Saturday 24 September 2016

পর্ব এক। ম্যারা ভারত মহান!? উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের হাতে ১৯৮৪ সালে শিখ নিধন বিরোধী দাঙ্গা ২০ হাজার শিখ ধর্মের অনুসারীকে হত্যা ও কয়েক লাখ শিখকে আহত করা হয়।

পর্ব এক। ম্যারা ভারত মহান!?

উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের হাতে ১৯৮৪ সালে শিখ নিধন বিরোধী দাঙ্গা
২০ হাজার শিখ ধর্মের অনুসারীকে হত্যা ও কয়েক লাখ শিখকে আহত করা হয়।

২৫ হাজারের উপরে শিখদের বাড়ি ঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

পাঞ্জাবে শিখদের পবিত্র তীর্থস্থান অমরিতস্বরে স্বর্ণ মন্দিরে  স্বাধীন  খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থনকারীদের অপারেশন ব্লু স্টারের মাধ্যমে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়।

জেল, সাবজেল ও লকআপ তিন দিন পর্যন্ত খুলে দিয়ে বন্দীদের শিখিয়ে দেয়া হয়েছে শিখদের হত্যা করার জন্য ‘টিচ দ্য শিখ অ্যা লেসন"।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পড়তে পারেন গোয়েন্দা সংস্হা র এর সাবেক অফিসার বি রমনের লেখা বই র এর কাওবয়েজরা।

সূফি বরষণ।।
যুগে যুগে উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের হাতে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয় মুসলিম শিখ খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষ এই হলো মহান ভারতের হিংস্র চরিত্র?? স্বাধীন খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থনকারীদের নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়।  ভারতে ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী দাঙ্গা নতুনভাবে তদন্ত করবে বিশেষ তদন্তকারী দল। কেন্দ্র সরকার নিযুক্ত একটি কমিটি দাঙ্গার তদন্তে নতুন করে বিশেষ তদন্ত কমিটি বা ‘সিট’ গঠন করার সুপারিশ করেছে। সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি জেপিমাথুরের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে এসংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। এতে নতুনভাবে বিশেষ তদন্তকারী দল বা এসআইটি গঠন করার সুপারিশ করেছে। এর আগে এসংক্রান্ত মামলার সিবিআই তদন্ত করা হয়।

১৯৮৪ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তার নিজের শিখ দেহরক্ষীদের হাতে নিহত হন। এর পরেই শিখ বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয় দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে। উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের হাতে ১৯৮৪ সালে শিখ নিধন বিরোধী দাঙ্গা ২০ হাজার শিখ ধর্মের অনুসারীকে হত্যা ও কয়েক লাখ শিখকে আহত করা হয় এবং ২৫ হাজারের উপরে শিখদের বাড়ি ঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয় উগ্র হিন্দুরা ।  অন্যরা নিহত হয় উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রসহ বিভিন্ন স্থানে। ১৯৮৪ সালে শিখ বিরোধী দাঙ্গার ৪৯টি মামলা পুনরায় শুরু করবে জানিয়েছে  বিশেষ তদন্তকারী দল(SIT)।  ২৯ জুলাই ২০১৬‌ থেকে শিখ বিরোধী ৬৫০ টি মামলার মধ্যে ৪৯ টা মামলা পুনরায় তদন্ত করবে বিশেষ তদন্তকারী দল(SIT)।

বিচারপতি নানাবতি কমিশন পুলিশের বন্ধ করে দেয়া ২৪১ টি মামলার মধ্যে কেবল ৪ টি মামলা চালু করার সুপারিশ করে। কিন্তু বিজেপি অন্য ২৩৭ টি মামলাও চালু করতে চাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার গত ১০ ডিসেম্বর ১৯৮৪তে শিখ বিরোধী দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা করে। কেন্দ্র সরকার ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারপতি জে পি মাথুরের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে। এই কমিটির কাজ ছিল শিখ বিরোধী দাঙ্গার তদন্তে নতুনভাবে 'সিট' গঠনের প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখা। কমিটির রিপোর্টে বিশেষ তদন্তকারী দল বা এসআইটি গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে।

১৯৮৪ সালে শিখবিরোধী দাঙ্গা চলায় শিখবিরোধী ভারতীয় জনতা। শিখ ধর্মাবলম্বী দেহরক্ষী ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করার পর এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ দাঙ্গা বাধে। প্রাথমিক হিসেবে এক হিসেবে এ দাঙ্গায় আট হাজারের মতো লোক নিহত হয়। শুধু দিল্লিতেই নিহত হয় তিন হাজার। দাঙ্গা চলে ৩১ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। দফায় দফায় চলে এ দাঙ্গা। ভারতের মূল গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইর অভিমত (সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো) দিল্লি পুলিশের সহায়তায় এই রায়ট চলে। কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু কমকর্তাও এ কাজে সহায়তা জোগায়। মায়ের মৃত্যুর পর রাজিব গান্ধী হন ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই তিনি বলেছিলেন বড় গাছ যখন পড়ে, তখন মাটি কাঁপে।

১৯৭০-এর দশকে ইন্দিরা গান্ধী ভারতে জরুরি অবস্থা জারি করেন। তখন স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত হাজার হাজার শিখকে আটক করে কারাগারে রাখা হয়। তখন স্বাধীন খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থনকারীদের  সশস্ত্র শিখেরা মাঝে মধ্যেই সন্ত্রাসী হামলা চালাত। ভারতীয় সরকারের কাছে এরা ছিল সন্ত্রাসী। ১৯৮৪ সালে জুনে ইন্দিরা গান্ধী আদেশ দেন শিখদের স্বর্ণমন্দিরে সামরিক অভিযান চালিয়ে এই মন্দিরকে বিচ্ছিন্নতাবাদীমুক্ত করতে। কারণ বলা হচ্ছিল, এই  স্বাধীন খিলিস্তান আন্দোলনের সমর্থনকারী শিখেরা স্বর্ণমন্দিরে অস্ত্রের মজুদ গড়ে তুলছে। এই সামরিক অভিযানের নাম ‘অপারেশন ব্লু স্টার’। পরবর্তী সময়ে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনী নামানো হয় পাঞ্জাবের গ্রামাঞ্চলকে বিচ্ছিন্নতাবাদমুক্ত করতে।

এ দ্বন্দ্বে সরকারি রিপোর্ট মতে, দুই হাজার ৭০০ জন নিহত হয়। রায়টের পর ভারত সরকার বলে এ রায়টে দিল্লি থেকে ২০ হাজার লোক বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে পিপলস ইউনিয়ন ফর লিবারটিজের রিপোর্ট মতে, এ সংখ্যা ‘কমপক্ষে’ এক হাজার জন বাস্ত্চু্যুত হয়। উল্লেখ্য, এই পিপলস ইউনিয়ন একটি মানবাধিকার সংস্থা। এটি সমাজবাদী নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ ১৯৭৬ সালে পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটিক রাইটস (পিইউসিএলডিআর) নামে প্রতিষ্ঠা করেন। সে যা-ই হোক এ রায়টের সবচেয়ে বেশি শিকার হয় দিল্লির শিখ অধ্যুষিত এলাকা। সারা ভারতের মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও পত্রপত্রিকার বিশ্বাস এই হত্যাযজ্ঞ ছিল সংগঠিত। এই হত্যাযজ্ঞ নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকর্তাদের দ্বান্দ্বিক অবস্থান এবং কিলারের বিচারিক শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে সাধারণ শিখদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। বেড়ে যায় খালিস্তান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন। ‘আকালি তখত’ নামের শিখবাদের ধর্মীয় গভর্নিং বডি এই হত্যাকাণ্ডকে জেনোসাইড বা গণহত্যা বলে মনে করে।

২০১১ সালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ভারত সরকারকে জানায়, এখনো এই ‘মাস কিলিং’-এর বিচার হয়নি। ২০১১ সালে উইকিলিকস ক্যাবল লিকস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার এই দুষ্কর্মে সহযোগিতা জুগিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ কাজকে অভিহিত করে ভারত সরকারের শিখবিরোধী ‘অপরচুনিজম’ ও ‘হ্যাট্রিড’ নামে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এ রায়টকে গণহত্যা বলতে অস্বীকার করে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলে এটি ছিল ‘ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন’। এ ছাড়া ২০১১ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রতিবেদনে বলে, ভারতের হরিয়ানায় ব্যাপক শিখবিরোধী হামলার ঘটনা ঘটে বড় ধরনের প্রতিশোধপরায়ণতার অংশ হিসেবে।

১৯৭৩ সালে শিকদের রাজনৈতিক দল ‘শিরোমনি আকালি দল’ ও অন্যান্য শিখ গ্রুপ ঘোষণা করে ‘আনন্দপুর সাহিব রেজুলেশন’ নামের বিবৃতি। এতে অন্যান্য দাবিদাওয়ার মধ্যে পাঞ্জাব ও শিখদের জন্য ‘বিশেষ মর্যাদা’ দাবি করা হয়। ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে পাঞ্জাবের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে রাজ্যপর্যায়ে। এর ফলে রাজ্য সরকারকে বাতিল করা হয়। জার্নাল সিং বিন্দ্রাওয়ালের নেতৃত্বে পাঞ্জাবে বিদ্রোহ সৃষ্টি হয়। কিছু বিদ্রোহী শিখ গোষ্ঠী সিদ্ধান্ত নেয় সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাঞ্জাবে খালিস্তান নামে আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। তারা লড়বে ভারত সরকার ও ভরতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। অন্যরা চাইল আনন্দপুর সাহিব রেজুলেশনের ওপর ভিত্তি করে ভারতের অধীনে স্বায়ত্তশাসিত পাঞ্জাব। বিপুলসংখ্যক শিখ সশস্ত্র আন্দোলনের নিন্দা জানায়।

১৯৮৩ সালে পাঞ্জাবের অবস্থা খুবই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সে বছরের অক্টোবরে কিছু শিখ বিদ্রোহী একটি বাস থামিয়ে বাসের ছয়জন হিন্দু যাত্রীকে হত্যা করে। একই দিনে অন্য একটি চরমপন্থী গোষ্ঠী একটি ট্রেনে দুইজন কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এ প্রেক্ষাপটে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কংগ্রেস সরকার পাঞ্জাবে কংগ্রেসের রাজ্য সরকার বাতিল করে সেখানে প্রেসিডেন্টের শাসন চালু করেন। অপারেশন ব্লু স্টার চলে ১৯৮৪ সালের ৩ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত। এর আগের চার মাস সময়ে গোটা পাঞ্জাবে বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনায় ২৯৮ জন লোক নিহত হয়। ব্লু স্টার অপারেশনের পাঁচ দিনে নিহত হয় ৪৮ জন। তখন সশস্ত্র শিখদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য বিভিন্ন মহল থেকে আহ্বান জানানো হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অপারেশন পরিচালনার আদেশ দেন। আর স্বর্ণমন্দির থেকে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সরিয়ে দেয়ার আদেশ দেন জুনের প্রথম দিকে। বিদ্রোহীদের সরিয়ে দিয়ে পাঞ্জাবের অমৃতসর শহরের হরমন্দির সাহিব কমপ্লেক্সের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং মন্দির কমপ্লেক্স ভবন থেকে জার্নেইল সিং বিন্দ্রাওয়ালে ও তার অনুসারীদের সরিয়ে দেয়ার আদেশও দেয়া হয়। বিন্দ্রাওয়ালে আগেই অবস্থান নিয়েছিলেন হরমন্দির সাহিবে এবং ১৯৮০ সালের এপ্রিল থেকে এটিকে ব্যবহার করে আসছিলেন তার সদর দফতর হিসেবে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি গুরুদুয়ারায় অস্ত্র মজুদ করে আসছিলেন পরবর্তী সময়ে বড় ধরনের সশস্ত্র অভিযান পরিচালনার জন্য।

