Saturday 15 May 2021

বেলফোর ঘোষণাঃ ফিলিস্তিন নিয়ে ব্রিটিশদের চক্রান্ত

 বেলফোর ঘোষণাঃ ফিলিস্তিন নিয়ে ব্রিটিশদের চক্রান্ত।



ব্রিটিশ সরকারের মুসলিম বিদ্বেষী পলিসির কারনে ফিলিস্তিনের মুসলমানরা ১০৪ বছর ধরে ইহুদীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ব্রিটিশ সরকারের পলিসির প্রতি তীব্র ঘৃণা ধিক্কার।  


ফিলিস্তিনীদের সাথে চক্রান্ত করে ইহুদীদের স্বার্থে ব্রিটেন কর্তৃক দেওয়া বেলফোর ঘোষণার ১০২ তম পূর্তি আজ। ১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বরের দেওয়া ওই ঘোষণা ফিলিস্তিনীদের মধ্যে ব্যাপক উথান ঘটিয়েছিল। ওই ঘোষণা জায়ানিস্টদের ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিল যখন ব্রিটেন, "সকল ইহুদীদের আবাসস্থল" বলে ফিলিস্তিনীদের ভূমিতে ইহুদীদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে। বেলফোর ঘোষণাকে ১৯৪৮ সালে ইহুদীদের কর্তৃক ফিলিস্তিনীদের ওপর দমন,পীড়ন, নির্যাতন চালিয়ে নিজ ভূমি থেকে তাদের বিতাড়িত করার বর্বর ইতিহাসের অন্যতম অনুঘটক হিসেবে দেখা হয়ে থাকে।


বেলফোর ঘোষণাটি কী ছিলো?

The Balfour Declaration (বেলফোর প্রতিশ্রুতি) ছিলো ১৯১৭ সালে ব্রিটেন কর্তৃক নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুত ঘোষণা, "a national home for the Jewish people"। অর্থাৎ ইহুদীদের জন্য ইহুদী রাষ্ট্র তৈরির ঘোষণা। ব্রিটেনের ওই ঘোষণাটি পত্র আকারে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব আর্থার বেলফোরের পক্ষ থেকে ব্রিটিনে ইহুদীর একটি বড় সংগঠন British Jews Community এর প্রধান ওয়াল্টার রথসচাইল্ডকে উদ্দেশ্য করে বিবৃত করা হয়।


বেলফোর ঘোষণাটি দেওয়া হয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন (১৯১৪ - ১৯১৮) সালের দিকে, ফিলিস্তিনের জন্য ব্রিটিশ মেন্ডেটের আওতার শর্তে। ঘোষণাটি দেওয়া হয় যখন অটোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে যায় এরপর। ব্রিটিশ মেন্ডেট ফিলিস্তিন" নামে মেন্ডেট পদ্ধতির মূলে ছিলো যৌথ শক্তি কর্তৃক নিয়ন্ত্রণের নামে ব্রিটেন কর্তৃক ফিলিস্তিনে অবৈধভাবে উপনিবেশবাদ এবং দখলদারিত্বের শাসন। মেন্ডেট সিস্টেমে ১ম বিশ্ব যুদ্ধে পরাজিত শক্তিদের জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাংগেরি, অটোমান সাম্রাজ্য এবং বুলগেরিয়ার হাত থেকে বিভিন্ন রাজ্য পরিচালনার ভার যুদ্ধে জয়ী শক্তির আওতায় চলে যায়। ফিলিস্তিন নিয়ে ব্রিটিশ মেন্ডেটের মূল উদ্দেশ্য ছিলো সেখানে ইহুদী রাষ্ট্র তৈরির পরিবেশ তৈরি করা যখন সেখানে মাত্র ১০ ভাগ ইহুদী ছিলো।



ব্রিটিশ মেন্ডেট সিস্টেম শুরুর পর ব্রিটিশরা ইউরোপ থেকে দলে দলে ইহুদীদের ফিলিস্তিনে পাঠাতে বিভিন্নভাবে সাহায্য করতে থাকে। ১৯২২ থেকে ১৯৩৫ সালের মধ্যে ইহুদীদের সংখ্যা সেখানে বেড়ে দাঁড়ায় মূল জনসংখ্যার মধ্যে ২৭ ভাগে। যদিও বেলফোর ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছিল এমন কিছু করা হবেনা যা নাগরিক এবং অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য পক্ষপাতদুষ্ট হবে কিন্তু ব্রিটিশ মেন্ডেট এমনভাবে গঠন করা হয়েছিল যা ইহুদীদের বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে ফিলিস্তিনীদের ওপর ইহুদীদের নিজেদের কর্তৃত্বশীল ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেছিল।


বেলফোর ঘোষণা বিতর্কিত ছিলো কেনো?


