Thursday 26 November 2015

একজন কিংবদন্তির অভিনেতা আমির খান এবং সন্ত্রাসী জঙ্গী সংগঠন শিবসেনাকে নিয়ে কিছু পর্যালোচনা ॥



একজন কিংবদন্তির অভিনেতা আমির খান এবং সন্ত্রাসী জঙ্গী সংগঠন শিবসেনাকে নিয়ে কিছু পর্যালোচনা ॥
সূফি বরষণ
আমির খানের পুরো নাম মোহাম্মদ আমির হোসেন খান ॥ জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৬৫ সালের ১৪ মার্চ ॥ তিনি একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক, চিত্রনাট্য লেখক এবং টেলিভিশন উপস্থাপক। হিন্দি চলচ্চিত্রে সফল কর্মজীবনের মাধ্যমে, খান ভারতীয় চলচ্চিত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী অভিনেতা এক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার এবং মনোনয়নঅর্জন করেছেন, এবং ভারত সরকার কর্তৃক ২০০৩ সালে পদ্মশ্রী এবং ২০১০ সালেপদ্মভূষণ পদকে সম্মানিত করা হয়। এছাড়া তিনি মাঝে মাঝে গান গেয়ে থাকেন। তিনি নিজস্ব উদ্যোগে চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থাআমির খান প্রোডাকশন্‌স প্রতিষ্ঠা করেছেন।
চাচা নাসির হুসেনের ‘ইয়াদোঁ কি বারাত’ (১৯৭৩) ছবিতে একজন শিশুশিল্পী হিসাবে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু হয়। তবে পেশাগতভাবে তাঁর অভিনয় জীবনের সূচনা হোলি (১৯৮৪) ছবির মাধ্যমে। প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সফল ছবি চাচাতো ভাই মনসুর খানের কেয়ামত সে কেয়ামত তক। এই ছবির জন্য তিনি ‘শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা’ হিসেবে ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার পান। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মোট সাতবার মনোনয়ন পেলেও তিনি ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার জেতেননি। অবশেষে ১৯৯৬ সালে “রাজা হিন্দুস্তানি” ছবির জন্য তিনি ফিল্ম ফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পান।
ভারত সরকারের তাকে শিল্পকলার প্রতি তার অবদানসমূহের জন্য ২০০৩ সালে পদ্মশ্রী পদক এবং ২০১০ সালে পদ্মভূষণ পদকে ভূষিত করেন। ২০১৩ সালের এপ্রিলে, টাইম ম্যাগাজিনের তালিকার তিনি বিশ্বের ১০০ সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন।
আমির খান ভারতের মুম্বাইয়ে বান্দ্রা হলি ফ্যামিলী হাসপাতালে একটি মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। যিনি সক্রিয়ভাবে কয়েক দশক ধরে ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের সাথে জড়িত। তাঁর পিতা তাহির হুসেন একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক ছিলেন যখন তার চাচা নাসির হোসেন একটি চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে একটি পরিচালননা এবং অভিনয়ও করেছিলেন। আমির খান এর মায়ের নাম হল জিনাত হোসেন। তার ভাই বোনেরা হলেন “ফয়সাল খান”, “ফরহাত খান” এবং “নিখাত খান”। ইমরান খান হলেন আমির খানের ভাগ্নে।
