Saturday 3 September 2016

পর্ব আট এর শেষ অংশ ।। কোলকাতা কেন্দ্রীক উচ্চ বর্ণের হিন্দু জমিদাররা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে বাংলার কৃষকদের উপরে জুলুমের রাজ্যত্ব কায়েম করে।

পর্ব আট এর শেষ অংশ ।।  কোলকাতা কেন্দ্রীক উচ্চ বর্ণের হিন্দু জমিদাররা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে বাংলার কৃষকদের উপরে জুলুমের রাজ্যত্ব কায়েম করে।

জমিদার রবীন্দ্রনাথ ও সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ কেমন  মুসলিম বিদ্বেষী ছিলেন ?

সূফি বরষণ
এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয়টি হলো ভারতবর্ষের ইতিহাসে সুলতানী শাসনামলকে রবীন্দ্রনাথ ভারত ইতিহাসের কাল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করতে প্রয়াসী হয়েছেন। ভারতীয় ইতিহাসের সুলতানী যুগের সুদীর্ঘ তিন শতাব্দী সময়কালকে কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করার রবীন্দ্রনাথের এই প্রয়াস অনৈতিহাসিক, সাম্প্রদায়িক এবং মুসলিম বিদ্বেষপ্রসূত। সুলতানী আমলে ভারতের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বহুল উন্নতি সাধিত হয়। এই সময়কালে ভারতে একটি প্রাতিষ্ঠানিক শাসন কাঠামো গড়ে উঠে। শিক্ষা ও শিল্পকলায় নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটে। বহির্বিশ্বের সাথে ভারতের প্রত্যক্ষ বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ভারতের নিম্নবর্গের মানুষ ব্রাহ্মণদের সামাজিক অত্যাচার থেকে রেহাই পায়। বাংলার ইতিহাসে সুলতানী আমল একটি স্বর্ণোজ্জল অধ্যায়। মুসলিম সুলতানদের হাতেই বাংলা ভাষার পূর্ণ সমৃদ্ধি ঘটে। মুসলিম শাসকেরা বাংলা ভাষাকে নিজের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করে এবং এই ভাষার ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে। এই সময়কালটি বাংলা ভাষা বিকাশের সোনালী যুগ। আরবী ও ফারসী ভাষার সংস্পর্শে এসে সমৃদ্ধ হয় বাংলা ভাষা। বাংলা সাহিত্যে নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ এই সুলতানী আমলকে বলেছেন ইতিহাসের কালো অধ্যায়। এখানে তিনি মুসলিম বিদ্বেষ থেকে ইতিহাস বিকৃতিতে অবতীর্ণ।

ঐতিহাসিক প্রামাণ্য তথ্যে এটা স্বীকৃত যে পলাশী পূর্ববর্তী সুবে বাংলার অর্থাৎ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হযে পড়েছিল মারাঠা দস্যু আর সন্ত্রাসীদের হামলা, লুন্ঠন, হত্যা ও আক্রমণে। নবাব আলীবর্দী খান মারাঠা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে তার শাসনামলের প্রায় পুরো সময়কালটি ব্যাপৃত থাকেন। উনিশ শতকের হিন্দু উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী এই ঐতিহাসিক সত্য ভুলে সন্ত্রাসী মারাঠাদের আক্রমণ, লুটপাট আর কর্মকান্ডকে মুসলিম বিরোধী অভিহিত করে হিন্দুদের গৌরব চিহ্নিত করতে থাকে। প্রধানত: এই হিন্দু পুনরুত্থানবাদী আন্দোলনের পটভূমিতে বাংলার হিন্দুসমাজ বিজাতীয় মারাঠাদের গুণকীর্তন আর বন্দনা শুরু করে। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন এই ধারারই শক্তিশালী প্রবক্তা।

