Sunday, 21 August 2016

পর্ব আট দ্বিতীয় অংশ ।। কোলকাতা কেন্দ্রীক উচ্চ বর্ণের হিন্দু জমিদাররা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে বাংলার কৃষকদের উপরে জুলুমের রাজ্যত্ব কায়েম করে।


জমিদার রবীন্দ্রনাথ কেমন ছিলেন?

সূফি বরষণ

১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর কার্যকরী হওয়ার দিন থেকে কলকাতায় হিন্দু উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে নানামুখী কর্মসূচী গ্রহণ করে। এই সময়ে এই আন্দোলনের পুরোভাগে এসে দাঁড়ান কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ তখন কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সামাজিক মর্যাদায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার কলকাতা তথা বাংলার হিন্দু উচ্চ ও মধ্যবিত্তের সংস্কৃতির জগতের প্রধান পাদপীঠ। অর্থনৈতিকভাবে এই পরিবার জমিদারকুলের শিরোমণি। ফলে খুবই স্বাভাবিকভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবস্থান ছিল কলকাতা কেন্দ্রীক হিন্দু সংস্কৃতির নেতৃত্বের আসনে। সামাজিক শ্রেণীগত অবস্থানের কারণেই জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঝাঁপিয়ে পড়েন বঙ্গভঙ্গ বিরোধী তথা বাঙালি মুসলিম বিরোধী আন্দোলনে। এরই চরম বহি:প্রকাশ "শিবাজী উৎসব" কবিতা রচনা ও প্রকাশ। এই ইংরেজদের দালালদেরই একজন রবীন্দ্রনাথের প্রপিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর। এই দালাল শ্রেণীর কাছে ইংরেজ শাসন ছিল আশীর্বাদ স্বরূপ। অন্যদিকে বাংলার মুসলমান সমাজ ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে পরিচালনা করে একটানা আন্দোলন সংগ্রাম। আঠারো ও উনিশ শতকের বাংলার কৃষক বিদ্রোহ ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের পুরোভাগে ছিল বাংলার মুসলমান সমাজ। বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসনকে বাংলার মুসলমান সমাজ কখনোই মেনে নিতে পারেনি। অন্যদিকে বাংলার হিন্দু সমাজের বেলায় পরিস্থিত ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। হিন্দু জমিদার, মহাজন, বেনিয়া আর মধ্যবিত্ত শ্রেণী ছিল বৃৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের সহযোগী শক্তি। ঐতিহাসিকভাবে এটা বলা যায় বাংলার তথা ভারতীয় মুসলমান সমাজকে যুগপৎ বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ এবং তাদের সহযোগী হিন্দু শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। আর এই ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে নির্মিত হয়েছে হিন্দু-মুসলিম স্থায়ী বিভাজন রেখা।

....মুঘল তথা মুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে গুপ্ত হামলা পরিচালনা, হত্যা, খুন এবং গোপন আস্তানায় থেকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লুন্ঠন পরিচালনার জন্য রবীন্দ্রনাথের ভাষায় শিবাজী ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। তিনি আরও বলেন যে শিবাজীর ইতিহাস চাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শিবাজীর তপস্যা সত্য ছিল বলে তাকে ইতিহাসে চাপা দেয়া যায়নি। মুসলিম ও ইংরেজ ঐতিহাসিকদের বস্তুনিষ্ঠ গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে শিবাজী একজন লুন্ঠনকারী, হত্যাকারী, আত্মগোপনকারী, সন্ত্রাসী মারাঠা দলনেতা। তার কার্যক্রম সীমিত ছিল বিশাল মুঘল সাম্রাজ্যের এক ক্ষুদ্র অঞ্চলে। সতেরো শতকের ভারতীয় ইতিহাসে একটি প্রমাণিত ও সত্যনিষ্ঠ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের বিপরীতে রবীন্দ্রনাথের এই অবস্থান প্রমাণ করে তিনি মুসলিম বিরোধী হিন্দু পুনরুত্থানবাদী ও আর্য সংস্কৃৃতির ডামাডোলে কতটা নিমজ্জিত ছিলেন। সামাজিক ও শ্রেণীগত অবস্থানে রবীন্দ্রনাথ ইংরেজ শাসনের মহিমায় মুখর। তিনিই পরবর্তীকালে সম্রাট পঞ্চম জর্জের দিল্লি আগমন উপলক্ষ্যে রচনা করেন 'জনগণমন অধিনায়ক জয় হে ভারত ভাগ্যবিধাতা' সঙ্গীত। এটা এখন ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। রবীন্দ্রনাথের এই ভাগ্যবিধাতা আল্লাহ বা ঈশ্বর নয়, খোদ বৃৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ।