বেলফোর ঘোষণা নানা কারণে ছিলো বিতর্কিত। প্রথমত, ফিলিস্তিনী আমেরিকান পণ্ডিত এডওয়ার্ডের ভাষায়, "ইউরোপিয়ান একটি দেশ কর্তৃক অ ইউরোপীয় একটি ভূখণ্ডের বিষয়ে ঘোষণা যেখানে ওই ঘোষণা ওই ভূখণ্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দার অস্তিত্ব এবং মতামতকে যেখানে উপেক্ষা করে।" সংক্ষেপে, বেলফোর ঘোষণা একটি ইহুদী ভূখণ্ড তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যেখানে স্থানীয় অধিবাসীদের সংখ্যাই ছিলো ৯০ ভাগ। দ্বিতীয়ত, ঘোষণাটি ছিলো ব্রিটিশদের যুদ্ধ চলাকালীন দেওয়া তিনটি পারস্পরিক সাংঘর্ষিক প্রতিশ্রুতির একটি। যখন এটি প্রকাশ করা হয়, ব্রিটেন ইতোমধ্যেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল অটোমান সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীন আরব রাষ্ট্রের সৃষ্টির।



"Hussein-McMahon correspondence" নামের ঐতিহাসিক পত্র বিনিময় যেখানে ব্রিটিশ এবং শরীফ আল মক্কা নামে পরিচিত সৌদি ধর্মীয় নেতা হোসাইন বিন আলির ১৯১৫ সালের দিকে পত্র বিনিময়ের মধ্যে ওই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। যেখানে হোসাইন বিন আলি অটোমান শাসনের বিরুদ্ধে আরব বিদ্রোহ ঘোষণা করে ব্রিটিশদের কাছ থেকে ওই প্রতিশ্রুতি চেয়েছিল। ব্রিটিশরা "1916 Sykes-Picot agreement" নামের সাইক পিকট চুক্তির আওতায় ফরাসিদেরও আলাদাভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠ ফিলিস্তিন অঞ্চল আন্তর্জাতিক প্রশাসনের অধীন থাকবে। অন্যদিকে অন্যান্য এলাকাগুলো যুদ্ধের পর দুই ঔপনিবেশিক শক্তির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। ওই ঘোষণা যাইহোক এটাই বুঝিয়েছিল, ফিলিস্তিন ব্রিটিশদের দখলে থাকবে এবং ফিলিস্তিনী আরব যারা সেখানে থাকবে তারা কখনো স্বাধীন রাষ্ট্র পাবেনা।


পরিশেষে, বেলফোর ঘোষণা এমন একটি ধারণার ("national home" বা জাতীয় আবাস ) পরিচিতি ঘটিয়েছিল যা আন্তর্জাতিক আইনে ছিলো নজিরহীন।পুরনো নথিগুলোতে, "ইহুদী রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনের পুনর্গঠন" বাক্যটি ব্যবহার করা হয়েছিল যা পরবর্তীতে পরিবর্তন হয়ে যায়। ১৯২২ সালে ইহুদিবাদী নেতা চেইম ওয়েইজম্যান সাথে একটি সাক্ষাতে আর্থার বেলফোর এবং পরে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড লাইওয়েড জর্জ বেলফোরের ঘোষণাকে, ''চূড়ান্ত ইহুদীরাষ্ট্র সৃষ্টির প্রক্রিয়া'' বলে জানায়।


কেন এই ঘোষণা জারি করা হলো? বেলফোর ঘোষণা কেনো জারি করা হলো এটা কয়েক দশক ধরে বিতর্কিত বিষয়। ঐতিহাসিকেরা বিভিন্ন উৎস থেকে এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছে। অনেকে যুক্তি সহকারে কারণ হিসেবে তুলে ধরছে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারে থাকা অধিকাংশ ইহুদীবাদী কর্মকর্তাকে। অনেকে ওই ঘোষণাকে ইহুদীদের সাথে বৈষম্যের বিরুদ্ধে একটি কার্যকারী ঘোষণা বলে মনে করে যেখানে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে ইহুদীদের দিয়ে দিলে ইহুদীদের সমস্যার সমাধান হবে। মূলধারার গবেষকদের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে যেসব কারণগুলো উল্লেখ করা হয় সেগুলো হলোঃ ফিলিস্তিনের ওপর নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য ছিলো ব্রিটেনের মিশর এবং সুয়েজ খালকে নিজেদের প্রভাব গোলকের মধ্যে রাখা।

ব্রিটেন ইহুদিবাদীদের পক্ষ নিয়েছিল আমেরিকা এবং রাশিয়ায় ইহুদীদের আন্দোলনকে বেগবান করে তাদের সরকারকে যুদ্ধে জয়লাভ পর্যন্ত জড়িয়ে রাখার জন্য।

ব্রিটিশ সরকারে ইহুদীবাদী লবিদের সাথে মজবুত সম্পর্ক ও তীব্র প্রভাব বিদ্যমান থাকায়। ব্রিটিশ সরকারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ছিলো ইহুদী।

ইহুদীরা ইউরোপ জুড়ে নিপীড়িত হয়েছিল বলে ব্রিটিশ সরকার তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে চেয়েছিল।

ফিলিস্তিনী ও আরবেরা বেলফোর ঘোষণাকে কীভাবে নিয়েছিল?


