামপন্থীদের দৈন্যতা চরমে পৌঁছেছে॥ সেরের উপর সোয়া সের দিতে না পারলে কিছুই হয় না॥ আর না করতে পারলে সানি লিওয় আসবে আরও কত কিছুই আসবে যাবে॥ সীসা বার জুস বার নাইট ক্লাব ডিজে পার্টি বাড়তেছে আরও বাড়বে ॥ এক টানবাজার বন্ধ হয়েছে আরও শতে শতে টানবাজার চালু হয়েছে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ॥ আরও আছে বাংলাদেশ ইসক্ট সার্ভিস যার মাধ্যমে প্রকাশ্যে পতিতাবৃত্তি করা হয়ে ॥ এবং  ভারতীয় সিরিয়াল কে বন্ধুর করবে??॥ শুধু সানি নয় বন্ধ করলে সব করতে হবে॥ এখন সানিকে নিয়ে  হেফাজতসহ অন্য ইসলামী দল গুলো শুরু করবে ধর্ম রক্ষার জন্য আন্দোলন ॥ মিডিয়া বিশ্ববাসীকে দেখাবে বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদীদের ভয়ংকর উত্থান হয়েছে যা বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি !!?? অতএব এই অবৈধ সরকার আরও কিছুকাল ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পাচ্ছে ॥ এই এক সানিকে পুঁজি করে আরও কিছু দিন ক্ষমতা থাকার রাস্তা নিরাপদ করে ফেলবে অবৈধ খুনী হাসিনার সরকার ॥ একবার হেফাজত তো আন্দোলনের নামে রণে ভঙ্গ দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের রক্তের সাথে বেঈমানি করে শফি সাহেব ঘরে ফিরে গেলেন ॥ রেলওয়ের  বিশ একর জায়গা হাটহাজারী মাদ্রাসার অবৈধ দখলে থাকা জমি সরকার লিখে দিয়ে শফি সাহেবের মুখ বন্ধ করেন সেই যাত্রায় ॥ শুধু কি তাই খাম ভর্তি টাকার বান্ডেল দিয়েছিলেন গোয়েন্দাদের মাধ্যমে হাসিনার সরকার ॥ আর সে সময় চট্টগ্রামে ছুঁটে  যান আমেরিকার দূতাবাসের কর্তা ব্যক্তিরা?॥ নিজে রক্তে মাংসে চিন্তা চেতনায় সাংবাদিক হওয়ায় নাকে গন্ধ ভেসে আসে এই ছুটে যাওয়ার কি উদ্দেশ্য বা আমেরিকায় হুজুরদের দাওয়াত করার কি উদ্দেশ্য প্রশ্ন জাগে মনে শত প্রশ্ন জানে॥ যে আমেরিকা তালেবান, আই এস, হিজবুত তাহরীর , হিজবুল্লাহ , বোকো হারাম সৃষ্টি করে সারা দুনিয়ার  মানুষের মাঝে ইসলামের আতঙ্ক ঢুকিয়ে দিয়েছে  ॥ এই আমেরিকা সারা বিশ্বে ৬ কোটি মুসলমানকে শরণার্থী বানিয়েছে ॥ এরপরও যদি না বুঝেন তাইলে আমার  কিছুই বলার নাই॥ দেশে ব্লগার মেরে রাস্তায় ঐ হুজুরদের কে আন্দোলনে নামানো হয়
মানে কি ?? দেশে এখনও আইন আছে আপনারা উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করতে পারেন যাতে সানি লিওন না আসতে পারে॥ কিন্তু কেউ কি তা করবে না করবে না॥আর টিকিটের দাম ১৫ হাজার টাকা হলেও একটি টিকিটও বিক্রির বাকী থাকবে না॥ আগে দেশে বামপন্থীরা হাউ কাউ করতো কিন্তু এরাও এখন সরকারের খাম ভর্তি টাকা পেয়ে চুপ একদম চুপ হয়ে গেছে  ॥ শফি সাহেবরাও এখন আন্দোলনের নামে রাস্তায় নামবে, কিন্তু  পুলিশ দেখা মাত্র গুলি করবে না ॥ বিশ্ব মিডিয়ায় আবারও সংবাদ আসবে বাংলাদেশে সানি লিওনকে নিয়ে  ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের আবারও উন্মাদনা॥ তারপর আবার সেই খাম সেই টাকার বান্ডেল এবং চুপ একদম চুপ ॥ এভাবেই চলছে এভাবেই কি চলবে বুঝা না বেঝার বোঝা নিয়ে?? ॥
মুক্তিবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