... রবীন্দ্রনাথ বলতে চেয়েছেন যে, মুঘলবিরোধী, লুন্ঠনকারী আর সন্ত্রাসী শিবাজী কর্মকান্ড ভারতের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। আর এই ঐতিহ্য হলো মুসলিম বিরোধীতা, মুসলমানদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস পরিচালনা এবং মুসলমানদেরকে ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত করার সঙ্কল্প। বাঙালি হিন্দুদের মাঝে বিশেষত: ১৭৫৭ সালের পলাশী যুদ্ধোত্তরকালে নব উত্থিত হিন্দু বেনিয়া, দালাল, মহাজন, জমিদার শ্রেণী বাংলা ও ভারতের মুসলিম শাসনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে থাকে। উনিশ শতকের বিকশিত হিন্দু মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বড় অংশই ছিল মুসলিম বিদ্বেষী এবং বাংলার মুসলমান সমাজ সম্পর্কে উন্নাসিক মনোভাবাপন্ন। বিশ শতকের হিন্দু জমিদার আর মধ্যবিত্তের প্রধান অংশই হলো এই ধারার বাহক। হিন্দু-মুসলিম বিরোধ সৃষ্টি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, দুই সম্প্রদায়ের মাঝে দাঙ্গা হানাহানি এবং পরিশেষে ধর্মের ভিত্তিতে ভারত বিভাগের দায়িত্ব ঐতিহাসিকভাবে বর্তায় এই হিন্দু উচ্চবিত্ত আর মধ্যবিত্তের উপর।

... বঙ্গভঙ্গের পটভূমিতে বাঙালি শিবাজীকে নেতা হিসেবে বরণ করে নেয়। শিবাজীর মহৎ নাম বাঙালি আর মারাঠা জাতিকে এক সূত্রে গেঁথে দেয়। রবীন্দ্রনাথের এই এক সূত্রে গাঁথার মূল সূত্রটি হলো মুসলিম বিরোধীতা। শিবাজী মুসলিম বিদ্বেষী তাই আসন্ন বঙ্গভঙ্গের পটভূমিতে মুসলমানদের উপর সামাজিক প্রভাব বহাল রাখা এবং সামাজিক শোষণ করার পথ বন্ধ হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাঙালি হিন্দু জমিদার আর মধ্যবিত্ত সমাজ মুসলিম বিরোধীতায় অবতীর্ণ। এখানেই মুসলিম বিরোধীতার হাতিয়ার হিসেবে মুসলিম বিদ্বেষী মারাঠী সন্ত্রাসী শিবাজীকে বাঙালি হিন্দু সমাজ বরণ করে নিয়েছে, আপন করে নিয়েছে। মুসলিম বিরোধী বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে শিবাজী বাঙালি হিন্দুদের কাছে আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। শিবাজীর পথ ধরেই এগিয়ে যাওয়ার পথের সন্ধান পেয়েছিল বাঙালি হিন্দু সমাজ। শিবাজী মুঘল শক্তির বিরুদ্ধে আর বাঙালি হিন্দু সমাজ প্রতিবেশী মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে। এখানেই শিবাজীর সাথে বাঙালি হিন্দুদের আদর্শিক ও স্বার্থগত সম্পর্কের মিল॥ ড. নুরুল ইসলাম মনজুর / শতবর্ষ পরে ফিরে দেখা ইতিহাস : বঙ্গভঙ্গ ও মুসলিম লীগ ॥ [ গতিধারা - জুলাই, ২০১০ । পৃ: ৫২-৮৬ ]�।