সেনাবাহিনীর সূত্র মতে, এ অভিযানে বেসামরিক লোক মারা গেছে ৪৯২ জন। আর সামরিক বাহিনীর লোক মারা গেছে ১৩৬ জন, আহত হয়েছেন ২২০ জন। বেসরকারি সূত্র মতে, লোকক্ষয় ঘটেছে আরো অনেক বেশি। কারো কারো মতে, নিহতের সংখ্যা ২০ হাজারের মতো। মার্ক টালি ও সতীশ জ্যাকব উল্লেখ করেছেন, যেসব বেসামরিক শিখ মার্চ করে অমৃতসরের দিকে যাচ্ছিল, তাদের ওপর দিয়ে সুলতানউইন্ড এলাকায় সেনাবাহিনী ট্যাঙ্ক চালিয়ে দিয়েছিল। হত্যার শিকার হয়েছিলেন বিন্দ্রাওয়ালে ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী সাবেক সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সাবেগ সিং। এই অপারেশন মন্দির কমপ্লেক্সের কাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়। আকাল তখত মন্দির সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। এর প্রতিবাদ আসে সারা ভারত থেকে। এমনকি ভারতের বাইরে থেকেও। এর প্রতিশোধের পথ ধরেই ঘটে ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ড। তার শিখ প্রহরীর হাতে তিনি পাণ হারান। আর হত্যাকাণ্ডের ফলে চলে শিখবিরোধী রায়ট।

ইন্দিরা গান্ধী নিহত হন ৩১ অক্টোবর। রায়ট শুরু হয় ১ নভেম্বর থেকে। কিছু কিছু এলাকায় তা চলে কয়েক দিন ধরে। রায়টে দিল্লিতে মারা যায় তিন হাজার শিখ, আর সারা দেশের আরো ৪০টি শহরে মারা যায় আরো আট হাজার। সুলতানপুরি, মঙ্গলপুরি, ত্রিলকপুরি ও দিল্লিই ছিল সবচেয়ে বেশি হারে দাঙ্গার শিকার। জনতা রড, ছোরা ও কেরোসিনসহ আরো দাহ্য পদার্থ নিয়ে শিখ অধ্যুষিত এলাকায় হামলা চালায়। তারা যে শিখদেরই সামনে পেয়েছে নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে হত্যা করেছে। শিখদের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়, আগুন ধরিয়ে দেয়া দেয়। জনতা বাস-ট্রেন থামিয়ে শিখদের টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে হয় কুপিয়ে মেরেছে, নয়তো কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। অনেককে বাড়িঘর থেকে বের করে এনে হত্যা করা হয়েছে। শিখ নারীরাও ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

এ ধরনের দাঙ্গা পুলিশের সহায়তা ছাড়া ঘটতে পারে না। দিল্লি পুলিশের সর্বোচ্চ দায়িত্ব ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে নির্দোষ-নিরপরাধ শিখদের রক্ষা করা। এর বদলে পুলিশ পূর্ণ সহায়তা করেছে দাঙ্গাবাজদের। এসব দাঙ্গাবাজেরা কাজ করছিল নীতিবোধ বিবর্জিত নেতা জগদীশ টিটলার ও এইচ কে এল ভগবতের নেতৃত্বে। এটা সবার জানা, অনেক জেল, সাবজেল ও লকআপ তিন দিন পর্যন্ত খুলে দিয়ে বন্দীদের শিখিয়ে দেয়া হয়েছে ‘টিচ দ্য শিখ অ্যা লেসন’। তবে এটাও বলা ঠিক হবে না, দিল্লি পুলিশ কিছুই করেনি। যেখানে শিখেরা তাদের নিজেদের বাঁচাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, সেখানে পুলিশ শিখদের বিরুদ্ধে কড়া অ্যাকশন নিয়েছিল। যেসব শিখ নিজেদের জানমাল বাঁচাতে গুলি করেছিল, তাদের দাঙ্গার পর বহু দিন কারাগারে কাটানোর ব্যবস্থাটি করে দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ।

Thursday 15 September 2016

একটি উচ্চতর গরু বিষয়ক রচনা ।


দুই যুগে গুজরাটে ৫৩৬ দলিত হত্যা ও ৭৫০ দলিত নারী ধর্ষণের শিকার।

বেদজ্ঞান লাভ করতে হলে, স্বাস্থ্যবান সন্তান লাভ করতে হলে ষাঁড়ের মাংস খাওয়া জরুরি। সূত্র: বেদ; ২য় প্রকাশ, পৃ: ১৩, ৬৭; হরফ প্রকাশনী , কলিকাতা।

ভারতে গরু নিয়ে উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের হিংস্রতা দিন দিন বেড়েই চলছে।

সূফি বরষণ
এক.
ভারতে চরম সাম্প্রদায়িক ও প্রতিক্রিয়াশীল বিজেপি সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। বিজেপির মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলমান ও দলিত সম্প্রদায়ের উপরে আক্রমণ হামলার প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে। এখন ভারতে সব রকম ধর্মীয় কুসংস্কার শুধু জিইয়ে রাখা নয় আরো বিস্তৃত ও শক্তিশালী করার নীতিই কার্যকর করছে বিজেপির সন্ত্রাসী সংগঠন আরএসএস ও শিব সেনা । মুসলমান, খ্রিস্টান, নিম্নবর্ণের হিন্দুদের গো-মাংস খাওয়ার বিরুদ্ধে ধর্মের জিগির তোলা তাদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের হীন প্রচেষ্টারই অন্যতম দৃষ্টান্ত। সাম্প্রতিক কালে গো-রক্ষা সমিতির তৎপরতা, হামলা, সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার পেছনেও রাজনীতিটাই রয়েছে মুখ্য ভূমিকায়।

বিজেপি যেমন আরএসএসের ভাবধারাপুষ্ট রাজনৈতিক সংগঠন তেমনি গো-রক্ষা সমিতিও। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর গো-রক্ষা সমিতি নতুন করে গো-রক্ষা আন্দোলন জোরদার করেছে। গো-রক্ষা সমিতির আন্দোলনের মুখেই বিজেপি প্রভাবিত বা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে গরু জবাই ও গরুর গোশত খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিজেপি যে এই আন্দোলনের পেছনে আছে এবং প্রবলভাবে সমর্থন করছে তা বিশদ তথ্য-প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। সরকারি দল ও সরকারের সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েই গো-রক্ষা সমিতি আন্দোলন করে যাচ্ছে এবং ক্রমাগত তার সন্ত্রাসী চরিত্রের উন্মোচন ঘটাচ্ছে। শুরুতে গো-রক্ষা আন্দোলনের কর্মীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল মুসলমানরা, এখন তা অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায় এমনকি স্ব-ধর্মীয় দলিতদের ওপরও সম্প্রসারিত হয়ে পড়েছে।

দুই.
আর্য ধর্ম বা ব্রাহ্মণ্য ধর্ম বা হিন্দু ধর্মে গরুর গোশত খাওয়া বৈধ।
বহিরাগত আর্যরা কৃষিজীবী ছিলো। কৃষির হালচাষের জন্য অন্যতম উপকরণ ছিলো গরু। এ জন্য আর্য সাহিত্যে গরুকে গো ধন বলা হয়েছে। গো-সম্পদের যত্ন নেওয়ারও তাগিদ রয়েছে আর্য সাহিত্যে। ভারতের গো-বলয়ে আর্যদেরই প্রাধান্য বেশি।

আর্য-সমাজে  চারস্তরে বিভাজন মূলত এই আর্যরা বা ব্রাহ্মণ্য দর্শনের অনুসরণকারীই সমগ্র ভারতে জাত প্রথা ও সমাজে শ্রেণি বৈষম্য তৈরী করে । ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। আর্যরা বহিরাগত। মধ্য-এশিয়া থেকে তারা ভারত বর্ষে এসেছিলো। পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র হরিয়ানা, দিল্লি ও বিহার এ এলাকাটাই গো-বলয়। এখানেই আর্যরা বসতিস্থাপন করেছিলো।

আর্য হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থগুলোর মধ্যে বেদ হচ্ছে প্রধান ধর্ম গ্রন্থ আসুন দেখি আর্য সাহিত্যের প্রধান গ্রন্থ কি বলে: হিন্দুদের ধর্মে  গরুর মাংস খাওয়ার বৈধ বলা হয়েছে ।  এ বিষয়ে প্রমাণ এখানে তুলে ধরা হলো..
ক . মনুষমৃত্রী অধ্যায় ৫ শ্লোক নম্বর যথাক্রমে ৩০; ৩১; ৩৯; ৪০
খ. ঋগ্ববেদ অধ্যায় ৮৫ শ্লোক নম্বর ১৩
গ. মহাভারত আনুষাণ পর্ব শ্লোক নম্বর ৮৮
ঘ. ---গরু-বৃষের মাংস [বেদ:১/১৬৪/৪৩],
ঙ. ---মহিষের মাংস [বেদ: ৫/২৯/৮],
চ. ---অজের মাংস [বেদ:১/১৬২/৩] খাওয়া হত।
আরও বলা হয়েছে পরস্বিনী গাভী মানুষের ভজনীয় [বেদ:৪/১/৬]।
---গো-হত্যা স্থানে গাভীগণ হত্যা হত [বেদ:১০/৮৯/১৪]।
---ইন্দ্রের জন্য গোবৎস উৎসর্গ করা হয়েছে।
[ঋগ্ববেদ: ১০: ৮৬: ১৪]।
---এমনকি উপনিষদ বলছে: ‘বেদজ্ঞান লাভ করতে হলে, স্বাস্থ্যবান সন্তান লাভ করতে হলে ষাঁড়ের মাংস খাওয়া জরুরি।” [সূত্র: বেদ; ২য় প্রকাশ, পৃ: ১৩, ৬৭; হরফ প্রকাশনী , কলিকাতা]

তিন.
কেন আর্যরা ভারতে আসে।
হযরত ইব্রাহিম (আ.) যখন এক ঈশ্বরবাদী ধর্ম প্রচার করছিলেন মধ্য পশ্চিম এশিয়ায় তখনই সম্ভবতো ইব্রাহিমের সঙ্গে ধর্ম নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে বা বিতাড়িত হয়ে দীর্ঘ দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে আর্যরা ভারতের দিকে চলে এসেছিলো। ইব্রাহিমের কাবার মতো তারাও একটা মন্দির তৈরী করেছিলো। নাম দিয়েছিলো ‘বিশ্বকর্মার মন্দির’। গোবলয়ে যারা আদিবাসী ছিলো তাদেরকে আর্যরা বিভাজনের বাইরে রেখেছিলো মূলত তারাই দলিত সম্প্রদায়। হাজার হাজার বছর ধরে দলিতরা আর্যদের হাতে নিগৃহীত হয়েছে এখনও তারা নিগ্রহের পাত্র। তাদের কোনও জোত জমি নেই, জনপথের কোনও একপার্শ্বে তারা দলবদ্ধভাবে থাকে- এটাকে দলিত বস্তি বলে।

ইংরেজ শাসনের সময়ে শহরে শহরে এদের জন্য কলোনি তৈরী করে দিয়েছিল এটাই ছিলো দলিত কলোনি। এখনও প্রতিটি শহরে দলিত কলোনি আছে। তাদের কাজ হলো মলমূত্র পরিস্কার করা আর শহর পরিচ্ছন্ন রাখা।

দক্ষিণ ভারতের লোকেরা দ্রাবিড় সম্প্রদায়। দ্রাবিড়ই ভারতের আদিবাসী। আর্যরা দ্রাবিড়দেরকে মর্যদার চোখে দেখে না। একবার তামিলনাড়ুর আন্নাদুরাই আর রামস্বামী আয়েঙ্গার রামায়ণ মহাভারতের বহ্নি উৎসব করতে চেয়েছিলেন। তা নিয়ে উত্তর-দক্ষিণে উত্তেজনাও ছড়িয়ে পড়েছিল। নেহরুর হস্তক্ষেপ দক্ষিণের বহ্নি উৎসব বন্ধ হয়েছিল।

দক্ষিণের লোকেরা মনে করে রাময়ণ মহাভারত আর্যদের সৃষ্ট। যে কারণে মহাভারতে উত্তরের মানুষ দেবপুত্র আর দক্ষিণের মানুষ অশুর। ভারতে দলিতেরাই একবিংশ শতাব্দীতেও নিগৃহীত। উপজাতিরাও দলিত। এদেরকে বলা হয় সিডিউল কাষ্ট অ্যান্ড সিডিউল ট্রাইব। সিডিউল কাষ্ট বা ট্রাইব চার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত নয়। এরা অচ্ছ্যুত। সিডিউল কাষ্ট অ্যান্ড সিডিউল ট্রাইব ভারতের সর্বমোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ।

