সরকারের নতুন ষড়যন্ত্র
হিযবুত তাহরীর দিয়ে দেশে আইএস দায়েশ সৃষ্টি করতে তৎপর, উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে উগ্র ইসলামী জঙ্গী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে পরিচয় করানো ॥
সূফি বরষণ
হিযবুত তাহরীর (আরবি: حِزْبُ التَحْرِير) বাংলায় অর্থ মুক্তির দল॥ একটি ইসলামী মতাদর্শ ভিত্তিক রাজনৈতিক দল যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে ॥ বাংলাদেশে ২০০১ সাল হতে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ দলটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশের স্বরাষ্ষ্ট্র মন্ত্রনালয় কর্তৃক "জননিরাপত্তার স্বার্থে" -এ কারণ দেখিয়ে এ দলটিকে নিষিদ্ধ করে ॥ দলটি পৃথিবীর অন্য অনেক দেশেও নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে।
হিযবুত তাহরীর দলটি নানা কারণে সমালোচিত হয়েছে।
এর বর্তমান প্রধান নেতা আতা আবু রাশতা আর প্রতিষ্ঠাতা হলেন তাকিউদ্দিন আন-নাবহানী॥ ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত দলটির �সদর দপ্তর অজানা বললেও লন্ডনে হচ্ছে এই উগ্র চরমপন্থী সংগঠনের প্রধান দপ্তর ॥ অভিযোগ আছে বৃটেন আমেরিকার যৌথ অর্থায়নে এবং এজেন্ডা অনুযায়ী পরিচালিত হয় এই দল ॥
এদের সক্রিয় সদস্য সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ ॥ মতাদর্শ হলো ইসলামী রাজনীতির আন্তর্জাতিক অধিভুক্তি মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী �খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা॥
এদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে হলো সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে এদের সদস্য ও অনুগত
অনুসরণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা আর এতে করেই দেশের সামরিক বাহিনী তাদেরকে ক্ষমতা বসাতে সহায়তা করবে বলে বিশ্বাস করে ॥ তাই এদের বিরুদ্ধে সেনা বা�হিনীতে ক্যু ঘটানোর চক্রান্ত ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে ॥
ওয়েবসাইট www.hizb-ut-tahrir.org
এরা সন্ত্রাসের বিরোধিতা আপাতত করলেও সেই বিরোধিতাটুকুকে সাময়িক কৌশল বলে অভিহিত করা হয়েছে। কিন্তু প্রকারান্তে এরাই সন্ত্রাসবাদকে উসকে দিচ্ছে দেশে দেশে ॥ শান্তির পবিত্র ধর্ম ইসলামকে একটি উগ্র মৌলবাদী সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে বিশ্বে পরিচয় করিয়ে দিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে ॥ আরো অভিযোগ রয়েছে, এই দলটি সন্ত্রাসকে লালন করা ও উৎসাহিত করার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করছে। হিযবুত সাম্প্রদায়িক ঘৃণার বিষয়ে প্রচারণা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া এটি সন্ত্রাসবাদী আত্মঘাতী বোমাবাজদের শহীদ বলে আখ্যায়িত করে এবং "নতুন ক্রুসেডারদের ধ্বংস করতে হবে" বলে এমন প্রচারণা চালিয়ে থাকে। এসবের মাধ্যমে হিযবুত তাহরীর মুসলিম তরুণদের সন্ত্রাসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে গুরুতর প্রমাণিত অভিযোগ রয়েছে॥
গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার টানিয়েই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর অনলাইনে সম্মেলন করলো। সংগঠনটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নাকের ডগায় সম্মেলন করলো। তবে এ বিষয়ে গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কৌশলগত কারণে আমরা হিযবুত তাহরীরের অনলাইন সম্মেলনে হানা দেইনি। আমরা পুরো সম্মেলনটি পর্যবেক্ষণ করে জড়িতদের চিহ্নিত করেছি।’
একটি নিষিদ্ধ সংগঠন সমাবেশ করে আর সরকার বলে পর্যবেক্ষণ করছে এটা কতটা বিশ্বাস যোগ্য ???