প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর (১৭৯৪-১৮৪৬)-এর বিপুল সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। রক্ষা পেয়েছিল শুধু ওড়িশা এবং পূর্ববঙ্গের সাজাদপুর, পতিসর ও শিলাইদহের জমিদারি। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮১৭-১৯০৫) শেষ উইল করেন ১৮৯৯ সালের ৮ই সেপটেম্বর। সে অনুযায়ী ওড়িশার জমিদারি পান তাঁর তৃতীয় পুত্র হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৪৪-১৮৮৪); দ্বিজেন্দ্রনাথ, সত্যেন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথ পান শিলাইদহ (প্রাচীন নাম খোরশেদপুর), সাজাদপুর ও পতিসরের জমিদারি। উইলে জমিদারির আয় থেকে ব্যয় বরাদ্দ করা হয় এভাবে - ছোটভাই নগেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮১৯-১৮৫৮)-এর স্ত্রী ত্রিপুরাসুন্দরী দেবীকে মাসে ১০০০ টাকা, পুত্র জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ১২৫০ টাকা, সোমেন্দ্রনাথকে ২০০ টাকা, রবীন্দ্রনাথকে ২০০ টাকা, বীরেন্দ্রনাথকে ১০০ টাকা, তাঁর স্ত্রী প্রফুল্লময়ীকে ১০০ টাকা, তাঁর পুত্রবধূ সাহানা দেবীকে ১০০ টাকা, কন্যা সৌদামিনী দেবীকে ২৫ টাকা, তাঁর জামাতা সারদাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়কে ৫০ টাকা, কন্যা শরৎকুমারী দেবীকে ২০০ টাকা, স্বর্ণকুমারী দেবীকে ১০০ টাকা, বর্ণকুমারী দেবীকে ১০০ টাকা, আদি ব্রাহ্মসমাজকে ২০০ টাকা, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে ৩০০ টাকা, দেবসেবার জন্য ২০০ টাকা, পৌত্র দ্বিপেন্দ্রনাথকে ৫০০ টাকা।

 মাসে এই বিপুল অর্থ যোগানোর জন্য দায়বদ্ধ ছিলেন দ্বিজেন্দ্রনাথ, সত্যেন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথ। ১৯১২ সালে দ্বিজেন্দ্রনাথ তাঁর হিস্যার এক-তৃতীয়াংশ বছরে ৪৪,০০০ টাকার বিনিময়ে ইজারা পাট্টা দেন সত্যেন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথের কাছে। সিভিল সারভিসের চাকরিসূত্রে সত্যেন্দ্রনাথ থাকতেন বাংলার বাইরে। কাজেই বছরে ৯৭, ৪০০ টাকার জন্য দায়ী রইলেন রবীন্দ্রনাথই। এছাড়া জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির ব্যয় ও জমিদারি পরিচালনার জন্য বছরে কমপক্ষে খরচ হতো কমপক্ষে দুই লাখ টাকা। আর তিন জমিদারির সদর খাজনা দিতে হতো ৫০,০০০ টাকা। শিলাইদহের সদর খাজনা ছিল ১৬,৯০২ টাকা।
রবীন্দ্রনাথকে জমিদারের চরিত্রে কেমন ছিলেন তার স্বরূপ যতদূর পারি উল্লেখ করতে চাই। তাঁকে নিয়ে ভারত বাংলাদেশ দু’দেশেই আবেগ-উচ্ছ্বাসের অন্ত নেই। ক্ষেত্র বিশেষে তিনি বাংলাদেশে সর্বাধিক আলোচিত। আমাদের দেশের চ্যানেল ও সংবাদপত্র যেভাবে তুলে ধরেন কিন্তু ভারতে তা দেখা যায় না। এদেশের চ্যানেলগুলো রবীন্দ্রনাথের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী নিয়ে যে হুজুগ দেখা যায় তা ভারতে বিরল। আপনি আমার লেখা বিশ্বাস না করলে হাজার হাজার চ্যানেল আছে ইন্ডিয়ার একটু রির্মোটটা প্রেস করুন। তাতে রবীন্দ্রনাথের অস্তি¡ত্ব খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর। তিনি তো ভারতীয়দের নমস্য, কিন্তু আমাদের দেশে কেন হুমড়ি খেয়ে পড়ে এক শ্রেণীর দাসানুদাস! সেটাই মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন?