চার.
গোবলয়ের সর্বত্র গো-রক্ষা সমিতি রয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর গো-রক্ষা সমিতি খুবই তৎপর। গত ১০ই জুলাই গুজরাটের সোমনাথ জেলায় সিংহের আক্রমণে এক গৃহস্থের চারটি গরু মারা যায়। গৃহস্থ মৃত গরুর চামড়া খসানোর জন্য দলিতদের খবর দেয়। মৃত গরুর চামড়া খসানোর কাজ দলিতেরা বহু প্রাচীন কাল থেকে করে আসছে।

উনায় হিন্দু সমাজের নিচু জাত বলে পরিচিত দলিতরা বিক্ষোভ থেকে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রত্যাখ্যান করেন। মোদির রাজ্য গুজরাটের সমাবেশে দলিতরা স্লোগান দিয়ে বলেন, সরকারের এমন গালভরা কথা শুনে শুনে আমরা ক্লান্ত। এ সময় তারা হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন, ‘আমরা আর কখনো মরা গরু টানব না। গরুর চামড়াও ছাড়াব না।’ সমাবেশে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারও উপস্থিত ছিলেন। ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে আটক হন কানহাইয়া।

ভারতে মরা গরু টানা ও চামড়া ছাড়ানোর দুরুহ কাজটি করেন দলিতরা। এজন্য তাদের খুব সামান্য পারিশ্রমিক দেয়া হয়। দেশটির ২০ কোটি দলিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে গুজরাটে বাস করে ২.৩ শতাংশ। কেবল গত বছরই দলিত নির্যাতনের এক হাজারেরও বেশি মামলা হয়েছে। ১৯৯০-২০১৫ সাল সময়ে গুজরাটে ৫৩৬ দলিত হত্যা এবং ৭৫০ দলিত নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

দলিতেরা মুচির কাজ করে। গৃহস্তকে কিছু টাকা দিয়ে খসানো চামড়া নিয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে ট্রেনিং করে তারা এ চামড়া মুচির কাজে ব্যবহার করে। চার যুবক যখন মৃত গরুর থেকে চামড়া খসানোর কাজ করছিলো তখন গো-রক্ষা সমিতির লোকজন এসে চার দলিত যুবককে ধরে নিয়ে যায় সোমনাথ জেলার উনা শহরে।

এখানে গোরক্ষা সমিতির লোকেরা চার যুবকের উপর নির্মম অত্যাচার চালায়। অনেক লোক এ নির্যাতনের দৃশ্য দেখে এবং মোবাইল ফোনে ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়। এ নিয়ে সারা গুজরাটে এখন দলিতেরা ঐক্যবদ্ধ।

আহমদাবাদ এবং উনা শহরে এখন নিত্য বিক্ষোভ। ১৯ই জুলাই রাজকোটের প্রতিবাদ সভায় ২৩ বছরের এক যুবক দলিত নির্যাতনের প্রতিবাদে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যার হুমকি দেয় আরো ৭ যুবক। সুরাটে দলিতেরা সমাবেশ করে এবং তারা প্রতিজ্ঞা করে আর কখনও তারা চামড়া খসানোর কাজ করবে না এবং ম্যানহোল পরিস্কার করার কাজও তারা করবে না।

উত্তর প্রদেশে দলিত কন্যা মায়াবতির দল বহুজন সমাজ পার্টি পূর্বেও দু’দুবার ক্ষমতায় ছিলো। এবার এ ঘটনার পর দলিতের ভোট বিভাজন হবে না। বিজেপির জন্য এ হবে কঠিন অবস্থা। গত লোক সভা নির্বাচনে বিজেপি দলিত ভোট নিজেদের ভাগে টানতে পেরেছিল যে কারণে তারা ৮০ সিটের মাঝে ৭৩ সিট পেয়েছিল।

কয়দিন আগে মন্দিরে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ায় ২৫০ দলিত উত্তর প্রদেশে মুসলমান হয়ে গিয়েছিলো। অথচ মুসলমান হওয়ার ব্যাপারে আইনী জটিলতা রয়েছে। ইন্দিরা গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী তখন উত্তর ভারতে তবলিগ জামাতের প্রচারণায় বহু দলিত মুসলমান হয়েছিলো তখন উচ্চবর্ণের হিন্দুরা দাবী তুলেছিলো ভারতকে হিন্দু মাইনরিটি স্টেট করার জন্য সৌদি আরব কোটি কোটি টাকা দলিতদের মাঝে বিতরণ করছে।

পাঁচ.
আইন করে তা প্রতিহত করা দরকার। ইন্দিরা সরকার দলিতরা মুসলমান হতে পারবে না এমত একটা আইনের খসড়াও তৈরী করেছিলেন। এটার প্রতিবাদে দলিতরা রামলীলা ময়দানে প্রতিবাদ সভা করেছিল। মূখ্য বক্তা ছিলেন জগজবীন রাম। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা দলিতরা মুসলমান হতে পারব না রাষ্ট্র আইন করে বাধা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কিন্তু আমরা দলিতরা হিন্দু নই এ কথা যদি বলি তবে কোন আইন তা বাধা দিতে পারবে।

জগজীবন রাম এবং বি আর অম্বেদকরের পর আর কোনও শক্তিশালী দলিতপুত্র ভারতের উচ্চস্থানীয় নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত হতে পারেননি। গান্ধীর পরে আর কোনও হিন্দু নেতাও দলিতদের উন্নয়নের কোনও চেষ্টা করেননি। মহাত্মা গান্ধীই চেষ্টা করেছিলেন দলিতদের মাঝে ভয় ভাঙ্গিয়ে জাগরণ সৃষ্টির। তিনি দিল্লির ভাঙ্গি মহল্লায় নিজের বাসস্থান হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন।

ধর্মপ্রাণ মানুষ হয়েও গান্ধী কখনও কোনও মন্দিরে যাননি কারণ দলিতদের মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ ছিল। ঈশ্বরের কাছে গান্ধীর প্রার্থনা ছিলো পুনর্জন্মে তিনি যেন মেথরের ঘরে জন্মে তাদের দুঃখ কষ্টের ভাগীদার হতে পারেন।

উনার ঘটনার পর এখন ধীরে ধীরে দলিতেরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। এখন তাদের দাবী দলিতদের জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা। দলিতদের যদি হিন্দুদের মাঝে ধরে রাখতে চায় তবে ভারত সরকারের উচিৎ তাদের সঙ্গে মানবিক আরচণ করা এবং তাদের টেনে তোলার ব্যবস্থা করা।

ভারতে এক তৃতীয়াংশ লোক যদি অন্ধকারে থেকে যায় তবে তার সর্বাঙ্গীন উন্নতি হবে কিভাবে! গান্ধী বলতেন অস্পৃশ্যতা বা ছুঁৎমার্গ, হিন্দুধর্মের অঙ্গতো নয়ই উপরন্তু হিন্দুধর্মে প্রবিষ্ট একটা পচনশীল পদার্থ। একটা ভ্রম, একটা পাপ। এর থেকে হিন্দু ধর্মকে রক্ষা করা প্রত্যেক হিন্দুর পরম ধর্ম, পরম কর্তব্য। গান্ধী দলিতদের নাম দিয়েছিলেন ‘হরিজন বা ভগবানের সন্তান।’

Sunday 11 September 2016

উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠন ইসকন কারা? কে তাদের চালায়? বাংলাদেশে তাদের উদ্দেশ্য কি?


সূফি বরষণ
ক.
সিলেটে ইসকন মন্দির থেকে উস্কানি ছড়িয়ে দাঙ্গার আয়োজন করা হয়েছিল। এবং ইসকনদের নিয়ে সমালোচনা মূলক লেখা ফেইসবুকে লেখায় আব্দুর রহমান নামে মসজিদের একজন সম্মানিত ইমামকে হত্যা করা হয়।। তবে শুধু মুসলিমদের সাথে নয়, মূলধারার হিন্দু দাবীদারদের সাথেও ইস্কনের বিরোধ অনেক। এই ইসকনিরা মূল ধারার হিন্দুদের মানুষ ও মনে করে না অনেক ক্ষেত্রে। ইসকনের কথা হচ্ছে আমরা শুধু শ্রীকৃষ্ণের পূজা করব আর কোন দেবদেবীর পূজা করব না। কিন্তু হিন্দু ধর্মের প্রধান ৩ জন দেবতা হলেন ব্রক্ষা, বিষ্ণু ও শিব। হিন্দু ধর্ম কখনই শুধু শ্রীকৃষ্ণ নির্ভর নয়। তাই স্বামী প্রভুপাদের নতুন ধরনের এই হিন্দু সংগঠন চালু করাতে প্রথমেই উনাকে বাধা দিয়েছিলো মূল ধারার সনাতন হিন্দুরা।

ইসকন বা ISKCON হলো The International Society for Krishna Consciousness (ISKCON)। http://www.iskcon.org/
ইসকন একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠন। এ সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য  মধ্যযুগের চৈতন্য’র থেকে আগত। চৈতন্য’র অনতম থিউরী হচ্ছে- “নির্যবন করো আজি সকল ভুবন”। যার অর্থ- সারা পৃথিবীকে যবন মানে মুসলমান মুক্ত করো। ইসকন নামক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা কিন্তু ভারতে নয়, আমেরিকার নিউইয়র্কে আজ থেকে মাত্র ৫০ বছর আগে, ১৯৬৬ সালে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতার নাম ‘অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ’। অবাক হওয়ার মত বিষয়, এ ব্যক্তি ভারতে কোন হিন্দু শিক্ষালয়ে লেখাপড়া করেনি, লেখাপড়া করেছে খ্রিস্টানদের চার্চে। পেশায় সে ছিলো ফার্মাসিউটিকাল ব্যবসায়ী, কিন্তু হঠাৎ করেই তার মাথায় কেন হিন্দু ধর্মের নতুন সংস্করণের ভুত চাপলো, কিংবা কোন শিক্ষাবলে চাপলো তা সত্যিই চিন্তার বিষয়। স্বামী প্রভুপাদ নতুন ধরনের হিন্দু সংগঠন চালু করতেই প্রথমেই তাতে বাধা দিয়েছিলো মূল ধারার সনাতন হিন্দুরা। অধিকাংশ হিন্দুই তার বিরুদ্ধচারণ শুরু করে। কিন্তু সেই সময় স্বামী প্রভুপাদের পাশে এসে দাড়ায় জে. স্টিলসন জুডা, হারভে কক্স, ল্যারি শিন ও টমাস হপকিন্স-এর মত ইহুদী-খ্রিস্টানদের চিহ্নিত এজেন্টরা।  এই হারভে কক্স ছিলেন একজন খ্রিস্টিয়ান গবেষক, যে কিনা সোশ্যাল খ্রিস্টিনারি নিয়ে গবেষণা করতেন। যার মূল ছিল দরিদ্র জনগণ। ধারনা করা হয় প্রভুপাদ এই বিশয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে দরিদ্র শ্রেনীকে টার্গেট করে তার মিশন নিয়ে এগিয়ে যায়।

খ.
ইসকন হচ্ছে হিন্দুদের মধ্যে পশ্চিমাদের তৈরী নতুন কৌশল।  ভারতবর্ষে হিন্দুদের উপরে নেতৃত্ব দখল করতে চাই। এজন্য ইসকনে সাদা চামড়া লোক বেশি দেখবেন। ইসকনকে উপর দিয়ে অতিহিন্দু মনে হলেও এরা হিন্দুদের মধ্যে বিভ্রান্তি চালু করতেই বেশি তৎপর। যার কারণে মূল সনাতন হিন্দু ও ইসকনদের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক, রয়েছে ধর্মীয় বহু অমীল। ইসকনিরা এমন অনেক কিছু চালু করেছে, যা মূল হিন্দু ধর্মে নেই।
সংগঠনটি মুলত এনজিও টাইপ। এরা নিম্নবর্ণের হিন্দুদের দলে ভিড়িয়ে দল ভারি করে। এ কারণে তাদের আস্তানাগুলো হয় নিম্নবর্ণের হিন্দুদের আস্তানার পাশে। যেমন ঢাকা শহরে স্বামীবাগ মন্দিরের পাশে ইসকন মন্দির হওয়ার কারণ, স্বামীবাগে রয়েছে বিশাল মেথর পট্টি। এই মেথর পট্টির নিচুবর্ণের হিন্দুদের নিয়ে তারা দল ভারি করে। সিলেটেও ইসকনদের প্রভাব বেশি। কারণ চা শ্রমিকদের একটি বিরাট অংশ নিচু বর্ণের হিন্দু। এদেরকে দলে নিয়ে সহজে কাজ করে তারা।