১৯১৯ সালে, পরবর্তীতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওউড্রো উইলসন একটি কমিশন গঠন করে সিরিয়া এবং ফিলিস্তিনের মেন্ডাটরি পদ্ধতির বিষয়ে জনসাধারণের মতামত জানার জন্য। ওই অনুসন্ধান "কিং-ক্রেন" কমিশন নামে পরিচিত হয়। ওই কমিশন অনুসন্ধানের ফলাফল পায় যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ ফিলিস্তিনী তীব্র ইহুদিবাদ বিরোধী এবং ওই কমিশন মেন্ডেটের উদ্দেশ্য পরিবর্তনের পরামর্শ প্রদান করে।

প্রয়াত ফিলিস্তিনী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আউনি আবেদ আল হাদি বেলফোর ঘোষণার বিরুদ্ধে নিজের স্মৃতি থেকে উল্লেখ করেন, "এটি ছিলো এক বিদেশী ইংরেজের তৈরি যার ফিলিস্তিন নিয়ে কিছু করার অধিকার নেই, বিদেশী ইহুদী যাদের এখানে কোনো অধিকার নেই।"


১৯২০ সালে, হাইফায় তৃতীয় ফিলিস্তিনী কংগ্রেসে ব্রিটিশ সরকারের ইহুদীবাদী পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী ঘোষণার নিন্দা করা হয় যেখানে স্থানীয় অধিবাসীদের অধিকারও খর্বিত হচ্ছে। ১৯১৯ সালের নভেম্বরে যখন দামেস্ক ভিত্তিক আল ইস্তিকলাল আল আরাবি পত্রিকা নতুন করে প্রকাশিত হলো সেখানে একটি আর্টিকেলে লন্ডনের মন্ত্রীসভার ইহুদী মন্ত্রী হারবার্ট সামুয়েলের বেলফোর ঘোষণার দ্বিতীয় একটি ভাষণের সমালোচনা করে উল্লেখ করা হয়, আমাদের দেশ আরব, ফিলিস্তিন আরব এবং ফিলিস্তিন অবশ্যই আরবদের থাকবে"।


বেলফোর ঘোষণা এবং ব্রিটিশ মেন্ডেট প্রতিষ্ঠার আরো পূর্বে, আরব জাতীয়তাবাদী পত্রিকাগুলো ফিলিস্তিনীদের নিজ ভূখণ্ড থেকে সরানোর ইহুদীবাদ আন্দোলনের বিষয়ে সতর্ক করেছিল। খলিল সাকাকিনি, মাকদিসের (জেরুসালেমের বাসিন্দা) বাসিন্দা এবং অর্থোডক্স খ্রিস্টান শিক্ষক যুদ্ধের পরপর ফিলিস্তিনের বর্ণনা করেছিলেন এভাবে, "এক জাতি যারা দীর্ঘকাল গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলো তারা কেবল তখনই জাগে যখন রুক্ষভাবে বিভিন্ন ঘটনা ঝাঁকিয়ে তুলে এবং কেবল ধীরে ধীরে জেগে উঠে......"। এটিই ছিলো ফিলিস্তিনের অবস্থা, কয়েক শতাব্দী ধরে গভীর ঘুমে আছন্ন ছিলো যে পর্যন্ত না মহাযুদ্ধ শুরু হলো, ইহুদীবাদ আন্দোলনের কারণে বিস্মিত হলো, অধিকার খর্বিত হলো, এবং ধীরে ধীরে তারা জাগতে শুরু করলো।"


মেন্ডেটের অধীনে ইহুদী অভিবাসীদের ক্রমাগত সংখ্যা বৃদ্ধি উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং ফিলিস্তিনী আরব ও ইহুদীদের মধ্যে সহিংসতা বৃদ্ধি হচ্ছিল। ব্রিটিশদের ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে প্রথম সাড়া জাগানো প্রতিক্রিয়া ছিলো "নবী মুসা বিদ্রোহ" বলে পরিচিত ১৯২০ সালের আরব ফিলিস্তিনী ও ইহুদীদের মধ্যকার দাঙ্গা যেখানে ৫ ইহুদী অভিবাসী নিহত ও ৪ ফিলিস্তিনী শাহাদাতবরণ করে এবং বহু হতাহত হয়। নবী মূসা আঃ এর নামে একটি ধর্মীয় উৎসবের সময় ঘটনাটি ঘটে।