“এমন একটি দিন অতিবাহিত হয় না যেদিন বাংলার কোথাও না কোথাও তাঁর জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা হয় না। প্রতিনিয়তই তার গান, কবিতা ও সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা, পর্যালোচনা অব্যাহত রয়েছে। রেডিও-টেলিভিশনেও প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো চ্যানেলে প্রচারিত হয় তাঁর গান কবিতা ও সাহিত্যনির্ভর নাটক সিনেমা। বাঙালির জীবনে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছেন।...... তিনি জমিদার ছিলেন, ব্যবসা করেছেন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন করেছেন, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার নোবেল পেয়েছেন, এমনকি তিনি ধর্মগুরুও ছিলেন। ”(১) রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতা-লেখক : রফিক হাসান-নয়া দিগন্ত, ৭মে ২০১৬।

উনিশ শতকের আশির দশকে হিন্দুদের গো-রক্ষা আন্দোলন প্রবল আকার ধারণ করে। দয়ানন্দ স্বরস্বতীর 'গোকরুণানিধি' প্রকাশিত হয় ১৮৮১ সালে। ১৮৮২ সালে এই সংগঠনের জন্য কলকাতা থেকে সংগৃহীত হয় ছয়-সাত লক্ষ টাকা। এটা বলাই বাহুল্য যে কলকাতা থেকে এই বিপুল অর্থের যোগান দিয়েছিল হিন্দু জমিদার ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী। দয়ানন্দ স্বরস্বতীর আর্য সমাজ ও গো-রক্ষা আন্দোলন বাংলা এবং সর্বভারতীয় পর্যায়ে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের অবনতি ঘটায়। প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য না থাকলেও সে সময়ে দেশে কয়েকটি গুপ্ত সমিতি গড়ে উঠে। এইরূপ একটি সংগঠন হলো জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং রাজনারায়ণ বসু প্রতিষ্ঠিত 'সঞ্জীবনী সভা'। ১৮৮৬ সালে রাজনারায়ণ বসুর প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন হিন্দু ধর্মের গৌরব পুনরুদ্ধারে নিবেদিত ছিল। এই সংগঠনের কর্মকান্ডে বাংলার মুসলিম সমাজ সম্পর্কে কোনো ইতিবাচক বক্তব্য স্থান পায়নি। বাংলা ও ভারতবর্ষের ইতিহাসে মুসলমানদের অবদান এবং সমাজে তাদের বাস্তব উপস্থিতি এই সংগঠন উপলব্ধি করতে পারেনি। এই সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন জমিদার রবীন্দ্রনাথ। বস্তুত উনিশ শতকের হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলনে আন্দোলিত ছিল জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার।

হেমলতা দেবী প্রণীত গ্রন্থ 'ভারতবর্ষের ইতিহাস' রবীন্দ্রনাথ সমালোচনা করেন বাংলা ১৩০৫ সালের ভারতী পত্রিকার জৈষ্ঠ্য সংখ্যায়। এই গ্রন্থ সমালোচনার অনুষঙ্গে ভারতে মুসলিম ইতিহাস সম্পর্কে জমিদার রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিভঙ্গির খানিকটা পরিচয় পাওয়া যায়। লেখিকা হেমলতা দেবী সম্ভবত তার ইতিহাস গ্রন্থে প্রামাণ্য তথ্যের ভিত্তিতে বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টিকোণ থেকে ইতিহাসকে বিচার করেছেন। এই গ্রন্থের বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেন যে, "মোঘল রাজত্বের পূর্বে তিনশত বছরব্যাপী কালরাত্রে ভারত সিংহাসনে দাস বংশ থেকে লোদী বংশ পর্যন্ত পাঠান রাজণ্যবর্গের যে রক্তবর্ণ উল্কা বৃষ্টি হয়েছে গ্রন্থে তার একটা বিবরণ থাকলে ভাল হতো।"