নাকি সরকারই এদের কে অর্থায়ন করছে দেশে জঙ্গীবাদকে উসকে দিয়ে ক্ষমতাকে আরও দীর্ঘায়িত করতে॥
৪/৫ মাস আগে থেকে সংগঠনটি রাজধানীসহ সারাদেশে পোস্টার টানায়। পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও পোস্টার সাঁটানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কাছে লিফলেট বিতরণ করে। তারা বাংলাদেশে খিলাফত আসন্ন বলে প্রচার করে। গত শুক্রবার অনলাইনে সম্মেলন করার উদ্যোগ নেয়। ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও প্রকাশ্যে অনলাইন সম্মেলনের প্রচারণা চালায়।
বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, হিযবুত তাহরীরের অনলাইন সম্মেলন বন্ধে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে বিটিআরসি’র কাছে চিঠি দেয়। প্রযুক্তিগত প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ টিমকে ডিবি ও র্যাবকে সহায়তা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের পদক্ষেপের পরও অনলাইন সম্মেলন করে সংগঠনটি। দুই ঘণ্টা ধরে চলে সম্মেলন। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আনুমানিক ১০ হাজার ঠিকানার মধ্যে অনলাইন সম্মেলন হয়। গোয়েন্দা সংস্থা ধারণা করছে, ১০ হাজার ঠিকানার মধ্যে অর্ধেক ঠিকানা ভুয়া নামে খোলা হয়েছে। এরপরও ৫ হাজার ব্যক্তির মধ্যে দুই ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সম্মেলন হয়।
র্যাব ও ডিবি সূত্রে জানা গেছে, শিবলী আহমেদ নামে এক ব্যক্তি এই অনলাইন সম্মেলনে স্পিকারের ভূমিকা পালন করেন। পুরো বিষয়টিতে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন ব্যারিস্টার করিম জাহিদ, জাহিদুর রহমান, সৈয়দ মোহাম্মদ গালিব, সৈয়দ মুস্তাফিজ, ফাতেমা বিনতে সোলায়মান, আমীর হামজা, আতাউল্লাহ রাফি, সামির খান, ফামিদুর রহমান, কাজী মেহেদী ও ওয়ায়িজ মাহবুব। এদের বিস্তারিত পরিচয় এখন ডিবি ও র্যাবের হাতে।
হিযবুত তাহরীর নেতা সাকিব মাহমুদ জানান, আমাদের কেন্দ্রীয় আমির আতা আবু আল-রাশতার নির্দেশেই সকল কাজ করি। আতা আবু আল-রাশতা ফিলিস্তিনের নাগরিক এবং বর্তমানে তিনি জর্ডান থেকে হিজবুত তাহরির চালাচ্ছেন বলে জানান এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কর্মীরা প্রকাশ্যে থানার ওসি এবং সাধারণ মানুষের মাঝে সমাবেশের প্রচার পত্র বিলি করেছে কেউ কিছুই বলেনি ॥ দিনের বেলায় পোস্টার সাঁটিয়েছে কিছুই হয়নি ॥ এতে কি বুঝা যায় একটি নিষিদ্ধ সংগঠন প্রকাশ্যে কার্যকলাপ চালাচ্ছে সরকার কিছুই করছে না অপরদিকে বলছে সম্মেলন পর্যবেক্ষণ করেছে ?? এরপরও কি বলার দরকার আছে যে নাটেরগুরু সরকার নয়॥ যেখানে বিশ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের জন্য অঘোষিত রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ এবং দেখা মাত্র গুলি করে॥
এরপরও দেখবেন আজ রোববার
তিন দিন পূর্ণ হলেও একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি ?? তাইলে পর্যবেক্ষণ কিসের জন্য?? এর মানে কি এই দাঁড়ায় না যে, সরকারই নতুন করে চক্রান্ত করছে হিযবুত তাহরীরকে দিয়ে দেশে আইএস এর হিংস্র দায়েশ সৃষ্টি করতে তৎপর, সরকারের উদ্দেশ্যে একটাই বাংলাদেশকে উগ্র ইসলামী জঙ্গী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে পরিচয় করিয়ে অবৈধ ক্ষমতাকে আরও দীর্ঘায়িত করা ॥ আর সরকারও ক্ষমতার লোভে পশ্চিমাদের এজন্ডা বাস্তবায়ন করতে উঠেপড়ে লেগেছে ॥ এদের সবার লক্ষ্য একটাই বাংলাদেশকে উগ্র জঙ্গী ইসলামী মৌলবাদী রাষ্ট্র বানানো ॥ এর আগেও আওয়ামী লীগ দেশে চারদলীয় সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে যুবলীগের নেতা মির্জা আযমের ভগ্নিপতি শায়খ আব্দুর রহমানকে দিয়ে জঙ্গী তৎপরতার বিস্তার ঘটায় ॥ মুফতি হান্নান বাংলা ভাইসহ অন্যান্য জঙ্গী গ্রুপের বিস্তার আওয়ামী লীগই করে ॥ এটা আজ পরিষ্কার যে, সরকারই হিযবুত তাহরীরকে
দিয়ে আবার নতুন ফাঁদ পেতেছে॥
দুই দিন পর হয়তো শুনবেন হিযবুত তাহরীরের তালিকা ভুক্ত কোনো নেতাকে না ধরে বরং ছাত্রদল বা ছাত্রশিবিরের কোনো কর্মীকে ধরে হিযবুত তাহরীর বানিয়ে এই সম্মেলনের ঘটনা চাপা দিবে !!?? আর গোপনে সরকার সহায়তা করে যাবে বাংলাদেশের নব্য দায়েশ হিযবুত তাহরীরকে॥ আর দেশের ইসলাম পন্থীরা বুদ্ধিভিত্তিক দীনতায় দিন দিন কোনঠাসা হতে থাকবে ॥ আর মনে হয়না কোনো দিন অপবাদ মুক্ত হয়ে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে ??! কারণ ইসলাম পন্থীদেরই একটি অংশ হেফাজতের মতো ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের খেলার পুতুল হবে ॥ হিযবুত তাহরীর সম্পর্কে কিছু নিউজের লিংক
http://ajkerpatrika.com/last-page/2015/09/05/49547
http://m.bdnews24.com/bn/detail/bangladesh/892571
http://m.prothom-alo.com/international/article/454219
http://www.bm.thereport24.com/article/122438/index.html
http://www.bbc.com/bengali/news/2012/01/120120_mk_tahrir.shtml
http://m.banglatribune.com/tribune/single/92536
http://www.timenewsbd.com/news/detail/60391
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ
No comments:
Post a Comment