Wednesday, 23 December 2015

এক ঈশ্বর নারায়ণের গল্প ! যে ১৯৪৭ সালের ঘটনা থেকে শিক্ষা নেইনি॥


এক ঈশ্বর নারায়ণের গল্প ! যে ১৯৪৭ সালের ঘটনা থেকে শিক্ষা নেইনি॥
সূফি বরষণ
ইশ্বর নারায়ণ দাদা আপনি কেন বাংলাদেশ ছেড়ে গেলেন ??!! এমনই আফসোস করছে এখন ভারতে বসে যারা ১৯৪৭ সালে বাংলাদেশে ছেড়ে ভারতে গিয়ে ছিল॥
কিরে দাদাজিরা , এতো নাচতে নাচতে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে গেলি আর এখন আপনাদের ভারত মাতা আপনাদেরকে কেমন সেবা যত্ন করছে তা চেয়ে চেয়ে দেখো এবার!
যে দেশের ৬০ মিলিয়ন মানুষ এখনও ট্রয়লেট বিহীন নিজেদের প্রকৃতিক কাজ সম্পন্ন করে কেন গেলেন দাদা সেই দেশে ??
একেই বলে সুখে থাকতে ভূতে কিলায়! ভারতে আসতে আগ্রহী ছিটমহলবাসীদের জন্য ভারত সরকার কি রকম নিম্নমানের পুনর্বাসন ব্যবস্থা করেছে তা স্বচক্ষে দেখে এসে অনেক ভারতাগ্রহী ছিটমহল পরিবার নিজ উদ্যোগে ভারতের খাতা থেকে নাম কাটিয়ে বাংলাদেশের লাল সবুজ খাতায় নাম লিখিয়েছে, তারা যে ভারতের মতো একটা নিম্নমানের দেশের হাতছানিকে পাশ কাটিয়ে মাতৃভূমির মর্মটা শেষ মুহূর্তে হলেও বুঝতে পেরেছে তার জন্য তাদেরকে অভিনন্দন।
প্রমাণ হলো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পার্থক্য॥
যারা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে গেছে তারা তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মসহ সারা জীবন আফসোস করবে এই ভুলটির জন্য। ১৯৪৭ সালে যারা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারত গেছে তারা এখনও আফসোস করছে॥ কারণ বাংলাদেশ হলো সোনার দেশ যে দেশের মানুষের দিল অনেক বড় যা সারা ভারত দিয়ে তার পরিমাপ করা যাবে না কোনো দিন॥
বিবিসি বাংলা নিয়মিত ভারতসেবক এবং বাংলাদেশের মুসলিম প্রোফাইল নামের আড়ালে একজন হিন্দু অন্তরে একজন ব্যক্তিকে তথা ভারতের পক্ষে সব সময় কথা বলে॥ আজ আমি আপনাদের বলছি “ দাদা ইশ্বর নারায়ণ গো মাতার দেশ ভারত স্বয়ং আপনাদের মতো নিম্নবর্ণের হিন্দুদের উপর কি রকম অত্যাচার ও গণহত্যা চালায় তা কিলভেনমানি গণহত্যা, করমচেদু গণহত্যা, জুন্দুর গণহত্যা, বাথানি টোলা গণহত্যা, লক্ষণপুর গণহত্যা ইত্যাদি নিয়ে পড়াশুনা করে জেনে নেয়া আপনার জরুরি ছিল ।
এটাই হচ্ছে ভারতের হিন্দুভাতৃত্ব!
সেখানে মায়া মমতা বাংলাদেশের মতো বড় দিলওয়ালা নেই ॥ ভারত এমন সন্তানের জন্ম দিয়েছে যারা নিজের স্বার্থের জন্য আপন মা বোন বউকে বিক্রি করে দেয়??!!
এতো কিছু জানার পরও কেন আপনার ভারতভক্তি কেন গেল না?, তো এমন অসম্মান অমর্যাদার মরার জন্য কেন গেলেন দাদা॥
যারা বাংলাদেশে থেকেও ঈশ্বর নারায়ণের মতো ভারত প্রেমের সাগরে ভাসছেন আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন তারা তল্পিতল্পা সমেত ভারত চলে যাও ।” ঈশ্বর নারায়ণের মতো অসম্মান আর অমর্যাদার মৃত্যুর জন্য ॥
নিজের দেশে, নিজের পরিচয়ে বাঁচার আশা নিয়ে বাংলাদেশকে ফেলে নিজ ভিটে-বাড়ি ছেড়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডে এসেছিলেন প্রয়াত ঈশ্বরচন্দ্র রায়।
কিন্তু তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার ঠিক একমাসের মধ্যেই তার জীবন চলে গেলে। আর এমনই মর্মান্তিক অসম্মান অমর্যাদা মূলক করুণ মৃত্যু হলো যে তিনি ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে একটি কম্বলও জুটিনি !!??
বিবিসি নিউজে জানা যায়,