 মুসলিম রাজনৈতিক পতাকাতলে ভারতবর্ষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। সতেরো শতকের ভারত ইতিহাসে শিবাজী একজন মুসলিল বিরোধী, সন্ত্রাসী, লুন্ঠনকারী ও বিশ্বাসভঙ্গকারী আঞ্চলিক দলনেতা। শিবাজীর আদর্শ হলো একমাত্র মুসলিম শাসনের বিরোধিতা। এখানে রবীন্দ্রনাথ শিবাজীর হিন্দুধর্ম আর সন্ত্রাসের আদর্শে ভারতকে এক করতে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। শিবাজীর আদর্শে রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রাণিত হওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক, মুসলিম বিদ্বেষী এবং আবহমানকাল ধরে চলে আসা বাংলা ও ভারতের সমাজ ও সংস্কৃতি ধারার বিরোধী।

... ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজদৌল্লার পরাজয়ের পটভূমিতে একদিকে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয় এবং অন্যদিকে বাংলায় সুদীর্ঘ মুসলিম শাসনের অবসান ঘটে। যেহেতু রাজশক্তি মুসলমানদের কাছ থেকে ইংরেজরা ক্ষমতা দখল করে ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল তাই তাদের প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়ায় বাংলার মুসলমান সমাজ। ইংরেজ শক্তি বাংলার মুসলমান সমাজের উপর শুরু করে শোষণ, নিপীড়ন আর নির্যাতন। অন্যদিকে বাংলার হিন্দু সমাজ শুরু করে বৃটিশ শক্তির পদলেহন ও দালালী। তারা ইংরেজ কোম্পানির দালালী, মুৎসুদ্দী আর বেনিয়াগিরী করে প্রভুত অর্থের মালিক হওয়ার পাশাপাশি ইংরেজি শিক্ষাকে গ্রহণ করে। অন্যদিকে মুসলমান সমাজ তাদের ঐতিহ্য, ধর্ম ও সংস্কৃতি নষ্ট হওয়ার ভয়ে ইংরেজি শিক্ষা থেকে দূরে থাকে। ক্রমে রাজক্ষমতা, প্রশাসনিক কর্তৃৃত্ব মুসলমানদের হাতছাড়া হয়ে যায়। উপরন্তু রাজভাষা ফারসীর পরিবর্তে ইংরেজি চালু হলে মুসলমান সমাজ যুগপৎ ভূমি ও সরকারী চাকুরীর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে একটি দরিদ্র শ্রেণীতে পরিণত হয়। ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণের আর্থিক সামর্থ্য মুসলমানদের ছিল না। এই পটভূমিতে ইংরেজদের পদলেহী হিন্দু সমাজের একাংশ দালালী আর বেনিয়াগিরী করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে। ১৭৯৩ সালের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পটভূমিতে এই সকল দালাল-বেনিয়ারা অর্থ দিয়ে সরকারের কাছ থেকে জমি বন্দোবস্ত নিয়ে জমিদার শ্রেণীতে পরিণত হয়।
তিনি বাঙালীর প্রাণ। তাকে ছাড়া নাকি বাঙালীর অস্তি¡ত্ব অকল্পনীয়। আবার অনেকের কাছেই তিনি দেবতুল্য। (২) ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ।