তাঁর পরিবার ভারতীয় চলচ্চিত্রের সাথে কয়েক দশক ধরে জড়িত। তাঁর বাবা তাহির হুসেন ছিলেন একজন চলচ্চিত্র পরিচালক এবং তাঁর চাচা নাসির হুসেন ছিলেন একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা। আমির খানের পূর্বপুরুষরা ছিলেন আফগানিস্তানের অধিবাসী। আমির খান ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও স্বাধীনতা আন্দোলনর নেতা মাওলানা আবুল কালাম আজাদের বংশধর।
অভিনয় সাফল্যের ইতিহাস
আমিন খান মাত্র আট বছর বয়েসে ইয়াদুন কি বারাত(১৯৭৩) এবং মাদহোশ (১৯৭৪) শিশু অভিনেতা হিসাবে কাজ শুরু করেন। ১১ বছর পর প্রাপ্তবয়স্ক অভিনেতা হিসাবে কেতন মেহতারহোলি (১৯৮৪) ছবিতে কাজ করেন, যদিও ছবিটি তেমন সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়নি। প্রথম উল্লেখযোগ্য ছবি হিসেবে ১৯৮৮ সালে কেয়ামত সে কেয়ামত তক মুক্তি পায়, যেটি মনসুর খান নির্দেশনা করেন | ছবিটি বিরাট সাফল্য পায় এবং মুখ্য ভূমিকায় আমির খান জনপ্রিয় হয়ে যান। আমিরের চকোলেট হিরো লুক এর জন্য তিনি “টিন আইডল” হিসাবে পরিচিতি পান।রাখ ছবির জন্য আমির জাতীয় পুরস্কার পান, স্পেশাল জুরি শ্রেণীতে| ৮০ দশকের শেষে এবং ৯০ দশকের শুরুতে আমির বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন,যেমন দিল (১৯৯০),দিল কে মানতা নেহি (১৯৯১), জো জিতা ওহি সিকান্দার (১৯৯২), হাম হ্যাঁ রাহি পেয়ার ম্যাঁয়(১৯৯৩) (যার চিত্রনাট্যও তিনি লেখেন), এবংরঙ্গিলা (১৯৯৫)| সব কটি ছবি সমালোচক কর্তৃক ও বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য পায় | আমির বছরে ১টি কি ২টি ছবিতে অভিনয় করতে শুরু করলেন। ১৯৯৬ সালে দারমেশ দর্শন-এর রাজা হিন্দুস্তানি ছবিতে করীশমা কপূর-এর বিপরীতে অভিনয় করেন | রাজা হিন্দুস্তানি এর জন্য আমির প্রথম টাইম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পান, সাতবার মনোনীত হওয়ার পর| রাজা হিন্দুস্তানি ৯০-এর দশকের বড় হিট ছবিগুলোর মধ্যে একটি ছিল| ১৯৯৭ এ অজয় দেবগন, জুহি চাওলা ও কাজলের সাথে ইশক নামের একটি কমেডি ছবিতে অভিনয় করেন ,যেটি বেশ ভালো সাফল্য পায়| বেশ কিছু ছবি, যেমন:সারফারোশ, ১৯৪৭ আর্থ এ দারুণ অভিনয় করার জন্য তিনি সমালোচক কর্তৃক প্রশংসিত হন| ২০০১ এ ‘লগান’ ছবিতে ‘ভুবন’ এর চরিত্রে অভিনয় করে অসাধারন একটি গল্প আমাদেরকে উপহার দেন, যে ছবিটি ভারতীয় ক্রিকেট দলকে অনুপ্রাণিত করে ২০০১ এর ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ ও ২০০৩-এর ক্রিকেট বিশ্বকাপে। ‘লগান’ বাণিজ্যিক সাফল্য পায় এবং সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র হিসেবে ৭৪তম একাডেমী অ্যাওয়ার্ডে মনোনিত হয়।দিল চাহ্‌তা হ্যাঁয় (২০০১) ছবিতে একজন আধুনিক যুবকের ভূমিকায় অভিনয় করে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন। চার বছর কোনো ছবিতে কাজ না করার পর ২০০৫ এ কেতন মেহতার মঙ্গল পাণ্ডে: দ্য রাইজিং ছবিতে ছবির নামভূমিকায় অভিনয় করেন। ২০০৬ সালে রঙ দে বাসন্তী ছবির জন্য আমির সেরা অভিনেতা’ (সমালোচকদের পছন্দ) ফিল্মফেয়ার এর পুরস্কার পান। ছবিটি ২০০৬ এর শ্রেষ্ঠ বানিজ্যিক সাফল্য পায় এবং বৈদেশিক ছবির শ্রেণীতেতে অস্কারের জন্য মননীত হয়। ২০০৭ এ আমির ছবির প্রযোজক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং একটি ডিজলেক্সিয়ায় আক্রান্ত বাচ্চার গল্প আমাদের সামনে তুলে ধরেন, ছবির নাম তারে জমিন পার। ২০০৮ এ নিজেকে পুরোপুরি বদল করে আমির গজনী নামের দক্ষিণী পুনঃনির্মিত ছবিতে অভিনয় করেন, যেটি বিরাট সাফল্য পায়। ২০০৯ এ আমির থ্রি ইডিয়টস ছবিতে ‘র‍্যাঞ্চো’ চরিত্রে অভিনয় করেন,যেটি এখন পর্যন্ত বলিউড এর ইতিহাসে সর্বাধিক জনপ্রিয় ছবি | আমিরের পরের ছবিতালাশ ৩০ নভেম্বর, ২০১২-তে মুক্তি পেয়েছে। ২০১৪ তে মুক্তি পায় আমির অভিনীত পিকে মুভিটি। এ পর্যন্ত বলিউডের সবচেয়ে বেশি আয় করা ছবির তালিকায় রয়েছে আমিরের পিকে। প্রথম ছবি হিসেবে শুধু ভারতেই ৩০০ কোটি রুপি আয়ের মাইলফলক স্পর্শ করা ‘পিকে’ এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ কোটি রুপি আয় করে তার এই সিনেমাটি বলিউডের সবচেয়ে বেশি আয় করা সিনেমার শীর্ষে অবস্থান করছে। আমির সামাজিক সমস্যা গুলো নিয়ে সত্যমেব জয়তে নামে একটি নতুন টক-শো পরিবেশনা করছেন, যেটি মানুষকে নতুন ভাবে চিন্তাভাবনা করতে বাধ্য করছে সামাজিক বিষয়গুলোকে নিয়ে এবং তার প্রতিকার নিয়ে। এই শোটিও ভারত ও এর বাইরে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে॥
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Aamir_Khan
এবার সন্ত্রাসী সংগঠন শিবসেনাকে নিয়ে কিছু বলি॥
শিবসেনার ওয়েবসাইট http://www. shivsena.org
শিব সেনা হল মহারাষ্ট্র কেন্দ্রিক উগ্র সন্ত্রাসী জঙ্গী হিন্দু জাতিয়তাবাদী রাজনীতিক দল। ১৯ শে জুন ১৯৬৬ সালে বাল ঠাকরে এই দলের পত্ত্ন করেন। তিনি হিন্দু জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসি ছিলেন ও হয়ে উঠেছিলেন মারাঠিদের হূদয়ের সম্রাট। তার মূল রাজনৈতিক কর্মকান্ড মূলত পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট রাজ্যের মারাঠি ভাষীদের মধ্যে ছিল। দলটির সদ্যস্যরা শিবের সৈনিক হিসাবে পরিচিত। এই দলকে ভারতের ফ্যাসিবাদী দল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। অনেকে এই দলকে সত্রাসবাদী দল হিসাবে চিহ্নিত করেন এবং এটি সরাসরিভাবে ১৯৭০ সালের ভিওয়াদি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সাথে জড়িত।
শিবসেনা ১৯৭০ সালের ভিওয়াদি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে অসংখ্য মুসলমানদের হত্যা করে॥
২০১২ সালের ১৭ নভেম্বর ভারতের কুখ্যাত হিন্দু সন্ত্রাসী, জঙ্গী উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালঠাকরে মারা যায়। তার মৃত্যুতে শিবসেনার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মহারাষ্ট্রের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা তার শেষকৃত্যে যোগ দেয়। মুম্বাইয়ের সিনেমা অভিনেতাদেরকেও দেখা যায় সেখানে। এদেশে ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীদের ফাঁসি হয়, আর ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভারতের সর্বাপেক্ষা রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা ‘মুম্বাই দাঙ্গা’র ইন্ধনদাতা বালঠাকরে পায় রাষ্ট্রীয় সম্মান!