বর্তমানে ইসকন চালায় ডাইরেক্ট ইহুদীরা। ইসকনের মূল নীতিনির্ধারকদের প্রায় অর্ধেক হচ্ছে ইহুদী। এটি আমার কোন দাবি নয়, এক ইসকন নেতারই দাবি। (http://goo.gl/xS3sfH) হিন্দুদের সকল পূজা আর রথযাত্রাগুলোরই ব্যানারে লেখা থাকে আয়োজনে ‘ইসকন’। ‘ইসকন’ নামের একটি উগ্র মৌলবাদী সংগঠন অংশই দিয়ে থাকে ।  ইসকনরা ব্যাপকভাবে প্রচার করে থাকে ‘পঞ্চগব্য’ নামের একটি খাবারের। যেটা কিনা তৈরি হয় ঘি, দুধ, মাখন আর গোবর ও গোমূত্র দিয়ে। শুধু এতটুকুই নয়, তারা গরুর গোবর ও গোমূত্র দিয়ে আরো নানা রকম খাবার তৈরি করে। এমনকি তারা চায় তাদের সব খাবারেই যেন এই গোবর ও গোমূত্র মেশানো থাকে। গরুর গোবর ও গোমূত্র সংগ্রহের জন্য তাদের বড় বড় গরুর খামারও আছে। https://m.youtube.com/watch?v=IVrEN32kUKk

ইন্টারনেটে ইসকনের গোশালা ডট কম  http://goshala.com/
নামে একটি ওয়েবসাইটও আছে। এখানে তারা গোবর ও গোমূত্র খেতে সবাইকে উৎসাহ দিয়ে অনেক বিজ্ঞাপনও প্রচার করছে ।  কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, ‘ইসকন’ নামক এই উগ্র মৌলবাদী সংগঠনটির মূল আয়ের উৎস হলো গরুর মূত্র ও গোবরের ব্যবসাই নয় বরং হিন্দু ধনী ও আমলাদের থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় আর বাকী অর্থের যোগান আসে মোসাদ ও ভারতীয় গোয়েন্দের মাধ্যমে ।

এছাড়া আপনি যদি ইস্কন ভার্সাস হিন্দুজম লিখে অনলাইনে সার্চ দেন হাজার হাজার লিংক পাবেন। বাংলাদেশে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় জগতে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ ও সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টির মূল ইন্ধনদাতা হচ্ছে এই ইসকন। ইসকন নামে একটি সংগঠন বাংলাদেশে কাজ করছে। এর সদর দফতর নদীয়া জেলার পাশে মায়াপুরে। মূলতঃ এটা ইহুদীদের একটি সংগঠন বলে জানা গেছে। এই সংগঠনের প্রধান কাজ হচ্ছে বাংলাদেশে উস্কানিমূলক ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি।”. গোয়েন্দা সংস্থা সাবেক সেনাপ্রধানদের কথা- ‘বাংলাদেশে র’ নামক বইটির ১৭১ পৃষ্ঠায় স্পষ্ট লেখা আছে- ‘ইকসন হচ্ছে একটি ইহুদী সংগঠন’। আসলে ইহুদীরাই ইসকন নাম দিযে হিন্দুদের ভেতর ঢুকে গেছে, এবং ভারতবর্ষে তাদের কার্যসিদ্ধি করছে। এখন দেখা যাক, কি হয়।

বর্তমানে প্রশাসনে "ইসকন" এর সবচেয়ে বড় বোমা হোলও "এস কে সিনহা"। এই এস কে সিনহা একজন ইসকন সদস্য। সামু ব্লগে আরেক ইসকনি সদস্য ছিল যার মূল কাজ ছিল হিন্দুদের মুসলিমদের বিরুদ্ধে উস্কানো, বিপ্লব কান্তি দে ওরফে ভ্রান্তি দে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ঘোষিত ৮৪ জন ইসলাম বিদ্বেেষী ব্লগারের তালিকায় ও তার নাম ছিল। এতেই প্রমানিত হয়, এই ইহুদী দের টাকায় পরিচালিত সংগঠন "ইসকন" এর মূল কাজ হোলও বাংলাদেশে দাঙ্গা সৃস্টি করা। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তার সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে বিভিন্ন গুপ্ত হত্যার পিছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র এবং উগ্র জঙ্গী ইসকন সদস্যরা জড়িত ।

গ.
উগ্র সংগঠন ইসকনরা বিভিন্ন ধর্ম বর্ণের মানুষের মাঝে সাম্প্রদায়িক উসকানী দিয়ে দাঙ্গা লাগানোর নমুনা। যেমন,
১.  বাংলাদেশে সনাতন মন্দিরগুলো দখল করা এবং সনাতনদের মেরে পিটিয়ে তাড়িয়ে দেয়া। যেমন স্বামীবাগের মন্দিরটি আগে সনাতনদের ছিলো, পরে ইসকনরা কেড়ে আগেরদের ভাগিয়ে দেয়। এছাড়া পঞ্চগড়েও সনাতনদের পিটিয়ে এলাকাছাড়া করে ইসকনরা। ঠাকুরগাও-এ সনাতন হিন্দুকে হত্যা করে মন্দির দখল করে ইসকন। এছাড়া অতিসম্প্রতি সিলেটের জগন্নাথপুরে সনাতনদের রথযাত্রায় হামলা চালিয়েছে ইসকন নেতা মিণ্টু ধর। (খবরের সূত্র-http://goo.gl/XwkLvm,http://goo.gl/7hegYE)

২. বাংলাদেশের মসজিদগুলোতে সাম্প্রদায়িক হামলা করা। বছর খানেক আগে ঢাকাস্থ স্বামীবাগে মসজিদের তারাবীর নামাজ বন্ধ করে দিয়েছিলো ইসকন। নামজের সময় ইসকনের গান-বাজনা বন্ধ রাখতে বলায় তারা পুলিশ ডেকে এনে তারাবীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরে বিষয়টি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এবার হলো সিলেটে।

৩. বাংলাদেশে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক সংগঠন তৈরী করে, উগ্রহিন্দুত্ববাদের বিস্তৃতি ঘটানো। যেমন- জাতীয় হিন্দু মহাজোট, জাগো হিন্দু, বেদান্ত, ইত্যাদি। বর্তমান অনলাইন জগতে যে ধর্ম অবমাননা তার ৯০% করে ইসকন সদস্যরা।

৪. বাংলাদেশে সম্প্রতিক সময়ে চাকুরীতে প্রচুর হিন্দু প্রবেশের অন্যতম কারণ-ইসকন হিন্দুদের প্রবেশ করানোর জন্য প্রচুর ইনভেস্ট করে। যে কারণে বর্তমানে বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে হিন্দুদের শতকরা ৩০ ভাগ। যদিও বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা মাত্র ২% ।

৫. সিলেটে রাগীব রাবেয়া মেডিকলে কলেজের ইস্যুর পেছনে রয়েছে ইসকন। ইসকন আড়াল থেকে পুরো ঘটনা পরিচালনা করে এবং পঙ্কজগুপ্তকে ফের লেলিয়ে দেয়। এখন পঙ্কজগুপ্ত জমি পাওয়ার পর সেই জমি নিজেদের দখলে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বিচারবিভাগে ইসকনের প্রভাব মারাত্মক বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ খোদ প্রধানবিচারপতিও একজন ইসকন সদস্য। (http://goo.gl/g3w0KK)।

৬. পুরান ঢাকায় এইবার রমজানের সময় মুসলমানদের মসজিদ দখলের চেষ্টা ।
৭. ২০১২ সালে ঠাকুরগাঁওয়ে সনাতনী মন্দির দখল করে নেওয়ায় ইস্কনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
সুত্রঃ http://archive.is/JbP92

৮.  ২০১৫ সালে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা এলাকায় ইসকন পরিচালিত বাসুদেব মুকুন্দ ধাম মন্দির দখল করার জন্য পার্শ্ববর্তী সুজন শেখর দত্তের হামলা, যা ইতিপুর্বে ইস্কন দখল করেছিল ।
সুত্রঃhttp://archive.is/svfYW

সবার শেষ কথা হচ্ছে- বাংলাদেশে যদি এখনই ইসকনকে নিষিদ্ধ না করা হয়, তবে বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে, যেই বিপদে বাংলাদেশে স্বাধীনতা হারালেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

ঘ.
এবার একটু ভালো করে বুঝেনিন ইসকনদের আসল চেহারা।।
ইসকন শিব দেবতাকে দেখতেই পারে না। ইসকনের বই পত্রে আত্মা, পরকাল, পুনজন্ম নিয়ে একটি আলাদা ধারনা দেয়া হয়েছে যেটা সনাতন ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক। যেমন ইসকনিদের মতে যেই সব হিন্দু কালী ভক্ত বা লোকনাথ ভক্ত তারা কোনদিন ও স্বর্গে যেতে পারবে না। তারা বারবার খালি পুনজন্ম নিবে। আর ইসকনিরা বলে শুধু তারাই হল প্রকৃত হিন্দু। ইসকনিরা অন্য হিন্দুদের কে হিন্দু বলে স্বীকারই করে না। দেখেন এক হিন্দু পণ্ডিত ইসকন সম্পর্কে কি বলছে- ” what a bunch of loosers! They say that THEY ONLY will go to paradise while others who pray to shiva/durga/kali will never go to heaven and they will come back to earth each time UNTIL they realise that krishna as per their iskCON idea is the ONLY way!! What fools they are….
অর্থ্যাৎ ইসকন যে খৃষ্টান মিশনারীদের একটা চাল এতে আমার আর কোন সন্দেহ নাই। ইসকনের নিজস্ব কোন টার্গেট নাই। এই খৃস্টান মিশনারীরা ইসকনের মাধ্যমে হিন্দুদের একটা বিশাল অংশ কে তাদের নিজেদের হাতে রাখবে। সবাই চায় তার দল ভারী হোক। খৃস্টানরা যেমন কাদিয়ানী বাহাই তৈরি করছে ইহুদীরা যেমন শিয়া মতবাদ তৈরি করছে ঠিক তেমনি এই ইসকনও পশ্চিমাদের তৈরি। মূল ধারার হিন্দুরা যত তাড়াতাড়ি এই জিনিসটা বুঝবে ততই মঙ্গল। তবে অর্থোডক্স খৃষ্টানরা ইসকন বিরোধী। রাশিয়ার অর্থোডক্স খৃষ্টানরা ইসকনের সব মন্দির ভেংগে ফেলেছে। অর্থোডক্সরা প্রচন্ড রকম ভাবে মূর্তিপূজা বিরোধী। এরপর ইসকনীদের মায়াকান্না দেখুন www.savetemple.com/

সনাতন ধর্মীদের সাথে ইসকনীদের এই ঝামেলা গুলি এই ওয়েবসাইটে খুব সুন্দর ভাবে বলা হইছে।http://sivapurana.blogspot.com/2013/05/why-iskcon-is-wrong.html