রফিক হাসান তার লেখায় রবীন্দ্রনাথকে অনেক গুণে গুণান্বিত করে বলেছেন জমিদার-ব্যবসায়ী-নোবেল জয়ী এবং ধর্মগুরু। কিন্তু এর অভ্যন্তরে যাননি। বৃটিশদের শাসনকে ১৯০ বৎসর দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য রবীন্দ্রনাথের পরিবারকে জমিদার বানিয়েছিলেন, বৃটিশ বন্দনা করে তিনি নোবেল হাতিয়ে নিয়েছেন, আর ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ছিল তার মজ্জাগত এদিকটার স্বরূপ তিনি ধরতে পারেন নি-পারলেও এড়িয়ে গেছেন। আর বাঙালীর জীবন নাকি আষ্টে-পৃষ্টে জড়িয়ে আছেন। ভাল কথা, রবীন্দ্রনাথ কি মুসলমানদের বাঙালী ভাবতেন? আমাদের বিশ্বকবি কুষ্টিয়াসহ বিরাট অঞ্চলের জমিদার ছিলেন, ইতিহাস থেকে জানি। দেখুন ইতিহাস কী বলে, “কলকাতা ভিত্তিক তৎকালীন হিন্দু বুদ্ধিজীবিদের একটা কমন ডায়লগ ছিল ‘আপনি বাঙালী না, মুসলমান’। পূর্ব বাংলার মানুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাঙালী কবি ভাবলেও, রবীন্দ্রনাথ কিন্তু তাদের বাঙালী ভাবতেন না, ভাবতেন- ‘মুসলমান’ ও ‘প্রজা’। তাদের চোখে উচ্চবর্ণের হিন্দুরাই ছিলো প্রকৃত ‘বাঙালী’। রবীন্দ্রনাথ ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করেছিলেন, কারন বাংলা ভাগ হয়ে গেলে পূর্ব বাংলার প্রজাদেরকে জমিদারীর মাধ্যমে শোষনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে এবং পূর্ব বাংলার প্রজাগণ আর্থিক দিক থেকে সচ্ছল হয়ে উঠবে! এ ভয়ে দেশপ্রেমের ধোঁয়া তুলেছিল রবীন্দ্রনাথ সহ কলকাতার শিক্ষিত হিন্দু সমাজ। বাংলাদেশীদের অতি প্রিয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কুষ্টিয়ায় দীর্ঘদিন জমিদারী করলেও সেখানে একটি প্রাথমিক স্কুলও সে কোনোদিন প্রতিষ্ঠা করেনি, শান্তি নিকেতন করেছে কলকাতায়, এমনকি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারও বিরোধিতা করেছিলেন। ‘রীতিমত নভেল’ নামক ছোটগল্পে তিনি মুসলমান শব্দের সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করেছেন ‘যবন’ (অসভ্য) ও ‘ম্লেচ্ছ’ (অপবিত্র) প্রভৃতি শব্দ।(৩) হিন্দুরা ছিল ব্রিটিশদের সহচর ভারতীয় রাজাকার-লেখক : ফারুক সালাউদ্দিন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিদারীতে পদার্পণ করার চমকপ্রদ কাহিনী শুনুন। “তার পিতা বুড়ো বয়সে জমিদারীর বিশাল ভার কোন ছেলের হাতে অর্পণ করবেন তা নিয়ে মহাভাবনায় পড়ে যান পিতা। তিনি কবে মারা যান কে জানে? তিনি ভাবলেন, রবিকে জমিদারী কাজের মধ্যে টানতে না পারলে তার চলবে না। এতো বড়ো জমিদারী সব ছারখার হয়ে যাবে। বড়ো ছেলো দ্বিজেন্দ্রনাথ দার্শনিক মানুষ, বিষয়-কর্ম বুঝেও বুঝে না, দেখেও দেখে না। কোনো দিকে খেয়াল নেই তার। হয়তো বলা হলো, জমিদারিতে গিয়ে খাজনা আদায় করে আনো। তিনি গিয়ে প্রজাদের দু:খে ব্যথিত হয়ে খাজনা মওকুফ করে তো লিনেই, এমনকি নিজের পকেট থেকে টাকা-পয়সা দিয়ে এলেন তাদের। সত্যেন্দ্রনাথ সরকারি কাজে আজ এখানে কাল ওখানে, হয়তো ছুটিতে কেবল দিন কয়েক বাবা-মা আত্মীয় স্বজনের সাথে কাটিয়ে যান। তার পক্ষে জমিদারি দেখা মোটেই সম্ভব নয়। জ্যোতিন্দ¿নাথের সংসারের কাজে টান কম। হেমেন্দ্র মারা গেছেন;অন্য দুই ছেলে অসুস্থ। সুতরাং রবীন্দ্রনাথ ব্যতীত জমিদারি দেখবার উপযুক্ত আর কোনো ছেলেই তো তার নেই। পাক্কা জহুরীর যেমন খাঁটি স্বর্ণ-হীরে চিনতে কষ্ট হয়না, ঠিক তেমনি পাক্কা জহুরীর ন্যায় মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জমিদারী চালানোর জন্য বেছে নেন।