সেখানে শাহীন ধানধা নামক মহিলা ভারতের এই সাম্প্রদায়িকতাসর্বস্ব হিন্দু সমাজের দিকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে লিখেছিল, “বালঠাকরের মতো মানুষ প্রতিদিন জন্মায় এবং মারা যায়। তার জন্য সব বন্ধ করে দিতে হবে কেন”, ফেসবুকে মন্তব্য করে সে। তার এই ফেসবুক মন্তব্যে ‘লাইক’ দিয়েছিল ২০ বছর বয়সী রেণু শ্রীনিবাসন নামের আরেক তরুণী। এরপরই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। (সূত্র: বিবিসি)
১৯৭০ ভিওয়াদি দাঙ্গা হল মুসলিম বিরোধী সহিংসতার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত যা ৭ এবং ৮ ই মে ভারতের ভিওয়াদি, জালগাঁও, মাহাদেস্ংগঠিত হয়। বিশাল পরিমাণ অগ্নিসংযোগ ও মুসলিম মালিকানাধীন সম্পত্তি ভাংচুর করা হয় এবং ২ দুই হাজার ৫ শতের অধিক মানুষের মৃত্যু ঘটে। এই দাঙ্গা শিব সেনা দ্বারা পূর্ব পরিকল্পিত নিয়মে সংগঠিত হয়।
স্বাধীনতার পর ভারতের ইতিহাসে এই ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সবচেয়ে খারাপ দৃষ্টান্ত হিসাবে বিবেচিত যেখানে একাধিক উগ্র হিন্দু জাতিয়তাবাদি সংঘঠন যথা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ, জন স্ংঘ ও শিব সেনা জড়িত ছিল।
হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল হিসেবে আরএসএস, জন সংঘ ও শিব সেনা এবং মুসলিম দলের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ, ভারতীয় ইউনিয়ন মুসলিম লীগ ও মজলিস তামির-ই-মিল্লাত এর মধ্যে চাপা উত্তেজনা দীর্ঘায়িত সময়ের পর্যন্ত বিদ্যমান
ছিল।
‘ভারত ছেড়ে চলে যাবেন কিনা’ – ভাবছেন আমির খান
ধর্মীয় অসহিষ্ণুতায় শঙ্কা প্রকাশ করে মন্তব্যের জন্য বিজেপির তোপের মুখে পড়েছেন আমির
ভারতে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতার অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক চলছে, তাতে নিজের পারিবারিক ও ব্যক্তিগত উদ্বেগ ব্যক্ত করার পর সরকারের তোপের মুখে পড়েছেন বলিউড অভিনেতা আমির খান।
তিনি বলেছিলেন, দেশের অবস্থা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ভারত ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত কি না, তা নিয়েও স্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে।
এর পরই অভিনেতা-শিল্পীদের একাংশ আমির খানের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছেন – তাতে যোগ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী বা ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতারাও।
গত সোমবার রাতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার একটি অনুষ্ঠানে একই বিষয় নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন বলিউডের আর এক বিগ খান – আমির।
আমির সেখানে বলেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রী কিরণ সারা জীবন ভারতে থেকেছি, কিন্তু সম্প্রতি কিরণ আমায় প্রশ্ন করেছে, আমাদের কি ভারত ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত? এটা ওর জন্য একটা সাঙ্ঘাতিক কথা – কিন্তু ও ওর সন্তানকে নিয়ে ভয় পাচ্ছে, আমাদের চারিদিকে যে ধরনের পরিবেশ তাতে ভয় পাচ্ছে। রোজ সকালে ও খবরের কাগজ খুলতেও ভয় পাচ্ছে।’
ভয়ংকর বিপদে আমির খান, জিডি
২৫ নভেম্বর ২০১৫
অসহিষ্ণুতা নিয়ে মুখ খোলায় বলিউড সুপারস্টার আমির খানের বিরুদ্ধে জিডি দায়ের করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বলিউডে তাঁর একদল সহকর্মী যেমন মিস্টার পারফেকশনিস্টের মন্তব্যের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন, তেমনই কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি-সহ অনেকেই PK স্টারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।