পশ্চিম বাংলার মায়াপুর শহরে এদের সবচে বড় আস্তানা। সেখনে ৩০০০ একর জায়গার উপর তাদের স্থাপনা। এবং আসে পাশের প্রায় সব জমি তারা কিনে নিয়েছে এবং সেখানে স্থায়িভাবে ২০০০ এর বেশি সাদা চামরার মানুষ স্থায়ি ভাবে থাকে আর প্রতিদিন অন্তত ১০০০ সাদা চামরা ভিজিট করতে আসে। এরা খুব বড় পরিসরে বিশাল বিশাল এবং আন্তর্জাতিকমান ঠিক রেখে ডিজাইন করে মন্দির তৈরি করে। ইসকনেরা সারাদিন বসে বসে খায় এরা কোন কাজকর্ম করে না। বিশাল এলাকা জুড়ে তাদের মন্দির। অনেক সচ্ছলতার সাথে তারা চলে। হিন্দুদের অন্য কোন গ্রুপ কখনই ইসকন্দের মত এত বিলাস বহুল ভাবে চলতে পারে না। জাতি জানতে চায় ইসকনের এই অর্থের উৎস কোথায় ? সারাদিন ঢোল বাদ্য বাজনা বাজানো এটা আবার কিরকম ধর্ম চর্চা ? তারপর বিবাহিত অবিবাহিত সব মেয়ে লোক মন্দিরে এসে বৈষ্ণবদের কে সিজদা করে। ছি। একটা মানুষ কি কখনো আরেক মানুষ কে সিজদা করতে পার ? ইসকনের মন্দিরে প্রচুর মেয়ে বৈষ্ণব থাকে। পুরুষ বৈষ্ণবরা রাধা কৃষ্ণের আদর্শ অনুসরণ করে সেখানেই বৃন্দাবন রচনা করে।


মায়াপুরে ইস্কনের যে হেড মন্দির আছে সেখানে অনেক রহস্যঘেরা। সেখানে যে সাদা চামড়ার লোকেরা থাকে তারা নাকি কেউই ইস্কনের না। তারা সেখানে ইস্কনের চাকরি করে। ইস্কন তাদের কে বেতন আর বিলাস বহুল জীবন যাপনের লোভ দেখিয়ে সেখানে রাখছে। উনারা কেউই হিন্দু না। তারপর মায়াপুরের ইস্কনের মন্দিরে অনেক কড়াকড়ি। আপনি তাদের গোশালায় ঢুকতে চাইলে বৈষ্ণবরা আপনাকে চেইন দিয়ে মারবে। মায়াপুর ইসকনের রহস্যময় কাজ কারবার নিয়ে Roomnee Sen এর ব্লগটি পড়ুন
http://roomnee.blogspot.com/2013/07/iskcon.html

তারপর ইসকন সারা দুনিয়া ঘুরে ঘুরে পঞ্চগব্যের ওপর লেকচার দিয়ে বেড়ায়। পঞ্চগব্য হলো দুধ, ঘি, মাখন, গোমূত্র ও গোবর। ইসকনিরা তাদের সব খাবারেই গরুর প্রস্রাব ও গোবর মিশায়। আপনি Google এ cow urine iskcon লিখে সার্চ দিলে এরকম ভুরি ভুরি ওয়েবসাইট বের হয়ে আসবে যেগুলোতে ইসকন ভারতে যে গোমূত্রের পণ্য বাজারজাত করছে তার বিবরণ রয়েছে। এরকম একটি ওয়েবসাইট www.goshala.com
অর্থ্যাৎ সারা পৃথিবীতে গরুর প্রস্রাব বিতরণে ইসকন সেরা। আর ইসকন যে সারা পৃথিবীতে গরুর প্রস্রাবের ব্যবসা করে তা তাদের ওয়েবসাইটেই বলা আছে। সেখানেই বলা হয়েছে স্বামী প্রভুপাদ সারা পৃথিবীর ষাঁড় ও গাভীর রক্ষাকর্তা। ইসকনের সদস্যরা ঘুম থেকে উঠেই প্রথম গরুর প্রস্রাব খায়। ছি। গোমূত্র ও গোবর নিয়ে তাদের যে মহাপরিকল্পনা তা শুনলে যে কারো চোখ কপালে উঠবে। আগ্রহীরা এই ইউটিউব ভিডিও দেখতে পারেন।
http://www.youtube.com/watch?v=IVrEN32kUKk

আর সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হল ইসকনের মন্দির গুলিতে সকাল ১০ টা থেকে শুরু করে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত মাইকে উচ্চস্বরে হরে কৃষ্ণের জয়ধ্বনি করা হয়। ইসকনের মন্দির গুলির আশপাশে যারা থাকেন তারা জানেন যে ইসকনের লোকেরা আশপাশের মানুষদের কে কি পরিমানে বিরক্ত করে। বিশ্বাস না হলে আপনি স্বামীবাগের ইসকন মন্দির ও সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের পাশে ইসকনের মন্দিরে যেয়ে দেখতে পারেন। কিন্তু অন্যান্য হিন্দু মন্দির গুলিতে কিন্তু শুধু দূর্গা পূজা উপলক্ষ্যেই মাত্র ৩ দিনের জন্য ঢোল বাদ্য বাজানো হয় যেখানে ইসকনের মন্দির গুলাতে সারাদিন ঢোল বাদ্য বাজনা বাজানো হয়। তাই ইসকন যে তাদের সারাদিন এই ঢোল বাদ্য বাজনা বাজানোর মাধ্যমে দেশে একটা সাম্প্রদায়িক দাংঙ্গা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে না এর নিশ্চয়তা কি ? যেখানে আমাদের ভারতের মুসলমান ভাইয়েরা মাইকে আজান দিতে পারে না সেখানে ইসকন সারাদিন তাদের ঢোল বাদ্য বাজনা বাজিয়ে আমাদের নামাযের ব্যাঘাত ঘটাবে তা তো মেনে নেয়া যায় না। আপনারা সারাদিন মূর্তিপূজা করেন তা তো আমরা মানা করছি না। কিন্তু আপনারা সেই সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত প্রতিদিন মাইকে উচ্চস্বরে হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ করবেন তা তো মেনে নেওয়া যায় না। এখানেই ইসকনের ব্যাপারে আমাদের আপত্তি। ইসকন যদি মাইক না বাজিয়ে সারাদিন হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ করে তাইলে আমাদের কোন আপত্তি নাই। ইসকন কে অবশ্যই এইসব সারাদিন ঢোল বাদ্য বাজনা বাজানো বন্ধ করতে হবে তা না হলে এর পরিণতি হবে খুব বেদনাদায়ক।

ঙ.
সেদিন কি ঘটে ছিল সিলেটে? কেন মসজিদের ইমামকে হত্যা করা হয়???

সিলেট নগরী র কাজল শাহ এলাকার মধু শহীদ জামে মসজিদ এর পাশেই ইসকন মন্দির। রাস্তার একপাশে মসজিদ অন্যপাশে মন্দির। মন্দিরে অনেক সময় বাদ্য যন্ত্র বাজানো হয়, এতে মসজিদের মুসল্লিদের নামাজে ব্যাঘাত ঘটে, এ নিয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার বলা হয়েছে। তারপরও অনেক সময় তারা নামাজের সময় বাদ্যযন্ত্র বাজায়। এতে নামাজ পড়তে সমস্যা হয় মুসল্লিদে।

কয়েক দিন আগে এমন সমস্যা তৈরি হলে ক্ষিপ্ত হন মুসল্লিরা। মধু শহীদ এলাকার এক প্রত্যাক্ষদর্শী জানান, গতকাল জুমার নামাজের সময় মন্দিরে উচ্চস্বরে বাদ্যযন্ত্র বাজানো হচ্ছিল, যা মুসল্লিদের নামাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিল। মন্দিরের লোকজনকে মুসল্লিরা কিছুক্ষণের জন্য গান বাজনা বন্ধ করতে বললে তারা সেই অনুরোধ রাখেনি। তাই নামাজের পর মুসল্লিরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মন্দিরে গেলে তারা চটে যান। এক পর্যায়ে মন্দিরের ভেতর থেকে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে মুসল্লিরাও ইট পাটকেল মারলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। ইসকন ভক্তরা অস্ত্র (দা বটি) নিয়েও মুসল্লিদের উপর হামলা চালায়। এসময় পুলিশ এসে মুসল্লিদের উপর গুলি ছুড়তে থাকে। টিয়ার গ্যাসও নিক্ষেপ করে। এতে সাবেক কাউন্সিলর জেবুন্নাহার শিরিনসহ প্রায় ১২ জন মুসল্লি আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন প্রায় ৭ জন। পথচারীসহ অনেকে ইট পাটকেল এর আঘাতে আহত হন। তবে পুলিশ এর জোরালো ভুমিকায় ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। পুলিশ মুসল্লিদের ধাওয়া করে প্রায় ১৫ জনকে আটক করে।  ঘটনার পর থেকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে মন্দিরের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
এতে সাবেক কাউন্সিলর জেবুন্নাহার শিরিনসহ প্রায় ১২জন মুসল্লি আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন প্রায় ৭ জন। পথচারীসহ অনেকে ইট পাটকেল এর আঘাতে আহত হন।

এ ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়া নানাভাবে প্রচার করছে। এতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে মুসলিমকে। প্রায় অধিকাংশ মিডিয়ায় একপেশে সংবাদ পরিবেশন করছেন। অথচ ঘটনা বিপরীত। সিলেটে অতীতে এ ধরনের ঘটনা বিরল। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি মজবুত। ইসকনের ঘটনা উদ্দোশ্য প্রণোদিত কিনা এমন কথাও উঠেছে গতকালের ঘটনার পর। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট জামেয়া আমিনিয়া মংলিপার হাজীনগর মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুল হাসান আওয়ার ইসলামকে বলেন, সিলেটের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই ইসকন সম্প্রদায় মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দিয়েছে। ধৈর্যের সাথে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা দরকার।

একই বিষয়ে অভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাব। মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, এই ঘটনা অত্যন্ত দুখ:জনক। সিলেটের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হল।

তবে ইসকনদের অনেক দিন থেকে নামাজের সময় গান বন্ধ রাখতে বলা হলেও তারা কর্ণপাত করেনি বলে জানান ইমাম শহীদ আহমদ। তিনি বলেন, তারা সচেতন হলে এই ঘটনা ঘটত না। এই রকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে এই জন্য প্রশাসন ও মিডিয়ার শক্ত ভূমিকা দরকার।


সুত্রঃ
https://goo.gl/vf9wyi
http://archive.is/ZsL5v
http://archive.is/0vq6c
http://archive.is/rmcrI
http://archive.is/Dw7nQ
https://en.wikipedia.org/wiki/Larry_Shinn
http://en.wikipedia.org/wiki/A._C._Bhaktivedanta_Swami_Prabhupada

ছবি: ইহুদীদের ধর্মীয় উপাসনার স্থান ইসরাইলের ওয়েস্টার্ন ওয়াল বা ওয়েইলিং সামনে প্রার্থনারত এক ইসকন সন্নাসী।

Saturday 10 September 2016

আরাফাহ দিনের একটি রোজা দুই বছরের গুনাহ মাফের সুবর্ণ সুযোগ ।



মুহাম্মদ নূরে আলম বরষণ

আরাফার দিন রোজা রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত, তিনি আরাফার দিনের রোজার ব্যাপারে বলেছেন: “আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, এটি পূর্ববর্তী এক বছর ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহের কাফফারা হবে। (মুসলিম, ১১৬২)
জিলহজ মাসের ৯ তারিখ অর্থাৎ ঈদুল আজহার আগের দিনটি হচ্ছে আরাফার দিবস। সেই হিসেবে এই বছর শনিবার দিবাগত রাতে সেহরী খেতে হবে এবং রোববার রোজা রাখতে হবে।পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে এ দিনটি অত্যন্ত ফজিলত ও তাৎপর্যপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, শপথ উষার। শপথ ১০ রজনীর, শপথ জোড় ও বেজোড়ের। (সূরা ফজর : আয়াত নং-১-৩)। এ আয়াতে জোড় বলতে ঈদুল আজহার দিন আর বেজোড় বলতে আরাফা দিবসকে বুঝানো হয়েছে। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে হজরত মুহাম্মদ (সা.) জোড় বেজোড়ের এ ব্যাখ্যাই করেছেন (তাফসিরে ইবনে কাছীব ও মাআরিফুল কোরআন)।

আরাফার দিন গুনাহ মাফ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের দিন
যেমন হাদিসে এসেছে—
عن عائشة رضى الله عنها قالت: إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ما من يوم أكثر من أن يعتق الله فيه عبداً من النار من يوم عرفة، وإنه ليدنو ثم يباهي بهم الملائكة، فيقول : ما أراد هؤلاء؟
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ স. বলেন : ‘আরাফার দিন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদের এত অধিক সংখ্যক জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন যা অন্য দিনে দেন না। তিনি এ দিনে বান্দাদের নিকটবর্তী হন ও তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন : ‘তোমরা কি বলতে পার আমার এ বান্দাগণ আমার কাছে কি চায় ?’