আমরা জানি, কবিদের হৃদয় অত্যন্ত কোমল ও আকাশের ন্যায় উদার থাকে। কিন্তু জমিদারদের হৃদয় অত্যন্ত কঠিন ও সংকীর্ণ মনা হয়। হয়তো ব্যতিক্রম কিছু থাকে। কিন্তু ইতিহাসে এদের সংখ্যা খুবই কম। সুতরাং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সংকীর্ণমনা ছিলেন কিনা জানি না; কিন্তু তিনি যে কঠিন হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন-মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক তাকে জমিদারী তদারকি করার মনোননয়নই তা প্রমাণ করে।” (৪) ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ-পৃষ্টা-২৭০-২৭১।

বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার কারণ জমিদারের জমিদারী বন্ধ হয়ে যাবে তাই। অন্য কোন কারণ হয়ত গৌণ। “বঙ্গভঙ্গ হলে তাঁদের জমিদারীর ক্ষতি হয়ে যাবে। যেটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি সে। এ অঞ্চলের মানুষের রক্তচুষে খেয়ে বেঁচে থাকতো ঠাকুর পরিবারের মত জমিদাররা। তারা নানান অজুহাতে প্রজাদের থেকে খাজনা আদায় করতেন। যেমন: গরুর গাড়ি করে মাল নিলে ধূলো উড়তো, তখন ‘ধূলট’ নামক কর দিতে হতো

প্রজারা নিজের জায়গায় গাছ লাগলেও একপ্রকার কর দিয়ে গাছ লাগাতে হতো। সেই করের নাম ‘চৌথ’। গরীব প্রজারা আখের গুড় বানালে এক প্রকার কর দিতে হতো। তার নাম ‘ইক্ষুগাছ কর’। প্রজাদের গরু-মহিষ মরে গেলে ভাগাড়ে ফেলতে হলে কর দিতে হতো। তার নাম ‘ভাগাড় কর’। নৌকায় মাল উঠালে বা নামালে দিতে হতো ‘কয়ালী’ নামক কর। ঘাটে নৌকা ভিড়লে যে কর দিতে হতো তার নাম ‘খোটাগাড়ি কর’ জমিদারদের সাথে দেখা করলে দিতে হতো ‘নজরানা’। জমিদার কখন জেলে গেলে তাকে ছাড়িয়ে আনতে উল্টো প্রজাদের দিতে হতো ‘গারদ সেলামি’। (৫) গণঅসন্তোষ ও উনিশ শতকের বাঙালী সমাজ-লেখক : ড. স্বপন বসু।
রবীন্দ্রনাথের জমিদারি সম্পর্কে অধ্যাপক অমিতাভ চৌধুরী লিখেছেন: “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সামন্তবাদী প্রজাপীড়ক জমিদার ছিলেন। তার দফায় দফায় খাজনা বৃদ্ধি এবং জোর জবরদস্তি করে আদায়ের বিরুদ্ধে ইসমাইল মোল্যার নেতৃত্বে শিলাইদহে প্রজাবিদ্রোহ হয়েছিলো।(৬) জমিদার রবীন্দ্রনাথ- দেশ ১৪৮২ শারদীয় সংখ্যা, লেখক : অধ্যাপক অমিতাভ চৌধুরী।

১৭৫৭ সালে পলাশীতে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্ত যাওয়ার পর ইংরেজরা মুসলমানদের উপর বর্ণবাদী হিন্দুদের সহযোগিতায় দমন, নিপীড়ন ও নির্যাতনের স্টীম রোলার চালায়। জমিদার বাবুদের প্রভু ভক্তির কারণে তাদের জমিদাররিত্ব দিয়েই বৃটিশ শাসন দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেয়। প্রজাদের উপর কত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছিলেন ঐতিহাসিকরা চেষ্টা করেছেন তার কিঞ্চিত মাত্র তুলে ধরতে।