'শিবাজী উৎসব্' (১৯০৪) কবিতাটি যখন রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন তখন তিনি কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। একই সঙ্গে কলকাতার বুদ্ধিজীবী মহলেও তিনি সম্মানের সাথে সমাদৃত। পারিবারিক এবং আর্থিক কারণে তিনি কলকাতার অভিজাত মহলের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে অবস্থান করছেন। বয়েসের পরিসীমায়ও তিনি পরিণত। বলা যেতে পারে উনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের শুরুর পর্বের রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও কর্মের ধারাবাহিকতার সাথে কবিতাটির মর্মার্থ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মহারাষ্ট্রের বালগঙ্গাধর তিলক ১৮৯৫ সালের ১৫ এপ্রিল সেখানে শিবাজী উৎসব প্রতিষ্ঠা করেন। তিলক শিবাজী উৎসব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উগ্র হিন্দু জাতীয়তা ও সাম্প্রদায়িকতা প্রচার ও প্রসারের জন্য। ক্রমে শিবাজী উৎসবের অনুকরণে চালু হয় গণপতি পূজা। ইতিপূর্বে ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গো-রক্ষিণী সভা ঐ অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। মহারাষ্টের শিবাজী উৎসবের অনুকরণে সখারাম গণেশ দেউস্করের প্রচেষ্টায় কলকাতায় শিবাজী উৎসব প্রচলিত হয় ১৯০২ সালের ২১ জুন তারিখে। সরলা দেবী ১৯০২ সালের অক্টোবর মাসে দূর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিনে বীরাষ্টমী উৎসব প্রচলন করেন। তিনি ১৯০৩ সালের ১০ মে শিবাজী উৎসবের অনুকরণে প্রতাপাদিত্য উৎসব প্রচলন করেন এবং একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রবর্তন করেন উদয়াদিত্য উৎসব। কলকাতার বাইরে থাকার কারণে রবীন্দ্রনাথ এই তিনটি উৎসবে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯০৩ সালে দূর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিনে ২৬ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে জানকীনাথ ঘোষালের বাড়িতে যে বীরাষ্টমী উৎসব অনুষ্ঠিত হয় রবীন্দ্রনাথ তাতে সক্রিয়ভাবে যোগ দেন।

শিবাজী উৎসবের মূল মন্ত্র ছিল চরম মুসলিম বিদ্বেষ, সন্ত্রাস এবং সাম্প্রদায়িকতা। বস্তুত এই শিবাজী উৎসবের সূত্র ধরেই বাংলায় সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির এবং সাম্প্রদায়িক ভেদনীতির ভিত্তি স্থাপিত হয়। এর ফলশ্রুতিতে বাঙালি হিন্দু ও বাঙালি মুসলমান পরস্পর বিপরীত পথে ধাবিত হয়। ঐতিহাসিকভাবে এটা স্বীকার্য যে এই সন্ত্রাস আর সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দায়ভাগ পুরোপুরি বর্তায় হিন্দু জমিদার আর মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উপর্। 'শিবাজী উৎসব' পালনের মধ্য দিয়ে সমগ্র বাংলায় যখন মুসলিম বিদ্বেষ আর সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং সমাজনীতির ভূমি নির্মিত হচ্ছে তখন বাঙালি মুসলিম সমাজ অর্থে, বিত্তে, শিক্ষায় একটি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়। আর পূর্ববাংলায় বাঙালি মুসলিম জনসংখ্যার সিংহভাগ জমিদারদের রায়ত বা প্রজা। বাংলার হিন্দুরা মুসলমানদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করলেও হিন্দু জমিদার আর মধ্যবিত্তের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠার শক্তি বা অবস্থা বাঙালি মুসলমানের ছিল না। কিন্তু বাস্তব ইতিহাস হলো বিশ শতকের শুরুতে এই সাম্প্রদায়িক 'শিবাজী উৎসব' বাংলায় চালু হয়েছিল মুসলিম বিরোধীতা এবং মুসলিম বিদ্বেষকে পুঁজি করে।

কবিতার শুরুতে রবীন্দ্রনাথ শিবাজীর কর্মকান্ড ও জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন :

কোন দূর শতাব্দের এক অখ্যাত দিবসে
নাহি জানি আজ
মারাঠার কোন শৈল অরণ্যের অন্ধকারে ব'সে
হে রাজা শিবাজী
তব ভাল উদ্ভাসয়া এ ভাবনা তরিৎ প্রভাবৎ
এসেছিল নামি
'একরাজ্যধর্ম পাশে খন্ড ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভারত
বেধে দিব আমি'।

ঠাকুর পরিবারের ‘জমিদারি নির্যাতন’-এর বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন কাঙাল হরিনাথ‚ বিস্মৃত এই সাংবাদিকই লিখেছিলেন ‘দিন তো গেল‚ সন্ধ্যা হল। দ্বারিকানাথ ঠাকুর সহজ লোক ছিলেন না।  প্রজাশোষণের ইচ্ছা ক্রমেই বলবতী হইতেছে। দ্বারিকানাথ ঠাকুরের কোনও লোক কুটির সীমায় উপস্থিত হইলেই সাহেব (ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এক কার্যাধ্যক্ষ উইলিয়াম সাহেব) গুলি করিতে আসিতেন | বলিলেন‚ আমার স্থাপন ও নিজস্ব বাজারটি তোমাকে দিলাম | কুমারখালির বর্তমান বাজারটি এইরূপে বিনামূল্যে দ্বারিকানাথের হস্তগত  হইল |