Tuesday 18 August 2015

মানুষ লোকাইলো কোন শহরে

মানুষ লোকাইলো কোন শহরে

সূফি বরষণ
মহাপুরুষ গুরু লালন সাঁইজীর গান দিয়ে এই লেখা শুরু করছি,
" এবার মানুষ খোঁজে পাই না তারে, মানুষ লোকাইলো কোন শহরে, ন ছেড়ে ন দে এলো...., কোথায় গেলো যে জানো বলো মোরে,  মানুষ লোকাইলো কোন শহরে" ॥ লালন যে মানুষের সন্ধান করছেন সারা জীবন, সেই মানুষের সন্ধান করা আমাদের সমাজের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে ॥  বিবেক সম্পন্ন মানুষকে যে প্রকৃত মানুষ বলে সে মানুষের বিবেক নিয়েও আলোচনা করা অতি জরুরি ॥

আমরা প্রথমে বিবেকের প্রতিশব্দ
গুলো জেনে নেয়,ন্যায়পরতা, সুনীতি নীতি, অন্তঃকরণ চৈতন্য, সাধুতা, বিচারবুদ্ধি, ধর্মবুদ্ধি, ন্যায়বোধ, নীতিবোধ ইত্যাদি ॥
এক কথায় বলতে গেলে সুস্থ  বিবেক বা ন্যায়নীতি সম্পন্ন মানুষ ॥
ন্যায়নীতি সম্পূর্ণ মানুষের অবক্ষয় আর দেশের বর্তমান অবস্থার সম্পর্কে আমার ফেবুর বন্ধু টাঙ্গাইলের এক বোন ফোন করে আমাকে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বরষণ ভাই কাঁচা মরিচের কেজি দুইশত টাকা,  এক লিটার তেলের  দাম ৫০৫ টাকা হলে কিভাবে সংসার চালায় বলেন ??? প্রতি মাসে হিসেবে মিলে না, শুধু মাত্র ফেব্রুয়ারি মাস দুই দিন কম থাকে বলে বছরে  ঐ মাসের দুইদিন ভালো থাকা যায়॥ বোন বলেন, জিনিসপত্রের দাম দিন দিন বাড়লেও মানুষের দাম ততোই
কমছে ॥

আলু পটলের দাম আছে কিন্তু মানুষের জীবনের কোনো দাম নেই॥ আজ দেশের কোনো মানুষেরই জীবনের নিশ্চিয়তা নেই যে, সে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসতে পারবে ??? বোন বললেন, দেশের   বাতাস পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে গেছে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় আমার ॥ ঘরের ভেতরে আতঙ্কিত অবস্থায় বন্দী জীবন যাপন করছি সন্তানদের নিয়ে ॥ বাহিরে যাওয়ার সাহস করতে পারি না ইজ্জতহানি হওয়ার ভয়ে॥ মেয়ের জন্য স্কুলের সামনে অপেক্ষার সময়  পরকীয়া প্রেমের প্রস্তাব দেয়!!?? রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময়ে কাপড়ে ধরে টান মারে?!! বাসে যাতায়াত করার সময় শরীরে ধাক্কা মারে, পাছায় হাত মারে, চিমটি মারে, বুকে হাত মারে, একই অবস্থা হয় নিউ মার্কেটে শপিং করতে গেলেও কাপড়ে টান মারা তো এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে
গেছে ? !!