আরাফার দিনে রোযা রাখার ফযীলতঃ
عن أبي قتادة رضى الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم سئل عن صوم يوم عرفة فقال : (يكفر السنة الماضية والباقية) .) رواه مسلم
আবু কাতাদাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুল (সাঃ) কে আরাফার দিনের রোজার ব্যপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আরাফার দিনের রোজা বিগত ও সামনের এক বছরের গুনাহ সমূহের জন্য কাফফারা স্বরূপ।”
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬২।

কারণ, আরাফার ময়দানের দুয়া আল্লাহ সবচাইতে বেশি কবুল করেন। সেইজন্য যারা হজ্জ করবেন তারা রোযা না রেখে বেশি বেশি দোয়া করবেন, আর যারা বাড়িতে থাকবেন তারা ঐদিন রোযা রাখার চেষ্টা করবেন। তাই বেশি বিতর্ক বা সন্দেহের মাঝে না গিয়ে, সর্বোত্তম হচ্ছে সউদী আরব ও বাংলাদেশের ২/৩ দিনের হিসাবেই ২/৩ টি রোযা রেখে ফেলা। এতে কোন ক্ষতি নেই, বরং যিলহজ্জের ১ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত সবগুলো দিনেই রোজা রাখতে পারেন, সেটাও সুন্নাত। এই দিনের যেকোন ইবাদত আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয় ও বেশি মর্যাদার। মনে রাখবেন, যেই ব্যাপারে বৈধ ইখতিলাফ বা মতপার্থক্য রয়েছে, সেই ব্যাপারে কেউ কাউকে যে কোনো মত অনুসরণ করার জন্য বাধ্য করতে পারেন না।

আরাফাহ দিবসে যে সকল আমল শরিয়ত দ্বারা প্রমাণিত:
আরাফার দিনে হজ পালনরত ব্যক্তি রাসূলে কারীম স.-এর আদর্শ অনুসরণ করেই ঐ দিনের সওম পরিত্যাগ করবেন। যেন তিনি আরাফাতে অবস্থানকালীন সময়ে বেশি বেশি করে জিকির, দোয়াসহ অন্যান্য আমলে তৎপর থাকতে পারেন। আর এদিনে শরীরের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলোকে সকল হারাম ও অপছন্দনীয় কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। হাদিসে এসেছে—
في مسند الإمام أحمد من حديث ابن عباس- رضى الله عنهما- وفيه (إن هذا اليوم من ملك فيه سمعه وبصره غفر له) )ورواه المستدرك وقال شاكر إسناده صحيح(
মুসনাদে আহমদে ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে যে, এ দিনে যে ব্যক্তি নিজ কান ও চোখের নিয়ন্ত্রণ করবে তাকে ক্ষমা করা হবে।
মনে রাখা দরকার যে শরীরের অঙ্গ সমূহ হারাম ও অপছন্দনীয় কাজ থেকে হেফাজত করা যেমন সওমের দাবি তেমনি হজেরও দাবি। কাজেই সর্বাবস্থায় এ দিনে এ বিষয়টির প্রতি যত্নবান হতে হবে। আল্লাহ ও তার রাসূলের আদেশ বাস্তবায়ন ও নিষেধগুলোকে পরিহার করতে হবে।

অধিক পরিমাণে জিকির ও দোয়া করা
নবী কারীম স. বলেছেন :—
خير الدعاء دعاء يوم عرفة ، وخير ما قلت أنا والنبيون من قبلي : لَا إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ .)رواه الترمذي ২৮৩৭ ورواه مالك في الموطأ وصححه الألباني(
‘সবচেয়ে উত্তম দোয়া হল আরাফাহ দিবসের দোয়া। আর সর্বশ্রেষ্ঠ কথা যা আমি বলি ও নবীগণ বলেছেন, তাহল : আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোন মাবুদ নেই। তিনি একক তার কোন শরিক নেই। রাজত্ব তারই আর সকল প্রশংসা তারই প্রাপ্য, এবং তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।’
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় ইবনে আব্দুল বার বলেন : ‘এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে আরাফা দিবসের দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল হবে আর সর্বোত্তম জিকির হল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’
ইমাম খাত্তাবী বলেন : এ হাদিস দ্বারা বুঝে আসে যে দোয়া করার সাথে সাথে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রশংসা ও তার মহত্ত্বের ঘোষণা দেয়া উচিত।

আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদেরকে এমন আমল করার তাওফীক দান করেন যাতে তিনি সন্তুষ্ট হবেন। তিনি যেন আমাদেরকে দীনের জ্ঞান দান করেন এবং ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত করেন যারা কেবল তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নেক আমল সম্পাদন করে।আমীন।

আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।

Wednesday 7 September 2016

ভারতে মুসলমানদের কোরবানী নিষিদ্ধ আর উগ্রবাদী হিন্দুদের গাধিমাই উৎসব নামে নির্মম ভাবে গরু হত্যার মুখোশ উন্মোচন ! ??



সূফি বরষণ

ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে গরু কোরবানী করা নিষিদ্ধ। হয়ত এমনও হতে পারে যে সারা ভারতে একদিন গরু কোরবানী নিষিদ্ধ করবে উগ্র সাম্প্রদায়িক মোদী সরকার । কিন্ত হিন্দুরা কি আসলেই গরু কোরবানীর বিপক্ষে, এরা কি আসলেই গরুর গোশত খায়না নাকি মুসলমানদের উপর হিংসার কারনে এরা ভারতে গরু কোরবানী নিষিদ্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে!চাইলে :

হিন্দু ধর্মে গো হত্যা মহাপাপ। গোমাংস ভক্ষণ সেটাও হারাম এবং মহাপাপ। যদিও কতিপয় হিন্দু ধর্মীয় কাহিনীতে গোমেধ যজ্ঞের কথা বর্ণনা করা আছে। অশ্বেমেধ যজ্ঞের কথাও আছে। তবে সেই ত্রেতা-দ্বাপরে মানুষ গরু-ঘোড়া খেত কিনা সেটা নিয়ে সাধারণের মনে তেমন কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু এই ঘোর কলিযুগেও হিন্দুরা গরু মহিষের মাংস খায়!! গরু আর মহিষের মাংসের মধ্যে তেমন পার্থক্য যে আছে এটা বাংলাদেশ বা ভারতের হিন্দুসম্প্রদায়ের পক্ষে চিন্তা করাও কষ্টের। চুরি করে দু’একজন দুষ্ট লোকে গরু বা মহিষের মাংস খেলে ধর্মের তেমন ক্ষতি হয়তো হয় না। কিন্তু যদি গোমেধ যজ্ঞের মতো মহিষমেধ যজ্ঞ করে মহোৎসাহে হাজার হাজার গরু মহিষ বলী দিয়ে সেই গরু  মহিষের মাংস উৎসবমূখর পরিবেশে ভক্ষণ করা হয় তখন??

আসুন দেখি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বিসর্জন নাটকে কি বলেন, ""
গুণবতী।                                    এ বৎসর
                পূজার বলির পশু আমি নিজে দিব।
                করিনু মানত, মা যদি সন্তান দেন
                বর্ষে বর্ষে দিব তাঁরে এক-শো মহিষ,
                তিন শত ছাগ।
রঘুপতি।                            পূজার সময় হল।
                                                [ উভয়ের প্রস্থান"""
এখানে মহিষের কথা পরিষ্কার উল্লেখ আছে প্রিয় পাঠক আপনারাই গরু আর মহিষের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য কোথায় ???? মুসলমানদের ধর্মীয় বিধান কোরবানী পালন নিষিদ্ধ করা মানে কি দাঁড়ায় ??? উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের শুধুই শুধুই মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানো নয় কি???

হ্যা, এই একবিংশ শতকেও হিন্দুরা গরু ও মহিষের মাংস খায়। তবে আমাদের দেশে নয়। পাশের দেশ ভারত ও  নেপালে। নেপালের নিউয়া (Newa) গোত্রের মানুষরাই মূলতঃ মহিষের মাংষ বেশি পছন্দ করে। সারা বছরই তারা মহিষ বলীর ব্যবস্থা রাখে। তবে গাধিমাই উৎসবের (Gadhimai festival) মুসলমানদের কোরবানী ঈদের মতো হাজার হাজার গরু ও মহিষ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে রীতিমতো প্রদীপ জ্বালীয়ে ঢাক বাজিয়ে বলী দেয়া হয়। নিউয়া ছাড়াও জনজাতি, মাগার, গুরং, তামাং, রাই, লিম্বু ইত্যাদি গোত্রের লোকেরাও গরু ও মহিষের মাংসকে একটি উপাদেয় মাংস হিসাবেই ভক্ষণ করে। এই সমস্ত গোত্রের লোকেরা কাঠমুন্ডু এবং পোখরা অঞ্চলে বেশি বসবাস করে। আর এই কারণে কাঠমুন্ডু এবং পোখরা শহরে বহু রেস্টুরেন্ট-হোটেলে মহিষের মাংসের বিভিন্ন ডিস জনপ্রিয়। তবে তারা গরুর পূজা যেমন করেন তেমনি গরুর মাংস খাওয়াও মহাপাপ মনে করেন। শুধু মহিষ খান।

 কিন্তু অপর দিকে একই নেপালে, প্রতি বছর ভারত এবং নেপালের  হিন্দুরা “ গাধিমাই” নামে একটি উৎসব পালন করে। আর এই উৎসবের মুল আকর্ষন হচ্ছে যে, এরা একটি খোলা ময়দানে ২০-৩০ হাজার গরু ছেড়ে দিয়ে গরু দাড়ানো অবস্থায় একের পর এক গরুর মাথা কাটে। আর মাথা কাটার পর এরা সেই গরুর গোশত এবং চামড়া বিক্রি করে দেয়। প্রতি বছর হিন্দুরা এই উৎসবটি অতি জাকজমকের সাথে উৎযাপন করে কিন্তু এই কিন্তু গরুকে তাদের মা মা কলে চিৎকার করে।আর ঠিকই তারা প্রতি বছর ঘটা করে ২০-৩০ হাজার গরুর মাথা কাটে। তাহলে ভারতে গরু কোরবানীর নিষিদ্ধের নেপথ্যে কি শুরু মুসলমানদের সাথে শত্রুতার তাগিদে! শুধুই মুসলিম বিদ্বেষ শুধুই কি মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিংস্র সাম্প্রদায়িক আচরণ ????