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা সাবেক ভারতীয় ছিটমহল এক নম্বর দহলা খাগড়াবাড়ি থেকে ভারতের মূল ভূখণ্ডে চলে আসা ৭৪ বছর বয়সী ঈশ্বর নারায়ণ রায় একটি আশ্রয় আজ (বুধবার) সকালে মারা গেছেন।
পরিবার ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ অসুস্থ শরীরে ঠাণ্ডার প্রকোপ সহ্য করতে না পেরেই তার মৃত্যু হয়েছে।
তারা জানিয়েছেন, নয়জনের একটা পরিবারের জন্য সরকারের তরফে মাত্র দুটি কম্বল দেওয়া হয়েছিল ওই পরিবারটিকে। চারদিকে ঢেউ টিনের ঘরে ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে খড়ের গাদা পেতেছিল ওই পরিবারটি। সেই খড়ের ওপরেই সকালে মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের।
প্রয়াত মি. রায়ের ছোট ছেলে অক্ষয় কুমার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “বাবার অসুস্থ ছিল, যার জন্য বর্ডার পেরুনোর পরেই সরাসরি হাসপাতালে চিকিৎসা করতে হয়েছিল, রক্তও দিতে হয়েছিল। কিন্তু ভীষণ ঠাণ্ডা পড়েছে, তার ওপরে টিনের ঘর। দুটো মাত্র কম্বল পেয়েছি। খড় বিছাতে হয়েছিল মেঝেতে। শীতের পোশাকও ঠিকমতো নেই। ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারল না বাবা।“
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার অবশ্য স্বীকার করছে না যে ঠাণ্ডার কারণেই মারা গেছেন মি. রায়।
ক্ষমতাসীন তৃনমূলের কোচবিহার জেলার শীর্ষ নেতা ও বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন,“ওই ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছে। আর ত্রাণ সামগ্রীরও কোনও অভাব নেই। সরকার যা দিয়েছে, তার ওপরে বিধায়করাও তাঁদের কোটা থেকে বাড়তি কম্বল দিয়েছে। তাই ঠাণ্ডা সহ্য করতে না পেরে উনি মারা গেছেন, এ কথা সঠিক নয়।“
ঠিক একমাস আগে ২৪ নভেম্বর সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসে মি. রায়ের পরিবার। তাঁদের রাখা হয়েছে কোচবিহারের হলদিবাড়ি এলাকার একটি অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে।
মি. রায়ের মৃত্যুর পরে অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে ত্রাণের অপ্রতুলতা নিয়ে অভিযোগ করছেন আরও অনেকেই।
হলদিবাড়ি এলাকার ওই শিবিরেই আশ্রয় পেয়েছেন বাংলাদেশের ভেতরে থাকা সাবেক ভারতীয় ছিটমহল নাজিরগঞ্জের বাসিন্দা জয়প্রকাশ রায়।
তিনি বলেন, “পরিবার পিছু দুটো করে ঘর দেওয়া হয়েছে। একটা তোষক, দুটো বালিশ, একটা মশারী আর মেঝেতে পাতার জন্য দুটো ত্রিপল দিয়েছে সরকার থেকে। মেঝেগুলো বাঁধানো আর আড়াই ফুট পাকা দেওয়াল, তার ওপরে পুরোটাই টিন। ছাদও টিনের। এগুলোতে শীতে যেমন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে, গরমকালেও সেরকম গরম হয়ে উঠবে।“
কোচবিহারের জেলাশাসকের সঙ্গে অনেকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায় নি।
তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলছেন, “ত্রাণসামগ্রী কম নেই, কিন্তু অস্থায়ী শিবির বা পুরনো ছিটমহলগুলোতে উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটা বড়সড় সমস্যা দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যে টাকা দেবে বলেছিল, তার প্রায় কিছুই দেয় নি। প্রায় সবটাই রাজ্য সরকারকে খরচ করতে হচ্ছে। এটা তাড়াতাড়ি সমাধান না করা গেলে খুবই অসুবিধায় পড়তে হবে সবাইকে।॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

No comments:

Post a Comment