Thursday 17 September 2015

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সুন্দরবন ধ্বংস করার সরকারের বড় একটি চক্রান্ত ॥

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সুন্দরবন ধ্বংস করার সরকারের  বড় একটি  চক্রান্ত ॥

সূফি বরষণ
 এই লেখা শুরু করছি লাতিন আমেরিকার আদিবাসীদের কথা দিয়ে,, লাতিন আমেরিকার আদিবাসীদের মধ্যে বহুল প্রচলিত একটি মন্ত্র চালু আছে , ‘মুনাফার লোভে আমরা একে একে আমাদের পানি, আমাদের 
বন, আমাদের ভূমি, আমাদের বাতাস  বিষাক্ত করার পর দেখব, টাকা ছাড়া আমাদের কাছে আর কিছুই নেই। কেবল তখনই আমরা বুঝব, টাকা খেয়ে আমরা বাঁচতে পারব না।’বাঁচতে গেলে আমাদের বিশুদ্ধ পানি লাগবে, খাদ্য লাগবে, শ্বাস নেওয়ার জন্য বিশুদ্ধ বাতাস লাগবে, আমাদের অস্তিত্বের জন্য বন লাগবে, জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থান লাগবে। অসংখ্য 
প্রাণবিনাশী কাজ করে মানুষ প্রাণী বাঁচতে পারবে না। 
বাংলাদেশের সুন্দরবন সংলগ্ন রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সুন্দরবনসহ ওই এলাকার প্রাকৃতিক জীব  বৈচিত্র্য বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছে সাউথ এশিয়ান’স ফর হিউম্যান রাইটস (এসএএইচআর) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা।

গতকাল বৃহস্পতিবার  জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়।

বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায় প্রস্তাবিত কয়লা ভিত্তিক  বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকার মানবাধিকার ও পরিবেশগত প্রভাব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় বলে জানায় সংস্থাটির বাংলাদেশ-এর ব্যুরো সদস্য খুশী কবির ॥
একই অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আন্তর্জাতিক  জাতীয় সকল আইন ভঙ্গ করে সরকার রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে। 

বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প পথ আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই। তাই যে কোনো মূল্যে  সুন্দরবনকে  রক্ষা করতে হবে।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে অনেক প্রশ্নের এখনও কোনো সমাধান হয়নি ?? যেমন : , যে দূরত্বের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তৈরি করা হচ্ছে, সেটি আসলে নিষিদ্ধ দূরত্বের মধ্যেই। সুন্দরবনের কাছাকাছি এরকম একটি প্রকল্প বনটির জন্য বড় হুমকি।
কয়লা কোথা থেকে আসবে, কিভাবে পরিবহন করা হবে, কয়লার যেসব আবর্জনা নদীতে জমবে, সেগুলো কিভাবে পরিষ্কার হবে, এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো স্পষ্ট নয়। এসব কারণে সুন্দরবনের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেই আশংকা হচ্ছে। সেখানকার মানুষের স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়েও পরিবেশবিদদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে।

এর মধ্যেই সেখানকার জলজ প্রাণীর উপর এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা যায়। কারণ সেখানের শুশুক বা ডলফিনগুলো সেই এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ ॥

বিভিন্ন মহলের এত আপত্তির পরও কেন সরকার বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না, তা নিয়েও  অনেক রহস্য রয়েছে । দক্ষিণের প্রাকৃতিক দেয়াল সুন্দরবনকে  ধ্বংস করার কাজে সরকার কেন নেমেছে তা পরিষ্কার নয়॥ যদি সুন্দরবন না থাকে তবে বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় শ্মশানে পরিণত হবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না॥ যখন দেখি বিদ্যুত্ কেন্দ্রের জন্য ভারত অর্থায়ন করছে তখন  সন্দেহ আরও গভীর হয়॥ কারণ ভারত শর্ত দিয়ে ঋণ দিয়েছে যে বিদ্যুত্ কেন্দ্র সুন্দরবনেই স্থাপন করতে হবে??
তাইলে কি আমরা ধরেই নিতে পারি যে ভারতীয় অংশের সুন্দরবনকে সুরক্ষা করে বাংলাদেশের সুন্দরবনকে ধ্বংস করার এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ এটি ॥
দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি রূপকথার গল্পের প্রচলন আছে, একবার দেশের সরকার  সিদ্ধান্ত নিলো যে, আমাদের হাতীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে॥ বয়স্ক বৃদ্ধ হাতীদের কে মেরে শুধু নতুন হাতীদের রাখবো॥ যে কথা সে কাজ ॥ বয়স্ক সব হাতীদের হত্যা করা হলো॥
কিছু কাল পর হঠাৎ করে ঘূর্ণি ঝড় হলো এতে সব হাতী মারা পড়লো॥ এবং জনগণেরও জান মালের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়॥ জ্ঞানী লোকেরা এর কারণ 
অনুসন্ধান শুরু করলো॥ 
কারণ হিসেবে জ্ঞানীরা চিহ্নিত করলো॥ নতুন হাতীগুলো বৃদ্ধ বয়স্ক হাতীদের কাছ থেকে ঘূর্ণিঝড়ের সংক্রান্ত জ্ঞান 
ও কিভাবে সংকেত পাঠাতে হয় তা শিক্ষা লাভ করার সমস্ত পায়নি , এর আগে বয়স্ক হাতীদের হত্যা করা হয়॥ প্রকৃতির উপরে যদি আমি আপনি অত্যাচার জুলুম করি তবে আমাদেরকে 
সুনামী সিডর ভোগ করতে হবেই ॥ এই ঘটনা আমাদেরকে তাই বলে॥ তাহলে উপায় কি ?? বাচঁতে চাইলে এখনই পানি বায়ু দূষণ বন্ধ করি॥
পাশাপাশি জীববৈচিত্র বন এবং প্রাকৃতিক বিশাল নেয়ামত সুন্দরবন রক্ষায় আসুন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি ॥
কারণ আমরা বিদ্যুত্হীন সুস্থ ভাবে বাঁচতে চাই আর সুন্দরবন ধ্বংস করে বিদ্যুত্ নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় বাঁচতে চাই না॥ এখন একটাই শ্লোগান সুন্দরবন বাঁচলে আমরা বাঁচবো বাংলাদেশ
বাঁচবে ॥

মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ





No comments:

Post a Comment