গাধিমাই উৎসব নেপালের কয়েক হাজার বছর ধরে চলমান এক পশু হত্যা উৎসব। শক্তির দেবী রুপে খ্যাত “গাধিমাই’কে পূজা করতে এ পশু হত্যা উৎসব করে হাজার হাজার অন্ধভক্ত প্রতি পাচঁ বছর অন্তর অন্তর। গাধিমাই উৎসবটি অনুষ্ঠিক হয় নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর প্রায় ৭০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমের বারা জেলার নিজগড়ের কাছে গাধিমাই নামক স্থানে।

সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২০ শে নভেম্ব্র শুরুর মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে গেল। সর্ব শেষ উৎসব হবার পূর্বে এবার অনেকে এর প্রতিবাদ করেছে। তার মধ্যে ফরাসী অভিনেত্রী ব্রিজিত বাদো, ভারতের প্রখ্যাত পশু অধিকার সক্রিয়তাবাদী মানেকা গান্ধী, এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার নেটয়াক নেপাল ও এন্টি-এনিম্যাল স্যাক্রিফাইস এলায়েন্স প্রধান পুরোহিত মঙ্গল চৌধুরী।

 ফ্রাসী অভিনেত্রী ব্রিজিত বাদো নেপালের রাস্ত্রপতি ড.রাম বরণ যাদবকে লিখিত অনুরোধ পত্রে বলেন, আপনি দেশের প্রধান হয়ে এটির সম্পূণ দায়দায়িত্ব আপনার আমার ব্যাক্তিগতভাবে এটি কল্পনা করতেও কষ্ঠ হচ্ছে যে, আপনার হৃদয় এই জাতীয় নিষ্ঠুরতা সহ্য করতে পারে।

কিন্তু অনেকের আবেদন, অনেকের অনুরোধ সত্বেও নেপাল সরকার এ অমানবিক প্রথা বন্ধে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করেনি। স্থানীয় এক রেডিও কবরে জানায়, এবারের উৎসবে মহিষ, শুকর, ছাগল, মুরগী ও কবুতর সহ প্রায় ৩ থেকে ৫ লাখ পশু বলি দেয়া হয়। ধর্মের গড়ামিতে এতগুল পশুর জীবন হরণ করা মানুষের বিবেক কি একটুও নাড়া দেয় না?
বারা জেলার বরিইয়ারপুর মন্দিরে দেবী গাঁধীমাইয়ের উদ্দেশে পশু বলিদানের রেওয়াজ চলে আসছে কয়েক শতক ধরে। প্রতি বছর পাঁচ বছর অন্তর মন্দিরটির সামনে লাখ লাখ মহিষ, পাঁঠাসহ বিভিন্ন পশু হত্যা করা হয়।http://www.bbc.com/bengali/news/2014/11/141120_pg_india_nepal_sacrificial_animal_smuggling

আজ থেকে ২৫০ বছর আগে এক পুরোহিত প্রচার করেন, তিনি স্বপ্নে দেখেছেন শক্তির দেবী গাঁধীমাই তাকে রক্ত উৎসর্গ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে বন্দীদশা থেকে মুক্ত হবেন ওই পুরোহিত। এরপর থেকেই নেপালের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এ প্রথাটি পালিত হয়ে আসছে। তবে দেবীর জন্য উৎসর্গের নামে লাখ লাখ পশু হত্যার এ উৎসবের বিরোধিতা করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। | প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এই উৎসবে প্রায় পাঁচ লক্ষ পশু বলি দেওয়়া হয়| আর এটি-ই পৃথিবীর সবথেকে বড় পশু বলিদান বলে মনে করা হয়়। প্রায় আড়াইশো বছর ধরে বলিদানের এই প্রথা চলছে। কথিত আছে প্রথমে মানুষের রক্ত দেওয়়ারই প্রথা ছিল। কিন্তু তা পরে পশু বলিদানে পরিণত হয়়।  আর বয়়স্ক পশু নয়়, বলি দেওয়়া হয়় কমবয়়সী পশুদেরই। http://www.b24news.com/singlepost.php?id=4168

সনাতন (হিন্দু) ধর্মে উৎসর্গ:দাতাকর্ণের নাম আমরা অনেকেই জানি।হিন্দু পুরাণ (মহাভারত, রামায়ণ ও কর্ণবেদ) থেকে জানা যায়, সূর্য দেবতার ঔরসে ও কুন্তী দেবীর গর্ভে কর্ণের জন্ম।তিনি খুব বড় একজন দাতা ছিলেন, সবসময় কথা দিয়ে কথা রাখতেন।মানুষের প্রতি ছিল তার পগার মমতা, ভালবাসা।তিনি ছিলেন খুব ধার্মিক, সবসময় ভগবানকে খুশি রাখার চেষ্টা করতেন।তিনি মানুষকে খাবার খাওয়াতে ভালবাসতেন।কর্ণের দানশীলতা পরীক্ষা করার জন্য একদা ভগবান কৃষ্ণ ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে অতিথি হয়ে আসেন কর্ণের বাড়ীতে।অতিথি ব্রাহ্মণ জাতের হওয়ায় ধার্মিক কর্ণের কাছ থেকে পান অতিরিক্ত সমাদর।ভগবান এসে আহার করার জন্য কর্ণের কাছে তার ছেলে বৃষকেতুর মাংস চান যা কর্ণের স্ত্রী পদ্মাবতীর নিজ হাতে রান্না করা অর্থাৎ মায়ের হাতে ছেলের রান্না করা মাংস হতে হবে।অগত্যা কি আর করা, কর্ণ তাঁর পুত্র বৃষকেতুকে হত্যা করে তার মাংস রান্না করে ব্রাহ্মণকে আহার করতে দেন।ভগবান কর্ণের এই ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে পুনরায় তার সন্তানের জীবন দান করে আবার জীবিত করে তাদের উপহার দেন।নেপালে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর গাধীমাই উৎসব নামে গাধীমাই  দেবীর প্রতি লক্ষ লক্ষ পশু বলি দেওয়া হয়। প্রায় ৯০০ বছর আগে ভগবান চৌধুরী নামক বারিয়াপুরের এক বাসিন্দাকে স্বপ্নযোগে গাধীমাই দেবী ৫ টি নরবলির নির্দেশ দেন, তিনি এতে অপারগ হয়ে প্রতি ৫ বছর অন্তর একটি ইঁদুর, একটি শুকর, একটি মোরগ, একটি ছাগল এবং একটি মহিষ বলি দেওয়া শুরু করেন। সেই থেকে এই প্রথা চলে আসছে।

ধর্মের গোড়ামি ত্যাগ করে আমাদের দরকার সত্য ও বাস্তবতাকে অনুধাবন করা দরকার। ইতিহাস লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অতীতে মানসভ্যতার উন্নতির ক্ষেত্রে ধরমের গোড়ামি (অন্ধ বিশ্বাস) সমস্যা ও প্রতিবন্ধক হিসাবে আবিভূত হয়েছিল। আরও কিছু লিংক পশু হত্যা ।
http://www.dailymail.co.uk/news/article-2852739/Nepal-devotees-sacrifice-thousands-animals-Hindu-ritual.html

https://www.theguardian.com/world/2015/jul/28/nepal-temple-bans-mass-animal-slaughter-festival

http://www.bbc.co.uk/news/world-asia-33699136

Saturday 3 September 2016

পর্ব আট এর শেষ অংশ ।। কোলকাতা কেন্দ্রীক উচ্চ বর্ণের হিন্দু জমিদাররা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে বাংলার কৃষকদের উপরে জুলুমের রাজ্যত্ব কায়েম করে।

পর্ব আট এর শেষ অংশ ।।  কোলকাতা কেন্দ্রীক উচ্চ বর্ণের হিন্দু জমিদাররা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে বাংলার কৃষকদের উপরে জুলুমের রাজ্যত্ব কায়েম করে।

জমিদার রবীন্দ্রনাথ ও সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ কেমন  মুসলিম বিদ্বেষী ছিলেন ?

সূফি বরষণ
এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয়টি হলো ভারতবর্ষের ইতিহাসে সুলতানী শাসনামলকে রবীন্দ্রনাথ ভারত ইতিহাসের কাল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করতে প্রয়াসী হয়েছেন। ভারতীয় ইতিহাসের সুলতানী যুগের সুদীর্ঘ তিন শতাব্দী সময়কালকে কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করার রবীন্দ্রনাথের এই প্রয়াস অনৈতিহাসিক, সাম্প্রদায়িক এবং মুসলিম বিদ্বেষপ্রসূত। সুলতানী আমলে ভারতের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বহুল উন্নতি সাধিত হয়। এই সময়কালে ভারতে একটি প্রাতিষ্ঠানিক শাসন কাঠামো গড়ে উঠে। শিক্ষা ও শিল্পকলায় নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটে। বহির্বিশ্বের সাথে ভারতের প্রত্যক্ষ বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ভারতের নিম্নবর্গের মানুষ ব্রাহ্মণদের সামাজিক অত্যাচার থেকে রেহাই পায়। বাংলার ইতিহাসে সুলতানী আমল একটি স্বর্ণোজ্জল অধ্যায়। মুসলিম সুলতানদের হাতেই বাংলা ভাষার পূর্ণ সমৃদ্ধি ঘটে। মুসলিম শাসকেরা বাংলা ভাষাকে নিজের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করে এবং এই ভাষার ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে। এই সময়কালটি বাংলা ভাষা বিকাশের সোনালী যুগ। আরবী ও ফারসী ভাষার সংস্পর্শে এসে সমৃদ্ধ হয় বাংলা ভাষা। বাংলা সাহিত্যে নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ এই সুলতানী আমলকে বলেছেন ইতিহাসের কালো অধ্যায়। এখানে তিনি মুসলিম বিদ্বেষ থেকে ইতিহাস বিকৃতিতে অবতীর্ণ।

ঐতিহাসিক প্রামাণ্য তথ্যে এটা স্বীকৃত যে পলাশী পূর্ববর্তী সুবে বাংলার অর্থাৎ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হযে পড়েছিল মারাঠা দস্যু আর সন্ত্রাসীদের হামলা, লুন্ঠন, হত্যা ও আক্রমণে। নবাব আলীবর্দী খান মারাঠা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে তার শাসনামলের প্রায় পুরো সময়কালটি ব্যাপৃত থাকেন। উনিশ শতকের হিন্দু উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী এই ঐতিহাসিক সত্য ভুলে সন্ত্রাসী মারাঠাদের আক্রমণ, লুটপাট আর কর্মকান্ডকে মুসলিম বিরোধী অভিহিত করে হিন্দুদের গৌরব চিহ্নিত করতে থাকে। প্রধানত: এই হিন্দু পুনরুত্থানবাদী আন্দোলনের পটভূমিতে বাংলার হিন্দুসমাজ বিজাতীয় মারাঠাদের গুণকীর্তন আর বন্দনা শুরু করে। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন এই ধারারই শক্তিশালী প্রবক্তা।

'শিবাজী উৎসব্' (১৯০৪) কবিতাটি যখন রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন তখন তিনি কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। একই সঙ্গে কলকাতার বুদ্ধিজীবী মহলেও তিনি সম্মানের সাথে সমাদৃত। পারিবারিক এবং আর্থিক কারণে তিনি কলকাতার অভিজাত মহলের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে অবস্থান করছেন। বয়েসের পরিসীমায়ও তিনি পরিণত। বলা যেতে পারে উনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের শুরুর পর্বের রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও কর্মের ধারাবাহিকতার সাথে কবিতাটির মর্মার্থ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মহারাষ্ট্রের বালগঙ্গাধর তিলক ১৮৯৫ সালের ১৫ এপ্রিল সেখানে শিবাজী উৎসব প্রতিষ্ঠা করেন। তিলক শিবাজী উৎসব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উগ্র হিন্দু জাতীয়তা ও সাম্প্রদায়িকতা প্রচার ও প্রসারের জন্য। ক্রমে শিবাজী উৎসবের অনুকরণে চালু হয় গণপতি পূজা। ইতিপূর্বে ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গো-রক্ষিণী সভা ঐ অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। মহারাষ্টের শিবাজী উৎসবের অনুকরণে সখারাম গণেশ দেউস্করের প্রচেষ্টায় কলকাতায় শিবাজী উৎসব প্রচলিত হয় ১৯০২ সালের ২১ জুন তারিখে। সরলা দেবী ১৯০২ সালের অক্টোবর মাসে দূর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিনে বীরাষ্টমী উৎসব প্রচলন করেন। তিনি ১৯০৩ সালের ১০ মে শিবাজী উৎসবের অনুকরণে প্রতাপাদিত্য উৎসব প্রচলন করেন এবং একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রবর্তন করেন উদয়াদিত্য উৎসব। কলকাতার বাইরে থাকার কারণে রবীন্দ্রনাথ এই তিনটি উৎসবে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯০৩ সালে দূর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিনে ২৬ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে জানকীনাথ ঘোষালের বাড়িতে যে বীরাষ্টমী উৎসব অনুষ্ঠিত হয় রবীন্দ্রনাথ তাতে সক্রিয়ভাবে যোগ দেন।