জমিদারি কাজকর্মের ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথের ওপর পূর্ণ আস্থা ছিল দেবেন্দ্রনাথের। তবুও ১৮৯০ সাল থেকে পুরো পাঁচটি বছর জমিদারি তদারকের দায়িত্ব দিয়ে তাঁকে তিনি সরজমিন প্রশিক্ষণ দেন এ বিষয়ে। ১৮৯৬ সালের ৮ই অগস্ট পাওয়ার অভ অ্যাটর্নির মাধ্যমে সমগ্র সম্পত্তির সর্বময় কর্তৃত্ব রবীন্দ্রনাথের ওপর ছেড়ে দেন দেবেন্দ্রনাথ। ১৮৯০ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৪৭ বছর শিলাইদহ, সাজাদপুর ও পতিসরের জমিদার হিসেবে রবীন্দ্রনাথ বহন করেছেন পিতার দেয়া গুরুভার। তাঁর প্রজাদের বেশির ভাগই কৃষক।

রবীন্দ্রনাথের বেশির ভাগ ছিল প্রজা ছিল মুসলমান। জমিদারিতে তারা পেতো শুধু বরকন্দাজের কাজ। হিন্দুরা করতো আমলার কাজ।  হিন্দু আমলা ও প্রজারা প্রাত্যহিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে থাকে নানাভাবে। তখন বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে শিক্ষিত হিন্দু যুবকদের নিয়ে এসে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করেন তিনি।

রবীন্দ্রোত্তর তৃতীয় প্রজন্মে রবীন্দ্র মূল্যায়ন’ প্রবন্ধের জন্য ইসলামবিদ্বেষী অধ্যাপক আহম্মদ শরীফ গবেষক অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরীকে কাঙাল হরিনাথের ‘গ্রামবার্তা’ এবং ঠাকুর জমিদারদের সম্পর্কে জানতে চেয়ে চিঠি লেখেন। চিঠির উত্তরে অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরীর লেখা চিঠিতে সংশ্লিষ্ট প্রচুর তথ্য পরিবেশিত হয়। চিঠিটির প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনা করে আর একবার পড়ে দেখা যাক ঃ
৭. ৯. ৮৫
শ্রদ্ধাভাজনেষু
স্যার, সালাম জানবেন। অসুস’তার জন্যে আপনার চিঠির জবাব দিতে কয়েকদিন দেরী হলো। অনুগ্রহ করে মাফ্‌ করবেন আমাকে।
ঠাকুর জমিদারদের প্রজাপীড়নের সংবাদ কাঙাল হরিনাথের ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’র কোন্‌ বর্ষ কোন্‌ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল তা আমার সঠিক জানা নেই। আমাদের কাছে ‘গ্রামবার্তা’র যে ফাইল আছে, তাতে এই সংবাদ নেই। প্রজাপীড়নের এই সংবাদ-সূত্রটি পাওয়া যায় কাঙাল-শিষ্য ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়র একটি প্রবন্ধে। কাঙালের মৃত্যুর পর অক্ষয়কুমারের এই প্রবন্ধটি সুরেশচন্দ্র সমাজপতি সম্পাদিত ‘সাহিত্য’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই প্রবন্ধে মৈত্রেয়বাবু কাঙাল হরিনাথের সংবাদপত্র পরিচালনায় সততা ও সাহসের পরিচয় প্রসঙ্গে প্রজাপীড়নের সংবাদ ‘গ্রামবার্তা’য় প্রকাশের উল্লেখ করেন। ঠাকুর-জমিদারদের অত্যাচার সম্পর্কে হরিনাথ নিজে অক্ষয়কুমারকে যে পত্র লেখেন, তিনি এই প্রবন্ধে তা উদ্ধৃত করে দেন। এই প্রবন্ধ প্রকাশের ফলে রবীন্দ্রনাথ বিশেষ রুষ্ট ও অপ্রসন্ন হন এবং তাঁর অন-রঙ্গ বন্ধু নাটোরের মহারাজা জগদীন্দ্রনাথ রায়কে বলে অক্ষয়কুমারের ‘রানী ভবানী’ গ্রন’প্রকাশের অর্থ-সাহায্যের প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করান। কাঙাল-পুত্র সতীশচন্দ্র মজুমদার-সূত্রে জানা যায়, ঠাকুর-জমিদারদের প্রজাপীড়নের সংবাদ-প্রকাশের অপরাধে (?) তাঁরা লাঠিয়াল-গুণ্ডা লাগিয়ে কাঙালকে শায়েস্তা করার ব্যবস্থা নেন। এইসব ঘটনা ঠাকুর-জমিদারীর ইতিহাসের দুঃখজনক ‘কালো অধ্যায়’।