বেলফোর ঘোষণার পিছনে আর কারা ছিলো? যেখানে ব্রিটেন ওই ঘোষণার জন্য আপাতত দৃষ্টিতে সম্পূর্ণভাবে দায়ী ছিলো কিন্তু এখানে একটি বিষয় গুরুত্বসহকারে উল্লেখযোগ্য যে, ১ম বিশ্ব যুদ্ধকালীন ব্রিটেনের মিত্র শক্তিগুলোর পূর্বমত ছাড়া ব্রিটেনের ওই ঘোষণা দেওয়া সম্ভব ছিলো না। ১৯১৭ সালে যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার মিটিংয়ে , ব্রিটিশ মন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত নেয় যে, "কোনো ঘোষণা প্রদানের পূর্বে প্রেসিডেন্ট উইলসনের মতমত গৃহীত হওয়া উচিত"। মন্ত্রীসভার সদস্যেরা স্মরণ করিয়ে দেয় যে আর্থার বেলফোর নিশ্চিত করেছে উইলসন ওই ঘোষণার অনুগ্রাহী।ফ্রান্সও ওই ঘোষণার পিছনে জড়িত ছিলো এবং বেলফোর ঘোষণার সাথে নিজেদের সমর্থন প্রকাশ করেছিল।


১৯১৭ সালে এক ফরাসি কূটনীতিক জুলেস ক্যামবনের, নাহুম সুকুলো নামের এক পোলিশ জায়ানিস্টকে পাঠানো চিঠিতে "ফিলিস্তিনে ইহুদী উপনিবেশ " উল্লেখ করে ফরাসি সরকারের সহমর্মিতার দৃষ্টান্ত বলে তা প্রকাশ করে এভাবে,

"[I]t would be a deed of justice and of reparation to assist, by the protection of the Allied Powers, in the renaissance of the Jewish nationality in that Land from which the people of Israel were exiled so many centuries ago," stated the letter, which was seen as a precursor to the Balfour Declaration.


বেলফোর ঘোষণা ফিলিস্তিনীদের ওপর কী প্রভাব ফেলেছিল? বেলফোর ঘোষণাকে ১৯৪৮ সালের ফিলিস্তিনী নাকবা সংঘটিত হওয়ার আলামত বলে দেখা হয়ে থাকে যখন ব্রিটিশদের কর্তৃক প্রশিক্ষিত ইহুদী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ৭,৫০,০০০ এর অধিক ফিলিস্তিনীদের নিজ ভিটে থেকে নির্যাতন, নিপীড়ন চালিয়ে জোরপূর্বক বিতাড়িত করে। যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার কিছু সদস্য বিরোধিতা করে এরকম পরিস্থিতির আশংকার পূর্বাভাস দিলেও ব্রিটিশ সরকার বেলফোর ঘোষণা দেওয়া থেকে বিরত থাকেনি।


এতে কোনো সন্দেহ নেই ব্রিটিশ মেন্ডেট সংখ্যালঘু ইহুদীদের জন্য ফিলিস্তিনীদের তাদের ভূমি থেকে তাড়িয়ে ইহুদীদের জন্য নিজেদের রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিল।যখন ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা সিদ্ধান্ত নেয় মেন্ডেট ব্যবস্থার ইতি ঘটিয়ে ফিলিস্তিন ইস্যু জাতিসংঘে উথাপন করবে, অন্যদিকে ইহুদীরা ততোদিন নিজেদের আর্মি গড়ে ফেলে। ব্রিটিশদের হয়ে ২য় বিশ্বযুদ্ধ লড়াই করা ইহুদী প্যারা মেলিটারিদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল ওই আর্মি। আরো গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি, ব্রিটিশরা ইহুদীদের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান যেমন ইহুদীদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের জন্য প্রস্তুতি নিতে "ইহুদী এজেন্সি"র মতো প্রতিষ্ঠান গড়ার অনুমতি দিয়েছিল অন্যদিকে ফিলিস্তিনীদের এরকম কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি যা ফিলিস্তিনীদের জাতিগতভাবে নির্মূলের পথ সুগম করে দিয়েছিল।


মূল সুত্রঃ [২০১৭ সালে বেলফোর ঘোষণার ১০০ শতাব্দী পূর্তিতে আল জাজিরায় প্রকাশিত বিশেষ প্রবন্ধ থেকে অনুদিত। ]