পরিবার নিয়ে ভারতে থাকতে পারবেন কি না তা নিয়ে আমির খান উদ্বেগ প্রকাশ করায় তাকে ভয়ংকর আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। দিল্লির নিউ অশোকনগর থানায় বলিউডের এই মেগাস্টারের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হয়েছে। দিল্লির রাস্তায় অভিনেতার পোস্টার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন বিজেপি-র কর্মী সমর্থকরা।
শাহরুখের বিরুদ্ধে শিবসেনার প্রতিবাদকে ঘিরে বিতর্ক বাড়ছে
বেকায়দায় দুটোই৷ একদিকে বলিউড, অন্যদিকে ক্রিকেট৷ ভারতীয় তারকা শাহরুখের ওপর ক্ষিপ্ত ধর্মীয় মৌলবাদী দল শিবসেনা৷
ভারতে মুসলিমদের ভোটাধিকার কাড়ার প্রস্তাব দিয়েছে শিবসেনার সিনিয়র নেতা সঞ্জয় রাউত ॥
ভারতে মহারাষ্ট্রের হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনা তাদের দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’-তে প্রকাশিত এক নিবন্ধে প্রস্তাব দিয়েছে, ভারতে মুসলিমদের স্বার্থেই তাদের ভোটাধিকার প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত।
শিবসেনার মতে, এতে মুসলিমদের নিয়ে ভারতে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি বন্ধ হবে।
সামনা-তে এই বিতর্কিত নিবন্ধটি লিখেছেন শিবসেনার সিনিয়র নেতা, রাজ্যসভা এমপি ও দলের অন্যতম মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। আর নিজের বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তিনি শিবসেনার প্রয়াত সুপ্রিমো বাল ঠাকরের মন্তব্যকেও টেনে এনেছেন।
বাল ঠাকরেকে উদ্ধৃত করে মি রাউত লিখেছেন, ‘‘বালাসাহেব বলেছিলেন মুসলিমদের যতদিন ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা হবে ততদিন তাদের কোনও ভবিষ্যৎ নেই। ফলে যেদিন মুসলিমদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হবে তখন ভারতে যারা নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করে থাকেন, তাদের মুখোশ ফাঁস হয়ে যাবে!’’॥ সূত্র বিবিসি
http://www.bbc.com/…/20…/04/150412_sg_shivsena_muslim_voting
খুরশিদ কাসুরির বই প্রকাশ অনুষ্ঠান বাতিলের দাবিতে হুমকি দিল শিবসেনার
পাকিস্তানের প্রখ্যাত গজল শিল্পী গুলাম আলীর অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার পর এবার সাবেক পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ মাহমুদ কাসুরির বই প্রকাশ অনুষ্ঠান বন্ধ করার দাবি জানিয়ে হুমকি দিল শিবসেনা। অনুষ্ঠান বন্ধ করা না হলে তাতে বাধা দেয়ার হুমকি দিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ওই দলটি।
শিবসেনার দাবি, পাকিস্তান ভারতে সন্ত্রাসী পাঠিয়ে নিরীহদের হত্যা করছে। এজন্য এই অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া যায় না। আগামীকাল ১২ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে ‘Neither a hawk nor a Dove : An insider’s Account of pakistan’s Foreign policy’ নামে বই প্রকাশ করার কথা রয়েছে।
দলের সেনা বিভাগের প্রধান আশীষ চেম্বুরকর এজন্য নেহেরু তারামণ্ডলের পরিচালককে চিঠি লিখে নির্ধারিত ওই অনুষ্ঠান বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন। চেম্বুরকর বলেছেন, নেহরু তারামণ্ডলের পক্ষ থেকে তাদের দাবি অনুযায়ী অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় স্পষ্ট জানিয়েছেন, যদি তা না করা হয় তাহলে এই অনুষ্ঠানে বাধা দিতে তারা মোটেও পিছপা হবে না।
অনুষ্ঠান বাতিল করা না হলে শিবসেনা এই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেবে এবং এজন্য যাবতীয় ক্ষতির দায়ভার নেহেরু কেন্দ্রের কর্মকর্তার উপরে বর্তাবে বলেও হুমকি দেয়া হয়েছে।
রেডিও তেহরানhttp://bangla.irib.ir/%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4%…
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ



No comments:

Post a Comment