শিবাজী উৎসবের মূল মন্ত্র ছিল চরম মুসলিম বিদ্বেষ, সন্ত্রাস এবং সাম্প্রদায়িকতা। বস্তুত এই শিবাজী উৎসবের সূত্র ধরেই বাংলায় সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির এবং সাম্প্রদায়িক ভেদনীতির ভিত্তি স্থাপিত হয়। এর ফলশ্রুতিতে বাঙালি হিন্দু ও বাঙালি মুসলমান পরস্পর বিপরীত পথে ধাবিত হয়। ঐতিহাসিকভাবে এটা স্বীকার্য যে এই সন্ত্রাস আর সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দায়ভাগ পুরোপুরি বর্তায় হিন্দু জমিদার আর মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উপর্। 'শিবাজী উৎসব' পালনের মধ্য দিয়ে সমগ্র বাংলায় যখন মুসলিম বিদ্বেষ আর সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং সমাজনীতির ভূমি নির্মিত হচ্ছে তখন বাঙালি মুসলিম সমাজ অর্থে, বিত্তে, শিক্ষায় একটি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়। আর পূর্ববাংলায় বাঙালি মুসলিম জনসংখ্যার সিংহভাগ জমিদারদের রায়ত বা প্রজা। বাংলার হিন্দুরা মুসলমানদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করলেও হিন্দু জমিদার আর মধ্যবিত্তের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠার শক্তি বা অবস্থা বাঙালি মুসলমানের ছিল না। কিন্তু বাস্তব ইতিহাস হলো বিশ শতকের শুরুতে এই সাম্প্রদায়িক 'শিবাজী উৎসব' বাংলায় চালু হয়েছিল মুসলিম বিরোধীতা এবং মুসলিম বিদ্বেষকে পুঁজি করে।

কবিতার শুরুতে রবীন্দ্রনাথ শিবাজীর কর্মকান্ড ও জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন :

কোন দূর শতাব্দের এক অখ্যাত দিবসে
নাহি জানি আজ
মারাঠার কোন শৈল অরণ্যের অন্ধকারে ব'সে
হে রাজা শিবাজী
তব ভাল উদ্ভাসয়া এ ভাবনা তরিৎ প্রভাবৎ
এসেছিল নামি
'একরাজ্যধর্ম পাশে খন্ড ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভারত
বেধে দিব আমি'।

ঠাকুর পরিবারের ‘জমিদারি নির্যাতন’-এর বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন কাঙাল হরিনাথ‚ বিস্মৃত এই সাংবাদিকই লিখেছিলেন ‘দিন তো গেল‚ সন্ধ্যা হল। দ্বারিকানাথ ঠাকুর সহজ লোক ছিলেন না।  প্রজাশোষণের ইচ্ছা ক্রমেই বলবতী হইতেছে। দ্বারিকানাথ ঠাকুরের কোনও লোক কুটির সীমায় উপস্থিত হইলেই সাহেব (ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এক কার্যাধ্যক্ষ উইলিয়াম সাহেব) গুলি করিতে আসিতেন | বলিলেন‚ আমার স্থাপন ও নিজস্ব বাজারটি তোমাকে দিলাম | কুমারখালির বর্তমান বাজারটি এইরূপে বিনামূল্যে দ্বারিকানাথের হস্তগত  হইল |

জমিদারি কাজকর্মের ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথের ওপর পূর্ণ আস্থা ছিল দেবেন্দ্রনাথের। তবুও ১৮৯০ সাল থেকে পুরো পাঁচটি বছর জমিদারি তদারকের দায়িত্ব দিয়ে তাঁকে তিনি সরজমিন প্রশিক্ষণ দেন এ বিষয়ে। ১৮৯৬ সালের ৮ই অগস্ট পাওয়ার অভ অ্যাটর্নির মাধ্যমে সমগ্র সম্পত্তির সর্বময় কর্তৃত্ব রবীন্দ্রনাথের ওপর ছেড়ে দেন দেবেন্দ্রনাথ। ১৮৯০ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৪৭ বছর শিলাইদহ, সাজাদপুর ও পতিসরের জমিদার হিসেবে রবীন্দ্রনাথ বহন করেছেন পিতার দেয়া গুরুভার। তাঁর প্রজাদের বেশির ভাগই কৃষক।

রবীন্দ্রনাথের বেশির ভাগ ছিল প্রজা ছিল মুসলমান। জমিদারিতে তারা পেতো শুধু বরকন্দাজের কাজ। হিন্দুরা করতো আমলার কাজ।  হিন্দু আমলা ও প্রজারা প্রাত্যহিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে থাকে নানাভাবে। তখন বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে শিক্ষিত হিন্দু যুবকদের নিয়ে এসে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করেন তিনি।

রবীন্দ্রোত্তর তৃতীয় প্রজন্মে রবীন্দ্র মূল্যায়ন’ প্রবন্ধের জন্য ইসলামবিদ্বেষী অধ্যাপক আহম্মদ শরীফ গবেষক অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরীকে কাঙাল হরিনাথের ‘গ্রামবার্তা’ এবং ঠাকুর জমিদারদের সম্পর্কে জানতে চেয়ে চিঠি লেখেন। চিঠির উত্তরে অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরীর লেখা চিঠিতে সংশ্লিষ্ট প্রচুর তথ্য পরিবেশিত হয়। চিঠিটির প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনা করে আর একবার পড়ে দেখা যাক ঃ
৭. ৯. ৮৫
শ্রদ্ধাভাজনেষু
স্যার, সালাম জানবেন। অসুস’তার জন্যে আপনার চিঠির জবাব দিতে কয়েকদিন দেরী হলো। অনুগ্রহ করে মাফ্‌ করবেন আমাকে।
ঠাকুর জমিদারদের প্রজাপীড়নের সংবাদ কাঙাল হরিনাথের ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’র কোন্‌ বর্ষ কোন্‌ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল তা আমার সঠিক জানা নেই। আমাদের কাছে ‘গ্রামবার্তা’র যে ফাইল আছে, তাতে এই সংবাদ নেই। প্রজাপীড়নের এই সংবাদ-সূত্রটি পাওয়া যায় কাঙাল-শিষ্য ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়র একটি প্রবন্ধে। কাঙালের মৃত্যুর পর অক্ষয়কুমারের এই প্রবন্ধটি সুরেশচন্দ্র সমাজপতি সম্পাদিত ‘সাহিত্য’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই প্রবন্ধে মৈত্রেয়বাবু কাঙাল হরিনাথের সংবাদপত্র পরিচালনায় সততা ও সাহসের পরিচয় প্রসঙ্গে প্রজাপীড়নের সংবাদ ‘গ্রামবার্তা’য় প্রকাশের উল্লেখ করেন। ঠাকুর-জমিদারদের অত্যাচার সম্পর্কে হরিনাথ নিজে অক্ষয়কুমারকে যে পত্র লেখেন, তিনি এই প্রবন্ধে তা উদ্ধৃত করে দেন। এই প্রবন্ধ প্রকাশের ফলে রবীন্দ্রনাথ বিশেষ রুষ্ট ও অপ্রসন্ন হন এবং তাঁর অন-রঙ্গ বন্ধু নাটোরের মহারাজা জগদীন্দ্রনাথ রায়কে বলে অক্ষয়কুমারের ‘রানী ভবানী’ গ্রন’প্রকাশের অর্থ-সাহায্যের প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করান। কাঙাল-পুত্র সতীশচন্দ্র মজুমদার-সূত্রে জানা যায়, ঠাকুর-জমিদারদের প্রজাপীড়নের সংবাদ-প্রকাশের অপরাধে (?) তাঁরা লাঠিয়াল-গুণ্ডা লাগিয়ে কাঙালকে শায়েস্তা করার ব্যবস্থা নেন। এইসব ঘটনা ঠাকুর-জমিদারীর ইতিহাসের দুঃখজনক ‘কালো অধ্যায়’।

এ-ছাড়া অন্যত্র, যেমন মীর মশাররফ হোসেন সম্পাদিত ‘হিতকরী’ পত্রিকায়, ঠাকুর-জমিদাররা যে প্রজাসাধারণের দুঃখ-কষ্ট মোচনে তেমন তৎপর ও মনোযোগী ছিলেন না তার ইঙ্গিত আছে। ঠাকুরবাবুরা তাঁদের জমিদারী-এলাকায় গো-কোরবানী নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং এই নির্দেশ অমান্যকারীদের নানাভাবে নিগৃহীত হতে হয়। শিলাইদহ ঠাকুর-জমিদারীর এই ভূস্বামী-স্বার্থরক্ষার কৌশল-ব্যবস্থা ও প্রজাপীড়নের ঐতিহ্য চারপুরুষের, দ্বারকানাথ থেকে সুরেন্দ্রনাথ পর্যন-। কাঙাল হরিনাথের দিনলিপিতেও এর ইঙ্গিত মেলে।

শিলাইদহ জমিদারীতে রবীন্দ্রনাথের আমলেও কিছু অবাঞ্ছিত ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। চরের মুসলমান প্রজাদের ঢিঁঢ করবার জন্য নমঃশূদ্র প্রজা এনে বসতি স্থাপনের সামপ্রদায়িক-বুদ্ধিও রবীন্দ্রনাথের মাথা থেকেই বেরিয়েছিল। এ-ছাড়া পুত্র রথীন্দ্রনাথের নিরীক্ষামূলক শখের কৃষি-খামারের প্রয়োজনে গরীব মুসলমান চাষীর ভিটেমাটি দখল করে তার পরিবর্তে তাকে চরের জমি বরাদ্দের মহানুভবতাও রবীন্দ্রনাথ প্রদর্শন করেছিলেন। এ-সব কথা ও কাহিনী উক্ত-জীবনীকারদের যত্ন ও সৌজন্যে চাপা পড়ে গেছে। সত্য ইতিহাসকে তুলে ধরতে গেলে অনেককেই হয়তো সামপ্রদায়িক বা রবীন্দ্র-বিদ্বেষী শিরোপা, নয়তো সুভো ঠাকুরের (‘বিস্মৃতিচারণার প্রতিক্রিয়া’ দ্রষ্টব্য) মতো ধিক্কার ও তিরস্কার অর্জন করতে হবে।

ঠাকুর-জমিদারদের প্রজা-পীড়নের বিষয়ে আমি রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহ জীবনের নিপুণ ভাষ্যকার শ্রী শচীন্দ্রনাথ অধিকারীকে (তিনি নিজে শিলাইদহবাসী ও ঠাকুর-এস্টেটের কর্মচারী ছিলেন এবং এই বিষয়গুলো জানতেন) চিঠিপত্রে নানা প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি এ-সব জিজ্ঞাসার জবাব এড়িয়ে ও অস্বীকার করে এই ধরণের কৌতূহলকে রবীন্দ্র-বিদ্বেষী বলে অভিহিত করেছিলেন।
উপরি-বর্ণিত বিষয়গুলোর কিছু কিছু তথ্য আমার সংগহে আছে। আপনার প্রয়োজন হলে সেগুলো পাঠাতে পারি। আপনার নির্দেশের অপেক্ষায় রইলাম। এই বিষয়ে আপনি কোন প্রবন্ধ লিখেছেন কী না জানিয়ে বাধিত করবেন। আমার গবেষণার কাজ (‘মীর মশাররফ হোসেনের শিল্পকর্ম ও সমাজচিন্তা’) চালিয়ে যাচ্ছি। এ-বছরের মধ্যে থিসিস্‌ জমা দেবো এমন আশা আছে। আমার লেখার কাজে আপনার প্রশ্রয় ও প্রেরণার কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। আপনার জবাবের প্রত্যাশায় রইলাম। আন্তরিক শ্রদ্ধা ও সালাম জানিয়ে শেষ করি।

স্নেহসিক্ত,
আবুল আহসান চৌধুরী ৩৬

তথ্যসূত্র :

১। রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতা-লেখক : রফিক হাসান-নয়া দিগন্ত, ৭মে ২০১৬

২। ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ

৩। হিন্দুরা ছিল ব্রিটিশদের সহচর ভারতীয় রাজাকার-লেখক : ফারুক সালাউদ্দিন

৪। ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ-পৃষ্টা-২৭০-২৭১

৫। গণঅসন্তোষ ও উনিশ শতকের বাঙালী সমাজ-লেখক : ড. স্বপন বসু

৬। জমিদার রবীন্দ্রনাথ- দেশ ১৪৮২ শারদীয় সংখ্যা, লেখক : অধ্যাপক অমিতাভ চৌধুরী

৭। বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা(১৯৬৮), পৃষ্টা : ২৩-২৪ লেখক : বিনয় ঘোষ

৮। ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত-লেখক : সরকার সাহাবুদ্দীন আহমদ পৃষ্টা_ ২৫৯

9| The morning chronicle-26th September 1850