এ-ছাড়া অন্যত্র, যেমন মীর মশাররফ হোসেন সম্পাদিত ‘হিতকরী’ পত্রিকায়, ঠাকুর-জমিদাররা যে প্রজাসাধারণের দুঃখ-কষ্ট মোচনে তেমন তৎপর ও মনোযোগী ছিলেন না তার ইঙ্গিত আছে। ঠাকুরবাবুরা তাঁদের জমিদারী-এলাকায় গো-কোরবানী নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং এই নির্দেশ অমান্যকারীদের নানাভাবে নিগৃহীত হতে হয়। শিলাইদহ ঠাকুর-জমিদারীর এই ভূস্বামী-স্বার্থরক্ষার কৌশল-ব্যবস্থা ও প্রজাপীড়নের ঐতিহ্য চারপুরুষের, দ্বারকানাথ থেকে সুরেন্দ্রনাথ পর্যন-। কাঙাল হরিনাথের দিনলিপিতেও এর ইঙ্গিত মেলে।

শিলাইদহ জমিদারীতে রবীন্দ্রনাথের আমলেও কিছু অবাঞ্ছিত ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। চরের মুসলমান প্রজাদের ঢিঁঢ করবার জন্য নমঃশূদ্র প্রজা এনে বসতি স্থাপনের সামপ্রদায়িক-বুদ্ধিও রবীন্দ্রনাথের মাথা থেকেই বেরিয়েছিল। এ-ছাড়া পুত্র রথীন্দ্রনাথের নিরীক্ষামূলক শখের কৃষি-খামারের প্রয়োজনে গরীব মুসলমান চাষীর ভিটেমাটি দখল করে তার পরিবর্তে তাকে চরের জমি বরাদ্দের মহানুভবতাও রবীন্দ্রনাথ প্রদর্শন করেছিলেন। এ-সব কথা ও কাহিনী উক্ত-জীবনীকারদের যত্ন ও সৌজন্যে চাপা পড়ে গেছে। সত্য ইতিহাসকে তুলে ধরতে গেলে অনেককেই হয়তো সামপ্রদায়িক বা রবীন্দ্র-বিদ্বেষী শিরোপা, নয়তো সুভো ঠাকুরের (‘বিস্মৃতিচারণার প্রতিক্রিয়া’ দ্রষ্টব্য) মতো ধিক্কার ও তিরস্কার অর্জন করতে হবে।

ঠাকুর-জমিদারদের প্রজা-পীড়নের বিষয়ে আমি রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহ জীবনের নিপুণ ভাষ্যকার শ্রী শচীন্দ্রনাথ অধিকারীকে (তিনি নিজে শিলাইদহবাসী ও ঠাকুর-এস্টেটের কর্মচারী ছিলেন এবং এই বিষয়গুলো জানতেন) চিঠিপত্রে নানা প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি এ-সব জিজ্ঞাসার জবাব এড়িয়ে ও অস্বীকার করে এই ধরণের কৌতূহলকে রবীন্দ্র-বিদ্বেষী বলে অভিহিত করেছিলেন।
উপরি-বর্ণিত বিষয়গুলোর কিছু কিছু তথ্য আমার সংগহে আছে। আপনার প্রয়োজন হলে সেগুলো পাঠাতে পারি। আপনার নির্দেশের অপেক্ষায় রইলাম। এই বিষয়ে আপনি কোন প্রবন্ধ লিখেছেন কী না জানিয়ে বাধিত করবেন। আমার গবেষণার কাজ (‘মীর মশাররফ হোসেনের শিল্পকর্ম ও সমাজচিন্তা’) চালিয়ে যাচ্ছি। এ-বছরের মধ্যে থিসিস্‌ জমা দেবো এমন আশা আছে। আমার লেখার কাজে আপনার প্রশ্রয় ও প্রেরণার কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। আপনার জবাবের প্রত্যাশায় রইলাম। আন্তরিক শ্রদ্ধা ও সালাম জানিয়ে শেষ করি।

স্নেহসিক্ত,
আবুল আহসান চৌধুরী ৩৬

তথ্যসূত্র :

১। রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতা-লেখক : রফিক হাসান-নয়া দিগন্ত, ৭মে ২০১৬

২। ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ

৩। হিন্দুরা ছিল ব্রিটিশদের সহচর ভারতীয় রাজাকার-লেখক : ফারুক সালাউদ্দিন

৪। ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ-পৃষ্টা-২৭০-২৭১

৫। গণঅসন্তোষ ও উনিশ শতকের বাঙালী সমাজ-লেখক : ড. স্বপন বসু

৬। জমিদার রবীন্দ্রনাথ- দেশ ১৪৮২ শারদীয় সংখ্যা, লেখক : অধ্যাপক অমিতাভ চৌধুরী

৭। বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা(১৯৬৮), পৃষ্টা : ২৩-২৪ লেখক : বিনয় ঘোষ

৮। ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ পৃষ্টা_ ২৫৯

9| The morning chronicle-26th September 1850


No comments:

Post a Comment