খাজনা অনাদায়ে প্রজাদের উপর জমিদাররা কিভাবে শারীরিক নির্যাতন চালাত তার কয়েকটি ভয়ানক তথ্য তৎকালীন “তত্ত্ববোধিনী” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। পত্রিকাটি লিখেছেন : “১। দন্ডাঘাত বা বেত্রাঘাত ২। কর্মপাদুকা প্রহার বা জুতাপেটা ৩। বংশ কাঠাদি দ্বারা বক্ষস্থল দলন ৪। খাপরা দিয়ে কর্ণ-নাসিকা দলন ৫। ভুমিতে নাসিকা ঘর্ষণ ৬। পিঠে দুই হাত মোড় দিয়ে বেঁধে বংশ দন্ড দিয়ে মোড় দেয়া ৭। গায়ে বিছুটি দেয়া ৮। হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা ৯। কান ধরে দৌড় করা ১০। কাঁটা দিয়ে দলন করা ১১। গ্রীষ্মকালে প্রখর রোদে ইটের উপর পা ফাঁক করে দু’হাত ইট দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা ১২। গোনীবন্ধ করে জলমগ্ন করা ১৩। গাছে বা অন্যত্র বেঁধে টান দেওয়া ১৪। ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে ধানের গোলায় পুরে রাখা ১৫। চুনের ঘরে বন্ধ করে রাখা ১৬। কারারুদ্ধ করে উপবাসী রাখা ১৮। ঘরের মধ্যে বদ্ধ করে লঙ্কা মরিচের ধোঁয়া দেওয়া। ইত্যাদি”(৭) বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা(১৯৬৮), পৃষ্টা : ২৩-২৪ লেখক : বিনয় ঘোষ।

রবীন্দ্রযুগে প্রজা নিপীড়নের ঘটনা উনিশ শতকেও বিদ্যমান ছিলো। ঘন ঘন খাজনা বৃদ্ধি, হিন্দুদের বিয়ে, শ্রাদ্ধ, পূজা-পার্বণ ও পূণ্যাহের ইত্যাদি সম্পর্কিত খরচ আদায়ে সাধারণ জনগণ সাংঘাতিকভাবে অতীষ্ঠ হয়েছিলো। এদের নির্মমতা দেখে লেখক মুন্সী রিয়াজ উদ্দিনের কলম গর্জে উঠে। তিনি লিখেছেন :

“নির্দয় জমিদার পীড়ন করিয়া

খাজনা ছাড়াও অর্থ লইছে কাড়িয়া।।

পিতৃমাতৃ শ্রাদ্ধ বলি করিছে শোষণ

যে শোষণ তাদের পক্ষে চিরন্তন।।

পূজা-পার্ব্বনের নামে টংকা আদায়

করিছে নায়েবগণ বিষম আদায়

গোমস্তা পেয়াদা মৃধা তহশীলদার

সবাই নবাবজাদা জুলুম সবার।।” (৮) ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ পৃষ্টা ।

ঠাকুর পরিবার প্রজা নিপীড়নের অভিযোগ থেকে মুক্ত নয়, বৃটিশ পত্রিকা লিখেছে: “পৃথিবীর অন্য কোন দেশে কৃষকরা জমিদারদের দ্বারা এ দেশের মত নির্যাতিত হয় না। এইসব জমিদারেরা অনেকেই দারিদ্র্য থেকে উঠে এসেছে, এদের নীতি লুটে নাও যা পারো। (৯) তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরদের জমিদারীতেও অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন-জুলুম, শঠতা, প্রতারণা ও ব্যবসায়িক হীন মনোবৃত্তি সবই পুরো মাত্রায় বিদ্যমান ছিলো-এতে সন্দেহের লেশ মাত্র নেই বলে ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত।

তথ্যসূত্র :

১। রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতা-লেখক : রফিক হাসান-নয়া দিগন্ত, ৭মে ২০১৬

২। ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ

৩। হিন্দুরা ছিল ব্রিটিশদের সহচর ভারতীয় রাজাকার-লেখক : ফারুক সালাউদ্দিন

৪। ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ-পৃষ্টা-২৭০-২৭১

৫। গণঅসন্তোষ ও উনিশ শতকের বাঙালী সমাজ-লেখক : ড. স্বপন বসু

৬। জমিদার রবীন্দ্রনাথ- দেশ ১৪৮২ শারদীয় সংখ্যা, লেখক : অধ্যাপক অমিতাভ চৌধুরী

৭। বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা(১৯৬৮), পৃষ্টা : ২৩-২৪ লেখক : বিনয় ঘোষ

৮। ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ পৃষ্টা_ ২৫৯

9| The morning chronicle-26th September 1850

No comments:

Post a Comment