এই যদি হয় আমাদের সমাজের অবস্থা তাইলে চলাফেরা করি কিভাবে বলেন ??!!! তারপর আছে ছোট্ট বাচ্চাদের কে ধর্ষণের মতো ঘটনা॥ নিজের ছোটো মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কের থাকি সব সময় ॥
বিভিন্ন জায়গায় সদ্য ভুমিষ্ট বাচ্চা ময়লা আবর্জনায় ব্যাগের মধ্যে জীবিত মৃত পাওয়ায় ??॥ আবার মায়ের পেটের ভিতরেও শিশু নিরাপদ নয়?!! এ কোন সমাজের চিত্র আমরা দেখছি ॥
'বিবিসির সূত্রে চলিত বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই: ২৮০ শিশু ধর্ষণের শিকার'॥ আড়াইশোর বেশি মানবাধিকার সংগঠনের জোট শিশু অধিকার ফোরামে বলছে, গত ৭ মাসে বাংলাদেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৮০ টি।
গতবছর এই সংখ্যা ছিল ১৯৯টি। আর ২০১৩ সালে ১৭০টি এবং ২০১২ সালে ছিল ৮৬টি। এই সংখ্যা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এর বাইরেও থাকতে পারে।

এখন প্রশ্ন হলো আমরা কি আদিম যুগের মানুষের চেয়ে 
বেশি সভ্য না অসভ্য ?॥ আমরা আজ নিজেদের কে আধুনিক সভ্যতা প্রগতির জীব বলে দাবী করি॥ কিন্তু আমাদেরকে এই আধুনিকতা কতটা সভ্য করতে পেরেছে? আমরা কি নারীর প্রতি লুলুপ দৃষ্টিতে তাকায় না? এখন তো আর তাকানোর সীমাবদ্ধ নয় বরং ধর্ষণ না করতে পারলে যেন  নিজের বিকৃত চিন্তার কুপ্রভৃতিকে  বাস্তবায়ন করা হচ্ছে !!? একবারও কি বিবেককে প্রশ্ন করেছি এরা কি আমার মা বোন বা স্ত্রী_ কন্যার মতো নয়? ॥

অর্থ আর সম্পত্তির লোভে ভাই বোন পিতা মাতা পুত্র কন্যা স্বামী স্ত্রীসহ মানুষকে মানুষ হত্যা করছে ! বন্ধু_ ভাই বা প্রতিবেশীর স্ত্রী কন্যা কে আমাদের বিকৃত যৌন লালসার বস্তু বানাচ্ছি॥ আর এই ঘৃণ্য লালসা থেকে ছোট্ট কাজের মেয়ে বা প্রতিবেশীর শিশু বাচ্চাটিও রেহাই পাচ্ছে না?!!

মিথ্যা প্রতারণা শঠতা ও ঘুষ আমাদেরকে ঘিরে ধরেছে ॥ একবারও কি আমরা চিন্তা করেছি এসব আমার নিজের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে ॥ যে ক্ষতি আমি অন্যদের করছি॥ সে একই ক্ষতি আমার নিজের বেলায়ও ঘটতে পারে? একেই কি বলে আমরা সামাজিক সভ্য জীব ? এ কোন আধুনিক সভ্যতায় আমরা এসে পড়েছি ॥ সভ্যতা কি আমাদের বিবেককে পশু বানিয়ে  দিচ্ছে নয়ই কি ?? যাকে বলে মানসিক  বিকারগ্রস্ত এক মানুষের অদ্ভুত মানুষের সমাজ ॥

