Saturday 4 February 2017

তিস্তার পানি না পাওয়ায় মরুভূমিতে পরিণত হতে চলছে উত্তরবঙ্গ।


তিস্তা চুক্তির ব্যর্থতার জন্য আলীগ সরকার দায়ী।

সূফি বরষণ
পানি অভাবে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে তিস্তা নদী। উজান ও ভাটি এখন পরিণত হয়েছে ধু- ধু বালুচরে। ভয়াবহ পানি সংকটে পড়েছে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ। চলতি রবি ও খারিপ-১ মৌসুমে ২৮ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের টার্গেট করা হলেও বর্তমানে যে পরিমান পানি রয়েছে তাতে করে মাত্র ৬শত হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব। তিস্তা ব্যারেজে সিল্টট্রাপ থেকে ৫কিলোমিটার পর্যন্ত সেচ খালের তুহিন বাজার এসওয়ান টি ক্যানেলেরর পর পানি দিয়ে পারছে না পাউবো কর্তৃপক্ষ। অবশিষ্ট ক্যানেলের পানি প্রবাহ বন্ধ করায় তারা কৃষকদের আন্দোলনের মুখে পড়তে পরেন।

তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি থমকে রয়েছে। এ অবস্থায় স্বল্প পানির প্রবাহের উপর ভর করে চলতি রবি ও খারিপ-১ মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম ২১ জানুয়ারি শুরু করা হয়েছে। তবে এবার সেচ প্রদানে রংপুর ও দিনাজপুর জেলার কমান্ড এলাকাকে সেচ সুবিধা থেকে বাদ রেখে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী সেচ নির্ভর বোরো আবাদে পানি দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। ফলে সেচের জন্য তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকার কৃষকরা পানির জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তিস্তার নদীর উজান ও সিল্টট্রাপ খনন না হওয়ায় কারনে পলি জমে ভরাট হয়েছে। তিস্তার সেচের পানি সিলট্রাপে জমা রেখে পর্যায়ক্রমে প্রধান ক্যানেলের মাধ্যমে বিভিন্ন সেচ ক্যানেলে সরবরাহ করে আসত। সিল্টট্রাপ পলি অপসারন না হওয়ায় পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষন করতে পারছে না পাউবো।

গত ২১ জানুয়ারী সেচ ক্যানেলে পানি সরববাহের সময় তিস্তার পানি প্রবাহ ৯শ কিউসেক থাকলেও কমে দাড়িয়েছে ২শ কিউসেকে।

সম্ভাবনা জাগিয়েও বারবার থেমে থাকছে তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে কৃষকদের মাঝে হতাশা বিদ্যমান রয়েছে।  তিস্তার ব্যারেজের ৫২টি সুইচ গেটে সুইচ গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। তিস্তার উজান ও ভাটিতে বিশাল বালুর চর পড়েছে। উজানে একটি সরু ক্যানেলে শুধূ মাত্র পানি লক্ষ্য করা যায়। উজানে জেলেদের মাছ ধরার ডিঙ্গি নৌকাগুলো বেধে রাখা হয়েছে। নদীতে মাছ ধরতে না পারায় কয়েকশত জেলে পরিবার অনাহারে অধাহারে দিনাতিপাত করছে।

আর বর্তমানে এই বিষয়ে ভূমিকার জন্যে 'আনন্দবাজার'র প্রতি ঘৃণা প্রকাশ না করে কোনও উপায় নেই। গত ২৬ জানুয়ারির 'আনন্দবাজার'র রিপার্টের ভাষা দেখেন। ভারত নাকি বাংলাদেশকে সবকিছু 'দান' করছে! অথচ গত ৪৫ বছরে ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে ৭০০ নদ নদী বিলিন হয়ে গেছে ।

১০০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুত ঋণ থেকে ২০ কোটি ডলার দিতে চেয়েছিল অনুদান হিসেবে। সেই প্রতিশ্রুত ঋণ-ই ঠিকমত দেয়নি,আবার অনুদান! বিদ্যুৎ -রাস্তা...কোনও কিছুই ভারত 'দান' করেনি বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশ অনেক কিছু 'দান' করেছে ভারতকে। নদীর উপর বাঁধ দিয়ে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নেয়ার সুযোগ 'দান' করেছে, বিনা ফি'তে এবং পরবর্তীতে নামমাত্র ফি'তে ট্রানজিট সুবিধা 'দান' করেছে।নিরাপত্তা ইস্যুতে বিশাল 'দান' করেছে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তুলে দিয়েছে ভারতের হাতে।

আনন্দবাজার'র ভাষ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ যেন 'ভিক্ষা' চাইছে ভারতের কাছে। আনন্দবাজার গোষ্ঠীর বোধের মধ্যে আসা দরকার, তিস্তার পানি করুণা বা ভিক্ষা নয় বাংলাদেশের অধিকার। আনন্দবাজার'র বাংলাদেশ বিরোধী অসম্মানজনক সংবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা মানে,ভারত বা ভারতের জনমানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নয়।

পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষা বিপর্যয়ের মূখে, বাংলা পত্রিকা আনন্দবাজারও। তাই এখন তারা মাঝেমধ্যে বাংলাদেশ বিষয়ক দু'একটি ইতিবাচক গল্প লিখে, মানুষকে বিভ্রান্ত করে অনলাইনে বাংলাদেশের পাঠক এবং বিজ্ঞাপনের বাজারে প্রবেশ করতে চাইছে। আমাদের বোঝা দরকার আনন্দবাজার গোষ্ঠীর এখনকার ভূমিকা বাংলাদেশের জনমানুষের স্বার্থপরিপন্থী।