আজ আমরা আমাদের বিবেককে মানবিক মূল্যবোধের স্তর থেকে হিংস্র পশুর স্তরে নিয়ে এসেছি ॥ আমরা কি আদো মানুষ আছি??? দানব (পশুর ) আর মানুষের  মধ্যে আমি আজ আর কোনো পার্থক্য খুঁজে পাই না ?? আমরা নিজেরাই নিজেদের মানবীয় বিবেক কে গলা টিপে হত্যা করেছি অনেক আগেই আর গ্রহণ করেছি দানবত্ব আর পশুত্ব কে ??? কিন্তু কেন এমনটি তো হওয়ার কথা ছিলো না ?? যদি কবি নজরুলের ভাষায় বলি, যৌবনের মাতৃরূপ দেখিয়াছি—শব বহন করিয়া যখন সে যায় শ্মশানঘাটে, গোরস্থানে, অনাহারে থাকিয়া যখন সে অন্ন পরিবেশন করে দুর্ভিক্ষ বন্যা-পীড়িতদের মুখে, বন্ধুহীন রোগীর শয্যাপার্শ্বে যখন সে রাত্রির পর রাত্রি জাগিয়া পরিচর্যা করে, যখন সে পথে পথে গান গাহিয়া ভিখারী সাজিয়া দুর্দশাগ্রস্তদের জন্য ভিক্ষা করে, যখন দুর্বলের পাশে বল হইয়া দাঁড়ায়, হতাশের বুকে আশা জাগায়। এই কাজ যারা করে তারাই প্রকৃত মানুষ ॥ আল্লাহ তাদেরকেই জমিনের প্রতিনিধি এবং সৃষ্টির সেবা জীব বলেছেন আর যারা এর বিপরীত করে এদেরকে চতুষ্পদ জন্তু বা তার চেয়েও নিকৃষ্ট বলেছেন ॥

নিচে ভুপেন হাজারিকার গানটা তুলে ধরা হলো ॥ আর একটু নিজের বিবেককে প্রশ্ন করেন আমাদের দেশে রাজনীতির নামে ধর্মের নামে নিজেদের লোভের নামে কুপ্রভৃতির লালসার নামে 
যেসব কুকর্ম করছি এসব কে আর যাই হোক মানুষের কাজ বলা যায় না ॥॥ এই জন্যই সূফিবাদ জিন্দাবাদ বলি ॥
ভুপেন হাজারিকার গানটা তুলে ধরা
হলো ॥

মানুষ মানুষের জন্য
জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না
ও বন্ধু….
মানুষ মানুষকে পণ্য করে
মানুষ মানুষকে জীবিকা করে
পুরনো ইতিহাস ফিরে এলে লজ্জা কি তুমি পাবে না?
ও বন্ধু………..
বল কি তোমার ক্ষতি
জীবনের অথৈ নদী
পার হয় তোমাকে ধরে দূর্বল মানুষ যদি
মানুষ যদি সে না হয় মানুষ
দানব কখনো হয় না মানুষ
যদি দানব কখনো বা হয় মানুষ লজ্জা কি তুমি পাবে না?
ও বন্ধু……….
শিল্পী, সুরকার , গীতিকারঃ ভুপেন হাজারিকা ॥ 

ইসলাম ধর্মের বলা আছে কোন মানুষ আল্লাহর হক নষ্ট করলে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন॥ কিন্তু মানুষ যখন আল্লাহর কোনো বান্দার হক নষ্ট করে তখন আল্লাহ ক্ষমা করেন না ॥ যতক্ষণ না ঐ ক্ষতিগ্রস্থ বান্দা ক্ষমা করেন ॥
তাই নিজের বিবককে জাগ্রত করতে হবে॥ একমাত্র ধর্মীয় মূল্যবোধকে লালন পালন আর সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের বিবেককে চির জাগ্রত করতে পারি ॥ আর সামাজিক পারিবারিক জীবনকে সুন্দর করতে পারি॥ আসুন আমরা আমাদের বিবেককে পশুত্বে না নামিয়ে, বিবেককে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করি॥ এই জন্যেই আমি ফকির লালন শাহের বাণী মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি কে জীবনের মূল মন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করি  ॥ বিশ্বাস করেন মানুষের ভজনার মাধ্যমেই চিত্তের প্রশান্তি পাওয়া যায় ॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে 
সূফি বরষণ